0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

লাভ ডট কম (পর্ব-১০)

লাভ ডট কম (পর্ব-১০)
মুখে মুখ লাগিয়ে ইকবালের শ্বাস প্রশ্বাস চালু করা । সোহান সেটাই করলো । খানিক পর ইকবালের জ্ঞান ফিরল । সোহান বলল, “ইকবাল, ঠিক আছিস?” ইকবাল কাশতে কাশতে উঠে বসলো । তারপর বলল, “আ, আমি পড়ে গিয়েছিলাম না পুকুরে?”
- “হ রে ভাই । কি হইছিল?” জিজ্ঞেস করলো সোহান ।
- “আরে, বৃষ্টিতে পুকুরপাড় কাদায় ভরে ছিল, সেজন্য, পা পিছলে পড়ে গিয়েছিলাম ।” জবাব দিলো ইকবাল ।
- “চল রুমে যাই ।” সোহান ইকবালকে ধরে রুমে নিয়ে গেলো । সাকিব দুজনকে ভেজা দেখে জিজ্ঞেস করলো, “কিরে? কি হয়েছে?”
সোহান জবাব দিলো, “ইকবাল পা পিছলে পুকুরে পড়ে গিয়েছিলো ।”
- “ও । তা একটু প্রেমে হাবুডুবু খেয়ে পুকুরে হাবুডুবু খাওয়ার ইচ্ছে হচ্ছিলো হয়তো ।” ইকবাল ভেজা শরীর নিয়েই মারতে চলে গেলো সাকিবকে । সোহান টাওয়েলটা হাতে নিয়ে বলল, “তোরা ঝগড়াঝাঁটি করতে থাক, আমি ড্রেসটা চেঞ্জ করে আসি ।” বলেই সোহান ওয়াশরুমে গেলো ।
পরদিন সকালের কথা । সোহানের ক্লাস সাড়ে ৯টায় । সাকিব আর ইকবালের আজ ক্লাস নেই । সোহান ঘুম থেকে উঠে রওনা হল ক্লাসের উদ্দেশ্যে ৯টার দিকে । অন্যান্য দিন মিনিট দশেক আগে রওনা হতো কিন্তু আজ এতো তাড়াতাড়ি যাওয়ার কারন ঊর্মি যেতে বলেছে তাই । তার ওপর আজকে সোহানের বার্থডে । ভেবেছিলো ইকবাল আর সাকিব উইশ করবে, কিন্তু ওরা তো সারারাত গভীর ঘুমে মগ্ন ছিল । এতো তাড়াতাড়ি নিজের সেকশনের সাথে দেখা না হলেও আসবার সময় অন্যান্য সেকশনের ৩-৪জন পরিচিত আর বেশ অনেকজন অপরিচিত লোকেদের সাথে দেখা । সবাই সোহানের কীভাবে যেন তাকিয়ে আছে । রাস্তা দিয়ে হঠাৎ একটা অপরিচিত প্রাণী হেঁটে গেলে মানুষ যেভাবে তাকিয়ে থাকে, কিন্তু প্রাণীটা আঘাত করতে পারে বলে কাছে যায় না, এরকম করে তাকিয়ে আছে সবাই সোহানের দিকে । পরিচিত যারা ছিল, তাদের সাথেও দেখা হল, সোহান তাদের “হাই! কি অবস্থা!” বলল, কিন্তু ওরা জবাব দিলো এমনভাবে যেন ওরা সোহানকে দেখানোর জন্য কথা বলছে, কিন্তু বলতে ইচ্ছে করছে না ওদের । ওরাও বাকিদের মতো সোহানের দিকে তাকিয়ে ছিল । সোহান ক্লাসে চলে এলো । ক্লাসে সোহানের সামনের মেয়েটা, মাইশা, সোহানকে দেখে বেঞ্চ থেকে উঠে বাইরে চলে গেলো । কেন গেলো, বুঝল না সোহান । ক্লাসে আর কেউ আসে নি এই মাইশা ছাড়া । সোহান অপেক্ষায় রইল ঊর্মির, কিন্তু ঊর্মির দেখা নেই । তাড়াতাড়ি আসতে বলে নিজে এতো দেরি করছে কেন? সোহান উঠে বারান্দার দিকে গেলো । বারান্দায়ও যারা ক্লাসের দিকে যাচ্ছে, তারাও সোহানের দিকে তাকিয়ে । কারো কারো ফিস ফিস করে বলা কথাও শুনল সোহান । কেউ কেউ বলছে, “বাপরে! আমি তো বাপের জন্মেও জীবনেও শুনি নি!” কেউ কেউ আবার বলছে, “ভাই আমি তো সোশ্যাল ডিসটেন্স মেইনটেইন করছি এর থেকে ।” কিছু বখাটে আবার সরাসরি সোহানকে শুনিয়েই বলছিল, “আরে সিঙ্গেল! আমরা তো আগে থেকেই জানতাম তুই এমন ।” কেমন! সোহানের মনে প্রশ্ন জাগলো । হয়েছে কি আসলে? সবাই সোহানকে