0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

লাভ ডট কম (পর্ব-৩)

লাভ ডট কম (পর্ব-৩)
তবে কি সোহান মেয়েটার প্রেমে পড়ে গেলো? সোহান কিন্তু মেয়েটার দিকে দৃষ্টিই সরাতে পারছে না । আজ কি হল সোহানের? সোহানের অন্যমনস্কতা কেটে গেলো আলিয়া ম্যামের ব্যাঙের মতো খ্যার খ্যারে গলাটা শুনে । হালকা ধমকের ম্যাম ঊর্মিকে বলল, “কোথায় ছিলে তুমি! প্রথম দিনই লেট করেছো?” সোহানের হালকা বিরক্ত লাগলো । ইস! কি সুন্দর মেয়েটাকে দেখছিল, মাঝখান দিয়ে ম্যামের এই ব্যাঙের মতো গলাটা ডিস্টার্ব করলো । এরপর আবার সোহান মেয়েটার দিকে মনোনিবেশ করলো মেয়েটার কথা শুনে । বলল, “সরি ম্যাম, আসলে আগের দিন হলে জায়গা পাইনি, মামার বাসায় ছিলাম, ওখান থেকে আসতে পারিনি । গতকাল লেট করে এসেছিলাম, আর ভার্সিটি তাই না এসে হলের ব্যাপারটা ক্লিয়ার করে এলাম ।” আহা! কি মিষ্টি গলা! কোকিলের মুখে কেউ যদি মধু দিয়ে কথা বলতে বলে, তবে যেরকম গলা হবে, যেন সেরকম মিষ্টি গলা । সোহান একটু অবাক হল । আরে! মেয়েটাকে দেখে ওর যে শুধু ভালো লাগছে তাই-ই না, লেখালেখির জন্য দারুন দারুন সব ভাষা খুঁজে পাচ্ছে! না, আজই তাহলে নতুন একটা গল্প লেখা শুরু করতে হবে । ম্যাম ঊর্মিকে ভেতরে আসার পারমিশন দিলো । মেয়েটা ভেতরে এলো । হাঁটতে হাঁটতে সোহানের কাছাকাছি আসতেই অল্প কিছুক্ষনের জন্য সোহানের দিকে তাকাল । সোহান কিন্তু সেই ওর ভেতরে ঢোকা থেকেই ওর দিকে তাকিয়ে । তারপর সোহান মেয়েটার বসা পর্যন্ত মেয়েটার দিকে তাকিয়েই রইল । মেয়েটা বসতেই হাত বাড়িয়ে দিয়ে সোহানকে বলল, “হাই! আমি ঊর্মি!” গলাটা যেন এখন আরও সুন্দর লাগছে! কাছ থেকে শুনছে তো । সোহান খেয়াল করলো মেয়েটা হাত বাড়িয়ে বসে আছে । কি করবে এখন সোহান! এ পর্যন্ত কোন অচেনা মেয়েকে স্পর্শ করে নি সোহান । কিন্তু সোহানের হাত কেমন যেন মেয়েটার হাত ধরতে চাচ্ছে । সোহান মেয়েটার সাথে হ্যান্ডশেক করলো । কি সুন্দর একটা অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছে সোহানের । সত্যি অন্যরকম । পুরো শরীরটা কেমন যেন মেয়েটার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ছে । হঠাৎ সোহান চমকে পেছন ফিরে তাকাল ম্যামের ডাকে । এর আগে দুবার ডেকেছে সোহান টের পায় নি । শেষটায় ম্যাম ধমকের স্বরে ডাকায় সোহান পেছন ফিরে তাকাল । ম্যাম বলল, “সমস্যা কি তোমার? পেছনে কথা বলছো কেন?” সোহান দাড়িয়ে বলল, “সরি ম্যাম ।” ম্যাম সোহানকে বলল, “বসো ।” বসলো সোহান । ক্লাস শুরু হল, অথচ সোহান যেন ক্লাসে মনই দিতে পারছে না । বার বার ইচ্ছে করছে পেছন ফিরে তাকাতে, ইচ্ছে করছে দেখতে মেয়েটাও কি সোহানের প্রতি দুর্বল? মেয়েটাও কি বার বার সোহানকে দেখতে চাইছে? মেয়েটাও কি সোহানকে দেখে দুর্বল হয়ে পড়েছে? নাকি মেয়েটা অন্য কারো প্রতি দুর্বল? মেয়েতার দিকে কি অন্য কেউ বার বার তাকাচ্ছে? আচ্ছা আজ সোহানের এমন হচ্ছে কেন? সোহান একটু নড়েচড়ে বসলো । তবে কি এটাকেই বলে ক্রাশ খাওয়া? কই কতো মেয়েকেই তো