0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

লাভ ডট কম (পর্ব-৬)

লাভ ডট কম (পর্ব-৬)
সবই কেবল নিজের সাহিত্যিক মনের কল্পনা ভেবে সেখান থেকে হোস্টেলের দিকে ফিরতে লাগলো সোহান । কিছুদুর হাঁটতে হাঁটতে এসেই দেখা নিলয়ের সাথে নিলয় খুব সম্ভবত মাত্র ঘুম থেকে উঠে ক্যাফে থেকে ব্রেকফাস্টটা করে এলো । সোহান নিলয়কে দেখে নিলয়ের কাছে গেলো, নিলয়ও সোহানকে দেখে দাঁড়ালো সোহানের জন্য । কাছে যেতেই নিলয় জিজ্ঞেস করলো, “কিরে? অবশেষে গার্লফ্রেন্ড পাইলি নাকি?”
- “মানে?” প্রশ্ন করলো সোহান ।
- “দুদিনের মধ্যেই দেখি নতুন মেয়ের সাথে ভালোই ওঠা বসা চলছে!” ইয়ার্কি করে বলল নিলয় ।
সোহান হেসে বলল, “আরে ধুর, কিছুই না। জাস্ট ফ্রেন্ড ।”
- “জাস্ট ফ্রেন্ড থেকে বেষ্ট ফ্রেন্ড পড়ে গার্ল ফ্রেন্ড পড়ে বউ, এই তো নিয়ম নাকি?”
কথাটা শুনে সোহানের ভালো লাগলো বটে, কিন্তু বিরক্ত হয়েছে এরকম একটা ভাব ধরে হাসিমুখে বলল, “ধুর, কি সব যে বলিস না । আমার দ্বারা এসব প্রেম সম্ভব না ।”
- “কেন? কোন গোপন রোগ নাকি গে?” বলেই হেসে দিলো নিলয় । সোহান ইয়ার্কির ছলে নিলয়কে একটা হালকা করে ঘুষি মেরে বলল, “মাইর খা তুই । শালা! তোর দোস্তো হিমেলেরও তো গার্ল ফ্রেন্ড নাই । ও কি গে হয়ে গেলো নাকি তাইলে? নাকি রোগী হয়ে গেলো?” নিলয় ভ্রু কুঁচকে বলল, “কে বলেছে তোকে? হিমেলের গার্ল ফ্রেন্ড আছে তো । যদিও এখনও ওয়ান সাইড লাভ, প্রোপোজটাই করতে পারে নাই ।”
- “তাই নাকি? কই আমাকে তো বলে নাই? নাম কি?”- জিজ্ঞেস করলো সোহান ।
- “তুই ভালো করে চিনিস । রোজ সকালে ক্লাসে আসবার সময় যে তোর সাথে কথা বলার জন্য এগিয়ে আসে ।” হালকা হেসে বলল নিলয় ।
- “কে জেসি!” অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো সোহান ।
- “হ্যাঁ ।”
- “ভাই! হিমেলের লাইফ শেষ । এমন মেয়েকে কি করে পছন্দ করে ও?”
- “কি জানি । ওর মন চেয়েছে । যাক গা, ওর তো তাও ক্রাশ আছে, তোর তো তাও নাই, তার ওপর তুই বলিস তোর নাকি প্রেম করার ইচ্ছা জাগে না । ক্লাসের বেশিরভাগ ছেলে মেয়ে ইয়ার্কি করে তুই গে কি না ।” বলেই হেসে উঠলো নিলয় ।
সোহান কষ্ট পেলো । সিঙ্গেল হওয়া কি অপরাধ? মানুষ এমন কেন? সিঙ্গেল আর প্রেম করার ইচ্ছে নেই বলে এরকম উল্টাপাল্টা কথা বলবে? মুখটা এক মুহূর্তে গোমড়া হয়ে গেলো সোহানের । নিলয় সোহানের দিকে তাকিয়ে বলল, “দোস্ত, তোকে আমিই শুধু, বললাম, তুই আবার কাউকে বলিস না । পড়ে ওরা আমার ওপর রাগ করবে ।” সোহান কষ্টটা আটকে রেখে হালকা হাসিমুখে বলল, “আরে, বলার কি আছে এসব ।”
রাতের কথা । খুব সম্ভবত ১০টার দিকের হবে । সোহান সকালে নিলয়ের বলা কথাটা প্রায় ভুলে গেছে বললেই চলে । বসে বসে লিখছিল নিজের লেখা গল্প, লাভ ডট কম । সাকিব একটু বাইরে গেছে । ওর তো বাইরে যাওয়ার কারণ একটাই, সুমির ফোন । ইকবাল রুমে বসেই কথা বলছে ।
- “হ্যাঁ বাবু, তুই খাইছো?.....................না শাহজাদী, একটু পরেই যাবো…………আচ্ছা রানী, আমাদের বিয়ের পর কয়টা বাবু হবে………তোমার মতোই কিউট হবে তাই না…………ধুর! আমি কি কিউট নাকি……।”
