0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

পরিচয় পর্ব-৩৩৩

পরিচয়(পর্ব-৩৩৩)
(সিজন-১১: আত্মার সাক্ষাৎ)
একে একে ৮টা স্পিডবোট এলো বিলের ধারে । তারপর তাতে করে পুলিশ ফোর্স রওনা হলো । আবিরও সাথে গেলো । ওসি রুপম বারণ করেছিলো ঠিকই, কিন্তু তবুও গেলো । সাবিতও যেতে চেয়েছিলো, কিন্তু সাবিতকে আবির রাখলো এই বলে এখানে ওদের যা যা আছে সব গোছাতে । ওসি রুপম যে স্পিডবোটে ছিলো, আবিরও সেটায় ছিলো । স্পিডবোট দিয়ে যাবার সময় আবিরকে ওসি রুপম আবিরকে বলল, “আপনার ধারণাই সত্যি হয়েছে! এখান থেকে দু কিলোমিটার দূরে একটা সন্দেহজনক জাহাজ দেখা গেছে!” আবির কিছু বলল না ।
এদিকে সাবির নিজের ঘরে গিয়ে সব কিছু গোছাতে লাগলো । নিজে ব্যাগ ঘোছানোর সময় নিজের একটা ছবি দেখলো সাবিত । হঠাৎ করে বুকটা কেমন ছ্যাঁত করে উঠলো । আয়নার সামনে দাঁড়ালো সাবিত । একবার আয়নায় নিজের বিকৃত চেহারাটা দেখছে, একবার ছবিতে পুরোনো নিজেকে দেখছে । সাবিতের শরীর থর থর করে কাঁপছে । নিজেই নিজেকে বলল, “আঁখি! ভালো হয়েছে তুমি আমাকে ছেড়ে চলে গেছো! নাহলে আজ আমাদের সাথে তুমিও হয়তো এরকম একটা বিপদে পড়তে! আর সেখান থেকে বেঁচে ফিরলেও সেই পুরোনো সাবিতকে হয়তো হারিয়ে ফেলতে! আচ্ছা! এই চেহারা নিয়ে আমারও কি বেঁচে থাকা উচিৎ?” পাশের ড্রেসিং টেবিলের দিকে তাকালো সাবিত । একটা ব্লেড দেখতে পেলো ।
জাহাজের কাছাকাছি চলে এলো ৮টি স্পীড বোট । সাথে সাথে সেই এলাকার পুলিশকে জানিয়ে যতো পুলিশ আছে সকলকে ডেকে জড়ো করলো ওসি রুপম । ডিঙ্গি নৌকো বা স্পীড বোট অনেক কিছু মিলিয়ে এ যেনো এক হলিউড সিনেমার দৃশ্য । জাহাজের ধারে এক মুহূর্তের জন্য পরিস্থিতি দেখে আবার ভেতরে চলে গেলো রজব মোল্লা । আবির বলল, “ওই যে! রজব মোল্লা!” জাহাজটা বেশ ধীরে ধীরে চলছিলো, তাই পুলিশের জন্য খুব একটা দেরি হলোনা জাহাজটার চারপাশ ঘিরে ফেলতে । মাইক নিয়ে ওসি রুপম বারবার ওদের সতর্ক করে দিলো, “আত্মসমর্পণ করে ফেলো! নয়তো আমরা গুলি করতে বাধ্য হবো!” অনেকক্ষণ ধরে ওদের সতর্ক করার পরও ওদের কাছ থেকে যথাযথ কোন সারা পেলো না ওসি রুপম । কিন্তু একটু পরই ঘটলো একটা ভয়ানক ঘটনা । একজন হঠাৎ জাহাজের কিনারায় এসে একটা বোমা ছুঁড়ে মারলো একটা স্পীড বোটের ওপর । সেই স্পীডবোটটা বিস্ফোরিত হলো । আবির ওসি রুপমকে বলল, “স্যার! এবার আমাদেরও অ্যাকশনে যাওয়া উচিৎ!” ওসি রুপম সকল পুলিশকে নির্দেশ দিতেও প্রত্যেক পুলিশ তাদের কাছে থাকা গুলি এলোপাথাড়ি ছুড়তে লাগলো আবির স্পীডবোটে একটা বাইনোকুলার দেখতে পেলো । সেটা হাতে নিয়ে জাহাজের আনাচ কানাচ দেখতে লাগলো । জাহাজের একটা ছোট গোল জানালার দিকে বাইনোকুলার নিয়ে যেতেই আবির দেখলো, সারি সারি সাজানো অ্যালকোহলের বোতল । আবির তখন ওসি রুপমকে বলল, “স্যার! ওই জানালার কাচ গুলি করে ভাংতে পারবেন?” ওসি