পরিচয় পর্ব-৩৪৯
পরিচয়(পর্ব-৩৪৯)
(সিজন-১২-ওয়াদা)
(সিজন-১২-ওয়াদা)
মাথা নিচু করে আসতে লাগলো সাবিত । আবির, অয়ন আর নিশান সাবিতের দিকে তাকালো । ওরা তিনজন দ্বীপের বাড়ির পাশেই বসে ছিলো । অয়ন আবিরকে জিজ্ঞেস করলো, “সাবিত ভাই কি পারেনি? নাকি ধরা পড়ে গেছে!” আবির অয়নেরর কথার জবাব না দিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে সাবিতকে জিজ্ঞেস করলো, “ভাই? ঠিক আছে তো সব?” সাবিতের মুখের দুঃখটা তখন সরে গিয়ে আনন্দের হাসি ফুটে উঠলো । তারপর বলল, “আমি পেরেছি! আমি এখন নয়নের ম্যাথ টিচার!” আবির বলল, “যাক! আলহামদুলিল্লাহ! কিন্তু যেভাবে আসতেছিলা! মনে হচ্ছিলো কি না কি হইছে!” সাবিত বলল, “হ্যাঁ, ওরকম হবার কারণ আছে বটে । শোন তবে । আমাকে ওই আফজাল খান ভেতরে ডাকলো, তারপর নাম জিজ্ঞেস করলো, কিন্তু আমি তো আমার মতো আঞ্চলিক ভাষায় কথা বললাম, আর উনি বললেন, এরকম আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলা কাউকে নেবেন না ।” নিশান জিজ্ঞেস করলো, “আয় হায়! তারপর?” সাবিত বলল, “তারপর……।”
নয়ন ওর বাবাকে বলল, “বাবা, সমস্যা নেই, আমার কোন অসুবিধা হবে না । আর তাছাড়া এমনিতেই টিচার পাচ্ছি না, এখন আমি এনাকে ছেড়ে দিলে দেখা যাবে আর পাবো না ।” আফজাল খান বলল, “ঠিক আছে ।” তারপর সাবিতকে জিজ্ঞেস করলো, “তুমি এসএসসি দিয়েছো কোন স্কুলে?” সাবিত প্ল্যান অনুযায়ী বলল, “জে! মুই যশোর ভেকুটিয়া অনাথ আশ্রমের স্কুলে পড়ালেখা কইরা এস এস সি দিছি । বাপ মা নাই তো জন্ম থেইকা মোর ।” আফজাল খান এরপর কলেজ এবং ভার্সিটির কথা-ও জিজ্ঞেস করলো, সাবিত প্ল্যান অনুযায়ী আবিরের কলেজ আর ভার্সিটির নাম বলল । আফজাল খান এরপর বলল, “ঠিক আছে, যান আমার ছেলের সাথে যান, পড়ান । দেখি আমার ছেলের কেমন লাগে আপনার পড়ানো, তারপর দেখা যাবে আপনি আমার ছেলেকে পড়ানোর যোগ্য কিনা ।”
এ পর্যন্ত বলে থামলো সাবিত । অয়ন তখন জিজ্ঞেস করলো, “এই লোক যদি এখন ভেরিফাই করার জন্য স্কুল, কলেজ বা ভার্সিটিতে যায় তখন কি হবে?” আবির বলল, “যদি কেনো বলছিস, এই লোক সেটা করবেই । তাই তো আমি উনাকে আমার নাম বলতে বলেছি । আমার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে গেলে এরা আমার কাগজই পাবে । আর ভাইরেও সাজিয়েছি সেভাবেই, যেভাবে আমার ছোটবেলার ছবি ওই অ্যাডমিট কার্ডে ছিলো । তেমন একটা পার্থক্য করতে পারবে না আশা করি । তবে বেশি সম্ভাবনা আছে যশোর যাবার । কারণ উনি ভালো করেই জানেন, দুই নাম্বারি করলেও অতো দূরে কেউ দুই নাম্বারির প্রস্তুতি রেখে আসতে চাইবে না । কিন্তু আমার কোনো সমস্যাই নেই, যেখানেই যাক, আমার ইনফরমেশনই পাবে ।” সাবিত জিজ্ঞেস করলো, “কিন্তু আবির, এগুলো করে কি হবে?” আবির বলল, “ভাই, তুমি ওকে পড়াতে পড়াতে কৌশলে ওর বাপ কি করে জানার চেষ্টা করবা । আর এদিকে আমি ঘর মুছতে মুছতে খোঁজার চেষ্টা করবো ।” সাবিত বলল, “আচ্ছা ঠিক আছে ।”
