0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

পরিচয় পর্ব-৩৩৬

পরিচয়(পর্ব-৩৩৬)
(সিজন-১২-ওয়াদা)
“চলেন ভাই!” ড্রাইভারকে বলতেই গাড়ি ছাড়লো ড্রাইভার । কথাটা বলল চয়নিকা । গাড়িতে আরও আছে অয়ন আর নিশান । আর আবিরের রায়ের শুনানি হবে । সবাই তাই আদালতে যাচ্ছে । অয়ন বলল, “আল্লাহ! আজকে যে কি হবে!” নিশান বলল, “আল্লাহ ভরসা । এভ্রিথিং উইল বে ওকে ।” অয়ন জিজ্ঞেস করলো, “সাবিত ভাইয়ার এখন কি অবস্থা?” চয়নিকা বলল, “প্লাস্টিক সার্জারি তো হয়ে গেছে । এখন চোখ নেয়া বাকি । আজকে উনাকে চোখ দেয়া হবে ।” অয়ন আর কিছু বলল না ।
সকাল ১১টার দিকে আদালতের কার্যক্রম শুরু হলো । জজ এলে জজ বলল, “সমস্ত সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত এই সিদ্ধান্তে উপনীত হচ্ছে যে, চারজন আসামীকে আইন নিজের হাতে তুলে নেবার অভিযোগে আসামী সালমান খান আবিরকে ৫ বছরের কারাদণ্ডে ও দশ লাখ টাকার অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করছে ।” চয়নিকা, অয়ন আর নিশানের চোখে মুখে ভয়ের ছাপ দেখা দিলো । কিন্তু আবিরের চোখে মুখে ভয় নেই । আদালত থেকে বেড়িয়ে যাবার সময়ও চয়নিকা কাঁদল আবিরের জন্য । কিন্তু আবির চয়নিকার হাত ধরে “ভালো থেকো ।” বলে আর নিশানের কপালের চুমু খেয়ে বেড়িয়ে গেলো এবং পুলিশের গাড়িতে উঠে রওনা হলো জেলখানার উদ্দেশ্যে । অয়ন একটা হতাশার শ্বাস ফেলে বলল, “গ্রামবাসীরা এতো আন্দোলন করলো! এই ঘটনা এতো পরিমাণে ভাইরাল হলো! অথচ কিছুতেই কিছু হলো না । ওরা হয়তো মৃত্যুদণ্ডই দিতো, কিন্তু এতো কিছু হবার জন্য হয়তো দেয় নি ।”
বাসার দিকে আসার পথে হঠাৎ চয়নিকা বলল, “আমার কেমন বমি বমি পাচ্ছে! মাথা ঘুরছে!” নিশান জিজ্ঞেস করলো, “ঠিক আছো তো!” চয়নিকা ওপর নিচ মাথা নাড়লো কেবল, কিছু বলল না । কিন্তু একটু পরই জ্ঞান হারালো চয়নিকা । এটা দেখে অয়ন ড্রাইভারকে বলল, “আঙ্কেল! হসপিটালের দিকে চলেন!”
বাইরে বসে অয়ন আর নিশান । একটু পর মাইশা-ও এলো । এসে অয়নকে জিজ্ঞেস করলো, “কি হয়েছে!” নিশান বলল, “কি জানি, আপু বলছিলো আপুর খুব বমি বমি পাচ্ছে আর মাথা ঘুরছে । কিন্তু এই কথা বলার একটু পরই আপু মাথা ঘুরে পড়ে গেলো ।” কথা শুনে চেয়ারে ধপ করে বসে গেলো মাইশা । অয়ন জিজ্ঞেস করলো, “তোমার আবার কি হলো! তুমি ঠিক আছো তো!” মাইশা বলল, “অয়ন! এটা প্রেগনেন্সির লক্ষণ! আপু মনে হয় সন্তান সম্ভবা!” এবার কথা শুনে অয়নও চিন্তায় পড়ে গেলো । জিজ্ঞেস করলো, “এটা কি তবে ওই কাহরামানের বাচ্চা!” মাইশা বলল, “আচ্ছা! আমরা নিজেদের সামলাই! আগে দেখি ডাক্তার কি বলে! আর এটা যে কাহরামানেরই সন্তান তাও তো না হতে পারে! হতেও তো পারে এটা আবির ভাইয়ার সন্তান!” অয়ন ওপর নিচ মাথা নাড়লো । বলল, “হুম । আগে দেখি, ডাক্তার কি বলেন ।” একটু পর ডাক্তার এসে বলল, “চিন্তার কিছু নেই, সুখবর আছে , তোমার বোন সন্তান সম্ভবা!” কথা