0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

পরিচয় পর্ব-৩২৭

পরিচয়(পর্ব-৩২৭)
(সিজন-১১: আত্মার সাক্ষাৎ)
“ইয়া আল্লাহ! এখন আমি কি করি!” আবিরের কাছ থেকে সব কথা শুনে আফসোস করা শুরু করলো রিভু । আবির বলল, “কি করি মানে! জীবনে ভালো কিছু তো করিস নি মনে হয়! এবার তো কিছু একটা ভালো কর!’ রিভু বলল, “আরে ভাই তা তো আমার করার ইচ্ছা আছে! আর এক সময় তুই আমার ভালো বন্ধু ছিলি! কিন্তু তোকে সাহায্য করলে আমি মরবো!” আবির রিভুর দুই হাত একত্র করে সেই হাত দুটো নিজের দুই হাতের মুঠোয় শক্ত করে ধরে বলল, “ভাই! আমি বলছি! তোর কোন ক্ষতি আমি হতে দেবো না!” রিভু হাত দুটো টান মেরে সরিয়ে নিলো । বলল, “না ভাই! আমি আমাকে ভালোবাসি! আমি এতো পরোপকারী না যে অন্যের জন্য নিজের জীবন বাজি রাখবো!” আবির বলল, “নিজের থেকেই তাহলে শিক্ষা নে! তোর মতো সবাই নিজেকে ভালোবাসে! আর তোর জন্যই কত মানুষ তার ভালোবাসার জীবন হারিয়েছে এবং হারাচ্ছে! আজ যদি আমরা এটাকে না থামাই তাহলে আরও মানুষ তাদের জীবন হারাবে!” রিভু তবুও কিছু বলল না । আবির তখন বলল, “আচ্ছা তোকে কিচ্ছু করা লাগবে । শুধু এটুকু বল তোদের এখানে কি কি কাজ চলে । কথা দিচ্ছি, তোর নাম আমি কারও কাছে নেবো না । এবং আমার বন্ধু হিসেবে তুই বেশ ভালোই জানিস আমি কাউকে কথা দিয়ে তা ভঙ্গ করি না!” রিভু তখন বলল, “ঠিক আছে, শোন তবে ।”
এদিকে ঢালু রাস্তা বেয়ে ওপরে উথে এলো চয়নিকা । বাস এখানে এখন পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ আছে, কিন্তু এই এলাকায় থাকাটা ঠিক হবে না । চয়নিকা দৌড়তে লাগলো । এই জায়গায়টা অনেক নির্জন । বাস চললেও হুটহাট । আর ওই যে, অপ্রয়োজনের সময় কোনো কিছু সবসময় চোখের সামনে সামনে থাকে আর প্রয়োজন হলে পাওয়া যায় না, ঠিক তেমনি এখন চয়নিকার কোন যানবাহন প্রয়োজন কিন্তু এখন কিচ্ছু খুজে পাচ্ছে না । এমন সময় একটা মোটরসাইকেলের আওয়াজ পেলো চয়নিকা । পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখলো, বোরখা পড়া একজন এদিকে আসছে । চয়নিকার বুকটা ছ্যাঁত করে উঠলো , ওকে ধরার জন্য কি তবে লোক পাঠানো হয়েছে!
এদিকে আবিরকে কাহরামানের আদ্যোপান্ত বলছিলো রিভু । কাহরামান তুর্কির কেউ মোটেই না, সে একজন বাংলাদেশী, এবং পাবনারই বাসিন্দা । ছেলেবেলায় আভিজাত্যের সাথে সে বেড়ে উঠলেও বড়ো হলে মাদকের নেশা তাকে গ্রাস করে । সেই মাদকের নেশা থেকে তার মনে জন্ম নেয় মাদকের নেশায়ও আভিজাত্যের ছোয়া লাগাতে । তাই সে খুঁজে বের করে বেশ কিছু বিদেশী মাদকের খোঁজ পায় । সে সেগুলো আনার জন্য চেষ্টা চালাতে থাকে । এদিকে কাহরামানের বাবা তখন সে ব্যাপারটা জেনে বেশ রেগে যান । ছেলেকে ঘরছাড়া করান এবং এরপর থেকে ছেলে বিদেশ চলে গেছে, খোঁজ নেয় না বলে লোকজনের কাছে কথা রটিয়ে দেন । এরপর কাহরামান টাকা খোঁজার উপায় খুজতে থাকে । তখন তার মাথায় বুদ্ধি