পরিচয় পর্ব-৩৩৪
পরিচয়(পর্ব-৩৩৪)
(সিজন-১১: আত্মার সাক্ষাৎ)
(সিজন-১১: আত্মার সাক্ষাৎ)
সেদিন দুপুরের কথা । রজব মোল্লার বাড়িতেই গ্রামবাসী, পুলিশ আর অন্যান্য সকলে মিলে একটা ছোটখাটো মিটিং করা হয়েছে রজব মোল্লার সব গোপন কথা ফাঁস করতে । আবির এখনও আসে নি । ও একটা কাজে গেছে । মেঝেতে হাতখড়া পড়িয়ে পা বেধে বসিয়ে রাখা হয়েছে রজব মোল্লা, খোকন, মিতু আর কাহরামানকে । আর বাকিদের ইতোমধ্যে জেলে পাঠানো হয়েছে । একটু পর হঠাৎ সেখানে হাজির হলো একটা অদ্ভুত কিছু । তাকে দেখে একজন গ্রামবাসী বলল, “হায় আল্লাহ! এইডা তো ঝিকানা!” একটু পর সেই জিনিসটা তার এক হাত খুলে ফেললো, আর ভেতর থেকে বেড়িয়ে এলো আসল হাত । এটা আসলে নকল ছিলো । তারপর জিনিসটা মুখোশ খুলতেই দেখা গেলো, এটা আবির । আবির সকলকে বলল, “রাতের আধারে এই হাতটাই মানুষ ভয়ের কারণে ঠিকমতো না দেখে আসল ভেবে ভয় পেতো ।” একজন গ্রামবাসী জিজ্ঞেস করলো, “এইন্না কইরা এগোরে লাভ কি হইতো?” আবির বলল, “সবটা খুলে বলছি আপনাদের!” আবির তখন সকলকে খুলে বলল রিভুর কাছ থেকে শোনা রজব মোল্লার কুকর্মের সকল কথা । এটা শুনে ওসি রুপম জিজ্ঞেস করলো, “আপনি এটা কার কাছ থেকে শুনেছেন?” আবির বলল, “সরি স্যার! আমি আসলে এটা আপনাদের বলতে পারছি না । কারণ যার কাছ থেকে শুনেছি তাকে আমি কথা দিয়েছি । তবে হ্যাঁ, সে যেহেতু অপরাধ করেছে, সেজন্য সে ধরা পড়ে গেলে আমি কিছু করবো না । কারণ সেটা সে ডিজার্ভ করে । আমি নিজে থেকে তাকে ধরিয়ে দেবো না ।” আবির তখন গ্রামবাসীদের জিজ্ঞেস করলো, “আপনারা সকলে কেবল ঝিকানার ভয় না, আরেকটা ভয়েও ছিলেন, ঝিকানারূপী মিতু আপনাদের চোখই তুলতো না, বরং অনেক সময় আপনাদের অপহরণও করে নিয়ে যেতো ।” সব গ্রামবাসী ওপর নিচ মাথা নাড়লো । আবির বলল, “এটা আমি বুঝতে পেরেছি এটা দেখে, ঝিকানার তো কেবল এক চোখ তুলে ফেলে, তবে যাদের এক চোখ নেই তারা কেনো ভয় পায়!” তারপর আবির কিছু ড্রাগস ওদের দেখিয়ে বলল, “ওরা আপনাদের এগুলোর নেশায় বিভোর বানিয়েছে! ওদের প্ল্যান ছিলো এই নেশা আপনাদের শিরায় উপশিরায় ঢুকিয়ে তারপর এগুলোর বিনিময়ে আপনাদের দিয়ে কাজ হাসিল করে নেয়া! কারণ এই নেশা একবার যার হয়, সে আর কখনো এই নেশা থেকে সহজে বেড়িয়ে আসতে পারে না!” একলোক জিজ্ঞেস করলো, “হায় আল্লাহ! তাইলে আমরা কি করুম?” আবির বলল, “আমি বলেছি এটা কঠিন, অসম্ভব না । আপনারা নিজের মন থেকে চাইলেই এটা থেকে বেড়িয়ে আসতে পারবেন । আমি আপনাদের জন্য এই জায়গায় একটা স্কুল তৈরির জন্য আবেদন করবো । এই গ্রামের কোন চেয়ারম্যান নেই?” একজন বৃদ্ধা বলল, “আছে তো! তয় হেয়ও ঝিকানার ভয়ে এই এলাকায় থাহে না ।” আবির বলল, “ঠিক আছে । সমস্যা নেই । আমি ওদের সাথে কথা বলবো ।” আবির তখন ওসি রুপমকে জিজ্ঞেস করলো, “স্যার! এবার বলুন, এই অপরাধীগুলোর কি শাস্তির সিদ্ধান্ত নিলেন ।” ওসি রুপম