পরিচয় পর্ব-৩২৪
পরিচয়(পর্ব-৩২৪)
(সিজন-১১: আত্মার সাক্ষাৎ)
(সিজন-১১: আত্মার সাক্ষাৎ)
দূর থেকে দাঁড়িয়ে আড়াল থেকে ঝিকানায় রজব মোল্লার বাড়ির দিকে তাকিয়ে আবির । হ্যাঁ, যা ভেবেছিলো তাই । সেই হারুন ব্যাটারিবাহী নৌকোটা এই শাখানদী দিয়েই আসছে এদিকে । এটা যে আসলে ব্যাটারি না তা আগে থেকেই বুঝেছে আবির । কিন্তু কি এর ভেতর তা ঢাকায় অপুর কাছে পাঠানো সেই ব্যাটারির খোসা আর তাতে লেগে থাকা গুড়ো না টেস্ট করলে বোঝা যাবে না । আবির সেখান থেকে একটু দূরে সরে এসে কল করলো অপুকে । এবারে কল ধরলো অপু । কল ধরতেই অপু অস্থিরভাবে বলল, “মাত্রই তোকে কল করতে যাচ্ছিলাম! কই পেয়েছিস এই গুড়ো?” আবির বলল, “ভাই! বিস্তারিত ফোনে বলা সম্ভব না! তুই আমাকে বল এগুলো কি?” অপু বলল, “এগুলো তো ভয়ানক মাদক দ্রব্য! এগুলো এলএসডি!” কথা শুনে আবিরের চোখ কপালে ওঠার মতো অবস্থা । এলএসডি!
চোখ বেধে দুজনের পিঠে পিঠ লাগিয়ে দুজনেরই দুই হাত পেছন দিকে দিয়ে বেঁধে, পা বেঁধে রাখা হয়েছে অয়ন আর মাইশাকে । “হে……………ল্প! কেউ আছে…………………! বাচা………………ন!” জোড়ে জোড়ে চেচাচ্ছে অয়ন । মাইশা বলল, “লাভ নেই অয়ন, এখানে আশেপাশে কেউ আসবে না । কারণ এই জায়গা একদম নির্জন । তা না হলে ওরা আমাদের মুখও বেঁধে রাখতো । অয়ন বলল, “ভেবেছিলাম ট্যুরটা খুব ভালো হবে! কিন্তু এতো খারাপ কিছু যে ঘটে যাবে তা ভাবতে পারিনি!” মাইশা বলল, “আমি ভাবছি জরিনা আপু আর নিশানের কথা । উনাদের যে কি হবে!” অয়ন বলল, “চুনি আপু আর আবির ভাই-ই এখন ভরসা ।” মাইশা বলল, “কিন্তু উনাদেরও যদি ধরে ফেলে ওরা?” অয়ন কিছু বলল না ।
“নিশান! নিশান!” চেচিয়ে উঠলো জরিনা । ওরও দুই চোখ হাত পা বাধা । নিশান ফিসফিসিয়ে বলল, “শশশ! এখন কথা বোলো না আপু! আমি আমার চোখের বাধন খুলে ফেলেছি! এখন আমাকে ভাবতে দাও কি করা যায়!” জরিনা বলল, “যাই করো বাপ! নিজে ভালো থাইকো!” নিশান বলল, “টেনশন কোরো না আপু! আমি সবাইকে উদ্ধার করবো!” সেই সময় নিশানের নজরে এলো একটা ভাঙ্গা কাচের টুকরো । ওদেরকে আটকে রাখা হয়েছে রজব মোল্লার বাড়ির নিচের গোডাইনের এক কোণায় । এতক্ষণ এখানে লোকজন বাক্স ভরে ভরে কি যেনো আনা নেয়া করছিলো । এখন লোকের আনাগোনা থেমেছে । কাচের টুকরোটা মুখ দিয়ে নেবার চেষ্টা করলো নিশান কিন্তু ঠিক সেই সময় মিতু এসে পা দিয়ে লাথি দিয়ে কাচের টুকরোটা সরিয়ে দিয়ে বলল, “চালাকি করিস না পুইচকা!” তারপর আবার বেঁধে দিলো নিশানের চোখের বাধন ।
এদিকে চয়নিকাকে আটকে রাখা হয়েছে আত্মাঘরে । চয়নিকা জোরে জোরে দরজা ধাক্কাচ্ছে আর কাঁদতে কাঁদতে বলছে, “আমাকে বেরোতে দে! আমাকে বেরোতে দে! কি ক্ষতি করেছি আমি তোর! কেনো আটকে রেখেছিস আমাকে! আমাকে বেরোতে দে!” ওপাশ থেকে কোনো আওয়াজ এলো না । চয়নিকা মাটিতে বসে কান্নাকাটি শুরু করলো । এমন সময় ওর মাথায় এলো, আত্মা এই ঘরে এমনি এমনি তো আসে না, কারণ তো তারা আসলে আত্মাই না, তাহলে এই ঘরে এমন একটা পথ আছে, যেখান থেকে এই ঘরে আসা যায়, কিন্তু কি সেই পথ!
