0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

পরিচয় পর্ব-৩৩৮

পরিচয়(পর্ব-৩৩৮)
(সিজন-১২-ওয়াদা)
দুদিন পর জেল থেকে বের হচ্ছে আবির । বেরোনোর সময় ওসামা লোকটাকে খুজলো, কিন্তু পেলো না । তবে একজনের কাছ থেকে খবর পেলো, ওসামার নাকি ফাঁসির রায় দেয়া হয়েছে ।
জেলের বাইরে গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে চয়নিকা, অয়ন, নিশান, মাইশা, সাবিত আর চয়নিকার ছোট ছেলে, যার নাম চয়নিকা দিয়েছে সাজেদুল হাসান রাব্বি । ছেলেটার এখন চার বছরের একটু বেশি বয়স । এদিকে মাইশা আর অয়নেরও বিয়ে হয়েছে প্রায় দু-বছর হলো । আর নিশান এখন একজন টিনেজার । এসএসসি দিয়ে কলেজে ভর্তি হয়েছে সে । আবির এসে সবার সাথে মোলাকাত করলো । তারপর অয়ন আবিরকে বলল, “ভাই! চলো যাই আমরা!” আবির বলল, “তোরা যা, আমি আর চুনি বাচ্চাকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে আসছি ।”
ডিএনএ স্যাম্পল ডাক্তারকে দিলো আবির আর বাচ্চাটারও ডিএনএ স্যাম্পল ডাক্তার রেখে দিলো । তারপর ডাক্তার বলল, “পরশু আপনাদের ডিএনএর রেজাল্ট জানাবো ।” রাতের কথা । বারান্দায় বসে আবির আর চয়নিকা । নিশান পিসিতে গেইম খেলছে, আর রাব্বি নিশানকে ডিসটার্ব করছে । আবির চয়নিকাকে বলল, “আজ বহুদিন পর কোম্পানিতে গিয়েছিলাম বুঝলে, বেশ ভালোই চালিয়েছে অয়ন । যদিও গতবছর লাভ অনেক কম হয়েছে । আল্লাহর কাছে শুক্রিয়া যে লস হয় নি ।” চয়নিকা বলল, “হুম । আচ্ছা, ও তো এতক্ষণ তোমার জায়গায় কাজ করছিলো, এখন তো তুমি চলে এসেছো, এখন কি করবে?” আবির বলল, “ওউ কাজ করবে আমার সাথে । আফটার অল, তোমার বাবার কাছ থেকে পেয়েছি এই কোম্পানি । ওরও এই কোম্পানির ওপর হক আছে ।” চয়নিকা বলল, “এভাবে কেনো বলছো? বাবার কাছ থেকে যে পরিমান টাকা তুমি ঋণ নিয়েছিলে তা তো তুমি শোধ করে দিয়েছো!” আবির বলল, “আমার তো আপন বাবা মা নেই, তোমার বাবা জীবনে যাকেই মা বাবা হিসেবে পেয়েছি, তাদেরই নিজের মা-বাবার মতোই ভালোবেসেছি । তোমার মা বাবা-ও তাই । আর বাবা মায়ের ঋণ কখনও শোধ করা যায় না ।” চয়নিকা একটা হতাশার শ্বাস ফেলে বলল, “হুম । সেই দিনের কথা মনে পড়লে এখনও কান্না পায় । এক রাতের মধ্যে মা বাবা আপু তিনজনকেই হারালাম! আপুর তো পুরো জীবনটাই ছিলো! এতো আগেই চলে গেলো সাবিত ভাইকে রেখে!” আবিরও একটা হতাশার শ্বাস ফেলে বলল, “মৃত্যু কি আর বয়স দেখে আসে! আচ্ছা, পুরোনো কথা বাদ দাও । সাবিত ভাই আমি আজ এলাম আর আজই চলে গেলো?” চয়নিকা বলল, “হ্যাঁ, থাকতে বললাম, কিন্তু থাকলো না ।” রুমে তখন এলো অয়ন । রাব্বি নিশানকে জালাচ্ছে দেখে নিশান রাব্বিকে বকছে দেখে অয়ন বলল, “কিরে! ছোটবেলার কথা মনে পড়ে, আমাকে কি পরিমাণ জালাতি!” অয়ন বলল, “এহ! বড় হয়েছি কোথায়! এখনও জ্বালাতে মন চায়!” অয়ন বলল, “তাহলে বাচ্চাটাকে বকিস না!” অয়ন