রুপম বলল, “হ্যাঁ পারবো, কিন্তু কেনো?” আবির জবাব না দিয়ে আরও জিজ্ঞেস্ক করলো, “আপনার কাছে ম্যাচ বা গ্যাসলাইট আছে?” ওসি রুপম বলল, “গ্যাসলাইট আছে ।” আবির বলল, “ওটা আমাকে দিন আর গুলি করে জানালা ভাঙ্গুন ।” ওসি রুপম সেই জানালাটা ভেঙ্গে আবিরকে গ্যাসলাইটটা দিলো । আবির ওর জামাকাপড় খুলে একটা ভেতরে থাকা হাফ প্যান্ট পড়া অবস্থায় একটা পলিথিনে গ্যাসলাইটটা ভরে পানিতে ঝাপ দিলো । ওসি রুপম জিজ্ঞেস করলো, “একি! আপনি কি করছেন!” আবির কোন জবাব দিলো না । সেই জানালাটার কাছে গেলো আবির । এই জানালাটা এতোই ছোটো, আবিরের পক্ষে ভেতরে যাওয়া সম্ভব না । আবির ভেতরে হাত দিয়ে দেখলো, পাশেও কিছু অ্যালকোহলের বোতল আছে । জানালার কাচে লেগে থাকা টুকরোর সাথে আবিরের হাত কেটে গেলেও আবির থামলো না । হাতের নাগালে যতগুলো অ্যালকোহলের বোতল পেলো। ভাংল আবির । দ্রুত মেঝেটা অ্যালকোহল দিয়ে বেশ ভরে গেলো । ঝাঁকুনিতে অ্যালকোহল বাকি অ্যালকোহলের বোতলের দিকেও গেলো । আবির তখন হাতে থাকা গ্যাসলাইট নিয়ে মেঝেতে ভাঙ্গা অ্যালকোহলগুলোর ওপর আগুন ধরিয়ে দিলো । সাথে সাথে সেই জায়গা আগুনের ফুলকি তৈরি হলো, এবং সেই আগুন বাকি অ্যালকোহলের কাছে যেতেই বিকট বিস্ফোরণে জাহাজের এক অংশ ভেঙ্গে গেলো । ওসি রুপম ভয় পেল । নিজে নিজেকে বলল, “হায় আল্লাহ! আবির!” জাহাজের ভেতরে পানি যাওয়া শুরু করেছে । কিন্তু পানিতে আবিরকে দেখা গেলো না । আশেপাশে সবাই টর্চ মেরে আবিরকে খুঁজছে । কোথায় গেলো আবির! একটু পর হঠাৎ ওসি রুপমকে চমকে দিয়ে ওসি রুপমের স্পীডবোটের পাশে ভেসে উঠলো আবির । তারপর স্পীডবোটে উঠে পড়লো । ওসি রুপম বলল, “আপনি তো ভয় পাইয়ে দিয়েছিলেন!” আবির বলল, “ভয়ে কিছু নেই! এখন জাহাজটা ডুবতে বেশি সময় লাগবে না ।” জাহাজ থেকে অনেকের আর্তনাদের আওয়াজ এলো । অনেকের পানিতে ঝাপ দিতে লাগলো, কিন্তু তাদেরও ধরতে লাগলো পুলিশ । লাইফবোটে করে পালানোর ব্যর্থ চেষ্টা করলেও পুলিশ ধরলো কাহরামান, রজব মোল্লা, আর মিতুকে । খোকনকেও ধরা হলো পানিতে ঝাঁপ দেবার সময় । আবিরদের স্পীডবোট নিয়ে যাওয়া হলো কাহরামান আর রজব মোল্লার স্পীডবোটের কাছে । আবির রজব মোল্লাকে দেখে জিজ্ঞেস করলো, “কেমন আছেন দাদাই?” রজব মোল্লা রাগ নিয়ে চেঁচাতে লাগলো, “ছাড়বো না! তোদের ছাড়বো না!” আবির হেসে বলল, “তেজ দেখি তাও কমেনি আপনাদের! কে কাকে ছাড়ে সকাল হলেই দেখা যাবে!” এরপর সবাইকে নিয়ে সকল পুলিশ রওনা হলো রজব মোল্লার বাড়ির পথে ।

আগামী পর্বেঃ
কাহরামান আর রজব মোল্লা অট্টহাসি হেসে উঠলো । মিতু আর খোকন মুচকি হাসছে । আবির এবার রেগে গিয়ে বলল, “লজ্জা নেই আপনাদের!” কাহরামান হাসতে হাসতে আবিরকে বলল, “তোর বউয়ের গর্ভে আমার যে বাচ্চার জন্ম হইবো সেইডার খেয়াল রাখিস ।” কথা শুনে আকাশ থেকে পড়লো আবির । চয়নিকাও হতভম্ব হয়ে গেলো ।