0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

পরিচয় পর্ব-৩২৫

পরিচয়(পর্ব-৩২৫)
(সিজন-১১: আত্মার সাক্ষাৎ)
“ওকে নিয়ে যা! পালটে দে ওকে!” বোরখার আড়ালে থাকা সাবিত নিয়ে গেলো চয়নিকাকে একটা নির্জন রুমে । চয়নিকা জিজ্ঞেস করলো, “ভাই! তোমার চেহারার এ কি হাল!” চয়নিকা বলল, “এখন তো চেহারা! কদিন পর পুরো আমি মানুষটাই পালটে যাবো!” চয়নিকা জিজ্ঞেস করলো, “মানে?” সাবিত সবটা খুলে বলল চয়নিকাকে ।
সেদিনের কথা, যেদিন সাবিতকে খোকন ডেকে নিয়ে গিয়েছিলো রজব মোল্লার কাছে । রজব মোল্লার রুমে এসে বসলো সাবিত । “দাদাই? ডেকেছিলেন কেনো?” রজব মোল্লা একটা বই পড়ছিলো । বইটা বন্ধ করে টেবিলে রেখে রজব মোল্লা সাবিতকে বলল, “হ! আসলে তোমাকে আমি ধন্যবাদ আর সরি কইতে চাই!” সাবিত জিজ্ঞেস করলো, “কিসের জন্য দাদাই?” রজব মোল্লা বলল, “যা তুমি আমার জন্য করছো! আর যা আমি তোমার লগে করতে যাইতেছি!” সাবিত ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করলো, “মানে?” খোকন চা এনে দিলো । সাবিত বলল, “রাত করে আমি চা খাই না দাদাই! পড়ে দেখা যাবে ঘুম ধরবে না ।” রজব মোল্লা একটা চায়ের কাপ হাতে নিয়ে সেটায় একটা চুমুক দিয়ে বলল, “আরে লেও লেও! একদিন না হয় আমার জন্য খাইলা!” সাবিত আর না করলো না । চায়ের কাপটা নিলো । চুমুক দিলো তাতে । তারপর রজব মোল্লা বলল, “শুক্রিয়া জানাইতে চাই এই কারণে, আমি তোমারে চাইসিলাম এইহানে আনতে, তা তুমি দেহি ম্যালা লোকজনরে আইনা দিলা!” সাবিত জিজ্ঞেস করলো, “কেনো দাদাই, ওরা এখানে আসাতে কি আপনার ভালো লাগে নি?” রজব মোল্লা বলল, “লাগছে! ম্যালা ভালা লাগছে! আর আমার ভালা লাগার কারণডা তোমাদের জইন্য খারাপ লাগার কারণ! তাই সরি কইলাম!” সাবিত “মান………।” বলে থেমে গেলো, এ লাগিয়ে মানে শব্দটা পূর্ণ করতে পারলো না । কারণ হুট করে ওর মাথাটা কেমন ঘুরে উঠলো । সাবিতের হাত থেকে চায়ের কাপটা পড়ে গেলো । সাবিত বলে উঠলো, “আমার এমন লাগছে কেনো!” রজব মোল্লা বলল, “এইডাই তো আমার কাম! এই জইন্য সরি সাবিত!” সাবিত “দাদাই! আপনি এতো খারা…………প………।” ‘প’ টা উচ্চারণ করেই জ্ঞান হারায় সাবিত ।
এটুকু বলে থামলো সাবিত । যে রুমে ওদের আনা হয়েছে, সেখানে একটা বিছানা আছে । সেই বিছানায় বসে ছিলো চয়নিকা । জিজ্ঞেস করলো, “কিন্তু তোমার চেহারার এ কি হাল! আর এক চোখ কেনো নিয়েছে ওরা?’ সাবিত বলল, “আমার জ্ঞান ফিরলে আমি নিজেকে এই বিছানায় পাই । তখন আরেকজন বোরখা পড়া লোকের কাছে জানতে পারি, কাহরামানের আদেশে আমার মুখ পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে, যেনো আমি কাউকে চেহারা দেখানোর যোগ্য না হতে পারি! শুধু তাই নয়, আমার শরীরের হরমোন পাল্টে দেয়া হয়েছে! আর কিছুদিনের মধ্যেই আমি দেহে পুরুষ আর আচরণে নারী, এক কথায় হিজড়া হয়ে যাবো!” কথা শুনে চয়নিকা মুখে হাত দিলো । বুকটা ছ্যাঁত করে উঠলো ওর । বলল, “ভাই! আমি সত্যি জানি না কিভাবে কি করবো! কিন্তু আমি মনে হচ্ছে একটা জঘন্য সময়ে রয়েছি! আপনার