0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

পরিচয় পর্ব-৩৪০

পরিচয়(পর্ব-৩৪০)
(সিজন-১২-ওয়াদা)
“একি! তুমি ব্যাগ গোছাচ্ছো কেনো?” চা নিয়ে রুমে আসার পর আবিরকে বিছানায় বসে ব্যাগ গোছাতে দেখে জিজ্ঞেস করলো চয়নিকা । আবির বলল, “ব্যবসায় লসের কারণ খুঁজে পেয়েছি । সেটার লসের সমাধানটাও পেয়েছি । সেই সমাধানের জন্যই একটা ট্রিপে যেতে হবে কাল ।” চয়নিকা জিজ্ঞেস করলো, “সত্যি করে বলোতো? তুমি কি এই কাজের জন্যই যাচ্ছো?” আবির বলল, “আরে হ্যাঁ বাবা! এই কাজের জন্যই যাচ্ছি!” চয়নিকা ওপর নিচ মাথা নেড়ে বলল, “হুম, যাক তুমি সত্যি কথা বলেছো । কারণ মিথ্যা বলার আগে তুমি চশমা ঠিক করে নাও ।” আবির মনে মনে বলল, “যাক! মিথ্যা বলা লাগে নি, শুধু অর্ধেকটা গোপন করা লেগেছে ।” চয়নিকা জিজ্ঞেস করলো, “অয়নও যাচ্ছে?” আবির বলল, “হ্যাঁ! এখন ও আমাদের কোম্পানির একজন । তাহলে ওকে তো যেতেই হবে ।” চয়নিকা জিজ্ঞেস করলো, “কতোদিনে ফিরবে?” আবির বলল, “উমম! সেটা তো শিওরলি বলতে পারি না!” চয়নিকা কিছু না বলে শুধু “ও” আওয়াজ করে নিজের চায়ের কাপটা হাতে নিয়ে চলে গেলো বারান্দায় ।
ব্যাগ গোছাচ্ছিলো অয়ন । নিশান এসে পাশে বসে জিজ্ঞেস করলো, “কোথায় যাচ্ছো তোমরা?” অয়ন বলল, “কোম্পানির কাজে ।” নিশান বললো, “আমিও যাবো!” অয়ন বলল, “তোর এসএসসির ছুটি কিন্তু শেষ! এখন তুই কলেজে পড়িস । পড়াশোনা আছে তোর । আর তাছাড়া তুই তো কোম্পানিরও কেউ না ।” নিশান বলল, “এহ! প্রথমত হ্যাঁ আমার পড়া আছে, কিন্তু এখন সেগুলো তুলনামূলক বেশ কম । ধীরে ধীরে বাড়বে পড়াশুনা । দ্বিতীয়ত, কোম্পানির কেউ না হয়েও যাওয়া যায় আমি জানি । তুমিও বাবা যখন ছিলো না, তখন মাঝে মাঝেই নিজের ফ্রেন্ডদের নিয়ে যেতে । ইউ ফরগোট দ্যাট? তৃতীয়ত……।” অয়ন ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো, “তৃতীয়ত? আমি তো আর কিছুই বলিনি!” নিশান হালকা হেসে বলল, “সেটাই তো রহস্য, যেটা তোমরা কাউকে বলো নি । কোম্পানির কাজ ছাড়াও তোমরা যে সেখানে একটা রহস্যের সমাধান করতে যাচ্ছো!” অয়ন বলল, “আস্তে! কেউ যেনো না জানে!” নিশান বলল, “মামা, আমাকে পিচ্চি নিশান ভেবো না । নাও আ’ম কলেজ স্টুডেন্ট । তবে হ্যাঁ, যদি আমাকেও নিয়ে যাবার ব্যবস্থা করতে পারো তবে কাউকে না বলতে পারি ।” অয়ন চোখ বন্ধ করে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো । তারপর বলল, “আচ্ছা বেশ! আমি দেখি কি করা যায় ।”
“কি! নিশান এসব জানলো কিভাবে!” ছাদে অয়ন আবিরকে সবটা খুলে বলায় কথাটা বলল আবির । অয়ন বলল, “জানি না ভাই! কিন্তু ওকে না নিয়ে গেলে সবাইকে বলে দিবে বলেছে ।” আবির ঘাড়ের পেছনে হাত রেখে বলল, “না! ঝামেলা পিছুই ছাড়ছে না ।” অয়ন বলল, “ভাই, রাজি হয়ে যাও । ও তো বড়ই হয়ে গেছে ।” আবির বলল, “অতো বড়ও হয় নি । রজব মোল্লার বাড়ির ঘটনা মনে নেই তোর! তুই-ই তো তখন ইমম্যাচিউর ছিলি! অথচ তুই পড়তি ভার্সিটিতে!” অয়ন বলল, “কিচ্ছু করার নেই ভাই! চলো না! আর ওকে সামলে রাখার দায়িত্ব আমার ।” আবির বলল, “আচ্ছা বেশ ।” কিন্তু তোর বোনকে মানাই কি করে! অয়ন বলল, “ওটা কোন ব্যাপার না । আপুকে বলে দিয়ো তুমি যে কোম্পানির কাজ বাদে অন্য কোথাও যাচ্ছো না, তার প্রমাণস্বরূপ নিশানকে নিয়ে যাচ্ছো ।” আবির ওপর নিচ মাথা নেড়ে বলল, “ঠিক আছে ।”
