0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

পরিচয় পর্ব-৩২৯

পরিচয়(পর্ব-৩২৯)
(সিজন-১১: আত্মার সাক্ষাৎ)
নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে বেরোলো আবির । মসজিদের পাশেই একটা বাজার । বাজারে ভ্যান পাওয়া যায় বলে আবির বাজারের দিকে গেলো । একটা ভ্যানওয়ালাকে ডাকতে যাবে, এমন সময় এক লোকের কথা আবিরের কানে এলো । লোকটা আরেকটা লোককে বলছিলো, “এল্লা আগে ঝিকানা গেরামের পাশের জঙ্গলে গেছিলাম! রাইতে তো ওই গেরামে বাইর হওয়াই মানা, তাও কাম আছিলো দেইখা সাহস কইরা গেছিলাম! দেহি এক মাইয়া মাইনষের কান্নার আওয়াজ । আমি তো দোয়া দুরুদ পড়তে পড়তে চইলা আইছি!” আবির মনে মনে বলল, “তবে কি এটা ঝিকানা! না না না! ঝিকানার আজ সময় হবার কথা না যেহেতু আজ অনেক কিছু ঘটাচ্ছে ওরা! তাহলে! মাইশা বা জরিনা আপুর কেউ না তো!” আবির আর দেরি না করে ভ্যান ডাকল । ভ্যানে উঠে বলল, “ঝিকানা চলেন ।” ভ্যানওয়ালা বলল, “ও আল্লাহ! ঝিকানা এতো রাইতে! না বাবা! আমি যামু না!” আবির বলল, “আচ্ছা বর্ডার পর্যন্ত তো চলেন!” ভ্যানওয়ালা বলল, “আইচ্ছা ।” তারপর আবির ভ্যানে চড়ে রওনা হল ঝিকানার দিকে ।
পুলিশের গাড়িতে করে পুলিশ স্টেশনে এসেছে সাবিত আর চয়নিকা । চয়নিকা বলল, “আল্লাহ! দাদাই আমার ছেলে, ভাই, আবির, জরিনা আপু, মাইশা ওদের সাথেও কিছু করছে কিনা! আল্লাহই জানেন!” সাবিত বলল, “শোন! দুই নাম্বারি কাজে কোন কিছুই পারফেক্ট হয় না! তাদের ধরা পড়তেই হয় । এই যেমন ওরা আমাকে নিয়ে গিয়েছে ঠিকই কিন্তু বোকার মতো আমাকেও বোরখা পড়িয়েছে ওদের মাঝেই রেখে দিয়েছে যেখানে আমি এসের সবকিছু জানি । আর বোরখার মধ্যে রাখায় আমাকে আলাদাভাবে এরা নিজেরাই চিনতে পারে নি ।” চয়নিকা বলল, “এখন কোথায় যাবেন?” সাবিত বলল, “আজ রাতটা এখানেই কাটাতে হবে মনে হয় । কাল সকালে ভাবতে হবে কোথায় যাওয়া যায় ।” এমন সময় একজন পুলিশ এসে ওসি রুপমকে বলল, “স্যার! গেড়ুয়া রঙের দুটো ওড়না পাওয়া গেছে । যেদিকে গেছে, সেটা ঢাকা-পাবনা হাইওয়ের দিকে । আমার মনে হয় ওরা ঢাকা পালিয়েছে স্যার!” ওসি রুপম বলল, “হুম! আচ্ছা, কাল সকালে আমি ঢাকায় সবটা জানাবো । এখনও ওরা ঢাকায় পৌছয় নি । পৌঁছে নিক একবার ব্যাটারা!”
ঝিকানার যেখানে নামলো আবির, সেখান থেকে গ্রাম পাচ মিনিটের রাস্তা । রজব মোল্লার বাড়ির সামনে দিয়ে না যেয়ে গ্রাম দিয়েই যাবার সিদ্ধান্ত নিলো আবির । গ্রাম আজও নির্জন । প্রতিদিনের মতোই । আবির ব্রিজ পেড়িয়ে জঙ্গলে ঢুকলো । কান্নার আওয়াজটা এখন আর হচ্ছে না । তাহলে কি ওটা অন্য কিছু ছিলো? আবির হাল ছাড়লো না । জঙ্গল থেকে রজব মোল্লার বাড়ি যেদিকে, ঠিক তার বিপরীত দিকে গেলো আবির । হাতে মোবাইলের ফ্ল্যাশ লাইট । অনেক দূর হাটলো আবির । প্রথম যেদিন মাঠের ভেতর দিয়ে হেটেছিলো আবির, সেদিন আবির এতোটা দূর এসে একটা খাল দেখেছিলো । আজ আরেকটু এগোলেই হয়তো সে খাল দেখতে পাবে যার ওপাড়ে রয়েছে