দেখে এমন করছে কেন?” একটু পর সোহান জেসিকে দেখল । জেসি সোহানের থেকে কয়েকহাত দুরেই ছিল । আজ জেসি সোহানের দিকে তো এলোই না, উল্টো সোহানের দিকে ঘৃণার ভঙ্গিতে তাকিয়ে ক্লাসে ঢুকে গেলো । সোহানও ক্লাসে ঢুকল, এবং ঢুকেই যা দেখল, তা দেখে ও অবাক । সোহানের সিট যেখানে, তার পেছনের সিটটা আরও পেছনে সরানো হয়েছে, আর তার সামনে সিটটা আরও সামনে এগোনো হয়েছে । সোহানকে দেখে পুরো ক্লাস থেমে সোহানের দিকে তাকিয়ে রইল । সোহান নিলয়কে দেখে নিলয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলো, নিলয় সোহানকে কাছে আসতে দেখে ভয়ে বলল, “ভাই, ক্কাছে আসিস না! প্লিজ! ভয় লাগে তোরে দেখলে!” সোহান দূরে দাড়িয়ে রইল । একবার চারপাশে তাকিয়ে সবাইকে দেখল, সবাই সোহানের দিকে তাকিয়ে । হয়েছে কি আজ? সোহান নিলয়কে জিজ্ঞেস করলো, “দোস্ত, বলনা কি হয়েছে?”
- “ভাই শোন, আজ থেকে তুই আমার সাথে কথা বলিস না ।” জবাব দিলো নিলয় ।
- আমি তোকে কি প্রশ্ন করছি আর তুই কি জবাব দিচ্ছিস?” বিরক্ত হয়ে জিজ্ঞেস করলো সোহান ।
নিলয় আর কিছু বলল না । সোহান সে সময় খেয়াল করলো, ক্লাসরুমে ঢুকেছে আলিয়া ম্যাম । সোহান নিজের সিটে গেলো । পাশে তাকিয়ে পেছনে তাকিয়ে দেখল, ঊর্মির সিট এখনও ফাঁকা । এখনও ঊর্মি আসে নি । সোহান এও খেয়াল করলো, আলিয়া ম্যামও সবার মতো সোহানের দিকে তাকিয়ে আছে । আলিয়া ম্যাম অন্যান্য দিনের মতো যথারীতি রোল কল করলেন । সোহান বার বার পেছনের দিকে উরমিত সিটের দিকে কেন যেন তাকাচ্ছিল । নাম ডাকা শেষে আলিয়া ম্যাম ডাকলো সোহানকে । এবারেও তৃতীয়বার সোহানের কানে কথা গেছে । আগের দুবার সোহান পেছনের দিকে ঊর্মির সিটের দিকে তাকিয়ে ছিল বলে ম্যামের ডাক শুনতে পায় নি । ম্যাম তখন সোহানকে বলল, “ও আর আসবে না । আমি ওকে বারণ করেছি । ও অন্য সেকশনে যাবার জন্য অ্যাপ্লিকেশন করতে গেছে ।” সোহান ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করলো, “কেন ম্যাম?” আলিয়া ম্যাম সোহানের প্রশ্নের জবাব দিলেন না । কিছুক্ষণ থেমে বললেন, “দ্যাখো সোহান, তুমি যদি নিজেকে স্বাভাবিক রাখতে পারো, তাহলে এই ভার্সিটিতে থেকো, অন্যথায় আমরা টিসি দিতে বাধ্য হবো । স্বাভাবিক? সোহান কি অস্বাভাবিক কাজ করলো?

আগামী পর্বেঃ
একটু পর এই হলের কেয়ারটেকারের সাথে দেখা সোহানের । রুমের সামনে বারান্দা দিয়েই যাচ্ছিলো । সোহান লোকটাকে আটকে বলল, “মামা, এই রুমে দুটো ছেলে ছিল ইকবাল আর সাকিব নামে, দেখছেন ওদের?” কেয়ারটেকার লোকটাও সোহানের দিকে ঘৃণার দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল, “আপনে যা কইরলেন, হেইয়া দেইখা আমি তো অবাক! সাকিব আর ইকবাল তো হের লাইগাই চইলা গেছে ।” সোহান ভ্রু কুঁচকে বিরক্ত হয়ে বলল, “আমি কি করেছিটা কি আসলে! সবার হয়েছে কি! আমাকে দেখে কেন সবাই এমন করছে?” কেয়ারটেকার লোকটা বলল, “আমি তো ফেসবুক চালাই না, তয় আমারে অন্য একখান পোলা দেখাইল । নাউযুবিল্লাহ, ওইসব দেখাও পাপ ।” বলেই কেয়ারটেকার লোকটা চলে গেলো ।