পরিচয় পর্ব-৩৫৭
পরিচয়(পর্ব-৩৫৭)
(সিজন-১২-ওয়াদা)
(সিজন-১২-ওয়াদা)
“আবির এখনও আসে নি?” অয়নকে জিজ্ঞেস করলো সাবিত । অয়ন বলল, “না, আজ তো দেরি করেই গেলো ।” সাবিত বলল, “ও হ্যাঁ, আমার তো খেয়ালই নেই । আচ্ছা, আমি এখন নয়নকে পড়াতে যাচ্ছি ।” বলে বেড়িয়ে গেলো সাবিত । নিশান তখন অয়নকে বলল, “মামা! যাবা নাকি বাজারের ওপাশের খাবারের দোকানে? ওখানকার সিঙ্গারা খাইছি আমি! এতো টেস্ট!” অয়ন বলল, “তাই নাকি! চল যাই ।” নিশান রনিকে জিজ্ঞেস করলো, “আপনি যাবেন?” রনি বলল, “না, তোমরা যাও ।” পড়ে অয়ন আর নিশান চলে গেলো । রনি পাটির ওপর একটু হাত পা ছড়িয়ে শুয়ে খোলা আকাশের দিকে তাকিয়ে রইলো । একটু পর বামে কাত হতেই দেখলো, অয়ন আর নিশান দুজনেই ওদের ফোন রেখে গেছে ।
আফজাল খানের বাড়ির গেইট দিয়ে ঢুকতেই সাবিত দেখলো, একটা পিলারের সাথে আবিরকে বেধে রেখেছে আফজাল খান । সাবিত ভয় পেয়ে গেলো । কিন্তু ও একা কিছু করতে পারবে না । একটু পর শুনলো, আফজাল খান তার এক গুন্ডাকে আদেশ দিচ্ছে, “যা, বন্দুকটা নিয়া আয়, একে শেষ করে দেই!” সাবিত দেরি না করে সবাইকে ডাকার জন্য যেই বেরোতে যাবে, এমন সময় আফজাল খান দেখে ফেললো সাবিতকে । জিজ্ঞেস করলো, “এইযে মাষ্টার মশাই? কোথায় যাচ্ছেন?” সাবিত আফজাল খানের দিকে তাকিয়ে বলল, “জি……মানে……মোর হাতে কি জানি লাগছে, সেইডা ধুইতে ওই গেইটের সামনের ট্যাপের দিকে যাচ্ছিলাম ।” আফজাল খান বলল, “ও, আচ্ছা যান । আর আজকে ছেলেকে একটু তাড়াতাড়ি ছেড়ে দিয়েন ।” সাবিত ডানে মাথা কাত করে বাসার ভেতরে ঢুকলো । ওপরে উঠতে উঠতে অয়নকে মেসেজ দিলো, “তাড়াতাড়ি পুলিশ নিয়ে আফজাল খানের বাসায় আয়! আবির ধরার পড়ে গেছে! ওকে গুলি করে মেরে ফেলবে! হাতে কিন্তু বেশি সময় নেই!”
অয়নের মোবাইলটা যে পাশে রাখা ছিলো, সে দিকেই কাত হয়ে শুয়ে ছিলো রনি । হুট করে মোবাইলের আলো জলে ওঠায় হুট করেই চোখ চলে গেলো এবং “তাড়াতাড়ি পুলিশ” অংশটা দেখে চমকে পুরো নোটিফিকেশনটা দেখলো । রনির বুক কেঁপে উঠলো কথাটা শুনে । তাড়াতাড়ি উঠে দৌড় দিলো । কল করলো এলাকার পুলিশকে । পুলিশ বলল, “হ্যাঁ হ্যাঁ! আমরা তো ওই লোকটারই বাড়ির দিকে আসছি! শীঘ্রই পৌঁছে যাবো!” রনি ঠিক আছে বলে কল কাটলেও নিজে দৌড়তে লাগলো । শীঘ্রই পৌঁছে গেলো আফজাল খানের বাড়ির গেইটের সামনে । দারোয়ান বসে বাইরে । রনি দারোয়ানের চোখ ফাকি দিয়ে ঢোকার জন্য একটা ফন্দি আটলো । একশো টাকার নোট দারোয়ানের একপাশে ছুড়ে মারলো । তারপর দারোয়ানের কাছে যেয়ে জিজ্ঞেস করলো, “ভাই, এটা কি আপনার টাকা?” দারোয়ান মাটিতে তাকালো, তারপর উপুড় হয়ে সেটা তুলে হাতে নিলো । তারপর সামনের দিকে তাকিয়ে দেখলো, রনি সামনে নেই । রনি ততক্ষণে ভেতরে ঢুকে গেছে ।
