0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

লাভ ডট কম (পর্ব-৭)

লাভ ডট কম (পর্ব-৭)
শুরু হয়ে গেলো দুজনের মধ্যে মারামারি ।
“আচ্ছা রাখি তাহলে জান! লাভ ইউ! উমাহ!” বলে ফোনে আওয়াজ করে একটা চুমু খেয়ে ফোনটা কাটল সাকিব । রুমে দিকে আসতে আসতে দেখা হিমেলের সাথে । সাকিব জিজ্ঞেস করলো, “কিরে! তুই এখানে?”
- “এইতো দোস্ত, কাজ ছিল একটু । আর তুই এখানে কি করছিস!”
- “আরে, তেমন কিছুই না । ওই এমনি আরকি ।”
- “কেন ভায়া! গার্ল ফ্রেন্ডের সাথে কি চলছে?”- ইয়ার্কি করে বলল হিমেল । সাকিবও মুচকি হেসে উঠলো । বলল, “যাহ শালা! কি সব যে কস না । যা তাহলে ।” হিমেল চলে গেলো । সাকিব রুমে এসে দেখল, মেঝে শুয়ে ইকবাল, আর ইকবালের দু পাশে পা ছড়িয়ে বসে ইকবালকে মারছে সোহান । ইকবাল নিজেকে বাঁচানোর জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে । সাকিব যেয়ে আটকাল দুজনকে অনেক কষ্টে থামাল । এরপর সাকিব মেজাজ দেখিয়ে দুজনকে উদ্দেশ্য করে বলল, “কি শুরু করলি তোরা! আজব!” ইকবাল প্রায় কাঁদো কাঁদো হয়ে বলল, “ও রাইসাকে উলটা পাল্টা কথা বলছে । এখন আমি রাইসারে কি বলবো তুই-ই বল! ব্রেকআপ হইয়া গেলো আমার!” সাকিব সোহানের দিকে তাকিয়ে বলল, “সোহান! ঠিক করলি না কিন্তু এইসব! কেনো করলি তুই!” সোহান বলল, “ওর গার্ল ফ্রেন্ড ভালো কথা, আমি সিঙ্গেল বলে খোটা দেবে কেন! সিঙ্গেল বলে কি আমি মানুষ না!” ইকবালের কথায় সোহানের বিরুদ্ধে সাকিব যেভাবে কথা শোনালো, সোহানের কথায় কিন্তু সাকিব তেমন কিছু বলল না । সোহান অবাক হয়ে বলল, “কিরে! তুই এবার কিছু বলবি না ইকবালকে!” সাকিব মাথা নিচু করলো । সোহান বলল, “ও, তারমানে তোর গার্ল ফ্রেন্ডও আমাকে সিঙ্গেল বলে খোটা দেয়, তাই না!” সাকিব মাথা উচু করে বলল, “শুধু তাই না, ও তোরে গে-ও বলে ।” সোহান ধপ করে বসে পড়লো চেয়ারে । ইকবাল বলে উঠলো, “আমার গার্লফ্রেন্ডও বলে ।” সোহান কিছু বলতে পারলো না । সাকিব একটু পর বলল, “দ্যাখ সোহান, আমার মনে হয় কি, তুই একটা রিলেশনশিপ কইরা ফেল । না পারোস তো অন্তত একটা মিথ্যা অভিনয় কর তুই রিলেশনে আছোস । আর নাইলে…………।” থেমে গেলো সাকিব । সোহান মেজাজি গলায় বলল, “নাইলে কি! বল! নাইলে কি! চুপ করলি কেন! না বল! তোদের তো গার্লফ্রেন্ড যা বলল তাই ঠিক । গার্লফ্রেন্ড যদি বলে সূর্য আজকে উত্তরে উঠেছে তোরা বলবি তাও ঠিক । এখন চুপ করলি কেন! বল নাইলে কি!” ইকবাল জবাব দিলো, “নাইলে আমরা রুম চেঞ্জ করবো ।” সাকিবও ওপর নিচ মাথা নাড়ল । সোহান কিছু বলল না । চুপ্ করে দুজনের দিকে তাকিয়ে রইল ।
সকালে ঘুম থেকে উঠে সাকিব দেখল সোহান রুমে নেই । না রুম চেঞ্জ করে নি, জিনিসপত্র সবই আছে, শুধু সোহানই নেই । এমনকি মোবাইলটাও ফেলে রেখে গেছে । সোহান বেড়িয়েছে মোটর সাইকেল নিয়ে । হাতিরঝিল ব্রিজের ওপর দাড়িয়ে রইল মোটরসাইকেলটা রেখে । আজকে ক্লাস আছে, কিন্তু ক্লাসে যাওয়ার মুডটা নেই ওর । এমন সময় একটা মেয়ে সোহানকে ডেকে উঠলো, “আরে সোহান ।” সোহান দেখল , ঊর্মি দাড়িয়ে ।” অবাক হয়ে বলল, “একি ঊর্মি, তুমি এখানে! ক্লাসে যাও নি!”
- “যেতে ইচ্ছে করলো না আজ ।”- বলল ঊর্মি ।
