লাভ ডট কম (পর্ব-৪)

লাভ ডট কম (পর্ব-৪)
সোহান দাড়িয়ে গেলো । তারপর মেয়েটার দিকে তাকিয়ে বলল, “হাই! আমি……।” নামটা বলতে গিয়ে থেমে গেলো সোহান । দেখল, হিমেল আর নিলয় অবাক দৃষ্টিতে সোহানের দিকে তাকিয়ে আছে । মেয়েটাই সোহানকে বলল, “তোমার নাম সোহান, আমি জানি ।” সোহান নিলয় আর হিমেলের থেকে চোখ সরিয়ে চোখটা ঊর্মির দিকে নিলো । ঊর্মি বলল, “বসো ।” সোহান বসলো । মেয়েটা বলল, “কোথায় থাকো?” সোহান মেয়েটার সামনে কেমন হালকা ভয় ভয় পাচ্ছিলো । কি বলতে কি বলবে, মেয়েটা রাগ না করে বসে । বলল, “ইয়ে, মানে, হলে থাকে ।” মেয়েটা খিল খিল করে হেসে উঠলো । সোহান ওর হাসির দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল । কি অপরূপ লাগে মেয়েটা হাসলে! মেয়েটা তারপর বলল, “হলে থাকো সে তো বুঝলাম, আমি জিজ্ঞেস করেছি তোমার বাসা কোথায়?’ সোহান বলল, “হ্যাঁ! হ্যাঁ……আমি বাসায় থাকি ।” মেয়েটা আবার হেসে উঠলো । এবার সোহানের একটু লজ্জা লাগছে । মেয়েটা কি ভাবছে! হয়তো ভাবছে ছেলেটা বেকুব । কিন্তু মেয়েটা সোহান অবাক করে দিয়ে হাসি থামিয়ে বলল, “তুমি তো বেশ মজার মানুষ! ছোট বেলা থেকে এরকম মানুষই জানো আমার খুব পছন্দ ।” এবার সোহানের ভেতর থেকে ভয় ভয় ভাবটা কেটে গেলো । চেয়ারটা আরেকটু টেনে বসে বলল, “ও আচ্ছা, আমি থাকি বগুড়া । তুমি?” মেয়েটা জবাব দিলো, “সিরাজগঞ্জ । পাশাপাশি থাকি তাহলে?” সোহান বলল, “হ্যাঁ, জেলা তো পাশাপাশিই, চাইলে এখানেও পাশাপাশি থাকতে পারো । মেয়েটা আবার হেসে উঠলো । ওরা দুজন সেখানে বসে অনেক কথা বলল ।
রাতে সোহান ইকবাল আর সাকিব রুমেই ছিল । সোহান কেবলই নিজের গল্প লেখার খাতাটা বের করেছে । সাকিব পড়ছে, আর ইকবাল রাইসার সাথে বসে চ্যাটিং করছে । পড়ার ফাঁকে সাকিব সোহানকে বলল, “কিরে, তুই শুনলাম আজ নাকি মেয়ে মানুষের সঙ্গে কথা বলেছিস?” সোহান বলল, “ক…কই না তো?” সাকিব বইতে একটা ভাজ দিয়ে বইটা বন্ধ করে বলল, “মিথ্যে বলিস না চাঁদ! সকালেই দেখলাম ।” সোহান বলল, “তুই ছিলি তখন! তোদের না ক্লাস চলছিলো?” ইকবাল চ্যাট করার মাঝে বলে উঠলো, “আরে, সাকিবের সুমি ডাকলে সাকিবের আর কিছু লাগে নাকি!” সাকিব ইয়ার্কি করে পাশে থাকা গোল করে মুচড়ে রাখা রাখা কাগজ ছুঁড়ে মারল ইকবালের দিকে । সোহান লিখতে লিখতে বলল, “ও তাই বল । তোদের তো পুরো দুনিয়া ওই গার্লফ্রেন্ডই ।” সাকিব বলে উঠলো, “কেনো তোর কি জ্বলে?” সোহান বলল, “কেনো জ্বলবে কেন?” সাকিব ইয়ার্কির সাথে বলল, “না, তুই সিঙ্গেল কি না!” সোহান কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলো, এমন সময় ইকবাল কি যেন জোরে জোরে পড়া শুরু করলো, “কাক । অবলা এই প্রাণীটাকে কেউ পছন্দ করে না । না এর রূপ সুন্দর, না এর ডাক । আচ্ছা যদি এমন হতো, কাকের মাঝে কোকিল কণ্ঠ ঢুকিয়ে দেয়া যেতো, তবে কেমন হতো?” সোহান