“ভাই! তুই যতো তাড়াতাড়ি পারিস পাবনায় চলে আয় ভাই! আমার পরিবার বিপদে! তুই তাড়াতাড়ি আয়!” অপুকে বলল আবির । অপু বলল, “আচ্ছা দোস্ত, আমি এক্ষুনি ফোর্স নিয়ে রওনা হচ্ছি ।” বলে কল কাটলো অপু । আবির ভাবছিলো কি করবে । কারণ ঢাকা থেকে আসতে আসতে অনেক রাত হয়ে যাবে । আবিরের মাথায় তখন একটা বুদ্ধি এলো । আবির নিজের গাড়িতে উঠে চলে এলো বাস স্টেশন । টিকেট কাউন্টারে জিজ্ঞেস করলো, “আচ্ছা, বাসে কারিশ্মা যে লোক দেখায়, তাকে কোথায় পাওয়া যাবে?” টিকেট কাউন্টারের লোকটা বলল, “তা তো কইতে পারি না ভাই! হেই লোক কহন আসে, কহন যায় এইসব কিচ্ছুই জানি না ।” পাশেই একটা ফকির বসে ভিক্ষা করছিলো । আবির আর টিকেট কাউন্টারে থাকা লোকটার কথোপকথন সে বেশ মনোযোগ দিয়ে শুনছিল । আবির টিকেট কাউন্টারে জিজ্ঞেস করলো, “আচ্ছা, তাদের ব্যাপারে কি কিছু জানেন?” টিকেট কাউন্টারের লোকটা বলল, “না ভাই, আমার কিছুই জানা নাই, থাইকলে সত্যি কইতাম!” আবির কিছু বলল না । গাড়ির দিকে আসতে নেবে, সে সময় ফকিরটা বলল, “তুমি কি হেই কারিশ্মাওয়ালা লোকের কাছে যাইবা?” আবির বলল, “আপনি কি চেনেন তাকে?” ফকির কিছু না বলে হাঁটতে হাঁটতে বলল, “আমার লগে লগে আসো!” ফকির হাঁটতে লাগলো, আবির ফকিরের পেছন পেছন যেতে লাগলো ।
চারিদিকে মানুষ প্রবেশ করার মতো তেমন কিছু পেলো না চয়নিকা । কিন্তু একটা জিনিসই আছে, যা সন্দেহজনক । ওপরে মাটির সাথে ঠেস দিয়ে রাখা জিনিসটা । কিন্তু ওখানে ওঠা তো এতো সহজ নয় । তাহলে? চয়নিকা তবু চেষ্টা চালিয়ে গেলো । মাটি খুড়ে খুড়ে হাত রাখার মতো জায়গা করে উঠতে চাচ্ছিলো সে । অনেকটা দূর পর্যন্ত গেলোও । কিন্তু ঠিক সেই সময় বোরখা পড়া কেউ একজন এসে চয়নিকাকে টেনে নামালো । লোকটা বলল, “এই! তোমাকে অন্য রুমে যেতে হবে! আত্মা দেখার ভিজিটর এসেছে!” চয়নিকা জোড় জবরদস্তি শুরু করলো, “না যাবো না! ছাড়ো আমাকে! কি চাও তোমরা!” এবারে বোড়খা পড়া লোকটা তার মুখের কাপড় সরালো । চয়নিকা দেখলো, লোকটার এক চোখ নেই । মুখ পুড়ে গেছে, বোধ হয় কেউ এসিড মেরেছে । তবে ঘা খুব একটা পুরোনো না । কিন্ত কণ্ঠ আবার সেই আগের শোনা লোকজনদের মতোই, ঢাকা অবস্থায় বোঝাই যায় না ছেলে না মেয়ে । লোকটা এবার যা বলল তা শুনে আকাশ থেকে পড়লো চয়নিকা । লোকটা বলল, “চুনি! আমি সাবিত! তুমি এখন যা বলছি শোনো! পড়ে সুযোগ বুঝে তোমাকে বের করে দেবো!”
