0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

পরিচয় পর্ব-৩৫৬

পরিচয়(পর্ব-৩৫৬)
(সিজন-১২-ওয়াদা)
হস্তিনী গ্রামে ফিরে মাগরিবের নামাজ পড়ে নিয়ে দ্বীপের বাসার ওখানে গেলো আবির আর রনি । দ্বীপের বাসার একটু দূরে নারকেল গাছের নিচে অয়ন আর নিশান হাটছিলো । সাবিত বসে দ্বীপের সামনে বাসার সামনের পাটিতে বসেছিলো, আবিরকে দেখে উঠে এগিয়ে এসে সাবিত জিজ্ঞেস করলো, “কিছু সন্দেহজনক পেলি?” আবির বলল, “পেয়েছি ভাই, কিন্তু এর সাথে আফজাল খানের যোগসূত্র আছে কিনা এটা এখনও বলতে পারি না ।” সাবিত বলল, “আজকে নয়ন, মানে আফজালের খানের ছেলের কাছ থেকে কিছু তথ্য জানতে পেরেছি!” আবির জিজ্ঞেস করলো, “কি?” সাবিত বলল, “ওই আফজাল খান নাকি হ্যাকিং পারে । আজকে কোচিং করানোর সময় কথার ছলে কথাটা বলেছে আমায় ।” আবির ওপর নিচ মাথা নাড়িয়ে বলল, “হুম! তার মানে ওই সাইবার ক্যাফের সাথে আফজাল খানেরও যোগসূত্র আছে!” সাবির ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো, “সাইবার ক্যাফে?” আবির বলল, “সেখানে আফজাল খান যে গলিতে ঢুকেছিলো, সেই গলিতে চারটে জিনিস নজরে এসেছে আমার । আমার ঠিক বলবো না, আমাদের । আমার আর রনি স্যার-এর । উনি না থাকলে এতো কিছুই আমার নজরে বোধ হয় পড়তো না । প্রথমত, সেখানে একটা ছাপাখানা আছে, যেটার কোনো লাইসেন্স নেই । বোঝাই যাচ্ছে, এটার সাথে অবৈধ কিছুর সম্পর্ক আছে । আর সেটা আফজাল খান হবার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি । দ্বিতীয়ত, সেখানে একটা সাইবার ক্যাফে আছে, যেটা আমার সন্দেহের তালিকায় ছিলো না, কারন অলিতে গলিতে অনেক সাইবার ক্যাফে পাওয়া যায় । সাবিত ভাইয়ের মুখ থেকে এসব কথা শোনার পর আমার মনে হচ্ছে এই সাইবার ক্যাফেও বিশুদ্ধ নয় এবং আফজাল খানের দুই নাম্বারি এখানেও চলে । তৃতীয়ত, সেখানে ভেজাল পণ্যের উৎপন্ন হয় । বিখ্যাত সব কোম্পানির পন্য হুবহু একি মোড়কে প্যাকেট করে বাজারজাত করা হয় । তার চতুর্থত, সেখানে নকল ফকিরের আস্তানা । এটার সাথে অবশ্য আফজাল খানের সম্পর্কের সম্ভাবনা আন্দাজ করা মুশকিল ।” অয়ন জিজ্ঞেস করলো, “তাহলে ভাই? কি করবা এবার?” আবির বলল, “অ্যাকশন ।” নিশান জিজ্ঞেস করলো, “মানে?” আবির বলল, “অপুকে কল করেছি, রওনা হয়েছে ।” রনি জিজ্ঞেস করলো, “একি! আপনি তো আমার সাথেই ছিলেন, কল দিলেন কখন?” আবির বলল, “নামাজ শেষে আমি আপনার আগে বেড়িয়ে গিয়েছিলাম, তখন ।” অয়ন জিজ্ঞেস করলো, “কিন্তু শিওর না হয়েই তুমি অ্যাকশনে নামলে?” আবির বলল, “হ্যাঁ এটা সত্য আফজাল খান এগুলোর সাথে জড়িত কিনা তা শিওর না হয়েই আমি যাচ্ছে, কিন্তু এটা তো আমি শিওর, ওখানের ওই ছাপাকল আর ভেজাল পণ্য উৎপন্ন দুটোই অবৈধ, সেগুলো কার সেটা দেখার জন্যই এই