জিজ্ঞেস করলো, “এটা পেলি কই?” ইকবাল বলল, “এইতো একটু আগেই সাকিব আমার দিকে ঢিল মারল ।” সোহান হালকা রাগের দৃষ্টিতে সাকিবের দিকে তাকাতেই সাকিব বলল, “ইয়ে……দোস্ত, শোন, আসলে ওই কাগজ তুই ওই ডাস্টবিনে ঢিল মারতে গিয়া বাইরে ফালায় দিছিলি । আমি রাইখা দিছিলাম ।” সোহান সাকিবকে কিছু না বলে চেয়ার থেকে উঠে ইকবালের কাছে গেলো কাগজ ফেরত নিতে । ইকবালের সাথে জোরাজুরি করে বলল, “হারামজাদা! কাগজটা দে ।” কিন্তু ইকবাল নাছোড়বান্দা । কাগজ সে সোহানকে দেবে না । কিন্তু সোহান নিয়েই ছাড়বে, দুজনে যখন মারামারিতে ব্যাস্ত, তখন সাকিব এই ফাঁকে, সাকিব উঠে সোহান এখন যে খাতায় লিখছিল, সেই খাতাটা নিলো । তারপর পড়া শুরু করলো, “লাভ ডট কম । ঊর্মি । মানে ঢেউ । আমরা সবাই ঊর্মিমালা দেখে খুব আনন্দিত হই । যেন মনে হয় মনের ভেতর দিয়েই ঊর্মিমালা ভেসে যায় । কিন্তু সে যদি মানুষ ঊর্মি হয় আর তাকে থেকে মনের মাঝে ঊর্মিমালা ভেসে যায়, তখন তাকে কি বলা যায়? প্রেম? না ভালোবাসা?.........।” সোহান প্রথমে টের পায়নি । যখন টের পেলো, ইকবালকে ছেড়ে সাকিবের সাথে এবার খাতা নেয়ায় জোরাজুরি শুরু । ইকবাল বলল, “দিবি না দোস্ত! ছেলে আজকে আসল পুরুষ হয়েছে!” এমন সময় সাকিবের মোবাইলে একটা কল এলো । সাকিব হয়তো তবুও থামতো না, কিন্তু কলটা করেছে সুমি তাই থামতে হল । খাতাটা সোহানের হাতে দিয়ে বলল, “দোস্ত, আমি একটু আসি, বাইরে থেকে ঘুরে আসি ।” বলে সাকিব বাইরে চলে গেলো । সোহান খাতাটা নিয়ে টেবিলের ড্রয়ারে রেখে তালা আটকে দিলো । ইকবাল সাকিবের ওপর হালকা রাগ করলো । কিন্তু এমন সময় ইকবালের মোবাইলে এলো রাইসার কল । ফোন ধরেই বলল, “হ্যালো কাক……সরি……কোকিল!”
পরদিন সকালের কথা । “হ্যাঁ বাবা, আচ্ছা, আমি বিকেলের দিকে মোটরসাইকেলটা ওখান থেকে নিয়ে আসবো, আচ্ছা রাখি তাহলে ।” ফোনটা রেখে বিছানা থেকে উঠলো সোহান । ওর মোটরসাইকেলটা বাবাকে পাঠিয়ে দিতে বলেছিল, আজ সেটা আসছে । মোটর সাইকেল থাকলে একটু ঢাকায় ঘুরে ঘুরে দেখতে পারবে । আজকে সোহানের ক্লাস ছিল না । সাকিব আর ইকবালের ছিল । তাই রুমের ভেতর একা একা বসে বেশ একঘেয়ে অনুভব করছিলো সোহান । গতকালকে গল্পটাও অনেকদুর লিখেছে । এবারের গল্পটা সোহানের মন মতো হয়েছে । ছিঁড়তে হয় নি আর । কিন্তু তাই বলে কতক্ষণই বা গল্প লেখা যায়? হলরুম থেকে বেড়িয়ে সোহান বারান্দায় এলো । এমন সময় খেয়াল করলো, ভার্সিটির পুকুর পাড়ে দাড়িয়ে একটা মেয়ে । দুর থেকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে, ঊর্মি । একা একা হাঁটছে । যাবে? না, একটু যাওয়াই যায় । তাড়াতাড়ি ভেতরে ঢুকে একটা প্যান্ট পড়ে গায়ে ভালো একটা টি-শার্ট পড়ে নেমে গেলো মেয়েটার কাছে । মেয়েটা সোহানকে দেখেই বলল, “হাই! কেমন আছো?” সোহান বলল, “হ্যাঁ ভালো । তুমি?” মেয়েটা