0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

পরিচয় পর্ব-৩৪১

পরিচয়(পর্ব-৩৪১)
(সিজন-১২-ওয়াদা)
গাড়ি এসে থামল ময়মনসিংহের উলুডাঙ্গা বাস স্ট্যান্ডে । সেখানেই আছে সেই কোম্পানি যেখানে চুক্তি করবে আবির সেখানকার সেই ইনগ্রেডিয়েন্টস এর একটা অংশ আবিররা কিনবে সেটার । বিকেলের মধ্যেই কাজ শেষ হয়ে গেলো । আবিরের কাছে সমস্যা নিয়ে যে লোক এসেছিলো, সে বলল, “স্যার! কাজ শেষ । এবার চাইলে আমরা যেতে পারি ।” আবির বলল, “হ্যাঁ, আপনারা সবাই চলে যান । আমি, আমার ছেলে আর আমার শালা এখানে থাকবো আমাদের কিছু কাজে ।” আবিরের কোম্পানির লোকেরা কিন্তু চলে গেলো বিকেলেই । আবিররা গিয়ে উঠলো একটা হোটেলে । আবির বলল, “আজ রাত এখানেই কাটাবো । সকাল হলে চলে যাবো হস্তিনী গ্রামে ।” অয়ন জিজ্ঞেস করলো, “ভাই, তুমি সেখানে কার সাথে কি করবে? তুমি না বললে ওই লোকের পরিবারের সবাইকে মেরে ফেলেছে । তাহলে কার কাছ থেকে ওই লোকের জন্য সাহায্য চাইবে?” আবির বলল, “সবাই মারা গেছে, একজন বেঁচে আছে । লোকটার আসল নাম ওসামা জানতো না । সে ছদ্মনামেই নিজের পরিচয় গড়ে তুলেছে এখানে । ছদ্মনাম সিরাজ । ওসামা লোকটার ভালো বন্ধু ছিলো । ওই এলাকার মসজিদের মুয়াজ্জিন সিরাজ ।” অয়ন বলল, “ওখানে কি থাকবোও ওই লোকের বাসায়?” আবির বলল, “হ্যাঁ । ওসামা আমাকে এও বলেছিলো, সিরাজ লোকটারও অনেক ক্ষতি করেছে গ্রামের ওই প্রভাবশালী লোকটা ।” নিশান জিজ্ঞেস করলো, “নাম কি ওই লোকের?” আবির বলল, “আফজাল খান ।”
খাওয়া দাওয়া করছিলো চয়নিকা আর মাইশা । রাব্বিকেও খাইয়ে দিচ্ছিলো । চয়নিকা বারবার খেয়াল করছিলো, মাইশা ঠিক মতো খাচ্ছে না । তাই দেখে চয়নিকা জিজ্ঞেস করলো, “কি ব্যাপার, কি হয়েছে মাইশা? খাচ্ছো না যে?” মাইশা কেমন আনমনা হয়ে ছিলো । চয়নিকার কথায় চমকে চয়নিকার দিকে ফিরে তাকিয়ে বলল, “হ্যাঁ!......না কিছু না আপু ।” চয়নিকা বলল, “কিছু তো একটা হয়েছে । বলো আমাকে কি হয়েছে!” মাইশা বলল, “আসলে আপু, অয়নের জন্য দুশ্চিন্তা হচ্ছে ।” রাব্বি তখন জিজ্ঞেস করলো, “বাবা আর মামা ভাইয়ার সাথে ময়মনসিংহে গেছে, তাই না?” চয়নিকা জিজ্ঞেস করলো, “তুই জানলি কি করে?” রাব্বি বলল, “তোমরা যে কথা বলছিলে, আমি আড়াল থেকে শুনেছি । পড়ে একজনকে জানিয়েওছি ।” মাইশা আর চয়নিকা চমকে একসাথে চেচিয়ে উঠলো, “কাকে?” রাব্বি বলল, “সাবিত ভাইয়াকে!”
সকাল হতেই ঘুম থেকে উঠে নিশান দেখলো, আবির নেই । আবির ওর অভ্যাসমতো ফজরের নামাজ পড়ে হাটতে গেছে । পাশে ঘুমোচ্ছে নিশান । অয়ন উঠে বাথরুমে গেলো ।