ভেতরে ঢুকতেই রনি দেখলো, আফজাল খান বন্দুক লোড করলো, রনি আর দেরি না করে আবিরের দিকে দৌড়ে ছুটে গেলো । আফজাল খানের গুন্ডারা রনির আগমন টের পাবার আগেই রনি আবিরের কাছাকাছি চলে এলো আর রনি কাছাকাছি আসতে আসতেই আফজাল খান আবিরের দিকে গুলি তাক করে ছুড়ল । সেই গুলি আবিরের গায়ে না লেগে লাগলো রনির বুকের বা পাশে । মাটির ওপর লুটিয়ে পড়লো রনি । আফজাল খান চেঁচিয়ে গুন্ডাদের বলল, “এটা আবার কে!” এমন সময় বাইরে পুলিশের গাড়ির সাইরেন শোনা গেলো । আফজাল খানের গুন্ডারা আফজাল খানকে ফেলেই নিজেদের জীবন বাচাতে এদিক সেদিক পালানোর চেষ্টা করলেও পালাতে পারলো না । পুলিশ এসে ধরে ফেললো সবাইকে । আফজাল খানকেও । আবির রনির মাথা নিজের পায়ের ওপর রেখে ডাকতে লাগলো, “রনি স্যার! আপনি চোখ বন্ধ করবেন না! একটু কষ্ট করুন স্যার!” আবিরের কাছে থাকা একটা রুমাল দিয়ে রনির বুক চেপে ধরলো আবির, যেনো রক্তক্ষরণ বেশি না হয় । রনি কিছুই বলছিলো না । আবিরের দিকে কেবল তাকিয়েই ছিলো । যেনো আবির ওর কতোটা চেনা, আবিরেরও কেনো যেনো এক মুহূর্তের জন্য মনে হলো, রনি যেনো ওর কতোটা চেনা! একজন পুলিশ তখন এসে আবিরকে বলল, “উনাকে আমাদের গাড়িতে করে নিয়ে চলুন!” আবির রনিকে কাঁধে নিলো । তারপর গাড়িতে তুলে দিলো রনিকে । রনির চোখের পাতা বন্ধ হওয়া পর্যন্ত রনি আবিরের দিকেই তাকিয়ে ছিলো । এছাড়াও গুলির আওয়াজ শুনে বাসা থেকে সবাই নেমে এসেছে । সাবিত তো আগে দৌড় দিয়েছে, কারণ ওর হিদস্পন্দন কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছিলো এই ভেবে, আবিরকে বোধ হয় আফজাল খান গুলি করে দিয়েছে । কিন্তু নিচে এসে আবিরকে সুস্থ দেখে সাবিত একটু স্বস্তি পেলো । কিন্তু রনিকে আহত হতে দেখায় বেশ কষ্ট পেলো ।
সিঙ্গারা খাওয়া শেসে ফিরে এসে মেসেজ দেখে সেখানে দ্বীপকে নিয়ে চলে আসে অয়ন আর নিশান । এসে ওরা দেখে এই কান্ড । সবার সাথে ওরাও এলাকার স্থানীয় হাসপাতালে যায় । সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেবার পর ডাক্তার বলেন, “পেশেন্টের অবস্থা খুব ক্রিটিকাল, ঢাকায় নিয়ে গেলে ভালো হলেও হতে পারে, কিন্তু আমাদের এখানে তেমন উন্নত চিকিৎসা নেই ।” আবির নিশান আর অয়নকে বলল, “তোরা যা! সব কিছু গুছিয়ে নে আর সাবিত ভাইয়ের সাথে ঢাকা ফিরে আয়, আমি উনাকে নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছি ।” এরপর রনিকে নিয়ে আসা হলো ঢাকার একটা বড় হাসপাতালে ।
আগামী পর্বেঃ
আবির তারপর বলল, “আমি আপনার নিকট অনেক কৃতজ্ঞ থাকবো স্যার ।” আবির চেয়ার থেকে উঠে রনির পাশ থেকে যেই চলে আস্তে নেবে, অমনি আবিরের ধরে রাখা রনির হাতটা আবিরকে টেনে ধরলো । আবির দাঁড়িয়ে গেলো । পেছন ফিরে তাকালো । বিছানায় শুয়ে থাকা রনি মুখ থেকে অক্সিজেনের মাস্কটা খুলে ফেললো । তারপর দুর্বলতার সাথে গান ধরলো, “সেই যে হলুদ পাখি! বসে জামরুল গাছের ডালে!..................। ফিরবে না সেকি ফিরবে না! ফিরবে না আর কোনোদিন!” আবিরের নিজের অজান্তেই মুখ থেকে একটা আওয়াজ বেরোলো, “রাজ!”
