পরিচয় পর্ব-৩৩১
পরিচয়(পর্ব-৩৩১)
(সিজন-১১: আত্মার সাক্ষাৎ)
(সিজন-১১: আত্মার সাক্ষাৎ)
“স্যার! আমাদের হেল্প লাগবে!” ভেজা শরীরে পুলিশ স্টেশনে ঢুকলো তিনটে মানুষ । আবির, মাইশা আর অয়ন । পুলিশ স্টেশনে থাকা ওসি আবিরকে দেখে জিজ্ঞেস করলেন, “একি? ভিজে গেছেন তো আপনারা! আর এতো রাতে কি হয়েছে?” আবির বলল, “স্যার! ঝিকানা গ্রামের রজব মোল্লা, আত্মার সাক্ষাৎ-এর কাহরামান, এই দুজনের ফাঁদে আমার পুরো পরিবার আটকে গেছে! আপনার সাহায্য প্রয়োজন!” পুলিশের ওসি কিছুক্ষণ কি যেনো মনে করে বলল, “হ্যাঁ হ্যাঁ! একটু আগে আমার কাছে কল এসেছিলো! ওই কাহরামানকে খোঁজার ব্যাপারে! পোক্তা গ্রাম থেকে । ওখানে নাকি দুজন কাহরামানের হাত থেকেই পালিয়ে এসেছে ।” আবির জিজ্ঞেস করলো, “পোক্তা গ্রাম কোথায়?” ওসি বলল, “এইতো, বাসস্ট্যান্ডের ওপর পাশে যে রাস্তাটা গেছে, সেটা ধরে কিছুদুর এগোলেই পোক্তা গ্রাম । রাস্তায়ই পুলিশ স্টেশনে পোক্তা গ্রামের প্রবেশমুখে ।” আবির অয়ন আর মাইশাকে “চল!” বলে উঠে পড়লো গাড়িতে । ওসি ডাকল আবিরকে, “আরে! আপনারা একটু আগে কি বলছিলেন!” কিন্তু আবির দাড়ালো না । গাড়িতে মাইশা জিজ্ঞেস করলো, “ভাই, ওটা কি তাহলে চয়নিকা আপু?” আবির বলল, “শিওর না, তবে নব্বই শতাংশ আন্দাজ করে বলতে পারি ও চুনি!” পুলিশ স্টেশনের সামনে এসে গাড়ি থামিয়ে আবির তাকিয়ে দেখলো, বাইরে দাঁড়িয়ে দুজন মহিলা । একজন বোরখা পড়ে পুরো শরীর ঢেকে আছে, অন্যজন একটা ওড়না মাথায় দাঁড়িয়ে আছে । ওড়না মাথায় দাঁড়িয়ে থাকা মহিলাটা আর কেউ না, চয়নিকা । গাড়ি থেকে নামলো মাইশা আর অয়ন । ওদের দেখে খুশিতে এগিয়ে এলো চয়নিকা । মাইশা আর অয়নকে জড়িয়ে ধরলো ও । অয়ন প্রায় কেঁদে কেঁদে বলল, “আপু! অনেক ভয় পেয়েছিলাম!” চয়নিকা বলল, “আল্লাহ ভরসা! দেখিস! ধীরে ধীরে সব ঠিক হয়ে যাবে ।” গাড়ি থেকে নামলো আবির । চয়নিকা আবিরের কাছে এগিয়ে এলো বটে কিন্তু আবির ঠাস করে চয়নিকার গালে একটা থাপড় বসিয়ে দিলো । তারপর ক্ষোভ নিয়ে বলল, “কেনো! কেনো সেখানে গিয়েছিলে তুমি! বান্ধবীর সাথে দেখা করেবে বলে তুমি এসেছো আত্মার সাক্ষাৎ পেতে! তুমি না শিক্ষিত! আরে একজন অশিক্ষিত মানুষও জানে এসব ভন্ডামি! আর তুমি এগুলো বিশ্বাস করে ড্যাং ড্যাং করে দেখতে গেলে!” চয়নিকাও ফুপিয়ে ফুপিয়ে কেঁদে উঠলো । আবির চয়নিকাকে জড়িয়ে ধরে বলল, “এরকম কিছু যেনো আর কখনো না করতে দেখি তোমাকে!” চয়নিকা বলল, “সরি আবির! আ’ম সো সরি!” সাবিত দুরেই চুপচাপ বোরখার আড়ালে দাঁড়িয়ে ছিলো । চয়নিকা আবিরকে বলল, “আমার সাথে এই বোরখা পড়া মানুষটা কে জানো?” আবির জিজ্ঞেস করলো, “কে?” চয়নিকা বলল, “সাবিত ভাই ।” আবির কাছে জিজ্ঞেস করলো, “একি ভাই! তুমি কোথায় ছিলে! আর তুমি বোরখা পড়ে কেনো!” অয়ন জিজ্ঞেস করলো, “ভাই তোমাকে নাকি কারা কিডন্যাপ করেছিলো!” সাবিত বলল, “হ্যাঁ রে, করেছিলো তো । আমার নিজের দাদাই, রজব মোল্লাই কিডন্যাপ করিয়েছিলো ।” মাইশা বলল, “কি বদমাইশ লোকটা! আমাদেরকে তোমাকে অন্য কেউ কিডন্যাপ করেছে বলে নিয়ে বন্দী