0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

পরিচয় পর্ব-৩৫১

পরিচয়(পর্ব-৩৫১)
(সিজন-১২-ওয়াদা)
“আপনি এখানে হঠাৎ কেনো এসেছেন?” রনিকে জিজ্ঞেস করলো আবির । আবির বলল, “আমাকে আপনিও বোলো না, তুমিই বোলো ।” আবির হালকা হেসে বলল, “না না, আপনি টিচার মানুষ, নাম ধরে না হয় ডাকলাম, কিন্তু আপনি বলে সম্বোধন করে সম্মান দেবার সুযোগ দিন!” রনি হালকা হেসে বলল, “ওকে, ঠিক আছে । আসলে শুনলাম তুমি নাকি বিপদে, এখানের কোন আলফাজ খান না কি যেনো নাম!” আবির বলল, “আফজাল খান ।” রনি বলল, “হ্যাঁ হ্যাঁ, ওই তো, ওই লোকের ছেলেকে নাকি পড়াচ্ছো, তার গুন্ডারা গিয়েছিলো আমাদের স্কুলে । তোমার সার্টিফিকেট নিতে । এমনভাবে বলল, যে মনে হলো তোমার বিপদ ।” দ্বীপ আবিরকে বলল, “দেখছো ভাইয়া! সত্যিই ওই স্কুলে গেছিলো!” আবির রনিকে বলল, “জি, কিন্তু আমি আসলে পড়াচ্ছি না ওকে । পড়াচ্ছে আমার এক ভাই, সাবিত ভাই, কিন্তু আমার পরিচয় ।” রনি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো, “মানে!” আবির তখন সবটা খুলে বলল । রনি বলল, “ও আচ্ছা! তাহলে তো তুমি দেখি সত্যিই বিপদে!” আবির বলল, “জি রনি স্যার ।” রনি তখন বলল, “আমি কি তোমাকে সাহায্য করতে পারি?” আবির বলল, “আরে না না! কি বলেন স্যার! আপনি এমনিই আমার বিপদ শুনে এখানে এসেছেন, এতেই আমি অনেক খুশি । আলাদা করে আপনাকে আমরা বিপদের মাঝে নিতে চাই না । তাছাড়া এখানে আমাদের থাকার জায়গা নেই । মসজিদের স্টোর রুমে রাত কাটাই, আর দিনের বেলা এইদিকটায় লুকিয়ে লুকিয়ে কাটাই ।” রনি হালকা হেসে বলল, “থাকার কোনো সমস্যা নেই । তোমরাও মানুষ, আমিও মানুষ । আর বিপদে কেনো সাহায্য করতে চাই, তার কারণটা তাহলে বলি । আসলে আমি আমাদের স্কুল্র এক স্টুডেন্টকে অনেক কষ্ট দিয়েছিলাম । সেই স্টুডেন্ট আমার অনেক প্রিয় ছিলো । কিন্তু তাকে কষ্ট দেয়ায় সে আমাকে গালি দিয়ে আমার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দেয় । আমি আসলেই তাকে অনেক বড় কষ্ট দিয়ে ফেলেছিলাম । সেই পাপের বোঝা এখনও আমাকে কাদায় । তাই যখন দেখলাম ওই স্কুলের আরেকটা স্টুডেন্ট বিপদে, আমি ভাবলাম তাকে একটু বিপদ মুক্ত করে নিজেকে একটু পাপের বোঝা মুক্ত করবো! প্লিজ! তুমি না কোরো না!” আবির অনেকক্ষণ ভাবলো । কি বলবে বুঝতে পারলো না । রনি আবারও বলল, “প্লিজ!” আবির তখন বলল ,”আচ্ছা ঠিক আছে ।” রনি আবিরকে জরিয়ে ধরে বলল, “থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ!” এরপর রনির সাথে বাকি সবার পরিচয় করিয়ে দিলো আবির ।
দুপুর বেলা সাবিত বেরোচ্ছে পড়াতে যাবে বলে । রনি তখন সাবিতকে বলল, “ভাই, আপনাকে একটা বুদ্ধি দেই, আপনি মোবাইলটা সাথে করে নিয়ে যাবেন, আর মোবাইলের রেকর্ডারটা অন করে রাখবেন, এতে ছেলেটার ইম্পরট্যান্ট কথাবার্তা রেকর্ড করতে পারবেন ।” সাবিত “ঠিক আছে বলে চলে গেলো ।” আবির তখন পাশেই ছিলো । সবটা শুনে বলল, “আরে তাইতো! এই আইডিয়াটা আমার মাথায় আসে নি কেনো!” রনি জিজ্ঞেস করলো, “কি আইডিয়া?” আবির বলল, “ওই লোকের খাটের নিচে তো আর সিসিটিভি ক্যামেরা আমাকে ধরতে পারবে না । আমি যদি উনার খাটের নিচে মোছার সময় মোবাইলের রেকর্ডার অন করে রেখে আসি, তাহলে তো আমি উনার কথাবার্তা এমনিতেই রেকর্ড করতে পারবো ।” রনি বলল, “হ্যাঁ! এটাতো ভালোই আইডিয়া ।” আবির বলল, “কালই আমাকে এই আইডিয়া বাস্তবায়ন করতে হবে ।”