আরও একটি গ্রাম যা ঝিকানার বাইরে । আবির দূর থেকে একটা সাদা পুরোন ঘর দেখতে পেলো । সেখানে কেউ আছে বলে মনে হয় না । সেই ঘরটার সামনে থেকেই সেই খালের শুরু । আবির কাছে এগিয়ে গেলো ধীরে ধীরে । তারপর ঘরটার দরজা ভাঙ্গা । ঢুকে দেখলো, মাইশা আর অয়ন । দুজনের ঘুমোচ্ছে । ওদের ডাকার আগে আবির আশেপাশে তাকিয়ে নিলো কেউ আছে কিনা । তারপর ওদের ধীরে ধীরে ডাকল । “মাইশা! অয়ন! মাইশা! ওঠো!” দুজনে ধীরে ধীরে চোখ খুলল আবিরকে দেখে দুজনেই খুশি হয়ে গেলো । মাইশা বলল, “ভাই! আপনি এসেছেন!” অয়ন বলল, “তুমি আসবা আমি জানতাম ভাই!” আবির বলল, “শশশ! কোন কথা না! কেউ শুনে ফেলবে! আগে তোদের উদ্ধার করি!” বলে আবির ওদের হাতের বাঁধন খুলতে লাগলো । অয়ন বলল, “ভয় নাই ভাই! এইখানে কেউ নাই! এই জায়গা প্রচুর নির্জন ।” আবির বলল, “তা তো জানি । কিন্তু রজব মোল্লা এখানে কাউকে রাখে নি তোদের পাহাড়া দেবার জন্য?” মাইশা বলল, “না । কারণ যেভাবে আমাদের বেধে রেখেছে, আমরা পালাতে পারবো না, আর যে জায়গায় রেখে গেছে, এখান থেকে পালানোর পথও খুঁজে পাবো না ।” আবির হালকা হেসে বলল, “এটা উনার বাড়ির পাশের জঙ্গল, বেশি দূরে বা অচেনা কোথাও না ।” মাইশা আর অয়ন দুজনের ভ্রু কুঁচকে আবিরের দিকে তাকালো । অয়ন বলল, “কিন্তু আমরা তো অন্য পথ দিয়ে এদিকে এলাম!” আবির বলল, “তার মানে এদিকে আসার অন্য কোন পথও আছে! ওপাড়ে একটা গ্রাম আছে তো দেখলাম ।” অয়ন বলল, “সেটা অনেক দূর । দেখে কাছে মনে হচ্ছে, কিন্তু মাঝে একটা কবরস্থান পড়ে । সেটা পাড় হয়ে যেতে মিনিট বিশেক সময় লাগে ।” আবির বলল, “আমরা কবরস্থানের মধ্য দিয়ে যাবো । পারবি?” মাইশা বলল, “হায় আল্লাহ! আমার ভয় লাগে!” আবির বলল, “ভয় পেলে চলবে না! আমাদের যেতে হবে! উপায় নেই!” অয়ন বলল, “না ভাই! যেই রাস্তায় ভ্যান থামাইছিলো, ওই রাস্তা আমি চিনি! ওই রাস্তা দিয়ে চলো যাই!” আবির বলল, “না! ওই রাস্তা এখন নিরাপদ না! চল কবরস্থান দিয়ে যাই!” আকাশে মেঘের গুড়ুম গুড়ুম আওয়াজ শোনা গেলো । খুব একটা বেশীক্ষণ সময় পার হতে না হতেই বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো । আবির মাইশা আর অয়নকে নিয়ে বেড়োতে যাবে, এমন সময় দেখলো, টর্চ নিয়ে একজন এদিকে আসছে । আবির বলল, “কিরে! তোদের নাকি পাহারা দিতে কাউকে রাখে নি!” অয়ন বলল, “তাহলে রেখেছে হয়তো! আমরা জানি না!” আবির বলল, “শোন! তোদের এখন যা বলছি! তাই তাই করবি! বুঝেছিস!” অয়ন আর মাইশা বলল, “ঠিক আছে!” মাইশা আর অয়নকে কিছু বোঝালো আবির আর তারপর অয়ন আর মাইশা সে অনুযায়ী কাজ করতে লাগলো ।

আগামী পর্বেঃ
হঠাৎ মাইশার একটা চিৎকার শুনে দাঁড়িয়ে গেলো অয়ন । পেছনে তাকিয়ে দেখলো, মাইশার পা একটা কবরের ভেতর ঢুকে গেছে । বৃষ্টি হওয়ায় সে যায়গায় মাটি নরম হয়ে গেছে । আবির মাইশার পা টেনে তুলে সেই গর্তে টর্চের আলো ফেলতেই দেখলো, একটা লাশ! মাইশার পায়ের আঘাতে লাশের এক পাশের পচা মাংস খসে গেছে ।