0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

পরিচয় পর্ব-৩৩০

পরিচয়(পর্ব-৩৩০)
(সিজন-১১: আত্মার সাক্ষাৎ)
একটু পরই ভাঙ্গা ঘরে ঢুকলো টর্চ নিয়ে এগিয়ে আসতে থাকা লোকটা । সে আর কেউ নয়, খোকন । এসে দেখলো মাটিতে বসে মাইশা আর অয়ন । ওদের হাত বাধা দেখা গেলেও আসলে বাধা নয় । আবির ওর প্ল্যান অনুযায়ী কাজ করছে । খোকন বলল, “কেরে গেদারা! মজা পাতিছাও? পাও পাও! পড়ে বুইজবেনে, কত ধানে কত চাইল!” অয়ন বলল, “ওদিকে কে যেনো একটা হাটছিলো দেখলাম!” খোকন হেসে উঠে বলল, “আমারে বোকা পাইছাও! এইহানে কিডা আইবো?” অয়ন সামনে থাকার একটা জানালার দিকে ইশারা করে বলল, “ওইযে! ওদিকে তাকান!” একটা হাতঘড়ি । ঘড়িটা আবিরের । ঘড়িটা দেখে খোকন বলে উঠলো, “এইডা এইহানে লিয়ে আইলো কিডা? কার এইডা?” মাইশা বলল, “বললাম না! যে লোকটা এসেছিলো এটা তার! সে রেখে গেছে ।” খোকন ঘড়িটা দেখার জন্য এগিয়ে গেলো । খোকন ঘড়ির কাছে যেতেই আড়াল থেকে বেড়িয়ে এলো আবির । আবিরের হাতে একটা লাঠি । খোকন ঘড়ি হাতে নিতেই আবির খোকনের মাথায় জোড়ে করলো একটা আঘাত । খোকন একটা চিৎকার করে মাথায় হাত দিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লো । আবির ওর মাথায় আরও আঘাত করতে লাগলো । কিছুক্ষণের মধ্যে খোকন জ্ঞান হারালো । আবির খোকনের আনা টর্চ লাইটটা নিয়ে মাইশা আর অয়নকে বলল, “বের হ!” মাইশা আর আবিরকে নিয়ে কবরস্থানের দিকে গেলো আবির । প্রাচীর টপকে কবরের ওপর লাফিয়ে পড়লো । বৃষ্টি মুষলধারেই পড়ছে । এই অল্প সময়ের বৃষ্টিতেই মাটি কর্দমাক্ত হয়ে গেছে । কবরের মাঝ দিয়ে দৌড়চ্ছে ওরা । সামনে অয়ন, তারপর মাইশা, তারপর আবির । হঠাৎ মাইশার একটা চিৎকার শুনে দাঁড়িয়ে গেলো অয়ন । পেছনে তাকিয়ে দেখলো, মাইশার পা একটা কবরের ভেতর ঢুকে গেছে । বৃষ্টি হওয়ায় সে যায়গায় মাটি নরম হয়ে গেছে । আবির মাইশার পা টেনে তুলে সেই গর্তে টর্চের আলো ফেলতেই দেখলো, একটা লাশ! মাইশার পায়ের আঘাতে লাশের এক পাশের পচা মাংস খসে গেছে । মাইশার পায়েও লাশের মাংসের খানিকটা লেগেছে । মাইশা ভয়ে বিকট জোড়ে চিৎকার দিয়ে উঠলো । আবির একটা পাতা দিয়ে মাইশার পা মুছে দিলো আর অয়ন ততোক্ষণে কবরের গর্তটা ভরাট করে দিলো । তারপর ওরা আবার দৌড়তে লাগলো । কিছুক্ষণের মধ্যেই ওরা ওপাড়ে চলে এলো । কবরস্থানে একজন পাহারাদার ছিলো, সে কবরের ভেতর মানুষ দেখে এগিয়ে এলো । জিজ্ঞেস করলো, “ও আল্লাহ! আফনেরা কারা! লাশ চোর নাহি!” আবির বলল, “না ভাই! দ্যাখেন আমাদের সাথে মেয়ে মানুষও আছে ভাই! আমরা বিপদে পড়ছি ভাই! আমাদের বাচান!” লোকটা বলল, “ও! আইচ্ছা কও কি সাহায্য লাইগবো!” আবির বলল, “আমাদের যাবার জন্য একটা ভ্যান বা কিছু একটা লাগবে ভাই!” লোকটা তখন কাকে যেনো ডাকল । “মন্টু! অয় মন্টু! এইদিক আয়!” এক