- “ও আচ্ছা । কিন্তু তোমার তো মিস হবে অনেক ক্লাস, এমনিতেও প্রথম দিন আসো নি, আজ আবার ।”
- “ব্যাপার না । ম্যানেজ করে নেবো । তুমি কি করছো ক্লাস বাদ দিয়ে?”
সোহান সত্যটা তো আর বলতে পারবে না, তাই সত্য কথা গোপন করেই বলল, “তেমন কিছু না । গতকাল বিকেলে মোটরসাইকেলটা আনলাম তো, দেখছিলাম, কেমন চলে । সাথে তেলটাও দিলাম আর কি ।” ঊর্মি একবার সোহানের মোটরসাইকেলের দিকে তাকাল । তারপর বলল, “চালাতে পারো?” সোহান অট্টহাসি হেসে উঠলো । ঊর্মি জিজ্ঞেস করলো, “একি, হাসছো কেন?”
- “মোটর সাইকেল না চালাতে পারলে এখানে এলাম কি করে?”- বলল সোহান । সোহানের কথা শুনে নিজের প্রতি লজ্জা পেয়ে মৃদু হেসে ঊর্মি বলল, “ও।” সোহান ঊর্মির দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো, “যাবে নাকি আমার সাথে?” ঊর্মি হেসে বলল, “আরে না না, আমার মোটরসাইকেলে উঠতে ভারি ভয় লাগে ।” সোহান বলল, “আমার সাথে চলো, দেখবে, ভালো লাগবে ।” ঊর্মি নেগেটিভ কিছু বলতে যাচ্ছিলো, এমন সময় সোহান বলল, “ভরসা করতে পারো আমাকে ।” ঊর্মি সোহানের চোখে চোখ রাখল । তারপর রাজি হল । সোহান মোটরসাইকেলে উঠে বলল, “আমার কাঁধে হাত রেখো, নয়তো পড়ে যাবে কিন্তু । বেশি ভয় লাগলে জাপটে ধরো ।” ঊর্মি হেলমেট পড়ে সোহানের কাঁধে হাত রেখে মোটরসাইকেলে বসলো । এরপর সোহান মাথায় হেলমেটটা পড়ে মোটর সাইকেল স্টার্ট করলো । এরপর দুজন ঘুরে বেড়াল ঢাকা ইউনিভার্সিটির আশপাশের এলাকা । হাতিরঝিল থেকে পরিবাগ, শাহাবাগ, রমনা পার্ক, বেইলি রোড, পুরনো পল্টন, বায়তুল মোকারম মসজিদ, পড়ে আব্দুল গনী রোড দিয়ে দুপুরের দিকে ফিরে এলো ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে । মাঝে মাঝে সোহান ইচ্ছে করে এমনভাবে মোটরসাইকেল চালিয়েছে, যে ভয়ে ঊর্মি সোহানকে সত্যিই জাপটে ধরেছে । ভার্সিটির প্রবেশ পথের সামনে ঊর্মিকে নামিয়ে দিলো সোহান । ঊর্মি হেলমেট খুলে সোহানের মোটরসাইকেলে লাগিয়ে রাখল । সোহান হেলমেট খুলে জিজ্ঞেস করলো, “কেমন লাগলো?” ঊর্মি বলল, “খুব ভালো ।”
- “ঠিক আছে, যাও তাহলে, আমি মোটরসাইকেলটা গ্যারেজে রেখে আসি ।”
- “তোমাকে একটা কথা বলবো ।”-হঠাৎ বলল ঊর্মি ।
- “হুম কি বলবে, বলো!”- জিজ্ঞেস করলো সোহান ।
- “আজ না, কাল ক্লাসে বলবো । ক্লাসে একটু তাড়াতাড়ি এসো কাল ।” বলেই চলে গেলো ঊর্মি । সোহান কিছুক্ষণ দাড়িয়ে ভাবল, কাল কি এমন আছে যে কালই বলবে? এমন সময় মনে পড়লো কাল তো ১০মে, সোহানের জন্মদিন । তার মানে কি বলতে পারে তা-ও সোহান কিছুটা আন্দাজ করতে পারলো । লজ্জায় হেসে উঠলো সোহান । তারপর আবার নিজেকে বোঝাল, শুধু শুধু এসব ভেবে লাভ নাই । যদি না বলে, তখন্ন আবার কষ্টের সীমা থাকবে না । সোহান হেলমেট পড়ে গ্যারেজের দিকে এলো ।

আগামী পর্বেঃ
সোহান এসেই বলল, “তাহলে কেন ওর সাথে কথা বলছো না!” রাইসা উঠে দাঁড়ালো । ঊর্মি উঠে রাইসার পাশে যেয়ে বলল, “আর রাগ কোরো না । তুমি জানো, ও আজকে ফাসি দিতে যাচ্ছিলো তোমার জন্য!” রাইসা কাঁদো কাঁদো হয়ে ইকবালের কাছে যেয়ে বলল, “হায় আল্লাহ! কি ইকবাল! কি এসব!” ইকবাল মাথা নিচু করে বলল, “তোমাকে ছাড়া আমার বেঁচে থেকে কি লাভ ।”