করে রাখলো! কিন্তু ভাই! তুমি বোরখা কেনো পড়ে আছো! আর তোমার কণ্ঠ এমন কেন লাগছে!” সাবিত জিজ্ঞেস করলো, “কেনো দেখাবো? কেউ ভয় পাবি না তো?” আবির অয়ন আর মাইশা বলল, “না! না!” সাবিত বোরখার মুখের কাপড়টা সরালো । সাবিতের চেহারা দেখে ভয়ে হালকা চিৎকার করে চোখ বন্ধ করলো মাইশা । অয়ন ভয়ে চোখ অন্যদিকে সরিয়ে নিলো । আর আবির হতভম্বের মতো তাকিয়ে রইলো । তারপর সাবিতকে জড়িয়ে ধরে বলল, “ভাই! তোমার এ কি অবস্থা ভাই! ভাই!” বৃষ্টি তখন ঝিরিঝিরি পড়ছিলো । সাবিত বলল, “আয়, সবাই পুলিশ স্টেশনের ভেতরে চল । আর ভেজা কাপড়ে তোদের ঠাণ্ডা লেগে যাবে তো!” সবাই ভেতরে ঢুকল । সাবিত সবটা শোনালো আবির, অয়ন আর মাইশাকে । যে যে ঘটেছে ওর সাথে তার সবটা । সবটা শুনে আবির বলল, “পুলিশ এখন কি করছে?” ডেস্কে বসে ছিলো ওসি রুপম । তার দিকে আঙ্গুল তুলে দেখিয়ে সাবিত বলল, “উনি সবটা হ্যান্ডেল করছেন ।” আবির উঠে উনার সামনে গেলো । জিজ্ঞেস করলো, “স্যার! ধরতে পেরেছেন ওই শয়তান কাহরামান আর রজব মোল্লাকে?” ওসি রুপম বলল, “আরে ভাই! একটু সবুর করেন না! ওরা ঢাকায় পালিয়েছে! ওদের দুটো গেঁড়ুয়া রঙের জামা পাওয়া গেছে যেটা ঢাকা পাবনা হাইওয়েতে যাবার পথের দিকে । ঢাকার পুলিশদের জানিয়েছি ওরা গেলেই ওদের ধরে ফেলবে ।” আবির মাথায় হাত দিয়ে বলল, “ওরা ঢাকায় যায় নি স্যার! ঢাকার সাথে এদিককার যান চলাচলতো বন্ধ! আপনি জানেন না!” কথা শুনে ওসি রুপম ভ্রু কুঁচকে বলে উঠলো, “হোয়াট!” আবির বলল, “হ্যাঁ স্যার! আর ওরা কি ইচ্ছে করে জামা খুলে আপনাকে হিন্ট দিয়ে যাবে! আপনাকে বোকা বানানোর জন্য ওরা এটা করেছে! আসলে ওরা এখনও পাবনাতেই আছে!” ওসি রুপম বলল, “হুম! তাহলে এখনই অভিযান শুরু করা যাক!” আবির বলল, “ওরা কোথায় আছে আমি আন্দাজ করে বলতে পারি, ওরা রজব মোল্লার বাড়িতে আছে! ওই বাড়ির গুদাম ঘরে মাদক স্টোর করা হয়! হয়তো ওরা সেগুলো নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাবার ব্যাবস্থা করছে এখন!” ওসি রুপম তখন একজনকে বলল, “গাড়ি বের করতে বলো আর ফোর্স তৈরি হতে বলো! আমরা ঝিকানা যাচ্ছি!”
আগামী পর্বেঃ
একটু পর রজব মোল্লার বাড়িতে ঢোকা একজন পুলিশ অফিসার এলো । বলল, “স্যার! ভেতরে কেউ নেই! সবাই বোধ হয় পালিয়েছে!” ওসি রুপম বাকিদের বলল, “এই! সবাই চলো এবার ভেতরে!” ঠিক তখনই আরেকজন এসে বলল, “স্যার! নিচে ফাকা একটা গুদামঘরে দুটো বডি পাওয়া গেছে, একটা মহিলা আর একটা বাচ্চার!” মাইশা ভয়ে ভয়ে বলে উঠলো, “আল্লাহ! জরিনা আপু আর নিশানের না তো!” কথা শুনে জ্ঞান হারিয়ে পড়ে গেলো চয়নিকা ।
আগামী পর্বেঃ
একটু পর রজব মোল্লার বাড়িতে ঢোকা একজন পুলিশ অফিসার এলো । বলল, “স্যার! ভেতরে কেউ নেই! সবাই বোধ হয় পালিয়েছে!” ওসি রুপম বাকিদের বলল, “এই! সবাই চলো এবার ভেতরে!” ঠিক তখনই আরেকজন এসে বলল, “স্যার! নিচে ফাকা একটা গুদামঘরে দুটো বডি পাওয়া গেছে, একটা মহিলা আর একটা বাচ্চার!” মাইশা ভয়ে ভয়ে বলে উঠলো, “আল্লাহ! জরিনা আপু আর নিশানের না তো!” কথা শুনে জ্ঞান হারিয়ে পড়ে গেলো চয়নিকা ।