ভেকুটিয়া অনাথ আশ্রম । বর্তমানে আশ্রমটা অনেক হাইফাই করা হয়েছে । আগের সেই রূপটা এখন আর নেই । আগের সেই খোলামেলা পরিবেশটাও এখন আর নেই । সেই আশ্রমের স্কুল ভবনের অফিস রুমে এলো আফজাল খানের এক গুন্ডা । এসে জিজ্ঞেস করলো, “এই স্কুলে আবির নামে কোনো স্টুডেন্ট আছিলো নাকি?” অফিস রুমে থাকা লোকটা বলল, “ভাই, এই নামে তো কতো স্টুডেন্টই আসে, কতো সালের ব্যাচ আর এসএসসির রোল নাম্বার বা রেজিস্ট্রেশন নাম্বার দিলে আমরা খুজে দেখতে পারি ।” লোকটা সাবিতের কাছ থেকে পাওয়া এসএসসিত রোল নাম্বার আর সালটা অফিস রুমে থেকে লোকটাকে বলল যা আসলে আবিরের এসএসসির রোল নাম্বার আর সাল । অফিসের লোকটা তখন সেই ইনফরমেশনগুলো নিয়ে কম্পিউটারে কি কি ঘাটাঘাটি করে বলল, “হ্যাঁ ছিলো, ছেলেটার নাম সালমান খান আবির ।” গুন্ডাটা বলল, “আইচ্ছা, এর যা যা ইনফরমেশন আছে সব দেন ।” ঠিক সেই সময় অফিস রুমে এলো এক লোক । চুলগুলো ঊর্ধ্বমুখী, চোখে চশমা, চেহারাও দারুণ, সুঠাম দৈহিক গঠণ । সেই লোকটা আসলে এই স্কুলের টিচার । এসে অফিসের কর্মকর্তাকে বলল, “ভাই, কয়েকটা গ্রাফ পেইজ থাকলে দেন তো ।” অফিসে থাকা আরেকটা লোক বলল, “দাড়ান স্যার ।” এই স্যার এর চোখ তখন পড়লো, পাশের কর্মচারীর প্রিন্টারের দিকে । দেখলো, সালমান খান আবির নামে একটা ছেলের বিভিন্ন ইনফরমেশন প্রিন্ট করা হচ্ছে । টিচার তখন ওই লোকটাকে জিজ্ঞেস করলো, “কি ব্যাপার ভাই? এই ছেলের ইনফরমেশন প্রিন্ট করছেন যে?” অফিসের লোকটা বলল, “এই যে, এই লোক চাইতাছে ।” টিচার তখন আফজালের খানের গুন্ডাকে জিজ্ঞেস করলো, “আপনি কে?” লোকটা বলল, “মাস্টার মশাই, গ্রাফ নিতে আইছেন নিয়া চইলা যান, আমি কে তা আপনার জাইনা লাভ নাই ।” টিচারটা তখন রেগে গিয়ে বলল, “মানে কি? এসব কি ধরণের অসভ্যতা! আর আপনি যদি এই ছাত্রের সাথে নিজের সম্পর্ক না-ই বলতে পারেন তাহলে এই ছাত্রের ইনফরমেশন নিচ্ছেন কেনো?” আফজাল খানের গুন্ডা বলল, “আইচ্ছা, শোনেন তাইলে, আপনাগো স্কুলের এই ছাত্র আমাগো আফজাল স্যারের পোলারে ম্যাথ কোচিং পড়াইতে আইছে । হেয় কেমন পড়ায় তাই জন্য তার স্কুল কলেজ আর ভার্সিটির নাম শোনা হইছিলো । এহন সেইডাই দেখতে আইছি সেই লোক সত্যি কইছে না মিথ্যা ।” সামনের টিচার জিজ্ঞেস করলো, “আফজাল খান কে?” আফজাল খানের গুন্ডা আবিরের ইনফরমেশনের কাগজগুলো নিয়ে “ময়মনসিংহের হস্তিনী গ্রামে বাড়ি তার, বিরাট বড় মানুষ, পারলে আইসা তার সামনে দাড়াইয়েন!” বলে চলে গেলো ।