আগামী পর্বেঃ
চয়নিকা বলল, “ভাই! তোমাকে আমি বাঁচাবো! বলো! কিভাবে কি করতে হবে?” সাবিত হালকা হেসে বলল, “এই চেহারা আর পালটে যাওয়া আচরণ নিয়ে আমার আর বাচার ইচ্ছে নেই । কিন্তু মরার আগে তোমারা ঠিকঠাক আছো কিনা তা নিশ্চিত হতে চাই!” চয়নিকা বলল, “এভাবে বলবেন না ভাই! প্লিজ!”
চোখ বেধে দুজনের পিঠে পিঠ লাগিয়ে দুজনেরই দুই হাত পেছন দিকে দিয়ে বেঁধে, পা বেঁধে রাখা হয়েছে অয়ন আর মাইশাকে । “হে……………ল্প! কেউ আছে…………………! বাচা………………ন!” জোড়ে জোড়ে চেচাচ্ছে অয়ন । মাইশা বলল, “লাভ নেই অয়ন, এখানে আশেপাশে কেউ আসবে না । কারণ এই জায়গা একদম নির্জন । তা না হলে ওরা আমাদের মুখও বেঁধে রাখতো । অয়ন বলল, “ভেবেছিলাম ট্যুরটা খুব ভালো হবে! কিন্তু এতো খারাপ কিছু যে ঘটে যাবে তা ভাবতে পারিনি!” মাইশা বলল, “আমি ভাবছি জরিনা আপু আর নিশানের কথা । উনাদের যে কি হবে!” অয়ন বলল, “চুনি আপু আর আবির ভাই-ই এখন ভরসা ।” মাইশা বলল, “কিন্তু উনাদেরও যদি ধরে ফেলে ওরা?” অয়ন কিছু বলল না ।
“নিশান! নিশান!” চেচিয়ে উঠলো জরিনা । ওরও দুই চোখ হাত পা বাধা । নিশান ফিসফিসিয়ে বলল, “শশশ! এখন কথা বোলো না আপু! আমি আমার চোখের বাধন খুলে ফেলেছি! এখন আমাকে ভাবতে দাও কি করা যায়!” জরিনা বলল, “যাই করো বাপ! নিজে ভালো থাইকো!” নিশান বলল, “টেনশন কোরো না আপু! আমি সবাইকে উদ্ধার করবো!” সেই সময় নিশানের নজরে এলো একটা ভাঙ্গা কাচের টুকরো । ওদেরকে আটকে রাখা হয়েছে রজব মোল্লার বাড়ির নিচের গোডাইনের এক কোণায় । এতক্ষণ এখানে লোকজন বাক্স ভরে ভরে কি যেনো আনা নেয়া করছিলো । এখন লোকের আনাগোনা থেমেছে । কাচের টুকরোটা মুখ দিয়ে নেবার চেষ্টা করলো নিশান কিন্তু ঠিক সেই সময় মিতু এসে পা দিয়ে লাথি দিয়ে কাচের টুকরোটা সরিয়ে দিয়ে বলল, “চালাকি করিস না পুইচকা!” তারপর আবার বেঁধে দিলো নিশানের চোখের বাধন ।
এদিকে চয়নিকাকে আটকে রাখা হয়েছে আত্মাঘরে । চয়নিকা জোরে জোরে দরজা ধাক্কাচ্ছে আর কাঁদতে কাঁদতে বলছে, “আমাকে বেরোতে দে! আমাকে বেরোতে দে! কি ক্ষতি করেছি আমি তোর! কেনো আটকে রেখেছিস আমাকে! আমাকে বেরোতে দে!” ওপাশ থেকে কোনো আওয়াজ এলো না । চয়নিকা মাটিতে বসে কান্নাকাটি শুরু করলো । এমন সময় ওর মাথায় এলো, আত্মা এই ঘরে এমনি এমনি তো আসে না, কারণ তো তারা আসলে আত্মাই না, তাহলে এই ঘরে এমন একটা পথ আছে, যেখান থেকে এই ঘরে আসা যায়, কিন্তু কি সেই পথ!