আসে আত্মার সাক্ষাৎ করানোর । প্রচণ্ড গোপনে কাজগুলো হওয়ায় এগুলো পুলিশের কান পর্যন্ত পৌছয় নি । কাহরামান বাপের কাছ থেকে যেটুকু টাকা নিয়ে বিদেয় হয়েছিলো, সেটুকু টাকা দিয়ে মাটির নিচে গড়ে তোলে আত্মাঘর । সেই সাথে নিজেরই কিছু মাদকাসক্ত বন্ধুকে সাথে নিয়ে মানুষকে মাদক দিয়ে মাতাল করে সামনে হাজির করাতো তার আপনজনের মতো দেখতে সাজানো কাউকে । মাতাল মানুষটা তেমন একটা তফাৎ করতে পারতো না । মানুষ ভাবে এটা বোধ হয় তাহলে সত্যিই । টাকা দিয়ে মানুষ তাই আত্মার সাক্ষাৎ পেতে আসে । এতে বেশ ভালোই আয় হয় তাদের । কিন্তু একদিন এক পুলিশের কানে কোনোভাবে এই কথাটা যায় । সে ছদ্মবেশে আসে এখানে আত্মার সাক্ষাৎ পেতে । কিন্তু ভাগ্যক্রমে সে ধরা পড়ে যায় এবং তাকে খুন করে কাহরামান । আশ্চর্যজনকভাবে সেই লাশের কঙ্কাল বেশ চড়া মূল্যে পরবর্তীতে বিক্রি করে কাহরামান । সেই থেকে তার মাথায় আসে যারা আত্মার সাক্ষাৎ পেতে আসবে, তাদের কাউকে কাউকে বিক্রি করে টাকা আয়ের চিন্তা । এরই মধ্যে একদিন কাহরামানের বাবা একদিন কাহরামানের কাছে আসে নিজের আরেক ছেলেকে নিয়ে যে আসলে হয়ে গিয়েছিলো হিজড়া । এই যুগে এসেই এই ব্যাপারটা স্বাভাবিক না ভেবে কাহরামানের বাবা ভেঙ্গে পড়ে । নিজের ছেলেকে নিজের ছেলে বলতে লজ্জা লাগতো তার । তাই ওকে মেয়ে বানিয়ে পাল্য সন্তান বলে লোকেদের বলতো ওর একটা মেয়ে ছিলো, সে বিয়ে করে চলে গেছে, খোঁজ নেয় না । এই সেই মিতু, আর কাহরামানের বাবা রজব মোল্লা । রজব মোল্লার ওপর মিতুর ক্ষোভ থাকলেও তা প্রকাশ করতো না, সবসময় সে মেজাজি হয়ে থাকে এজন্যই । কারণ বাবার কাছে না থাকলে সে নিজে খাবে কি । এটা দেখে কাহরামানের কষ্ট হয় । তাই সে যেসব লোকেদের জোড় করে বন্দী রেখে নিজেদের কাজ করাতো, তাদের হরমোন পালটে দিয়ে ট্রান্সজেন্ডার বানিয়ে দিতো । আর এক চোখ কানা করে দেয়া আর চেহারা পুড়িয়ে দেয়া তো আগে থেকে ছিলোই, সেই সাথে যুক্ত হলো মানুষের জেন্ডার পালটে দেয়া । ফলে কাউকে চেহারা দেখানোর ভয়ে বা নিজের আচরণ পাল্টে যাবার ভয়ে কেউ পালাতো না, সেই সাথে এদের হাতে একবার ধরা পড়লে প্রাণনাশের ভয় তো আছেই । এরপর বেশ ভালোই চলতে থাকে কাহরামান আর তার দলের । বিদেশী মাদক দেশে আসতে থাকে, সেই সাথে অতিরিক্ত মাদক বিক্রি করে নিজে টাকাও কামাই করতে থাকে । সে চায়, পৃথিবীর মানুষ একদিন তার আদেশে চলবে । ইতোমধ্যে নিজের গ্রামকেও সে ঝিকানার ভয় দেখিয়ে আর মাদকের নেশা ঢুকিয়ে কাবু করে নিয়েছে ।

আগামী পর্বেঃ
এদিকে রাতের বেলা কাহরামানের সেই আস্তানায় এসে পৌঁছল চয়নিকা সাবিত আর পুলিশ ফোর্স । কিন্তু গর্তের নিচে নেই কাহরামান, আর বাকি যারা বোরখা পড়া ছিলো, তাদের প্রত্যেকের শরীর থেকে মাথা আলাদা করা ছিলো । এই দৃশ্য দেখে কিছু পুলিশ বমি করে দিলো । সাবিত বলল, “চুনি! দেখেছো! আমি যদি এখানে থাকতাম তাহলে এদের একজনও এখন আমি হতাম!”