লোক এলো তখন । এসে বলল, “হ মামা! কন!” পাহারাদার মন্টুকে বলল, “এনাগের এল্লা পৌঁছায় দে তো!” মন্টু জিজ্ঞেস করলো, “কনে যাইবেন আপনেরা?” আবির বলল, “বাসস্টেশনে!” ভ্যানওয়ালা বলল, “আইচ্ছা চলেন, তয় ভাড়া এল্লা বেশি লাইগবো!” আবির বলল, “আপনি যা চাবেন তাই দেবো!” আবির অয়ন আর মাইশা ভ্যানে উঠলো । ওরা রওনা হলো বাসস্টেশনের দিকে । অয়ন জিজ্ঞেস করলো, “বাস স্টেশনের দিকে কেনো যাচ্ছি ।” আবির বলল, “ওইখানে আমার গাড়ি আছে । আমি আনতে ভুলে গিয়েছিলাম ।” আবির মাইশার পায়ের দিকে তাকালো । যেই পা-টা গর্তের মধ্যে পড়ে গিয়েছিলো সেই পা এখনও কাঁপছে ।
পুলিশ স্টেশনে চোখ বন্ধ করে মাথা নিচু করে ছিলো সাবিত । এমন সময় পাশের জেলখানায় এক চোর কে মারার ফলে তার চিৎকারের আওয়াজে ঘুম ভেঙ্গে যায় সাবিতের । আশেপাশে চয়নিকাকে দেখতে পায় না সে । বাইরে এসে দেখে, চয়নিকা বাইরে সিড়িতে বসে আছে । সাবিত জিজ্ঞেস করলো, “মন খারাপ?” চয়নিকা বলল, “এই সময় মন ভালো থাকবে কি করে ভাবছেন ভাই!” সাবিত বলল, “চিন্তা কোরো না! আল্লাহ ভরসা ।” চয়নিকা বলল, “আমাদের ওপর না হয় এই প্রথম এমনটা হলো । কিন্তু আমার ছেলেটা! নিশান! এর আগেও একবার এরকম পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলো । আজ আরও একবার সেই পরিস্থিতির মুখোমুখি সে । কেনো ওর সাথেই এমন হয়! কেনো!” সাবিত একটা হতাশার শ্বাস ফেলে বলল, “কি জানি । তবে এক দিক দিয়ে ভালো হয়েছে । আগেরবারের দুর্ঘটনা থেকে কিছুটা হলেও নিশান নিজেকে দুর্ঘটনা থেকে সামলে নেবার শিক্ষাটা নিয়েছে । সুতরাং শুধু দোয়া করো, যেনো ও সুস্থ থাকে ।” চয়নিকা আর কোনো জবাব দিলো না ।
গাড়ির কাছে এলো আবির । গাড়ির ড্রয়ারে ওর পাঁচশ টাকা ছিলো, সেটা ভ্যানওয়ালাকে ধরিয়ে দিলো । ভ্যানওয়ালা দেখে বলল, “ইয়া আল্লাহ! এতো ট্যাকা ক্যান! এতো ট্যাকা লাগবো না তো আমার!” আবির বলল, “রাইখা দেন ভাই! এতো রাতে আপনি আমাদের সাহায্য করেছেন এটাই অনেক! শুধু আমাদের একটু বলেন আশেপাশে কোন পুলিশ স্টেশনে আছে কিনা!” লোকটা বলল, “হ আছে! এই সামনে দিক যাইবেন, এরপর ডাইনে গেলেই পাইয়া যাইবেন, একখান বটগাছের পাশে ।” আবির লোকটাকে ধন্যবাদ দিয়ে অয়ন আর মাইশাকে নিয়ে গাড়িতে উঠে রওনা হলো পুলিশ স্টেশনের উদ্দেশ্যে ।

আগামী পর্বেঃ
“স্যার! ধরতে পেরেছেন ওই শয়তান কাহরামান আর রজব মোল্লাকে?” ওসি রুপম বলল, “আরে ভাই! একটু সবুর করেন না! ওরা ঢাকায় পালিয়েছে! ওদের দুটো গেঁড়ুয়া রঙের জামা পাওয়া গেছে যেটা ঢাকা পাবনা হাইওয়েতে যাবার পথের দিকে । ঢাকার পুলিশদের জানিয়েছি ওরা গেলেই ওদের ধরে ফেলবে ।” আবির মাথায় হাত দিয়ে বলল, “ওরা ঢাকায় যায় নি স্যার! ঢাকার সাথে এদিককার যান চলাচলতো বন্ধ! আপনি জানেন না!” কথা শুনে ওসি রুপম ভ্রু কুঁচকে বলে উঠলো, “হোয়াট!”