পরদিন ঘর মুছতে যাবার সময় প্যান্টের ভেতর এক্তা মোবাইল নিয়ে গেলো । মোবাইলের রেকর্ডার অন করে । তারপর কায়দা করে সেই মোবাইল আবির রেখে দিলো আফজাল খানের রুমের খাটের নিচের তক্তা আর তোষকের মাঝে । তারপর ঘর মুছে বেড়িয়ে এলো ।
পরদিন সেই মোবাইল নিয়ে এলো আবির । রেকর্ড শুনলো । বেশিরভাগ সময় কোনো আওয়াজ আসে নি, মানে আফজাল খান বেশিরভাগ সময় ঘরে থাকে না । কিন্তু তার চেয়ে বড় কথা যতক্ষণ সময় সে ঘরে ছিলো, এক মুহূর্তের জন্যও সে তার চাকরি নিয়ে কোনো কথা বলে না । তার স্ত্রী বলে সে কোম্পানিতে চাকরি করে । আবির জানে সেটা মিথ্যা, কিন্তু সত্যি হলেও একবারের জন্যেও তো আফজাল খান কোম্পানিতে ফোন কলে কথা বলতো । লোকটা বেশিরভাগ সময়ে ঘরে থাকে না এটা সত্যি, কিন্তু বাকি সময় তো এই এলাকায়েই কাটায় । অল্প কিছু সময় মাঝে মাঝে এলাকার বাইরে যায় কিন্তু শীঘ্রই আবার ফিরে আসে । এর মানে সে কোম্পানির কাজ করে এটা একদম মিথ্যা । আবার সে যদি কোনও ব্যাবসা করতো, তবে সে এতো রিল্যাক্সে থাকতো না । তাহলে তার এতো টাকার উৎস কি? কেবল পৈতৃক সম্পত্তি দিয়ে এতো কিছু করা মোটেও সম্ভব নয় । আবার ড্রাগ ডিলিং এর সাথে সম্পর্ক থাকলে কিছু না কিছু আভাস পাওয়াই যেতো, হয় সে ড্রাগ অ্যাডিক্ট থাকতো, নয়তো সে ড্রাগ ডিলিং নিয়ে কখনো কিছু বলতো । কিন্তু এমন কিছুই তো না । তাহলে? এখন একটাই উপায় । ওই যে অল্প সময়ের জন্য আফজাল খান এলাকার বাইরে যায়, এই বাইরে যাবার সময়টা সে কি করে তা দেখে । তবে এলাকার বাইরে সে সকালেই যায় । তখন আবিরকে ঘর মুছতে হয় । আর সাবিত যেহেতু নয়নকে পড়ায়, তাই সাবিতকে পাঠানো যাবে না । কারণ যতই ছদ্মবেশ দেয়া হোক, সাবিতের আসল চেহারার সাথে ছদ্মবেশের চেহারার তেমন পার্থক্য করা যায় নি । নিশান ছোট । ওকে পাঠানো যাবে না । আর দ্বিপকে তো চিনতেই পারবে । যেহেতু সে মসজিদের মুয়াজ্জিন । হাতে রইলো দুটো উপায় । অয়ন আর রনি । রনি নিজে থেকে বিপদে এলেও এভাবে একজন লোককে বিপদে ফেলানো কি ঠিক হবে? তাই আবির সিদ্ধান্ত নিলো, অয়নকেই পাঠাবে আফজাল খান কোথায় যায় তা দেখতে ।

আগামী পর্বেঃ
ফোনের ওপাশ থেকে রাব্বির গলা এলো । “হ্যালো বাবা! কেমন আছো?” আবির বলল, “হ্যাঁ বাবা । অনেক ভালো আছি । তুমি কেমন আছো?” রাব্বি বলল, “আমিও ভালো আছি বাবা । কিন্তু মা ভালো নেই । আমি বাইরে থেকে শুনলাম মা মাইশা মামিকে বলছিলো, আমি নাকি তোমার ছেলে নই । বাবা আমি কি সত্যি তোমার ছেলে নই?” আবির ভেঙ্গে পড়লো । তবে রাব্বি ওই কাহরামান আর চয়নিকা সন্তান! আবিরের নয়! রাব্বি আবার জিজ্ঞেস করলো, “কি হলো বাবা? আমি কি তোমার সন্তান না?”