আফজাল খানের বাড়ির গেইট দিয়ে ঢুকতেই সাবিত দেখলো, একটা পিলারের সাথে আবিরকে বেধে রেখেছে আফজাল খান । সাবিত ভয় পেয়ে গেলো । কিন্তু ও একা কিছু করতে পারবে না । একটু পর শুনলো, আফজাল খান তার এক গুন্ডাকে আদেশ দিচ্ছে, “যা, বন্দুকটা নিয়া আয়, একে শেষ করে দেই!” সাবিত দেরি না করে সবাইকে ডাকার জন্য যেই বেরোতে যাবে, এমন সময় আফজাল খান দেখে ফেললো সাবিতকে । জিজ্ঞেস করলো, “এইযে মাষ্টার মশাই? কোথায় যাচ্ছেন?” সাবিত আফজাল খানের দিকে তাকিয়ে বলল, “জি……মানে……মোর হাতে কি জানি লাগছে, সেইডা ধুইতে ওই গেইটের সামনের ট্যাপের দিকে যাচ্ছিলাম ।” আফজাল খান বলল, “ও, আচ্ছা যান । আর আজকে ছেলেকে একটু তাড়াতাড়ি ছেড়ে দিয়েন ।” সাবিত ডানে মাথা কাত করে বাসার ভেতরে ঢুকলো । ওপরে উঠতে উঠতে অয়নকে মেসেজ দিলো, “তাড়াতাড়ি পুলিশ নিয়ে আফজাল খানের বাসায় আয়! আবির ধরার পড়ে গেছে! ওকে গুলি করে মেরে ফেলবে! হাতে কিন্তু বেশি সময় নেই!”
অয়নের মোবাইলটা যে পাশে রাখা ছিলো, সে দিকেই কাত হয়ে শুয়ে ছিলো রনি । হুট করে মোবাইলের আলো জলে ওঠায় হুট করেই চোখ চলে গেলো এবং “তাড়াতাড়ি পুলিশ” অংশটা দেখে চমকে পুরো নোটিফিকেশনটা দেখলো । রনির বুক কেঁপে উঠলো কথাটা শুনে । তাড়াতাড়ি উঠে দৌড় দিলো । কল করলো এলাকার পুলিশকে । পুলিশ বলল, “হ্যাঁ হ্যাঁ! আমরা তো ওই লোকটারই বাড়ির দিকে আসছি! শীঘ্রই পৌঁছে যাবো!” রনি ঠিক আছে বলে কল কাটলেও নিজে দৌড়তে লাগলো । শীঘ্রই পৌঁছে গেলো আফজাল খানের বাড়ির গেইটের সামনে । দারোয়ান বসে বাইরে । রনি দারোয়ানের চোখ ফাকি দিয়ে ঢোকার জন্য একটা ফন্দি আটলো । একশো টাকার নোট দারোয়ানের একপাশে ছুড়ে মারলো । তারপর দারোয়ানের কাছে যেয়ে জিজ্ঞেস করলো, “ভাই, এটা কি আপনার টাকা?” দারোয়ান মাটিতে তাকালো, তারপর উপুড় হয়ে সেটা তুলে হাতে নিলো । তারপর সামনের দিকে তাকিয়ে দেখলো, রনি সামনে নেই । রনি ততক্ষণে ভেতরে ঢুকে গেছে ।
ভেতরে ঢুকতেই রনি দেখলো, আফজাল খান বন্দুক লোড করলো, রনি আর দেরি না করে আবিরের দিকে দৌড়ে ছুটে গেলো । আফজাল খানের গুন্ডারা রনির আগমন টের পাবার আগেই রনি আবিরের কাছাকাছি চলে এলো আর রনি কাছাকাছি আসতে আসতেই আফজাল খান আবিরের দিকে গুলি তাক করে ছুড়ল । সেই গুলি আবিরের গায়ে না লেগে লাগলো রনির বুকের বা পাশে । মাটির ওপর লুটিয়ে পড়লো রনি । আফজাল খান চেঁচিয়ে গুন্ডাদের বলল, “এটা আবার কে!” এমন সময় বাইরে পুলিশের গাড়ির সাইরেন শোনা গেলো । আফজাল খানের