0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

পরিচয় পর্ব-৩৩২

পরিচয়(পর্ব-৩৩২)
(সিজন-১১: আত্মার সাক্ষাৎ)
রাত তখন ৩টা । ইতিহাসের পাতায় আজ যেনো বহু বছর পর এতো রাতেও নির্জন নয় ঝিকানা গ্রাম । রজব মোল্লার বাড়ি ঘেরাও করেছে পুলিশ । ওসি রুপম আগেই এই গ্রামের কাছাকাছি একটা পুলিশ স্টেশনে কল করে জানিয়ে রেখেছিলেন এবং তারা এসে ঘেরাও করে রেখেছে এই বাড়ি । তাদের দেখে গ্রামের লোকজন জড়ো হয়েছে এই বাড়ির আসেপাশে । খানিক পর জিপে করে হাজির হলো ওসি রুপমসহ আবির, চয়নিকা, সাবিত, মাইশা আর অয়ন । এখানকার একজন জুনিয়ন পুলিশ ওসি রুপমকে এসে বলল, “স্যার! ভেতর থেকে কারও আওয়াজ আসছে না, আমরা বলছি বার বার আত্মসমর্পণ করতে কিন্তু কোন আওয়াজ আসছে না!” ওসি রুপম জিজ্ঞেস করলো, “কতক্ষণ ধরে ডাকছেন?” জুনিয়র পুলিশটা জবাব দিলো, “প্রায় দু ঘন্টা হয়ে গেছে স্যার!” ওসি রুপম বলল, “তাহলে এক কাজ করুন, কয়েকজন পুলিশ ভেতরে পাঠিয়ে দিন এবং চিরুনি তল্লাশি করতে বলুন! আর আপনিও সাথে যান!” জুনিয়র পুলিশ, “ওকে স্যার!” বলে আরও কয়েকজন পুলিশ নিয়ে ভেতরে গেলো । অয়ন আবিরকে জিজ্ঞেস করলো, “ভাই! যদি ভেতরে কাউকে না পাওয়া যায়! যদি ওরা পালিয়ে যায়! তাহলে নিশান আর জরিনা আপুকে কি ওরা নিয়ে গেছে?” আবির বলল, “ধৈর্য ধর!” ওসি রুপম বলল, “চিন্তা করবেন না! এই বদমাইশ মহাকাশে চলে যাক, বা পাতালে চলে যাক, আমি ওকে খুঁজে বের করবোই!” একটু পর রজব মোল্লার বাড়িতে ঢোকা একজন পুলিশ অফিসার এলো । বলল, “স্যার! ভেতরে কেউ নেই! সবাই বোধ হয় পালিয়েছে!” ওসি রুপম বাকিদের বলল, “এই! সবাই চলো এবার ভেতরে!” ঠিক তখনই আরেকজন এসে বলল, “স্যার! নিচে ফাকা একটা গুদামঘরে দুটো বডি পাওয়া গেছে, একটা মহিলা আর একটা বাচ্চার!” মাইশা ভয়ে ভয়ে বলে উঠলো, “আল্লাহ! জরিনা আপু আর নিশানের না তো!” কথা শুনে জ্ঞান হারিয়ে পড়ে গেলো চয়নিকা । ওসি রুপম অস্থির ভাবে বলল, “কি বলছো! এ্যাম্বুলেন্স কল করো!” একটু পরই সেই জুনিয়র পুলিশ এসে বলল, “জি স্যার! এ্যাম্বুলেন্স ডেকেছি! কিন্তু স্যার…।” ওসি রুপম জিজ্ঞেস করলো, “কিন্তু কি?” জুনিয়র পুলিশ বলল, “স্যার, ওরা বোধ হয় তাড়াহুড়া করে গুলি করে পালিয়েছে । সেই গুলি মহিলাটার বুকে লেগেছে আর মহিলাটা মারা গেছে ।” কথা শুনে আর্তনাদ করে উঠলো মাইশা আর অয়ন । সাবিত চয়নিকার মুখে পানি ছিটিয়ে চয়নিকার জ্ঞান ফেরালো । সাবিতও কথা শুনে কষ্ট পেলো । আবিরের চেহারায়ও দেখা গেলো কষ্টের ছাপ । জুনিয়র পুলিশ বলল, “কিন্তু স্যার, ওরা বাচ্চাটার গায়ে গুলি লাগাতে পারেনি, যতদুর মনে হচ্ছে, ওই মহিলা বাচ্চাটাকে সেভ করতে যেয়ে নিজে আঘাত পেয়েছেন । কারণ উনার শরীরে দুটো গুলির আঘাত । আরেকটা বাচ্চার হাতের কোণা দিয়ে গেছে কেবল, সে জায়গা জখম হয়ে গেছে । হয়তো ওরা তাড়াহুড়ায় এতো কিছু খেয়াল করেনি । বাচ্চাটা ভয়ে জ্ঞান হারিয়েছে ।” কথা শুনে স্বস্তি পেলো চয়নিকা আবিরসহ বাকিরাও । আবির নিজেকে শক্ত করে বলল, “জরিনা আপুকে যারা মেরেছে তাদের আমি কিছুতেই ছাড়বো না!” একটু পর আরেকজন পুলিশ এলো এখানে । বলল, “স্যার, কোথাও কেউ নেই! অনেক খুঁজেছি আমরা! তবে হ্যাঁ, গুদাম ঘরে কিছু ড্রাগস এর গুড়ো পেলাম আমরা।” ওসি রুপম কিছু একটা বলতে যাবে, কিন্তু তার দুজন পুলিশ জরিনার লাশ আর নিশানের বডি নিয়ে এলো ওদের সামনে । জরিনা আপু শরীর ফ্যাকাশে আর ঠান্ডা হয়ে গেছে । উনাকে দেখে পুরোনো স্মৃতি মনে পড়তে লাগলো সকলের । আবির বেশ ভেঙ্গে পড়লো । নিশানকে তুলে দেয়া হলো চয়নিকার কোলে । ওসি রুপম চয়নিকাকে বলল, “আপনি এক কাজ করুন । বাচ্চাকে দিয়ে হাসপাতালে যান! আমাদের জীপ নিয়ে যান সাথে ।” অয়ন বলল, “আমিও যাবো আপুর সাথে!” মাইশা বলল, “হ্যাঁ আমিও!” ওসি রুপম বলল, “আচ্ছা ঠিক আছে । এই ড্রাইভার!” ড্রাইভারকে ডাকল ওসি রুপম । তারপর ড্রাইভার এলে বলল, “এনাদের হাসপাতালে নিয়ে যাও ।” তারপর জীপে করে হাসপাতালের দিকে রওনা হলো চয়নিকা, অজ্ঞান নিশান, মাইশা আর অয়ন । সাবিত ওসি রুপমকে জিজ্ঞেস্ক করলো, “কিন্তু ওই বদমাইশগুলো গেলো কোথায় তাহলে?” আবির বলল, “আমি জানি! ওরা নিশ্চয়ই এই পাশের নদীপথ দিয়ে চলে গেছে! এই বিলটা পাশের যমুনা নদীর শাখা!” ওসি রুপম কল করলো উনার অন্য কিছু পুলিশকে । “হ্যালো! তোমরা ৮টা স্পিডবোট নিয়ে চলে এসো যমুনা নদীর পাড়ে এবং আমি ম্যাপে একটা লোকেশন দিচ্ছি, সেই অনুযায়ী নদীর একটা শাখা দিয়ে আসবে!”
নিশানকে ডাক্তার কেবিনেই চিকিৎসা করাচ্ছে যেহেতু অবস্থা তেমন গুরতর নয় । একটু পর ডাক্তার বলল, “ও খুব ভয় পেয়েছে, তাই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে । তবে ভয়ের কিছু নেই । আমি ওকে কিছু ইনজেকশন দিচ্ছি, এতে ওর ভালো হবে । আর আঘাত পাওয়া জায়গাটা আমি ড্রেসিং করে দিয়েছি ।” চয়নিকা জিজ্ঞেস করলো, “ডাক্তার! ওর জ্ঞান কখন ফিরবে?” ডাক্তার বলল, “কাল সকাল নাগাদ ফিরে আসবে আশা করি ।” বলে ডাক্তার চলে গেলো । চয়নিকা ছেলের হাত জড়িয়ে ধরে বসে থাকলো । অয়ন বলল, “কি একটা ঝড় গেলো আমাদের ওপর!” মাইশা বলল, “এখনও সেই ঝড় শেষ হয় নি! আল্লাহই জানেন ওদিকে কি হচ্ছে! আর জরিনা আপুর জন্যও খারাপ লাগছে খুব!” অয়ন প্রায় কাঁদতে কাঁদতে বলল, “কি আর বলবো! কপালে মৃত্যু লেখা ছিলো উনার!” চয়নিকা কিছু বলল না ।

আগামী পর্বেঃ
আবির তখন হাতে থাকা গ্যাসলাইট নিয়ে মেঝেতে ভাঙ্গা অ্যালকোহলগুলোর ওপর আগুন ধরিয়ে দিলো । সাথে সাথে সেই জায়গা আগুনের ফুলকি তৈরি হলো, এবং সেই আগুন বাকি অ্যালকোহলের কাছে যেতেই বিকট বিস্ফোরণে জাহাজের এক অংশ ভেঙ্গে গেলো । ওসি রুপম ভয় পেল । নিজে নিজেকে বলল, “হায় আল্লাহ! আবির!” জাহাজের ভেতরে পানি যাওয়া শুরু করেছে । কিন্তু পানিতে আবিরকে দেখা গেলো না ।