বলল, “এইতো, আলহামদুলিল্লাহ ভালো ।” সোহান জিজ্ঞেস করলো, “একা একা হাঁটছ যে?” মেয়েটা বলল, “আসলে তেমন কারো সাথে এখনও সেভাবে পরিচয় হয় নি তো, তাই?” “ আমার সাথে তো হয়েছে ।” মেয়েটা হেসে বলল, “হ্যাঁ তা হয়েছে, কিন্তু, আপনার অসুবিধে নেই তো?” সোহান বলল, “যাব তাক হে যান, কোন অসুবিধা নেই ।” মেয়েটা আবার খিল খিল করে সেই মিষ্টি হাসিটা হেসে উঠলো । তারপর বলল, “চলো যাই ।” দুজনে হাঁটতে হাঁটতে গল্প করতে লাগলো ।
আগামী পর্বেঃ
রাইসা আবার প্রশ্ন করলো, “তোমার এই ফ্রেন্ডটার মধ্যে কোন রস কস নাই ।” - “কে বলছে? আমাদের সাথে তো ভালোভাবেই মেশে ।” রাইসা বলল, “আচ্ছা, ছেলেটার কোন সমস্যা নাই তো?” - “সমস্যা মানে?” প্রশ্ন করলো ইকবাল । - “মানে ও আবার গে না তো?”-প্রশ্ন করলো রাইসা ।
রাতে সোহান ইকবাল আর সাকিব রুমেই ছিল । সোহান কেবলই নিজের গল্প লেখার খাতাটা বের করেছে । সাকিব পড়ছে, আর ইকবাল রাইসার সাথে বসে চ্যাটিং করছে । পড়ার ফাঁকে সাকিব সোহানকে বলল, “কিরে, তুই শুনলাম আজ নাকি মেয়ে মানুষের সঙ্গে কথা বলেছিস?” সোহান বলল, “ক…কই না তো?” সাকিব বইতে একটা ভাজ দিয়ে বইটা বন্ধ করে বলল, “মিথ্যে বলিস না চাঁদ! সকালেই দেখলাম ।” সোহান বলল, “তুই ছিলি তখন! তোদের না ক্লাস চলছিলো?” ইকবাল চ্যাট করার মাঝে বলে উঠলো, “আরে, সাকিবের সুমি ডাকলে সাকিবের আর কিছু লাগে নাকি!” সাকিব ইয়ার্কি করে পাশে থাকা গোল করে মুচড়ে রাখা রাখা কাগজ ছুঁড়ে মারল ইকবালের দিকে । সোহান লিখতে লিখতে বলল, “ও তাই বল । তোদের তো পুরো দুনিয়া ওই গার্লফ্রেন্ডই ।” সাকিব বলে উঠলো, “কেনো তোর কি জ্বলে?” সোহান বলল, “কেনো জ্বলবে কেন?” সাকিব ইয়ার্কির সাথে বলল, “না, তুই সিঙ্গেল কি না!” সোহান কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলো, এমন সময় ইকবাল কি যেন জোরে জোরে পড়া শুরু করলো, “কাক । অবলা এই প্রাণীটাকে কেউ পছন্দ করে না । না এর রূপ সুন্দর, না এর ডাক । আচ্ছা যদি এমন হতো, কাকের মাঝে কোকিল কণ্ঠ ঢুকিয়ে দেয়া যেতো, তবে কেমন হতো?” সোহান জিজ্ঞেস করলো, “এটা পেলি কই?” ইকবাল বলল, “এইতো একটু আগেই সাকিব আমার দিকে ঢিল মারল ।” সোহান হালকা রাগের দৃষ্টিতে সাকিবের দিকে তাকাতেই সাকিব বলল, “ইয়ে……দোস্ত, শোন, আসলে ওই কাগজ তুই ওই ডাস্টবিনে ঢিল মারতে গিয়া বাইরে ফালায় দিছিলি । আমি রাইখা দিছিলাম ।” সোহান সাকিবকে কিছু না বলে চেয়ার থেকে উঠে ইকবালের কাছে গেলো কাগজ ফেরত নিতে । ইকবালের সাথে জোরাজুরি করে বলল, “হারামজাদা! কাগজটা দে ।” কিন্তু ইকবাল নাছোড়বান্দা । কাগজ সে সোহানকে দেবে না । কিন্তু সোহান নিয়েই ছাড়বে, দুজনে যখন মারামারিতে ব্যাস্ত, তখন সাকিব এই ফাঁকে, সাকিব উঠে সোহান এখন যে খাতায় লিখছিল, সেই খাতাটা নিলো । তারপর পড়া শুরু করলো, “লাভ ডট কম । ঊর্মি । মানে ঢেউ । আমরা সবাই ঊর্মিমালা