গুন্ডারা আফজাল খানকে ফেলেই নিজেদের জীবন বাচাতে এদিক সেদিক পালানোর চেষ্টা করলেও পালাতে পারলো না । পুলিশ এসে ধরে ফেললো সবাইকে । আফজাল খানকেও । আবির রনির মাথা নিজের পায়ের ওপর রেখে ডাকতে লাগলো, “রনি স্যার! আপনি চোখ বন্ধ করবেন না! একটু কষ্ট করুন স্যার!” আবিরের কাছে থাকা একটা রুমাল দিয়ে রনির বুক চেপে ধরলো আবির, যেনো রক্তক্ষরণ বেশি না হয় । রনি কিছুই বলছিলো না । আবিরের দিকে কেবল তাকিয়েই ছিলো । যেনো আবির ওর কতোটা চেনা, আবিরেরও কেনো যেনো এক মুহূর্তের জন্য মনে হলো, রনি যেনো ওর কতোটা চেনা! একজন পুলিশ তখন এসে আবিরকে বলল, “উনাকে আমাদের গাড়িতে করে নিয়ে চলুন!” আবির রনিকে কাঁধে নিলো । তারপর গাড়িতে তুলে দিলো রনিকে । রনির চোখের পাতা বন্ধ হওয়া পর্যন্ত রনি আবিরের দিকেই তাকিয়ে ছিলো । এছাড়াও গুলির আওয়াজ শুনে বাসা থেকে সবাই নেমে এসেছে । সাবিত তো আগে দৌড় দিয়েছে, কারণ ওর হিদস্পন্দন কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছিলো এই ভেবে, আবিরকে বোধ হয় আফজাল খান গুলি করে দিয়েছে । কিন্তু নিচে এসে আবিরকে সুস্থ দেখে সাবিত একটু স্বস্তি পেলো । কিন্তু রনিকে আহত হতে দেখায় বেশ কষ্ট পেলো ।
সিঙ্গারা খাওয়া শেসে ফিরে এসে মেসেজ দেখে সেখানে দ্বীপকে নিয়ে চলে আসে অয়ন আর নিশান । এসে ওরা দেখে এই কান্ড । সবার সাথে ওরাও এলাকার স্থানীয় হাসপাতালে যায় । সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেবার পর ডাক্তার বলেন, “পেশেন্টের অবস্থা খুব ক্রিটিকাল, ঢাকায় নিয়ে গেলে ভালো হলেও হতে পারে, কিন্তু আমাদের এখানে তেমন উন্নত চিকিৎসা নেই ।” আবির নিশান আর অয়নকে বলল, “তোরা যা! সব কিছু গুছিয়ে নে আর সাবিত ভাইয়ের সাথে ঢাকা ফিরে আয়, আমি উনাকে নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছি ।” এরপর রনিকে নিয়ে আসা হলো ঢাকার একটা বড় হাসপাতালে ।
আগামী পর্বেঃ
আবির তারপর বলল, “আমি আপনার নিকট অনেক কৃতজ্ঞ থাকবো স্যার ।” আবির চেয়ার থেকে উঠে রনির পাশ থেকে যেই চলে আস্তে নেবে, অমনি আবিরের ধরে রাখা রনির হাতটা আবিরকে টেনে ধরলো । আবির দাঁড়িয়ে গেলো । পেছন ফিরে তাকালো । বিছানায় শুয়ে থাকা রনি মুখ থেকে অক্সিজেনের মাস্কটা খুলে ফেললো । তারপর দুর্বলতার সাথে গান ধরলো, “সেই যে হলুদ পাখি! বসে জামরুল গাছের ডালে!..................। ফিরবে না সেকি ফিরবে না! ফিরবে না আর কোনোদিন!” আবিরের নিজের অজান্তেই মুখ থেকে একটা আওয়াজ বেরোলো, “রাজ!”