মতো এতো ভালো! এতো সুস্থ একজন মানুষকে ওর জানোয়ার কাহরামান আর রজব মোল্লা এমন বানাবে ভাবতেও পারিনি!” সাবিত বলল, “ঠিক আছে! এখন বেশি কথা বোলো না! যে কেউ এসে যাবে! ওরা চায় আমাদের গোলাম বানিয়ে রাখতে! তোমাকেও তাই রাখতে চায়! এক চোখ তুলে নেবার কারণ কেউ কিছু উল্টাপাল্টা করলে তার আরেক চোখ তুলে নিতে ওদের বেশি সময় লাগবে না তা বোঝানো! আর ওরা আমাদের ধরে রেখে আরেকটা উপায়ে! আমাদের ড্রাগসের নেশায় মাতিয়ে রেখে ওরা জোরপূর্বক ড্রাগস দিয়ে! এমন হয়ে গেছে, ভাত না খেলেও চলে, ড্রাগস না খেলে চলে না!” চয়নিকা বলল, “ভাই! তোমাকে আমি বাঁচাবো! বলো! কিভাবে কি করতে হবে?” সাবিত হালকা হেসে বলল, “এই চেহারা আর পালটে যাওয়া আচরণ নিয়ে আমার আর বাচার ইচ্ছে নেই । কিন্তু মরার আগে তোমারা ঠিকঠাক আছো কিনা তা নিশ্চিত হতে চাই!” চয়নিকা বলল, “এভাবে বলবেন না ভাই! প্লিজ!” সাবিত বলল, “আচ্ছা! তোমাকে যা করতে হবে বলি! একটু পরে সবাইকে ড্রাগস দেবার সময়! আমি সুযোগ বুঝে ওই কাহরামানকেও ড্রাগস দিয়ে দেবো! তুমি সেই সময় ওই যেখান দিয়ে আসো, সেখান দিয়ে বেড়িয়ে যাবে! তারপর সাবিতকে সবটা বলবে, ঠিক আছে?” চয়নিকা বলল, “হুম! ঠিক আছে!”
আবিরকে নিয়ে একটা কুড়ে ঘরের কাছাকাছি এলো সেই ফকির । কুড়েঘরটার দিকে ইশারা করে বলল, “ওই ঘরেই থাহে সেই কারিশ্মাওয়ালা!” আবির জিজ্ঞেস করলো, “আপনি সত্যি বলছেন?” ফকির বলল, “দুইডা কারিশ্মাওয়ালা আছে এই এলাকায়! এইডারেই তুমি খুজতেছো কিনা তা কইতে পারি না!” আবির ফকিরের হাতে ১হাজার টাকা দিলো । ফকির দন্তহীন হাসি হাসতে হাসতে আর টাকার ঘ্রাণ নিতে নিতে প্রস্থান করলো । আবির সেই ঘরের দিকে এগিয়ে আসতে লাগলো । বাহির থেকে দেখে তো মনেই হয় না কেউ আছে । তবু আবির কুঁড়েঘরটার দিকে এগোতে লাগলো । নক করলো দরজায় । একবার, দুবার……একুশ বার, বাইশবার, কিন্তু কেউ দরজা খুললো না । আদৌ ভেতরে কেউ আছে তো? আবির ডেকেওছে অনেকবার, “ভেতরে কেউ আছে? হ্যালো? কেউ আছেন? প্লিজ দরজা খুলুন! কেউ আছেন!” দরজার খুলল না কেউ । আবির দরজা খোলার চেষ্টা করলো, তাও খুললো না । এর মানে তো একটাই, ভেতরে কেউ আছে, কিন্তু খুলছে না দরজা । আবির দরজা ভাঙ্গার চেষ্টা চালালো । হাতের বাহু দিয়ে তিনবার দরজায় আঘাত করতেই দরজা খুলে গেলো । কিন্তু ভেতরে দরজার কাছেই এক লোক একটা লাঠি নিয়ে আঘাত করার জন্য প্রস্তুত ছিলো, সে এসে সজোড়ে আঘাত করলো আবিরের মাথার । তারপর ধীরে ধীরে চারপাশ ঘোলা দেখতে দেখতে জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লো আবির ।

আগামী পর্বেঃ
ধীরে ধীরে চোখ খুলল আবির । দেখলো, একটা বিছানার ওপর বসে ও । চোখ খুলতেই সামনে গেড়ুয়া পোশাকধারী এক লোক । এই লোক এই লোকই আবিরের মাথায় আঘাত করেছিলো । চোখ ঝাপসা থাকায় আবির ভালো করে দেখতে পাচ্ছিলো না লোকটাকে । লোকটা মাথা নিচু করে চোখ বন্ধ করে থাকায় আবিরের যে জ্ঞান ফিরেছে তা খেয়াল করে নি । আবির চোখ রগড়ে ভালো করে তাকালো । চেনা চেনা লাগছে না? এটা রিভু না?