0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

পরিচয় পর্ব-৩২৬

পরিচয়(পর্ব-৩২৬)
(সিজন-১১: আত্মার সাক্ষাৎ)
একটা বেল বেজে উঠতেই “আমি যাই! ড্রাগস নেবার সময় এসেছে! তবে মনে রেখো, দুজন লোক ড্রাগস নেয় না, এক কাহরামান, আর একজন বোরখা পড়া লোক, আমি তো কাহরামানকে কৌশলে ড্রাগস দিয়ে তোমাকে বাঁচাবোই, কিন্তু কোন বোরখা পড়া লোক ড্রাগস নেয় না, তা চেনা মুশকিল । তার থেকে তোমাকে বাঁচতে হবে ।” বলে বেড়িয়ে গেলো সাবিত ।
ধীরে ধীরে চোখ খুলল আবির । দেখলো, একটা বিছানার ওপর বসে ও । চোখ খুলতেই সামনে গেড়ুয়া পোশাকধারী এক লোক । এই লোক এই লোকই আবিরের মাথায় আঘাত করেছিলো । চোখ ঝাপসা থাকায় আবির ভালো করে দেখতে পাচ্ছিলো না লোকটাকে । লোকটা মাথা নিচু করে চোখ বন্ধ করে থাকায় আবিরের যে জ্ঞান ফিরেছে তা খেয়াল করে নি । আবির চোখ রগড়ে ভালো করে তাকালো । চেনা চেনা লাগছে না? এটা রিভু না? আবির চমকে উঠলো । হালকা ফিসফিসিয়ে বলল, “রিভু না!” মাথা নিচু করে থাকা লোকটা মাথা না তুলেই বলল, “হ্যাঁ রে ভাই হ্যাঁ! আমি রিভু!” তারপর আবিরের দিকে তাকালো । সেই যশোরে এতিমখানার বন্ধু রিভু । আবিরের সাথে ঘনিষ্ঠতা হলেও সেটা ভেঙ্গে যায় কারন সেই ঘনিষ্ঠতাকে অবলম্বন করে একটা খারাপ কাজে যুক্ত হয়েছিলো রিভু । জেলও খেটেছে, কিন্তু আবার এরকম দুই নাম্বারি কাজে সে যুক্ত হবে সেটা ভাবতে পারে নি আবির । সেটা দূরে থাক, জিবনে যে আবার এই ছেলেটার সাথে আবিরের দেখা হবে সেটাই আবির ভাবতে পারে নি । রিভু দেখে চিন্তিত মনে হল । সে দুশ্চিন্তা আর রাগ একসাথে মিশিয়ে বলল, “ক্যান ভাই ক্যান! তুই কেনো বারবার আমার লাইফে আসিস? বা ক্যান তোর সাথে আমার বন্ধুত্ব হইছিলো! আর তোর জায়গায় অচেনা কেউ হলে তাকে মেরেই ফেলতাম । কিন্তু তোকে চিনতে পেরে সে সাহস পেলাম না ।” আবির বলল, “আর তুই যে দুই নাম্বারি কাজের সাথে যুক্ত তার জন্য যে আমার পরিবার আজ মৃত্যুর সামনে হাজির হয়েছে সেটা?” রিভু ভ্রু কুচকে আবিরের দিকে তাকালো ।
“মাইশা!” হঠাৎ মাইশাকে ডাকল অয়ন । মাইশা বলল, “বলো ।” অয়ন বলল, “আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি মাইশা!” মাইশা হালকা বিরক্তির সাথে জবাব দিলো, “তোমার কি মাথা ঠিক আছে! আমরা পুরো পরিবার একটা সাঙ্ঘাতিক বিপদের মধ্যে আছি! আর তুমি এখন এসব কথা বলছো!” অয়ন হালকা হাসলো । শরীর বেশ দুর্বল হয়ে পড়েছে অয়নের । দুর্বলতা মেশানো কণ্ঠে একটা হৃদয়বিদারক কথা মাইশাকে বলল অয়ন, “ভয় হচ্ছে, যদি আর কোনোদিন এই কথা তোমায় বলতে না পারি?” এবারে মাইশার বুকটা ছ্যাঁত করে উঠলো । তারই সাথে অয়নের কণ্ঠের দুর্বলতা মাইশাকে আরও ভয় পাইয়ে দিলো । চোখ বেয়ে পানি পড়লো ওর কিন্তু অয়নকে সেটা বুঝতে দিলো না । কারণ এই মুহূর্তে কাউকে শক্ত থাকতেই হবে, মাইশাও সে চেষ্টা চালাচ্ছে । কান্না মাখা গলার আওয়াজ ঢাকতে মাইশা হালকা গলা খাখরে বলল, “নিজেকে শক্ত করো অয়ন! আল্লাহ আমাদের নিশ্চয়ই এই বিপদ থেকে রক্ষা করবেন ।” অয়ন দুর্বল কণ্ঠে জবাব দিলো, “ইনশাআল্লাহ!”
