0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

পরিচয় পর্ব-৩৫৫

পরিচয়(পর্ব-৩৫৫)
(সিজন-১২-ওয়াদা)
নয়নকে ম্যাথ করাচ্ছে সাবিত । আপাতত নয়ন একটা ম্যাথ করছে । একটা জায়গায় আটকে গেলো । সাবিত বলল, “একটু আগেই তো শিখাইলাম, এইহানে এ ইস্কয়ার পিলাস বি ইস্কয়ার এর সুত্র হইবো ।” নয়ন “ও হ্যাঁ!” বলে আবার করা শুরু করলো । সাবিত নিজের ফোনটা হাতে নিলো । কিছুক্ষণ কিছু কাজ করতেই ফোনটা অফ হয়ে গেলো চার্জ শেষ হয়েছে । বিরক্ত হয়ে সাবিত “ধ্যাত!” ধরণের আওয়াজ করলো । নয়ন জিজ্ঞেস করলো, “কি হয়েছে স্যার?” সাবিত বলল, “মোবাইলডা নষ্ট হইয়া যাইতেছে । চার্জ থাকে না বেশি ।” নয়ন বলল, “নতুন একটা কিনে ফেলেন ।” সাবিত হালকা হেসে বলল, “মোরা হইলাম গরীব মানুষ । মোদের কি আর এতো ট্যাকা আছে!” নয়ন জিজ্ঞেস করলো, “আচ্ছা, আপনি কি আমাদের আইসিটি বই নিয়ে ধারণা দিতে পারবেন?” সাবিত জিজ্ঞেস করলো, “হ, আইসিটি তো আমিও পড়ছি । কিন্তু ধারণা বলতে কি ধারণা?” নয়ন জিজ্ঞেস করলো, “হ্যাকিং সম্পর্কে । আমি বইতে দেখেছি লেখা হ্যাকিং নাকি খারাপ । সত্যি কি তাই?” সাবিত বলল, “দুই রকমের হ্যাকিং আছে, একখান ভালা একখান খারাপ । কিন্তু ক্যান?” নয়ন বলল, “হ্যাঁ, আমি সেটাও জানি । ভালো আর খারাপ ।” সাবিত জিজ্ঞেস করলো, “ক্যান কি হইছে?” নয়ন বলল, “না, আসলে আমার বাবা হ্যাকিং এর কাজ পারে । বাবা আমাকে বলে নি, আমি লুকিয়ে লুকিয়ে শুনেছি একবার ।” সাবিত জিজ্ঞেস করলো, “হ্যাকিং করে?” নয়ন বলল, “হ্যাঁ । হয়তো ভালোটাই করে । কিন্তু সেটাই বা কেনো করে আমি তাই-ই বুঝি না ।” সাবিত জিজ্ঞেস করলো, “তোমার বাপ কি আইসিটি নিয়া কোনো চাকরি করে নাকি?” নয়ন বলল, “আমাদের বাবা কি করে আমি নিজেও জানি না । স্কুলের ফর্মে লিখি এনজিও কর্মচারী । আবার মা দেখি তার আত্মিয়-বন্ধুবান্ধবদের বলে বেড়ায় বাবা নাকি কোম্পানিতে কাজ করেন । কিন্তু আদৌ বাবা কিছু করে কিনা আমার সন্দেহ । সারাদিন তো ঘরেই থাকে, শুধু মাঝে মাঝে দেখা যায় কাছে পিঠে কোথাও ঘুরে আসে ।” সাবিত জিজ্ঞেস করলো, “তোমার বাপরে তোমার পছন্দ হয়?” নয়ন জিজ্ঞেস করলো, “এ প্রশ্ন কেনো করছেন?” সাবিত হালকা হাসিমুখে বলল, “এমনি, এইযে তুমি যে কইলা তোমার বাপরে তোমার সন্দেহ হয় ।” নয়ন বলল, “না সন্দেহ তো বলিনি । প্রশ্ন জাগে শুধু ।” সাবিত বলল, “ওইতো, ওইডাই সন্দেহ । আইচ্ছা, এইগুলা বাদ দাও, মোদের ম্যালা ম্যাথ বাকি, ওই গুলা শেষ করো ।” তারপর আবার পড়ায় মনোযোগ দিলো নয়ন ।
ক্যাফের সামনের ট্রাক থেকে প্যাকেটে করে আসছে টমেটো সসের মিনিপ্যাক প্যাকেট । ক্যাফের জন্য এটি একটি জরুরী জিনিস । কাউন্টারের লোকটা টমেটো সসের প্যাকেটগুলো কাউন্টারে এনে রেখে বাকি জিনিসগুলো রান্না ঘরে নিয়ে যেতে বলল । ওর ভেতর বিভিন্ন মশলাপাতি আছে । এরপর কাউন্টারের লোকটা দুজন কর্মচারীকে বলল কাউন্টারে রাখা প্যাকেটগুলো থেকে টমেটো সস বের করে রাখতে । আবির কাউন্টারের লোকটাকে জিজ্ঞেস করলো, “এই সসগুলো কোন কোম্পানির?” কাউন্টারের লোকটা বলল, “দেখতেই তো পাচ্ছেন স্যার! রিপু