এমনিতেও অন্যান্য দিন ইকবালের নানাম অসহ্যকর কথাবার্তা সহ্য করতে হয়, তার ওপর আজ শুরু করেছে বাড়তি ন্যাকামো । সোহান বিরক্ত হয়ে হালকা মেজাজ দেখিয়ে বলল, “ওই, যা, তো তুই, বাইরে যেয়ে কথা বল ।” ইকবাল সোহানের দিকে ফিরে তাকাতে যাচ্ছিলো, এমন সময় রাইসা বলল, “এই, কে কথা বলল, সিঙ্গেল সোহান না?” ফোনটা লাউড স্পিকারে না থাকলেও কথা কিছুটা শোনা যায় । সোহান সেটা শুনতে পেরে পেছন ফিরে তাকাল । ইকবাল কিছু বুঝে ওঠার আগেই সোহান ইকবালের হাত থেকে ফোন কেড়ে নিয়ে কানে নিয়ে রাগ দেখিয়ে এক দমে বলল, “হ্যাঁ আমি সিঙ্গেল সমস্যা তোমার? ফাজিল মেয়ে কোথাকার, ভদ্রতা সভ্যতা কিচ্ছু নাই? লজ্জা শরম কিচ্ছু নাই? বাসায় কি কিছু শেখায় নাই? আমি তোমার কোন বাড়া ভাতে ছাই দিছি যে তুমি আমাকে নিয়ে এমন বলো! সাহস পাও কি করে! সাহস থাকে তো একদিন সামনে এসো, থাপ্পড় দিয়ে বোঝায় দেবো সিঙ্গেল থাকা কি আর রিলেশনশিপে থাকা কি! কি ভেবেছো ইকবালের গার্ল ফ্রেন্ড বলে কিছু বলবো না? ওই কথা ভেবো না । নেক্সট টাইম যদি আর এসব কথা শুনেছি, তাহলে তোমার এই ভার্সিটিতে পড়াই আমি বন্ধ করে দেবো ।” বলেই সোহান ইকবালের বিছানার ওপর ফোনটা ছুঁড়ে টেবিলে এসে ধপ করে বসে পড়লো । ইকবাল একদম মাথায় হাত দিয়ে বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে ছিল । সোহানকে যে আটকাবে, সে সুযোগটাও পায় নি । তার ওপর যা যা বলে ফেলেছে, এরপর আটকালেও রাইসাকে কি বলবে তা ভেবে আর আটকানোই হয় নি সোহানকে । সোহান ফোন ঢিল দিয়ে ছুঁড়ে মারতেই ইকবাল কিছুক্ষণ সোহানের দিকে তাকিয়ে ফোন হাতে নিলো । তারপর ফোন কানে নিতেই দেখলো, রাইসা কাঁদছে । ইকবাল কম্পিত কণ্ঠে যেই বলতে যাবে, “হ্যালো!” বলতে না বলতেই চেঁচিয়ে রাইসা বলল, “তোমার সাথে ব্রেকআপ! আর কথা বলবা না!” ইকবাল ফোনটা রেখে সোহানের দিকে তাকাল । তারপর রেগে গিয়ে বলল, “তুই কি করলি এটা সোহান!” সোহানও পাল্টা রাগ দেখিয়ে বলল, “ঠিক করেছি । মানুষের পার্সোনাল ব্যাপার নিয়ে কথা বলতে যাবে কেন?” ইকবাল বিছানা থেকে নেমে দাড়িয়ে সোহানে দিকে এগিয়ে এসে বলল, “নিজে সিঙ্গেল বলে খুব হিংসা হয়!” সোহানও উঠে দাড়িয়ে কষ্ট নিয়ে বলল, “ইকবাল! তুইও!” ইকবাল কিছু না বলে সোহানকে একটা চড় মেরে বসলো । সোহানও পাল্টা ইকবালকে একটা ঘুষি মারল । এরপর ইকবাল শুরু করলো । শুরু হয়ে গেলো দুজনের মধ্যে মারামারি ।

আগামী পর্বেঃ
সাকিব একটু পর বলল, “দ্যাখ সোহান, আমার মনে হয় কি, তুই একটা রিলেশনশিপ কইরা ফেল । না পারোস তো অন্তত একটা মিথ্যা অভিনয় কর তুই রিলেশনে আছোস । আর নাইলে…………।” থেমে গেলো সাকিব । সোহান মেজাজি গলায় বলল, “নাইলে কি! বল! নাইলে কি! চুপ করলি কেন! না বল! তোদের তো গার্লফ্রেন্ড যা বলল তাই ঠিক । গার্লফ্রেন্ড যদি বলে সূর্য আজকে উত্তরে উঠেছে তোরা বলবি তাও ঠিক । এখন চুপ করলি কেন! বল নাইলে কি!” ইকবাল জবাব দিলো, “নাইলে আমরা রুম চেঞ্জ করবো ।”