এদিকে সবাইকে ড্রাগস দেয়া হচ্ছে । যখন এদের ড্রাগস দেয়া হয়, তখন পেছনে এরা হিপ হপ জনরের গান ছেড়ে মাতাল হয়ে নাচতে শুরু করে । এ সময় কাহরামান চা খায় । সেই চা-ই আনছিলো এক বোরখা পড়া কেউ, সাবিত ইচ্ছে করে তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলো তবে সে আসলে অভিনয় করেছে যে ধাক্কাটা সে ইচ্ছে করে দেয় নি । যার সাথে ধাক্কা লেগেছে সে বলে উঠলো, “এই কুত্তা! তুই এটা কি করলি?” সাবিত বলল, “আমি দুঃখিত! দেখিনি আমি!” লোকটা বলল, “নিজে তো পেয়ে গেছিস! আমার তো নেয়া লাগবে নাকি! এটা ছাড়া মাতাল হবো কি করে! তোর জন্য আমার দেরি হয়ে যাবে!” সাবিত বলল, “আচ্ছা, এক কাজ করো, তুমি যাও, আমি চা আনছি ।” বলে সাবিত গেলো চা আনতে । পাশে একটা ছোট গর্তে চায়ের মেশিন রয়েছে । কাহরামান সেখান থেকে চা খায় । সাবিত সেই চা কাপে ঢেলে তাতে মিশিয়ে দিলো ওর নিজে হাতে থাকা মাদক । তারপর সেটা নিয়ে গেলো কাহরামানের সামনে । তারপর একটু পর নিজে মাতাল হবার অভিনয় শুরু করে দুটো জিনিস খেয়াল করতে লাগলো । প্রথম, কে ড্রাগস নেই নি সেটা বোঝার চেষ্টা । দ্বিতীয়, চয়নিকা এলো কিনা সেটা বোঝার চেষ্টা । সাবিত তখন দেখলো, বোরখা পড়া একজন এদিকে আসছে । দেখে মনে হচ্ছে না সে মাতাল । সাবিত ধীরে ধীরে ওর কাছে গেলো । তারপর যে-ই তার শরীরে হাত রাখলো, সে হালকা আর্তনাদ করে উঠলো, “আ!” সাবিতের চিনতে ভুল হল না । এটা চয়নিকা । সাবিত বলল, “চয়নিকা! তুমি বোরখা কোথায় পেলে!” চয়নিকা বলল, “যে একজন ড্রাগস নেয় না সে আমার পথ আটকেছিলো!” সাবিত বলল, “তার বোরখা নিয়েছো!” চয়নিকা বলল, “হ্যাঁ! কিন্তু ভাই! আমি ওকে খুন করে ফেলেছি!” সাবিত বলল, “আচ্ছা! আর কথা না! চুপচাপ বেড়িয়ে যাও!” চয়নিকা আর কিছু বলল না । সিড়ি বেয়ে উঠতে উঠতে বোরখাটা খুলে ফেললো চয়নিকা । তারপর ঢাকনায় নক করে চেচাতে লাগলো, “মুতলুওল! মুতলুওল!” দোকানদার ঢাকনা খুলল । চয়নিকা বেরিয়ে যেতে নেবে, সে সময় হঠাৎ দোকানদার বলে উঠলো, “এই মেয়ে দাড়াও! তোমাকে দেখে তো মনে হচ্ছে তুমি কাহরামানের অত্যাচারের কথা জেনে গেছো!” বলেই লোকটা চয়নিকাকে ধরার চেষ্টা করলো, কিন্তু চয়নিকা পাশে থাকা একটি কলম ঢুকিয়ে দিলো লোকটার এক চোখে । লোকটা আর্তনাদ করে মাটিতে লুটিয়ে পড়লো । চয়নিকা, “মানুষের চোখ তুলে নিস না! এবার দ্যাখ কেমন লাগে!”

আগামী পর্বেঃ
এদিকে ঢালু রাস্তা বেয়ে ওপরে উথে এলো চয়নিকা । বাস এখানে এখন পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ আছে, কিন্তু এই এলাকায় থাকাটা ঠিক হবে না । চয়নিকা দৌড়তে লাগলো । এমন সময় একটা মোটরসাইকেলের আওয়াজ পেলো চয়নিকা । পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখলো, বোরখা পড়া একজন এদিকে আসছে । চয়নিকার বুকটা ছ্যাঁত করে উঠলো , ওকে ধরার জন্য কি তবে লোক পাঠানো হয়েছে!