দেখে খুব আনন্দিত হই । যেন মনে হয় মনের ভেতর দিয়েই ঊর্মিমালা ভেসে যায় । কিন্তু সে যদি মানুষ ঊর্মি হয় আর তাকে থেকে মনের মাঝে ঊর্মিমালা ভেসে যায়, তখন তাকে কি বলা যায়? প্রেম? না ভালোবাসা?.........।” সোহান প্রথমে টের পায়নি । যখন টের পেলো, ইকবালকে ছেড়ে সাকিবের সাথে এবার খাতা নেয়ায় জোরাজুরি শুরু । ইকবাল বলল, “দিবি না দোস্ত! ছেলে আজকে আসল পুরুষ হয়েছে!” এমন সময় সাকিবের মোবাইলে একটা কল এলো । সাকিব হয়তো তবুও থামতো না, কিন্তু কলটা করেছে সুমি তাই থামতে হল । খাতাটা সোহানের হাতে দিয়ে বলল, “দোস্ত, আমি একটু আসি, বাইরে থেকে ঘুরে আসি ।” বলে সাকিব বাইরে চলে গেলো । সোহান খাতাটা নিয়ে টেবিলের ড্রয়ারে রেখে তালা আটকে দিলো । ইকবাল সাকিবের ওপর হালকা রাগ করলো । কিন্তু এমন সময় ইকবালের মোবাইলে এলো রাইসার কল । ফোন ধরেই বলল, “হ্যালো কাক……সরি……কোকিল!”
পরদিন সকালের কথা । “হ্যাঁ বাবা, আচ্ছা, আমি বিকেলের দিকে মোটরসাইকেলটা ওখান থেকে নিয়ে আসবো, আচ্ছা রাখি তাহলে ।” ফোনটা রেখে বিছানা থেকে উঠলো সোহান । ওর মোটরসাইকেলটা বাবাকে পাঠিয়ে দিতে বলেছিল, আজ সেটা আসছে । মোটর সাইকেল থাকলে একটু ঢাকায় ঘুরে ঘুরে দেখতে পারবে । আজকে সোহানের ক্লাস ছিল না । সাকিব আর ইকবালের ছিল । তাই রুমের ভেতর একা একা বসে বেশ একঘেয়ে অনুভব করছিলো সোহান । গতকালকে গল্পটাও অনেকদুর লিখেছে । এবারের গল্পটা সোহানের মন মতো হয়েছে । ছিঁড়তে হয় নি আর । কিন্তু তাই বলে কতক্ষণই বা গল্প লেখা যায়? হলরুম থেকে বেড়িয়ে সোহান বারান্দায় এলো । এমন সময় খেয়াল করলো, ভার্সিটির পুকুর পাড়ে দাড়িয়ে একটা মেয়ে । দুর থেকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে, ঊর্মি । একা একা হাঁটছে । যাবে? না, একটু যাওয়াই যায় । তাড়াতাড়ি ভেতরে ঢুকে একটা প্যান্ট পড়ে গায়ে ভালো একটা টি-শার্ট পড়ে নেমে গেলো মেয়েটার কাছে । মেয়েটা সোহানকে দেখেই বলল, “হাই! কেমন আছো?” সোহান বলল, “হ্যাঁ ভালো । তুমি?” মেয়েটা বলল, “এইতো, আলহামদুলিল্লাহ ভালো ।” সোহান জিজ্ঞেস করলো, “একা একা হাঁটছ যে?” মেয়েটা বলল, “আসলে তেমন কারো সাথে এখনও সেভাবে পরিচয় হয় নি তো, তাই?” “ আমার সাথে তো হয়েছে ।” মেয়েটা হেসে বলল, “হ্যাঁ তা হয়েছে, কিন্তু, আপনার অসুবিধে নেই তো?” সোহান বলল, “যাব তাক হে যান, কোন অসুবিধা নেই ।” মেয়েটা আবার খিল খিল করে সেই মিষ্টি হাসিটা হেসে উঠলো । তারপর বলল, “চলো যাই ।” দুজনে হাঁটতে হাঁটতে গল্প করতে লাগলো ।
আগামী পর্বেঃ
রাইসা আবার প্রশ্ন করলো, “তোমার এই ফ্রেন্ডটার মধ্যে কোন রস কস নাই ।” - “কে বলছে? আমাদের সাথে তো ভালোভাবেই মেশে ।” রাইসা বলল, “আচ্ছা, ছেলেটার কোন সমস্যা নাই তো?” - “সমস্যা মানে?” প্রশ্ন করলো ইকবাল । - “মানে ও আবার গে না তো?”-প্রশ্ন করলো রাইসা ।