“ভাই! তুই যতো তাড়াতাড়ি পারিস পাবনায় চলে আয় ভাই! আমার পরিবার বিপদে! তুই তাড়াতাড়ি আয়!” অপুকে বলল আবির । অপু বলল, “আচ্ছা দোস্ত, আমি এক্ষুনি ফোর্স নিয়ে রওনা হচ্ছি ।” বলে কল কাটলো অপু । আবির ভাবছিলো কি করবে । কারণ ঢাকা থেকে আসতে আসতে অনেক রাত হয়ে যাবে । আবিরের মাথায় তখন একটা বুদ্ধি এলো । আবির নিজের গাড়িতে উঠে চলে এলো বাস স্টেশন । টিকেট কাউন্টারে জিজ্ঞেস করলো, “আচ্ছা, বাসে কারিশ্মা যে লোক দেখায়, তাকে কোথায় পাওয়া যাবে?” টিকেট কাউন্টারের লোকটা বলল, “তা তো কইতে পারি না ভাই! হেই লোক কহন আসে, কহন যায় এইসব কিচ্ছুই জানি না ।” পাশেই একটা ফকির বসে ভিক্ষা করছিলো । আবির আর টিকেট কাউন্টারে থাকা লোকটার কথোপকথন সে বেশ মনোযোগ দিয়ে শুনছিল । আবির টিকেট কাউন্টারে জিজ্ঞেস করলো, “আচ্ছা, তাদের ব্যাপারে কি কিছু জানেন?” টিকেট কাউন্টারের লোকটা বলল, “না ভাই, আমার কিছুই জানা নাই, থাইকলে সত্যি কইতাম!” আবির কিছু বলল না । গাড়ির দিকে আসতে নেবে, সে সময় ফকিরটা বলল, “তুমি কি হেই কারিশ্মাওয়ালা লোকের কাছে যাইবা?” আবির বলল, “আপনি কি চেনেন তাকে?” ফকির কিছু না বলে হাঁটতে হাঁটতে বলল, “আমার লগে লগে আসো!” ফকির হাঁটতে লাগলো, আবির ফকিরের পেছন পেছন যেতে লাগলো ।
চারিদিকে মানুষ প্রবেশ করার মতো তেমন কিছু পেলো না চয়নিকা । কিন্তু একটা জিনিসই আছে, যা সন্দেহজনক । ওপরে মাটির সাথে ঠেস দিয়ে রাখা জিনিসটা । কিন্তু ওখানে ওঠা তো এতো সহজ নয় । তাহলে? চয়নিকা তবু চেষ্টা চালিয়ে গেলো । মাটি খুড়ে খুড়ে হাত রাখার মতো জায়গা করে উঠতে চাচ্ছিলো সে । অনেকটা দূর পর্যন্ত গেলোও । কিন্তু ঠিক সেই সময় বোরখা পড়া কেউ একজন এসে চয়নিকাকে টেনে নামালো । লোকটা বলল, “এই! তোমাকে অন্য রুমে যেতে হবে! আত্মা দেখার ভিজিটর এসেছে!” চয়নিকা জোড় জবরদস্তি শুরু করলো, “না যাবো না! ছাড়ো আমাকে! কি চাও তোমরা!” এবারে বোড়খা পড়া লোকটা তার মুখের কাপড় সরালো । চয়নিকা দেখলো, লোকটার এক চোখ নেই । মুখ পুড়ে গেছে, বোধ হয় কেউ এসিড মেরেছে । তবে ঘা খুব একটা পুরোনো না । কিন্ত কণ্ঠ আবার সেই আগের শোনা লোকজনদের মতোই, ঢাকা অবস্থায় বোঝাই যায় না ছেলে না মেয়ে । লোকটা এবার যা বলল তা শুনে আকাশ থেকে পড়লো চয়নিকা । লোকটা বলল, “চুনি! আমি সাবিত! তুমি এখন যা বলছি শোনো! পড়ে সুযোগ বুঝে তোমাকে বের করে দেবো!”
আগামী পর্বেঃ
চয়নিকা বলল, “ভাই! তোমাকে আমি বাঁচাবো! বলো! কিভাবে কি করতে হবে?” সাবিত হালকা হেসে বলল, “এই চেহারা আর পালটে যাওয়া আচরণ নিয়ে আমার আর বাচার ইচ্ছে নেই । কিন্তু মরার আগে তোমারা ঠিকঠাক আছো কিনা তা নিশ্চিত হতে চাই!” চয়নিকা বলল, “এভাবে বলবেন না ভাই! প্লিজ!”