0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

লাভ ডট কম (পর্ব-৯)

লাভ ডট কম (পর্ব-৯)
জবাব দিলো সোহান ।
- “আচ্ছা, তোমার বাড়িতে কে কে আছেন?” জিজ্ঞেস করলো ঊর্মি ।
- “আমার মা, বাবা, আর ছোট ভাই ।” জবাব দিলো সোহান ।
- “ওয়াও, তোমার ভাই কেমন?”
- “কেমন বলতে?
- “মানে দুষ্টুমি করে, নাকি শান্ত থাকে?”
- “করে দুষ্টুমি, তবে কখনো লিমিট ক্রস করে না । সময়সাপেক্ষ বুঝে দুষ্টুমি করে ।” হালকা হেসে জবাব দিলো সোহান ।
- “ওয়াও, তোমার ভাই তো দেখি তোমার চেয়েও স্মার্ট ।” বলল ঊর্মি ।
সোহান হেসে একটু নড়ে বসে বেঞ্চের ওপর হাত রাখতেই হাত পড়লো ঊর্মির হাতের ওপর । ঠিক তখন দুজনে হাতের দিকে তাকাল । তারপর দুজন দুজনের দিকে । দুজনের চোখে একে অপরের প্রতিচ্ছবি দেখতে পাচ্ছে । সেই সময় বাতাস বইতে শুরু করলো । সন্ধ্যা নামার ঠিক আগ মুহূর্তে শুধু দুজনে বসে দুজনের দিকে তাকিয়ে ।
ধীরে ধীরে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো । বেঞ্চের ওপর একটা ছাতার মতো কিছু থাকার দুজনে ভিজল না, তবে আশেপাশে লোকজন দৌড়ে যার যার মতো চলে গেলো । পার্কে শুধু সোহান আর ঊর্মি । ধীরে ধীরে ঊর্মি সোহানের দিকে এগিয়ে আসতে লাগলো । সোহানও ধীরে ধীরে ঊর্মির দিকে এগিয়ে আসতে লাগলো দুজনে প্রায় যখন কাছাকাছি, ঠিক তখন সোহান অন্য দিকে তাকিয়ে বলল, “অ্যাসাইনমেন্ট করেছো?” ঊর্মিও অন্যদিকে তাকিয়ে দূরে সরে গেলো । বলল, “ইয়ে মানে, না । তুমি?” সোহান জবাব দিলো, “না ।” দুজনে কিছুক্ষণ চুপ । তারপর সোহান জিজ্ঞেস করলো, “আচ্ছা ঊর্মি, তোমার কি আমার প্রতি কোন দুর্বলতা কাজ করে?’ হঠাৎ সোহানের এমন প্রশ্নে ঊর্মি সোহানের দিকে তাকাল । ঊর্মি ভয় পায় নি! কিন্ত চেহারাটা দেখে মনে হচ্ছিলো ঊর্মি হয়তো নেগেটিভ কিছু বলবে । আর যাই হোক, সোহানের অন্তত অমনটা মনে হচ্ছিলো । ফ্রেন্ডশিপটা নষ্ট হয়ে যাবে এই ভেবে সোহান হেসে উঠে বলল, “আরে, মজা করলাম । আমার তো মেয়েদের প্রতি কোন দুর্বলতাই কাজ করে না ।” ঊর্মি হেসে উঠলো । একটু পর বৃষ্টি থেমে গেলো । ঊর্মি উঠে দাড়িয়ে তখন বলল, “আমার যাওয়া লাগবে , চলো যাই?”
- “এখনই?” জিজ্ঞেস করলো সোহান ।
- “আচ্ছা, তুমি যাও তাহলে, আমি পড়ে যাবো ।” বলল সোহান ।
- “আচ্ছা ঠিক আছে ।” ঠোঁটের কোণে হাসি নিয়ে কথাটা বলল ঊর্মি । তারপর যেতে গিয়েও হঠাৎ থেমে বলল, “কাল ক্লাসে তাড়াতাড়ি এসো কিন্তু!” সোহান ঊর্মির দিকে তাকিয়ে বলল, “ঠিক আছে!” ঊর্মি চলে গেলো । সোহান বেঞ্চের পাশেই একটা গাছের সাথে মাথা ঠেকিয়ে সামনের দিকে তাকাল । সূর্য ডুবে গেছে । আকাশে লাল বর্ণের দাগগুলো এখান থেকে দারুন দেখা যাচ্ছে ।
রাত প্রায় ১২টার দিকের কথা । রুমে সুমির সাথে কথা বলছিল সাকিব । “আচ্ছা জানু, না ওরা এখনও আসে নি । হুম আমি রুমে একা । ঠিক আছে, থাকো তাহলে, ওকে, লাভ ইউ, উমাহ ।” বলে ফোনটা রাখল । তারপর উঠে এসে একবার বারান্দা দিয়ে বাইরের দিকে তাকাল । নিজেই নিজেক বলল, “কি ব্যাপার! সোহান আর ইকবাল এতো রাত পর্যন্ত কি করে?” তারপর কিছুক্ষণ আশপাশে চোখ বুলিয়ে রুমে ঢুকে একটা বই বের করে পড়তে লাগলো সাকিব ।
“কি মামা! যাইবেন না! রাইত হইয়া গেছে তো! ১২টা বাজে! মামা কি নেশা করছেন নাকি!” চোখ খুলে সোহান দেখলো বছর ১২এর একটা ছেলে ডাকছে সোহানকে । সোহান উঠে বসলো । জিজ্ঞেস করলো, “কয়টা বাজে?” ছেলেটা বলল, “১২ টার বেশি বাজে মামা ।” সোহান একটা হাই তুলে জিজ্ঞেস করলো, “তুই কে?”