সোহান দেখেছে । এই প্রথম এই মেয়েটাকেই দেখে সোহান ক্রাশ খেলো কেন? ইকবাল আর সাকিব তো সারাদিন কতো মেয়েদের দেখে বলে “দোস্ত ক্রাশ খাইলাম!” তবে কি ওটা নিছক ওদের ইয়ার্কি? তাই হবে । “সোহান!” আবারো ম্যামের ডাকে দাড়িয়ে গেলো সোহান । এবারেও তৃতীয়বার সোহান শুনতে পেলো । ম্যাম বলল, “কি ব্যাপার? এতো অন্যমনস্ক কেন তুমি?” সোহান আবার মাথা নিচু করে বলল, “সরি ম্যাম ।” ম্যাম ধমকের সাথে বলল, “হ্যাঁ তো, তোমাদের এই সরি বলা আর প্রেম ছাড়া কিছুই নেই । যেন প্রেমের ওয়েবসাইট খুলে বসেছে ।” সোহান এতক্ষণ লজ্জিত ছিল অন্যমনস্ক থাকার জন্য, কিন্তু হঠাৎ ম্যামের কথা শুনে সোহান মুখ থেকে লজ্জাটা চলে গেলো । ফুটে উঠলো আশার আলো । প্রেমের ওয়েবসাইট না! একটা গল্প লেখা যাবে এটা নিয়ে । কি নাম দেবে? ভালোবাসা ডট কম! না, এই নামে কি একটা সিরিয়াল হতো স্টার জলসায় । প্রেম ডট কম? না, এটা তো মিরচি রেডিওতে প্রতি শুক্রবার হয় । হ্যাঁ, গল্পের নাম তবে দেয়া যায় লাভ ডট কম । এই নামে কিছু হলেও জানা নেই সোহানের ।
কয়েক ক্লাস পর ব্রেক টাইমে সোহান নিলয় আর হিমেলের সাথে ক্যাফেটেরিয়াতে বসে খাচ্ছিল আর খেতে খেতে কথা বলছিল । এমন সময় হিমেল জিজ্ঞেস করলো, “কিরে সোহান, তোর গল্প লেখা কদ্দুর?” সোহান বলল, “গতকাল একটা শুরু করেছিলাম, আবার ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছি ।” নিলয় ইয়ার্কির সাথে বলে উঠলো, “তোর কাজই তো ওই, শুধু ছেঁড়া । খাতার পেইজ, চুল, মোচ, দাড়ি………থাক আর নিচে না নামি ।” বলেই হেসে দিলো নিলয় আর হিমেল । সোহানও বন্ধুদের ইয়ার্কির সাথে তাল মিলিয়ে হালকা হাসল । তারপর বলল, “আজ একটা লিখবো ভাবছি । নাম, লাভ ডট কম ।” সাথে সাথে হো হো করে হেসে উঠলো । সোহান বলল, “কিরে! তোরা হাসছিস কেন?” নিলয় বলল, “তোর এই লাভ ডট কম ওয়েবসাইটে যেসব ওয়েবপেইজ থাকবে সেগুলো হল মা, বাবা, ভাইয়া, আপু, শিক্ষক, বন্ধু, আত্মীয়স্বজন, পাড়া প্রতিবেশী, তুই নিজে । কোনদিন ওই গার্লফ্রেন্ড বিষয়টা এর মধ্যে ঢুকবে না ।” সোহান ডানে বামে মাথা নাড়িয়ে বিরক্তির সাথে বলল, “উফ! তোরাও না!” বলেই উঠে যাচ্ছিলো সোহান বিল দিতে । বিল দিয়ে আসছিলো, এমন সময় চোখে পড়লো একটা টেবিলে একটা মেয়ে একা বসে আছে । পেছন থেকে তো মনে হচ্ছে ঊর্মি, হ্যাঁ তো, জামাটাও তো একই, সাদা সালোয়ার কামিজ ওড়না । সোহান আরেকটু ভালো করে দেখার জন্য কৌশলে টেবিলটার ওপাশ দিয়ে হেঁটে আসতে গেলো, মেয়েটা দেখে ফেলল সোহানকে । ডেকে বলল, “ও হ্যালো!” সোহান দাড়িয়ে গেলো ।

আগামী পর্বেঃ
ইকবাল চ্যাট করার মাঝে বলে উঠলো, “আরে, সাকিবের সুমি ডাকলে সাকিবের আর কিছু লাগে নাকি!” সাকিব ইয়ার্কি করে পাশে থাকা গোল করে মুচড়ে রাখা রাখা কাগজ ছুঁড়ে মারল ইকবালের দিকে । সোহান লিখতে লিখতে বলল, “ও তাই বল । তোদের তো পুরো দুনিয়া ওই গার্লফ্রেন্ডই ।” সাকিব বলে উঠলো, “কেনো তোর কি জ্বলে?” সোহান বলল, “কেনো জ্বলবে কেন?” সাকিব ইয়ার্কির সাথে বলল, “না, তুই সিঙ্গেল কি না!”