0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

পরিচয় পর্ব-৩৪৫

পরিচয়(পর্ব-৩৪৫)
(সিজন-১২-ওয়াদা)
“ভাই, এখন কিভাবে কি শুরু করবা?” আবিরকে জিজ্ঞেস করলো অয়ন । আবির বলল, “সেইটাই তো বুঝে পাচ্ছি না! তবে এই আফজাল খানকে একটু সামনে থেকে দেখা দরকার । নিজের পরিচয় গোপন করে ।” দ্বীপ বললো, “আরে! ও তো জমিদার! ওর সাথে দেখা করার জন্য এক সপ্তাহ আগে থেইকা কি অ্যাপোয়েনমেন্ট নেয়া লাগে!” আবির হাসলো । তারপর বলল, “আমি তো অ্যাপোয়েনমেন্ট ছাড়াই দেখা করবো ।” দ্বীপ জিজ্ঞেস করলো, “কিভাবে?” আবির বলল, “দেখিস কিভাবে । তবে তার আগে এই লোকটা সম্পর্কে একটু বল, এই লোক সাথে বডি গার্ড নিয়ে ঘুরে বেড়ায়?” দ্বীপ বলল, “হ! সবসময়! তবে ভাগ্য ভালো, সবচেয়ে নিকৃষ্ট যে বডিগার্ড, মানুষকে মারতেও যার হাত কাপে না, সে নাই আপাতত । কয়েকদিনের জন্য ঢাকা গেছে ।” আবির বলল, “সে থাকলে আরও ভালো হতো । যাই হোক, কজন থাকে সাথে?” দ্বীপ বলল, “একজন গাড়ি থেইকা নামলে দেখি দুইজন দুইপাশে, একজন পিছে, একজন সামনে থাকে । আর গাড়ির ড্রাইভার তো থাকেই ।” আবির বলল, “আরে বাপরে বাপ! এতো বড়লোক! বিল গেটসও এসব মামুলি ব্যাপারে টাকা খরচ করে কিনা সন্দেহ ।” দ্বীপ বলল, “হ । তবে এই লোক যেইখানে হাটে, আশেপাশে লোকজন থাকাও নিষেধ ।” আবির জিজ্ঞেস করলো, “আচ্ছা, এসব নিয়ন উনি কোন সাহসে বানিয়েছেন? এই এলাকার কোন চেয়ারম্যান নেই?” দ্বীপ বলল, “আছে, কিন্তু নামে মাত্র । আসল ক্ষমতা সব এই আফজাল খানের কাছেই । তবে চেয়ারম্যানেরও দোষ নাই, যেমন সাংঘাতিক এই আফজাল খান, প্রাণের ভয়েই চেয়ারম্যান কিছু করতে পারে না ।” আবির বলল, “ঠিক আছে । আমি একটু একা থাকতে চাই ।” বলে উঠে দাঁড়িয়ে আবির সেখান থেকে দূরে চলে গেলো । দূরে পুকুরের ঠিক কিনারায় একটা নারকেল গাছ আছে, সেখানে যেয়ে বসলো আবির । অয়ন বলে উঠলো, “কি ব্যাপার? ভাই আবার ওই খানে গেলো কেনো?” দ্বীপ বলল, “ভাবতেছে । আমাদের বাড়িতে যখন ভাইয়া ছিলো, তখন কোন কিছু ভাবার হইলে ছাদে যাইয়া ভাবতো । একা একা । আচ্ছা! তোমাদের এমনে বসায় রাখছি! তোমাদের জন্য কিছু খাবার দাবার আনি ।” সাবিত বলল, “আরে না না ছোট ভাই! ব্যাস্ত হবেন না । খাওয়া দাওয়া হবে না হয়, আমরা তো এখানেই আছি কয়েকদিন ।”
এদিকে আবির এক দৃষ্টিতে আকাশের দিকে তাকিয়ে বসে আছে । ভাবছে, কি করা যায় । প্রথমেই ভাবলো, ও কেনো এখানে এসেছে । তা হলো, ওসামার কাছে সে ওয়াদা করেছে সে আফজাল খানকে উচিৎ শিক্ষা দেবে । কিন্তু এখানে এসে সে দেখতে পেলো, তার ছোট ভাইয়ের সাথেও আফজাল খান নির্মমতা করেছে । সুতরাং আফজাল খানকে শাস্তি দেবার ইচ্ছা আরও কয়েকগুণ বেড়ে গেলো আবিরের । দ্বিতীয়ত, কিভাবে শাস্তি দেয়া যায় কারণ আবিরের কাছে কোন প্রমাণ নেই । প্রমাণ কোনোভাবে পেলে তো ভালো, আর না পেলে সে অবস্থায় আরেকটা উপায় আছে । আফজাল খানের আয়ের সোর্স । এতো টাকা কোনোমতেই এই অজপাড়া গায়ে থেকে কেউ সৎ উপায়ে আয় করতে পারে না । নিশ্চয় এখানে কোন অসৎ কাজ লুকায়িত আছে ঠিক সেই রজব মোল্লার মতো । কিন্তু সেটা জানতে হলে আবিরকে এই লোকের সম্পর্কে আরও অনেক তথ্য জানতে হবে ।