বলল, “জ্বালাতে মন চায়! জ্বলতে না!” বলে আবার গেইম খেলায় মন বসালো নিশান । রাব্বি অয়নকে জিজ্ঞেস করলো, “মামা! মামা! মামি কি করে?” অয়ন বলল, “যাও সোনা, তোমার মামি রুমেই আছেন ।” রাব্বি, “ওকে!” বলে চলে গেলো মাইশার কাছে । নিশান বলল, “থ্যাঙ্ক গড! আপদটা বিদায় হয়েছে!” অয়ন নিশানের মাথায় চাটি মেরে বারান্দায় গেলো । আবির অয়নকে দেখে বলল, “আরে শালা! বোস বোস!” অয়ন বলল, “তোমরা কি জরুরি কথা বলছিলে? তাহলে আমি চলে যাই ।” চয়নিকা বলল, “আরে না না । বোস ।” অয়ন বসলো । আবির চয়নিকাকে বলল, “তোমার ভাই কিন্তু বেশ ম্যাচিউর হয়েছে!” চয়নিকা বলল, “হ্যাঁ! হতে তো হবেই । যে সব পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে ওর জীবনটা কেটেছে । আচ্ছা, তোমরা কথা বলো, আমি তাহলে আসি ।” বলে চলে গেলো চয়নিকা । চয়নিকা চলে যেতেই আবির অয়নকে বলল, “বল কি বলবি ।” অয়ন বলল, “না, কোম্পানির ব্যাপারে আরকি!” আবির বলল, “উহু, সে ব্যাপারে তুই কথা বলবি না আমি জানি । কারণ সকালে একবার সে ব্যাপারে তোর আর আমার কথা হয়েছে ।” অয়ন কিছুক্ষণ চুপ করলো । তারপর বলল, “জেল থেকে আসার পর থেকে তোমাকে কেমন উদাসীন দেখছি । কোন সমস্যা হয়েছে কি?” আবির বলল, “জানতাম এটাই জিজ্ঞেস করবি ।” অয়ন বলল, “ভাই! কিছু হলে আমাকে বলো । আমি তোমাকে সাহায্য করবো!” আবির বলল, “একজনকে ওয়াদা করেছি । সে ওয়াদা কি করে পালন করবো, সেটাই ভাবছি ।” অয়ন জিজ্ঞেস করলো, “এটা কি আবারও ক্রাইম সংক্রান্ত?” আবির বলল, “হ্যাঁ । সেটাই । তুই তো জানিসই, তোর বোন এতো কিছু হবার পর আমাকে যেতে দেবে না আর এসব কাজে ।” অয়ন বলল, “তাহলে কি তুমি করবে না কাজটা?” আবির বলল, “ওয়াদা যখন করেছি, পালন তো আমাকে করতেই হবে । কিন্তু কি করে করবো, সেটাই ভাবছি ।” অয়ন বলল, “আমি তোমাকে সাহায্য করবো! আর কেউ জানতে পারবে না!” আবিরের ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটল । জিজ্ঞেস করলো, “সত্যি!” অয়ন বলল, “হ্যাঁ! সত্যি! আমি জানি আপু রাগ করবে, এবং আপুর রাগ করার যথাযথ কারণও আছে । কিন্তু তুমি যেটা করছো, সেটা অন্যান্য মানুষের উপকারে আসবে । এবং আমি চাই তুমি মানুষের এই উপকার করা জারি রাখো । তবে একটা কথা দিতে হবে!” আবির বলল, “কি কথা?” অয়ন বলল, “তোমার সাথে সবসময় আমাকে রাখতে হবে! রাজি!” আবির চুপ হয়ে গেলো । কি বলবে বুঝতে পারলো না । অয়ন জিজ্ঞেস করলো, “কি ভাই, রাজি?” অনেক ভেবে-চিন্তে আবির বলল, “ঠিক আছে, রাজি ।”

আগামী পর্বেঃ
অয়ন গলা খাখরে বলল, “আসলে আপু! আমার একটা বন্ধু খুব অসুস্থ, ওর বাড়ি ময়মনসিংহতে । সেখানে তাই ওকে দেখতে যাবো ভাবছি ।” চয়নিকা তখন একটা তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিয়ে অয়নের দিকে তাকিয়ে বলল, “নিশ্চয়ই আবির তোকে নিয়ে নতুন গোয়েন্দাগিরিতে যেতে চায় তাই না!”