বলল, “এটা আবার জিজ্ঞেস করতে হয় নাকি! ওদের মৃত্যুদণ্ডের ব্যাবস্থা করবো!” আবির তখন রজব মোল্লার কাছে যেয়ে বলল, “দাদাই! আমি আপনার মতো না, তাই এখনও আমি আপনাকে দাদাই বলেই ডাকবো! আপনি এমন কেনো করলেন?” রজব মোল্লা কিছু বলল না । আবির বলল, “আমাদের সাথে না হয় করেছেন । নিজের ছেলেকে এভাবে কেউ বখে যেতে দেয়! আর আপনার মিতু! ও ছেলে হয়েছে কিন্তু হয়তো সত্যিই হিজরা হয়েছে, কিন্তু এতে লজ্জার কি আছে! ও কি আর ইচ্ছে করে হিজড়া হয়েছে! এটা ২০২১ দাদাই! আমি যতোটা না আপনার ছেলেদের দোষ দেবো, তার চেয়ে হাজারগুণ দোষ দেবো আপনার! আপনি না নিজের ঔরসজাত সন্তানদের ভালো রাখতে পেরেছেন, না আত্মীয়স্বজনদের ভালো রাখতে পেরেছেন! অন্যান্য আত্মীয়দের আপনি যে এভাবেই খুন করেছেন তা তো জানা-ই আছে!” ঠিক তখন কাহরামান আর রজব মোল্লা অট্টহাসি হেসে উঠলো । মিতু আর খোকন মুচকি হাসছে । আবির এবার রেগে গিয়ে বলল, “লজ্জা নেই আপনাদের!” কাহরামান হাসতে হাসতে আবিরকে বলল, “তোর বউয়ের গর্ভে আমার যে বাচ্চার জন্ম হইবো সেইডার খেয়াল রাখিস ।” কথা শুনে আকাশ থেকে পড়লো আবির । চয়নিকাও হতভম্ব হয়ে গেলো । আবির একবার চয়নিকার দিকে তাকালো । চয়নিকার চেহারা দেখেই বোঝা যাচ্ছে কথা শুনে সে-ও হতভম্ব হয়ে গেছে । কিন্তু এদিকে ৪ আসামী যেনো কথা শুনে পৈশাচিক আনন্দ পেয়ে গেছে । মিতু বলল, “ওমা! তাই নাকি! আমি মামি হমু!” খোকন বলল, “আরে মামি ক্যা? মামা!” মিতু বলল, “ওই হইলো!” রজব মোল্লা বলল, “আর আমি হমু দাদা!” তারপর আবার চারজন পৈশাচিক হাসি হেসে উঠলো । ওসি রুপম ধমক দিলো চারজনকে, “শাটআপ! আর একটা কথাও বলবি না!” আবির পাথরের মতো দাঁড়িয়ে আছে । হঠাৎ ওর চোখ গেলো ওসি রুপমের কোমরে থাকা রিভালবারের দিকে । মুহূর্তের মধ্যে সেটা কেড়ে নিলো আবির, তারপর পরপর চারটে বিকট আওয়াজে আকাশ বাতার স্তব্ধ হয়ে গেলো, গাছের পাখিরা ভয়ে উড়ে চলে গেলো । আবির রজব মোল্লা, মিতু, খোকন আর কাহরামানকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছে ।
আগামী পর্বেঃ
সাবিত একটা হতাশার শ্বাস ফেলে বলল, “কি আর হবে! একটা চোখই তো থাকবে না তাও আমার! এক চোখে দুনিয়া দেখতে হবে ।” তখন একজন গ্রামবাসী এসে বলল, “বাইজান! আমি মজিদ! আমার তো একখান চোখই আছে । আর আমারে ডাক্তারে কইছে আমি আর বেশিদিন বাচুম না । আপনেরা আমার এতো বড় উপকার কইরলেন! আমি চাই আমাগো গেরামের পক্ষ থেইকা আপনাগো এই ছোটো উপকারডা করতে!”
আগামী পর্বেঃ
সাবিত একটা হতাশার শ্বাস ফেলে বলল, “কি আর হবে! একটা চোখই তো থাকবে না তাও আমার! এক চোখে দুনিয়া দেখতে হবে ।” তখন একজন গ্রামবাসী এসে বলল, “বাইজান! আমি মজিদ! আমার তো একখান চোখই আছে । আর আমারে ডাক্তারে কইছে আমি আর বেশিদিন বাচুম না । আপনেরা আমার এতো বড় উপকার কইরলেন! আমি চাই আমাগো গেরামের পক্ষ থেইকা আপনাগো এই ছোটো উপকারডা করতে!”