আসরের নামাজের পর মসজিদ থেকে বের হলো আফজাল খান । গাড়ির কাছে আসতেই সে দেখলো, ওর গাড়ির ড্রাইভার কাকে যেনো গাড়ির কাছ থেকে সরে যেতে বলছে । আর যাকে কথাগুলো বলছে, সে পাগলের মতো করে বলছে, “আমি যাবো না! এই আমি যাবো না! আমি বাবাকে দেখবো! আমি বাবাকে দেখবো!” আফজাল খান ড্রাইভারকে জিজ্ঞেস্ক করলো, “কি হয়েছে?” আফজাল খানের কথা শুনেই পাগল লোকটা আফজাল খানের কাছে এগিয়ে এলো । হাফ প্যান্ট আর ময়লা ছেড়া পাঞ্জাবী পড়া এক লোক । মাথা ভর্তি ময়লা । মুখেও কালি মাখা । বলল, “বাবা! আপনি আমার বাবা! আপনি আমাদের সবার বাবা! আপনি অনেক মহান! অনেক ভালো!” আফজাল খান জিজ্ঞেস করলো, “বুঝলাম, কিন্তু আপনি কে?” সামনের পাগলটা হেসে উঠলো । বলল, “আমার কি ভাগ্য বাবা আমার সাথে কথা বলেছে! বাবা, আমি পাশের গায়ে থাকি! আপনার সুনাম অনেক শুনেছি বাবা! আমি অনেক অসহায়! গরীব! আমায় আপনার সেবা করার সুযোগ দেবেন বাবা! তাহলে আমি মনের আর দেহের উভয় শান্তি পেতাম!” আফজাল খান ওপর নিচ মাথা নেড়ে পাশে একটা বডিগার্ডকে বলল, “এই একে হাজার পাঁচ টাকা দাও, আর একে নজরে রেখো, দরকার পড়লে একে আমি কাজে ডাকতে পারি ।” তারপর আফজাল খান গাড়িতে উঠে গেলো । আফজাল খানের বডিগার্ড পাগল লোকটাকে হাজার পাঁচ টাকা দিয়ে গাড়িতে উঠে গেলো । পাগল লোকটা চেঁচাতে লাগলো, “জয় বাবার জয়!” আফজাল খান চলে যেতেই পাগলের মুখে হাসি ফুটে উঠলো । কিন্তু সে হাসিটার ভেতর পাগলামি মাখা ছিলো না, কোন কাজে সফল হলে যেরকম হাসি বের হয়, সেই হাসি । কারণ এই পাগলটা আর কেউ না, আবির । ওর প্ল্যানের প্রথম অংশ ছিলো এটা ।
“পাগল সেজে ওর কাছে গিয়ে কি এমন করলে তুমি?” আবিরকে জিজ্ঞেস করলো অয়ন । ওরা রাতে একসাথে বসে আছে । আবির বলল, “শোন, এখন তো কেবল প্ল্যানের শুরু । এসব খারাপ মানুষগুলোর একটা প্রবলেম থাকে, তাদের প্রসংসা বেশি করলে হুশ থাকে না । সো এখন সে আমাকে তার কাজে ডাকবে ।” অয়ন হেসে বললো, “হ্যাঁ বলছে তোমাকে কাজে ডাকবে! জীবনেও ডাকবে না!” আবির বলল, “হ্যাঁ, সত্যিই জীবনেও ডাকবে না যদি না আমি দ্বিতীয় প্ল্যানটা কাজে লাগাই ।” আবির দ্বীপকে জিজ্ঞেস করলো, “আচ্ছা, তোর চেনা কোন পুরুষ মানুষ আছে যে আফজাল খানের বাড়িতে কাজ করে?” দ্বীপ বলল, “হ্যাঁ আছে তো । কেনো?” আবির বলল, “আজ রাতেই আমাকে তার কাছে নিয়ে যাবি!”

আগামী পর্বেঃ
আবির বলল, “ও, তাহলে তো আপনার কাজ আহামরি কঠিন কিছুই না । অল্প একটা কাজ ।” লোকটা হেসে বলল, “এহ! আপনে কইরা দেইখেন! এতো বড় বাড়ি, একদিনে মুইছবার গেলে পাছার চামড়া শুকাইয়া হাড্ডি বাইর হইয়া যাইবেনে!” আবির বলল, “আচ্ছা যাই হোক । আমরা খুজছি এমন কোনো বৃদ্ধকে, যাকে আমরা সারাজীবন আরাম আয়েশে রাখবো । বিনিময়ে তাকে কিছুই করতে হবে না ।” হাদি বলল, “অ্যাঁ! এইডা আবার কি জিনিস! এইরকম কিছু কি আদৌ হয়!”