আগামী পর্বেঃ
যোহরের নামাজের পর মসজিদের সবাই যখন বেড়িয়ে যাচ্ছিলো, তখন মসজিদের গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে দ্বীপ দেখলো, এক লোক দাঁড়িয়ে বেরোতে থাকা লোকেদের মাঝে কাউকে খুঁজছে । দ্বীপ কিছু মনে না করে ভেতরে গেলো । একটু পর দ্বীপ দেখলো, লোকটা ভেতরে বসে থাকা ২-৩জনকেও দেখছে । হয়তো উনি কাউকে খুঁজছেন ।
নয়ন ওর বাবাকে বলল, “বাবা, সমস্যা নেই, আমার কোন অসুবিধা হবে না । আর তাছাড়া এমনিতেই টিচার পাচ্ছি না, এখন আমি এনাকে ছেড়ে দিলে দেখা যাবে আর পাবো না ।” আফজাল খান বলল, “ঠিক আছে ।” তারপর সাবিতকে জিজ্ঞেস করলো, “তুমি এসএসসি দিয়েছো কোন স্কুলে?” সাবিত প্ল্যান অনুযায়ী বলল, “জে! মুই যশোর ভেকুটিয়া অনাথ আশ্রমের স্কুলে পড়ালেখা কইরা এস এস সি দিছি । বাপ মা নাই তো জন্ম থেইকা মোর ।” আফজাল খান এরপর কলেজ এবং ভার্সিটির কথা-ও জিজ্ঞেস করলো, সাবিত প্ল্যান অনুযায়ী আবিরের কলেজ আর ভার্সিটির নাম বলল । আফজাল খান এরপর বলল, “ঠিক আছে, যান আমার ছেলের সাথে যান, পড়ান । দেখি আমার ছেলের কেমন লাগে আপনার পড়ানো, তারপর দেখা যাবে আপনি আমার ছেলেকে পড়ানোর যোগ্য কিনা ।”
এ পর্যন্ত বলে থামলো সাবিত । অয়ন তখন জিজ্ঞেস করলো, “এই লোক যদি এখন ভেরিফাই করার জন্য স্কুল, কলেজ বা ভার্সিটিতে যায় তখন কি হবে?” আবির বলল, “যদি কেনো বলছিস, এই লোক সেটা করবেই । তাই তো আমি উনাকে আমার নাম বলতে বলেছি । আমার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে গেলে এরা আমার কাগজই পাবে । আর ভাইরেও সাজিয়েছি সেভাবেই, যেভাবে আমার ছোটবেলার ছবি ওই অ্যাডমিট কার্ডে ছিলো । তেমন একটা পার্থক্য করতে পারবে না আশা করি । তবে বেশি সম্ভাবনা আছে যশোর যাবার । কারণ উনি ভালো করেই জানেন, দুই নাম্বারি করলেও অতো দূরে কেউ দুই নাম্বারির প্রস্তুতি রেখে আসতে চাইবে না । কিন্তু আমার কোনো সমস্যাই নেই, যেখানেই যাক, আমার ইনফরমেশনই পাবে ।” সাবিত জিজ্ঞেস করলো, “কিন্তু আবির, এগুলো করে কি হবে?” আবির বলল, “ভাই, তুমি ওকে পড়াতে পড়াতে কৌশলে ওর বাপ কি করে জানার চেষ্টা করবা । আর এদিকে আমি ঘর মুছতে মুছতে খোঁজার চেষ্টা করবো ।” সাবিত বলল, “আচ্ছা ঠিক আছে ।”