সকালে সবার সাথে রেডি হয়ে নাস্তা করতে এসেছে নিশানও । চয়নিকা জিজ্ঞেস করলো, “কিরে! তুই কোথায় যাচ্ছিস আবার!” নিশান বলল, “মা! বাবার সাথে যাচ্ছি । দেখতে, কি কাজ হয় ।” চয়নিকা আবিরের দিকে তাকালো । কিছু না বললেও চেহারা দেখে আবির বুঝে গেলো কি জানতে চায় চয়নিকা । আবির চশমাটা নাড়িয়ে হালকা হাসিমুখে বলল, “হ্যাঁ ওইটাই আর কি! খুব জেদ করছিলোও ছেলেটা, তাই আর না করিনি ।” চয়নিকা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, “ঠিক আছে ।” অতঃপর সবাই রওনা হলো ময়মনসিংহের উদ্দেশ্যে ।
বারান্দায় বসে গল্প করছে চয়নিকা আর মাইশা । পাশেই বসে রাব্বি । মাইশা চয়নিকাকে বলল, “আপু! ওরা কিন্তু কেবলই কোম্পানির কাজে যায় নি!” চয়নিকা বলল, “জানি ।” মাইশা জিজ্ঞেস করলো, “সকালে আবির নিশানের কথা যখন বলেছিলো, তখন চশমা নাড়িয়েছিলো । অর্থাৎ ও নিশানকে নেবার কথাটা মিথ্যা বলেছিলো । আর তাছাড়া ওই ময়মনসিংহেই ওর ওয়াদা পালনের স্থান আর অফিসের সেই ইনগ্রেডিয়েন্টস এর ফ্যাক্টরি হবে পুরো ব্যাপারটা ভাবলেই বোঝা যায়, ওরা অন্য কাজেও যাচ্ছে ।” মাইশা জিজ্ঞেস করলো, “তাহলে যেতে দিলে যে?” চয়নিকা বলল, “দিলাম । একটা জিনিস ভেবে দেখলাম । মানুষের উপকারই তো করছে, অপকার তো আর না । করুক এই কাজ ।” মাইশা জিজ্ঞেস করলো, “তাহলে অয়নকে……আচ্ছা অয়ন না হয় বড় হয়েছে, নিশানকে যেতে দিলে যে?” চয়নিকা বলল, “নিশানও ভালোই বড় হয়েছে । তবু যেতে দিলাম কারণ আমার আবিরের ওপর ভরসা আছে, ও নিজের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত সবাইকে আগলে রাখবে ।”
“যাক! আপু টের পায় নি! ভালো হয়েছে!” বাসে আবিরকে বলল অয়ন । আবির বলল, “না । তোর আপু টের পেয়েছে ।” অয়ন জিজ্ঞেস করলো, “সত্যি! কি করে বুঝলে?” আবির বলল, “শোন, ময়মনসিংহে আসছি শুনেই তোর আপু বুঝে গেছে, একটা বাচ্চাও বুঝে যাবে ।” অয়ন জিজ্ঞেস করলো, “তাহলে আসতে বাধা দিলো না কেনো?” আবির বলল, “হয়তো ও আমার মনের কথা বুঝতে পেরেছে তাই । পরোপকারিতা ।”

আগামী পর্বেঃ
রাব্বি তখন জিজ্ঞেস করলো, “বাবা আর মামা ভাইয়ার সাথে ময়মনসিংহে গেছে, তাই না?” চয়নিকা জিজ্ঞেস করলো, “তুই জানলি কি করে?” রাব্বি বলল, “তোমরা যে কথা বলছিলে, আমি আড়াল থেকে শুনেছি । পড়ে একজনকে জানিয়েওছি ।” মাইশা আর চয়নিকা চমকে একসাথে চেচিয়ে উঠলো, “কাকে?”
…………………………………………………………………………
আবির হাটছে একটা বাজারের মধ্য দিয়ে । এমন সময় আবিরের কাধে কার যেনো হাত পড়লো । পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখতেই আবির অবাক ।