- “টোকাই মামা, দিনের বেলায় লোকজন যা ফালায় থুইয়া যায়, রাইতে সেইগুলা কুড়াইয়া নিয়া যাই । আপ্নেরে দেখলাম শুইয়া আছেন তাই ডাকলাম ।” জবাব দিলো ছেলেটা । সোহান কিছু বলল না । ছেলেটা তখন জিজ্ঞেস করলো, “মামার কি শত্রু আছে?” সোহান ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বলল, “কেন?” ছেলেটা বলল, “জানি না, তয় খেয়াল করতেছিলাম, কেডায় জানি আপনেরে আড়াল থেইকা দেখতেছিল ।” সোহান আশপাশে তাকাল । কাউকে না দেখে ছেলেটা ভুল দেখেছে ভাবল । তারপর ছেলেটাকে সোহান জিজ্ঞেস করলো, “খাওয়া দাওয়া করেছিস?”
- “না মামা, এই যা কুড়াইয়া পামু তা বেইচা যা টাকা পামু তাই দিয়া সকালে খামু ।” জবাব দিলো ছেলেটা । সোহান ছেলেটার দিকে একবার তাকাল । তারপর পকেট থেকে ১০০টা বের করে ছেলেটার হাতে দিয়ে বলল, “নে কিছু কিনে খাস ।” ছেলেটা টাকা পেয়ে খুব খুশি । সোহানকে ধন্যবাদ দিয়ে ভরিয়ে দিয়ে বলল, “যাই মামা, ভালো থাইকেন ।” সোহান ছেলেটার মাথায় হাত রেখে আদর করে দিয়ে বলল, “আচ্ছা যা ।” ছেলেটা চলে গেলো । সোহান উঠে দাঁড়ালো । ভার্সিটির গেইট দিয়ে ঢোকার সময় দারোয়ান জিজ্ঞেস করলো, “কি মামা, বাইরে কি চলে?” সোহান মধ্যমা আঙুল দেখিয়ে ভেতরে ঢুকে গেলো । এতো রাতে বাইরে কেউ থাকে না । এমনকি গেইটের দারোয়ান ছাড়া বাকি দারোয়ানরাও রেস্ট নেয় । কিছু ছেলেপেলে থাকে, র‍্যাগ ট্যাগ করে । সোহান রুমের দিকে যাচ্ছিলো । শটকাটে যাওয়ার জন্য মাঠের মাঝখান দিয়ে যেতে হবে ওকে আর মাঠের মাঝখানে আছে সেই পুকুর যার পাড়ে বসে সোহান আর ঊর্মি কথা বলেছিল যেতে যেতে সোহানের মনে হল পুকুর থেকে কেউ চেচাচ্ছে “হেল্প! হেল্প!” পানি প্রায় ডুবতে ডুবতে কথাগুলো বলছিল, তাই বেশি দুর অবধি কথা কারো কানে পৌঁছায় নি । সোহান পুকুরের কাছে গেলো । বৃষ্টিতে পুকুরের গভীরতা অনেক বেড়েছে । সোহান দেখল, সত্যি কেউ বিপদে পড়েছে । হাত দিয়ে কোনোরকমে ভেসে আছে । সোহান সাতার জানতো, কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাড়াতাড়ি পানিতে নেমে গেলো । সাতার কেটে লোকটা কাছে যেতেই লোকটা জ্ঞান হারাল । তারপর অনেক কষ্টে পাশেই ভেসে থাকা একটা ডালের ওপর লোকটাকে ধরল সোহান । ভালো করে খেয়াল করে দেখল, এটা ইকবাল । সোহান ইকবালকে ডালের সাহায্যে ধরে ইকবালকে পাড়ে নিয়ে এলো । সোহান ইকবালকে বটতলার নিচে এসে ইটের ওপর উপুড় করে শোয়াল । তারপর ইকবালের পিঠে চাপ দিতে লাগলো । ইকবালের মুখ দিয়ে বেশ খানিকটা পানি বের হল । তারপর সোহান ইকবালকে সোজা করে শোয়াল । ইকবালের গালে হাত দিয়ে কয়েকবার ডাকল, সাড়া পেলো না । সোহান ইকবালের বুকে চাপ দিয়ে কয়েকবার চেষ্টা করলো, কিন্তু তাতেও কিছু হল না । এখন আর একটাই উপায় আছে । মুখে মুখ লাগিয়ে ইকবালের শ্বাস প্রশ্বাস চালু করা ।

আগামী পর্বেঃ
সোহানকে দেখে পুরো ক্লাস থেমে সোহানের দিকে তাকিয়ে রইল । সোহান নিলয়কে দেখে নিলয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলো, নিলয় সোহানকে কাছে আসতে দেখে ভয়ে বলল, “ভাই, ক্কাছে আসিস না! প্লিজ! ভয় লাগে তোরে দেখলে!” সোহান দূরে দাড়িয়ে রইল । একবার চারপাশে তাকিয়ে সবাইকে দেখল, সবাই সোহানের দিকে তাকিয়ে । হয়েছে কি আজ? সোহান নিলয়কে জিজ্ঞেস করলো, “দোস্ত, বলনা কি হয়েছে?” - “ভাই শোন, আজ থেকে তুই আমার সাথে কথা বলিস না ।” জবাব দিলো নিলয় ।