কোম্পানির! বিখ্যাত কোম্পানি!” আবির জিজ্ঞেস করলো, “সত্যিই রিপু কোম্পানির তো?” লোকটা জিজ্ঞেস করলো, “এমন কেনো বলছেন?” আবির বলল, “প্যাকেটের গায়ে তো বিটিআরসির সিল তো দেখছি না ।” কাউন্টারের লোকটা বলল, “কি জানি, হয়তো ওরা আমাদের জন্য সরাসরি পাঠিয়ে দেয় বলে সিলের দরকার পড়ে না ।” আবির বলল, “একটা মিনিপ্যাক সস নিতে পারি?” কাউন্টারের লোকটা দাত বের করে বলল, “না স্যার! এটা পারবেন না । এটা নিতে হলে ক্যাফে থেকে আপনাকে কিছু নিতে হবে । বার্গার, পিজ্জা ইত্যাদি । এটা আপনি আমাদের লোকাল থানার ওসির কাছ থেকে অনুমতি নিয়েও পাবেন না ।” আবির আর রনি হালকা হাসলো । তারপর আবির লোকটাকে বলল, “আচ্ছা, একটা বার্গার প্যাকেট করে দিন ।” রনি বলল, “একটা কেনো! চলো ওদের সবার জন্য কিনি, আমি টাকা দিচ্ছি না হয় ।” আবির বলল, “না না, একটাই যথেষ্ট । আর টাকাটাও আমি দিচ্ছি । কারণ আপনাকে পড়ে বলছি ।” কাউন্টারের লোকটা এক কর্মচারীকে দিয়ে একটা বক্সে একটা বার্গার আর বার্গারের ভেতরে একটা মিনিপ্যাক সস ভরে আবিরের সামনে হাজির করলো । আবির জিজ্ঞেস করলো, “দাম কতো?” কাউন্টারের লোকটা বলল, “পঁচাশি টাকা । আমাদের অফার চলছে স্যার! এটা একশো বিশ টাকা আসলে, কিন্তু অফারের জন্য আপনাদের পঁচাশি টাকায় দিলাম ।” আবির বলল, “থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ!” তারপর আবির কাউন্টারের লোকটার সামনেই বক্স খুলে মিনিপ্যাক সসটা নিয়ে লোকটাকে বক্সসহ বার্গারটা দিয়ে বলল, “নিন, আপনার অফারে খুশি হয়ে এই ট্রিটটা আপনাকে দিলাম ।” লোকটা বার্গার হাতে নিয়ে হ্যাঁ করে তাকিয়ে রইলো । আবির রনিকে বলল, “চলুন রনি স্যার!” রনি “হ্যাঁ চলুন ।” বলে আবিরের সাথে বেড়িয়ে এলো । বাইরে এসে ট্যাক্সি নিলো ওরা । তখন সন্ধ্যা । ট্যাক্সিতে করে ফেরার পথে আবির দেখতে পেলো সেই দৃশ্য, যেটা ওরা সিসি ক্যামেরায় দেখেছে । একদল ফকিরের মতো দেখতে পুরুষ গলির ভেতরে ঢুকছে । একটু দূরে মহিলাদেরও দেখা যাচ্ছে । ওদের দেখেই বোঝা যাচ্ছে এই গলিতে ঢোকা সেই মহিলারা, কারণ ওদের জামা কাপড় একদম এক । গাড়িতে রনি জিজ্ঞেস করলো, “বার্গার কিনতে বারণ করার কারণটা জানতে পারি?” আবির বলল, “ওই ক্যাফেতে রিপু কোম্পানির ভেজাল ভার্সন আসে । যেটা ওরই সামনের ওই গলিতে উৎপন্ন হয় ।” রনি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো, “সেকি! তাহলে তো এই ক্যাফেতে যারা আসবে, তারা অস্বাস্থ্যকর খাবার খাবে! আমাদের ওই লোকটাকে বলে আসা উচিৎ ছিলো!” আবির বলল, “আপনার কি মনে হয় ওই লোকটা জানে না? ওই লোক ইচ্ছে করেই ভেজালের সাথে হাত মিলিয়েছে । কারণ বেশি মুনাফা করা । তা না হলে পাগলও জানে, বিটিআরসি কর্তৃক অননুমোদিত পণ্য ভেজাল ।” রনি ওপর নিচ মাথা নাড়লো । এরপর সারা রাস্তা ওদের আর তেমন কথা হলো না ।

আগামী পর্বেঃ
সাবিত বলল, “ওই আফজাল খান নাকি হ্যাকিং পারে । আজকে কোচিং করানোর সময় কথার ছলে কথাটা বলেছে আমায় ।” আবির ওপর নিচ মাথা নাড়িয়ে বলল, “হুম! তার মানে ওই সাইবার ক্যাফের সাথে আফজাল খানেরও যোগসূত্র আছে!”