অভিযান । যদি সেটা সত্যিই আফজাল খান হয়ে থাকে, তাহলে পরদিন থেকে তাকে আর হাসিখুশি দেখা যাবে না । আর বাকি যে দুটো জিনিস, সাইবার ক্যাফে আর নকল ফকির, সেগুলোতেও যদি দুর্নীতি ধরা পড়ে তাহলে তো আরও ভালো । আর এই চারটেতেই যদি আফজাল খানের হাত থাকে, তবে আমি একদম নিশ্চিত, আফজাল খানের এতো টাকার উৎস এগুলো থেকেই আসে ।” দ্বীপ তখন বলল, “আবির, একটা কথা । আইজকা দেখলাম, আফজাল খানের সেই ভয়ঙ্কর গুন্ডা ফিরা আইছে ।” আবির বলল, “ভালো হয়েছে । এবার তবে আফজাল খানের সাথে সে-ও ধরা পড়বে ।”
পরদিনের কথা । সকালে সেখানে অভিযান চালানো হয় এবং সত্যিই দুর্নীতির আভাস পাওয়া যায় সেখানে । এমনকি নকল ফকির, সাইবার ক্যাফে দুটোই অবৈধ কাজে ব্যাবহার হতো । খোজ নিয়ে জানা যায়, সব কিছুর মাথা আফজাল খান ।
মাথায় হাত দিয়ে বিল্ডিং-এর নিচে বসে আফজাল খান । চেহারায় টেনশন । এমন সময় এক গুন্ডা এসে বলল, “স্যার ম্যাডাম বলেছেন কাজের লোকটা নাকি আসে নাই, ঘর নাকি মোছা হয় নাই ।” আসলে আবির ইচ্ছে করেই দেরি করেছে । অপেক্ষা করেছে অপকর্ম আফজাল খানের কান অবধি পৌঁছনোর । যেনো গিয়ে দেখতে পারে আফজাল খানের কি অবস্থা হয়েছে এ খবর শুনে । আফজাল খান রাগ দেখিয়ে গুন্ডাকে বলল, “জাহান্নামে যাক ওই কাজের লোক! এদিকে আমার জীবনের বেহাল অবস্থা আর সে পড়ে আছে ঘর মোছা নিয়ে!” সেই সময় আফজাল খানের সেই ভয়ংকর গুন্ডা এসে দাঁড়ালো আফজাল খানের সামনে । আফজাল খান জিজ্ঞেস করলো, “কে এমন হতে পারে যে আমার দুর্নীতি এভাবে ফাঁস করে দিলো!” আফজাল খানের ভয়ংকর গুন্ডা জবাবে বলল, “এখন জানি না বস, কিন্তু কথা দিতেছি! তারে একবার পাই, আর বাঁচায় রাখমু না!” আরেক গুন্ডা এসে বলল, “বস, আপনের ভিসা পাসপোর্ট আর বিমানের টিকিট রেডি ।” আফজাল খান বলল, “হুম! আগে আমারে গা ঢাকা দিতে হবে এখান থেকে ।” এমন সময় আবির ঢুকলো গেইট দিয়ে । আফজাল খান রাগ নিয়ে জিজ্ঞেস করলো, “এতো দেরি হলো কেনো আজ!” আবির ভয় পাওয়ার অভিনয় করলো, কিছু বলল না । তবে একটা জিনিস ওকে সত্যিই ভয় পাইয়ে দিলো । যখনই আফজাল খানের সেই ভয়ংকর গুন্ডা আবিরের দিকে তাকালো আবির দেখলো, একে আবির চেনে! এ সেই জেলের গুন্ডাটা না! আবির যাকে আছাড় মেরেছিলো এবং হাত কেটে দিয়েছিলো! হ্যাঁ তাই তো! হাতের সেই কাটা দাগ এখন দেখা যাচ্ছে! তবে আবিরের ভয়ের শুরু হলো তখন যখন এই গুন্ডা আবিরকে ছদ্মবেশে দেখেও চিনতে পেরে বলল, “তুই!”

আগামী পর্বেঃ
আফজাল খানের বাড়ির গেইট দিয়ে ঢুকতেই সাবিত দেখলো, একটা পিলারের সাথে আবিরকে বেধে রেখেছে আফজাল খান । সাবিত ভয় পেয়ে গেলো । কিন্তু ও একা কিছু করতে পারবে না । একটু পর শুনলো, আফজাল খান তার এক গুন্ডাকে আদেশ দিচ্ছে, “যা, বন্দুকটা নিয়া আয়, একে শেষ করে দেই!”