ভেকুটিয়া অনাথ আশ্রম । বর্তমানে আশ্রমটা অনেক হাইফাই করা হয়েছে । আগের সেই রূপটা এখন আর নেই । আগের সেই খোলামেলা পরিবেশটাও এখন আর নেই । সেই আশ্রমের স্কুল ভবনের অফিস রুমে এলো আফজাল খানের এক গুন্ডা । এসে জিজ্ঞেস করলো, “এই স্কুলে আবির নামে কোনো স্টুডেন্ট আছিলো নাকি?” অফিস রুমে থাকা লোকটা বলল, “ভাই, এই নামে তো কতো স্টুডেন্টই আসে, কতো সালের ব্যাচ আর এসএসসির রোল নাম্বার বা রেজিস্ট্রেশন নাম্বার দিলে আমরা খুজে দেখতে পারি ।” লোকটা সাবিতের কাছ থেকে পাওয়া এসএসসিত রোল নাম্বার আর সালটা অফিস রুমে থেকে লোকটাকে বলল যা আসলে আবিরের এসএসসির রোল নাম্বার আর সাল । অফিসের লোকটা তখন সেই ইনফরমেশনগুলো নিয়ে কম্পিউটারে কি কি ঘাটাঘাটি করে বলল, “হ্যাঁ ছিলো, ছেলেটার নাম সালমান খান আবির ।” গুন্ডাটা বলল, “আইচ্ছা, এর যা যা ইনফরমেশন আছে সব দেন ।” ঠিক সেই সময় অফিস রুমে এলো এক লোক । চুলগুলো ঊর্ধ্বমুখী, চোখে চশমা, চেহারাও দারুণ, সুঠাম দৈহিক গঠণ । সেই লোকটা আসলে এই স্কুলের টিচার । এসে অফিসের কর্মকর্তাকে বলল, “ভাই, কয়েকটা গ্রাফ পেইজ থাকলে দেন তো ।” অফিসে থাকা আরেকটা লোক বলল, “দাড়ান স্যার ।” এই স্যার এর চোখ তখন পড়লো, পাশের কর্মচারীর প্রিন্টারের দিকে । দেখলো, সালমান খান আবির নামে একটা ছেলের বিভিন্ন ইনফরমেশন প্রিন্ট করা হচ্ছে । টিচার তখন ওই লোকটাকে জিজ্ঞেস করলো, “কি ব্যাপার ভাই? এই ছেলের ইনফরমেশন প্রিন্ট করছেন যে?” অফিসের লোকটা বলল, “এই যে, এই লোক চাইতাছে ।” টিচার তখন আফজালের খানের গুন্ডাকে জিজ্ঞেস করলো, “আপনি কে?” লোকটা বলল, “মাস্টার মশাই, গ্রাফ নিতে আইছেন নিয়া চইলা যান, আমি কে তা আপনার জাইনা লাভ নাই ।” টিচারটা তখন রেগে গিয়ে বলল, “মানে কি? এসব কি ধরণের অসভ্যতা! আর আপনি যদি এই ছাত্রের সাথে নিজের সম্পর্ক না-ই বলতে পারেন তাহলে এই ছাত্রের ইনফরমেশন নিচ্ছেন কেনো?” আফজাল খানের গুন্ডা বলল, “আইচ্ছা, শোনেন তাইলে, আপনাগো স্কুলের এই ছাত্র আমাগো আফজাল স্যারের পোলারে ম্যাথ কোচিং পড়াইতে আইছে । হেয় কেমন পড়ায় তাই জন্য তার স্কুল কলেজ আর ভার্সিটির নাম শোনা হইছিলো । এহন সেইডাই দেখতে আইছি সেই লোক সত্যি কইছে না মিথ্যা ।” সামনের টিচার জিজ্ঞেস করলো, “আফজাল খান কে?” আফজাল খানের গুন্ডা আবিরের ইনফরমেশনের কাগজগুলো নিয়ে “ময়মনসিংহের হস্তিনী গ্রামে বাড়ি তার, বিরাট বড় মানুষ, পারলে আইসা তার সামনে দাড়াইয়েন!” বলে চলে গেলো ।
আগামী পর্বেঃ
যোহরের নামাজের পর মসজিদের সবাই যখন বেড়িয়ে যাচ্ছিলো, তখন মসজিদের গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে দ্বীপ দেখলো, এক লোক দাঁড়িয়ে বেরোতে থাকা লোকেদের মাঝে কাউকে খুঁজছে । দ্বীপ কিছু মনে না করে ভেতরে গেলো । একটু পর দ্বীপ দেখলো, লোকটা ভেতরে বসে থাকা ২-৩জনকেও দেখছে । হয়তো উনি কাউকে খুঁজছেন ।