শুনে ডাক্তারের সামনে মিথ্যা হাসি এনে “থ্যাঙ্ক ইউ ডাক্তার!” বললেও ডাক্তার “ওয়েলকাম ।” বলে চলে যেতেই চিন্তায় পড়ে গেলো ওরা । অয়ন বলল, “আপু এম্নিতেই আবির ভাইয়ের জেলে যাওয়ার চিন্তায় ছিলো! এখন যদি জানতে পারে আপু সন্তান সম্ভবা! কি যে করবে আপু!” মাইশা বলল, “আপু তো জেনে গেছেই মনে হয়! ডাক্তার তো বলেই দিয়েছে হয়তো!” অয়ন বলল, “তাহলে চলো ভেতরে!” মাইশা অয়ন আর নিশান ভেতরে যেয়ে দেখলো, চয়নিকা কাঁদছে । মাইশা চয়নিকার পাশে বসে চয়নিকার হাত ধরে বলল, “আপু! চিন্তা করবেন না! আল্লাহ ভরসা!” চয়নিকা বলল, “চিন্তা কি করে করবো না আমি! একটা শয়তানের বাচ্চা জন্ম নিচ্ছে আমার পেটে! আমি কি করে একে নিজের ছেলে স্বীকৃতি দেবো! আবির কি ভাববে যখন এটা জানতে পারবে! ওর মনের অবস্থাটা কি হবে!!” মাইশা বলল, “আপু! চিন্তা কোরো না! হয়তো এটা আবির ভাইয়েরই ছেলে হবে!” চয়নিকা বলল, “আমি এই বাচ্চা অ্যাবোর্ট করবো!” মাইশা বলল, “আল্লাহ কি বলছো এগুলা আপু! বেচারা শিশুটার সাথে এমন কোরো না! ধরি যদি কাহরামানেরও হয়ে থাকে তাহলে এই বাচ্চাটার কি দোষ! আর যদি কাহরামানের না হয় তখন তো আরও বেশি কষ্ট লাগবে!” অয়ন বলল, “আপু তুমি এক কাজ করো! একটা সময় বুঝে আবির ভাইয়ের কাছ থেকে পরামর্শ নাও ।” মাইশা বলল, “হ্যাঁ । সেটাই ভালো হবে ।”
পরদিন সকালে চয়নিকাকে নিয়ে অয়ন এলো জেলে আবিরের সাথে চয়নিকার দেখা করাতে । সাদা কালো জেলখানার পোশাকে আবির । চয়নিকার কাছ থেকে সবটা শুনে কাঁদতে শুরু করলো আবির । চয়নিকা বলল, “আমি চাচ্ছিলাম বাচ্চাটা অ্যাবোর্ট করতে!” আবির চোখের পানি মুখে বলল, “না চুনি! এটা তুমি কোরো না! যা হয়েছে সব ওই কাহরামানের দোষ । এর জন্য এই অবুঝ শিশুটার কিছু তুমি করবে না! আর এটাও তো সত্যি! বাচ্চাটা আমাদেরও হতে পারে!” চয়নিকা জিজ্ঞেস করলো, “তাহলে আমি কি করবো?” আবির বলল, “অপেক্ষা । বাচ্চাটা হোক । আমার সাথে ডিএনএ মিলে গেলে তো ভালো আর না মিললে……।” থেমে গেলো আবির । চয়নিকা জিজ্ঞেস করলো, “না মিললে কি?” আবির বলল, “না মিললে তাও পালতে হবে । তুমি তো ওর মা আর যাই হোক ।” চয়নিকা জিজ্ঞেস করলো, “তুমি কষ্ট পাবে না?” আবির বলল, “নিশানকেও তো পালছি । কষ্ট হচ্ছে কি?” চয়নিকা কিছু বলল না । এক দৃষ্টিতে আবিরের দিকে তাকিয়ে রইলো ।

আগামী পর্বেঃ
“ভাই! একখান ওয়াদা করবেন?” জিজ্ঞেস করলো ওসামা । আবির জিজ্ঞেস করলো, “কি ওয়াদা?” ওসামা লোকটা বলল, “আমি বাচি কি মরি আমি জানি না! তয় আপনে ওই বদমাইশগুলার শাস্তি দিবার পারবেন?” আবির বলল, “আমি শিওর বলতে পারছি না । তবে আমি চেষ্টা করবো ।” ওসামা লোকটার মন খারাপ হলো । সে কিছু বলল না । লোকটার চেহারা দেখে মায়া হলো আবিরের । মনে মনে ভাবলো, লোকটার সাহায্য করা উচিৎ । তার পরিবার বিপদে । তাই এক প্রকার জোড় করেই আবির লোকটাকে বলল, “ঠিক আছে, আমি ওয়াদা করলাম! ওই বদমাইশ লোককে আমি শাস্তি দেবোই ।”