এদিকে আবির হাটছে একটা বাজারের মধ্য দিয়ে । এই এলাকাটা পুরোপুরি শহরও বলা যায় না, আবার পুরোপুরি গ্রামও বলা যায় না । তবে সকাল হতেই বাজারে লোকজনের ভিড় । কে কার আগে টাটকা সবজি নেবে তা নিয়ে পাল্লা চলছে যেনো । এমন সময় আবিরের কাধে কার যেনো হাত পড়লো । পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখতেই আবির অবাক । সাবিত ভাই! আবির জিজ্ঞেস করলো, “একি ভাই! তুমি এখানে! আর তুমি জানলে কি করে আমি এখানে এসেছি!” সাবিত বলল, “তুই একটা অভিযানে এসেছিস, আমি না এসে পারি?” আবির বলল, “এটা ঠিক করো নি ভাই! তুমি সুস্থ হয়েছো কেবলই, আর এখনই এভাবে চলে এলে!” সাবিত বলল, “আরে চিল । আমাকে রুমে নিয়ে চলো । হাফিয়ে গেছি ।” আবির আর সাবিত হোটেলের দিকে রওনা হলো । আবির জিজ্ঞেস করলো, “তুমি জানলা কি করে যে আমি এখানে এসেছি?” সাবিত বলল, “চুনিকে ফোন করেছিলাম, ধরেছিলো রাব্বি । বলল চুনি গোসলে । তোর কথা জিজ্ঞেস করতেই ও বলল ও নাকি চুপি চুপি চুনি আর মাইশার কথা শুনেছে যে তুই নিশান আর অয়নকে নিয়ে মিথ্যা বলে এসেছিস ময়মনসিংহ । পড়ে তোর অফিসের লোকেদের কাছ থেকে ইনফরমেশন নিয়ে চলে এলাম ।” আবির বলল, “তুমি এসেছো এই অসুস্থতার মাঝেও, আমার ভালো লাগছে অনেক । সাহস পাবো আমি অনেক । কিন্তু তুমি না আসলেও পারতে! তোমার এখন রেস্টের দরকার ছিলো ।”
হোটেলে এলো ওরা । ঢুকতেই দেখলো, অয়ন আর নিশান বিছানায় শুয়ে মোবাইল চালাচ্ছে । মোবাইলে ওদের এতোই মনোযোগ, যে ঘরে কে ঢুকল একটু তাকিয়েও দেখলো না । সাবিত বলল, “হায়রে আজকালকার পোলাপাইন! এতো মোবাইলে আসক্ত যে ঘরে কে ঢুকলো তাও একটু দেখলো না!” তখনই দরজার দিকে তাকালো অয়ন আর নিশান । দুজনেই চমকে গেলো । উঠে চলে এলো সাবিতের সামনে । নিশান জিজ্ঞেস করলো, “সাবিত খালু! তুমি!” সাবিত বলল, “হ্যাঁ রে, খবর পেয়ে চলে এলাম ।” অয়ন বলল, “আমার যে কি ভালো লাগছে তোমাকে দেখে!” সাবিত বলল, “থ্যাঙ্ক ইউ শালা বাবু!” আবির বলল, “তোরা খাওয়া দাওয়া করেছিস?” অয়ন বলল, “না, কি খাবো । মাত্রই তো উঠলাম ।” আবির সাইডটেবিলের ওপর রাখা একটা প্যাকেট দেখিয়ে বলল, “ওই যে ওর মধ্যে তোদের জন্য পরোটা আর ডাল রেখেছি! আচ্ছা, তোরা খাওয়া দাওয়া শুরু কর, সাবিত ভাই ফ্রেশ হয়ে নিক । আমি ভাইয়ের জন্য পরোটা ডাল আনছি ।” সাবিত বলল, “আরে না না, ব্যস্ত হয়ো না । আমি খেয়েছি ।” আবির বলল, “ও আচ্ছা ভাই, তাহলে ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নেন । ১০টায় আমাদের হোটেলে চেক আউট । তারপর আমরা রওনা হবো ।” নিশান জিজ্ঞেস করলো, “কোথায় যেনো যাবো আমরা?” আবির বলল, “হস্তিনী গ্রামে, ওয়াদা পালন করতে ।”

আগামী পর্বেঃ
ইমাম সাবিতের কাছে এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করলো, “ভাই, আপনেরা কি খান সায়েবের অতিথি?” সাবিত বলল, “না তো, কেনো?” ইমাম বলল, “তাইলে একটু পিছনে যাইয়া বসেন । আসলে খান সাহেব আর উনার চ্যালা প্যালার জন্য সামনের কাতার ফাঁকা থাকে ।” আবির ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো, “এ আবার কেমন নিয়ম! মসজিদেও আপনারা দু নম্বরি শুরু করেছেন?” ইমাম বলল, “দ্যাহেন আমি আর কি করমু, খান সায়েবের নির্দেশ ।”