লাভ ডট কম (পর্ব-২)

লাভ ডট কম (পর্ব-২)
বাজে সকাল ৯টা । সাড়ে ৯টা বাজতেই সোহান বেড়িয়ে যায় । তারপর ক্যাফেটেরিয়াতে এসে দুটো পরোটা কিনে খায় । খাওয়া শেষে ক্লাসরুমের দিকে যাচ্ছিলো, নজরে পড়লো খানিকটা দূরে দুটো ছেলে খালি গায়ে হাফ প্যান্ট পড়ে কান ধরে উঠবস করছে । ওই দুজনের সামনে দাড়িয়ে মজা দেখছে আরও তিনজন ছেলে । নিশ্চয় এরা সিনিয়র, জুনিয়রদের ওপর র্যাগিং করছে । সোহান আরেকটু সামনে যেয়ে ডানে মোড় নিয়ে ক্লাসরুম ভবনের দিকে গেলো । ক্লাসরুম দোতলায় । বারান্দা দিয়ে ক্লাসরুমের দিকে যাচ্ছিলো, এমন সময় একটা মেয়ে এসে সোহানকে বলল, “ও হাই! কেমন আছো!” সোহান চিনলো মেয়েটাকে । নাম জেসি । গত সেমিস্টারে বেশ জালিয়েছে । মেয়েটা নাকি সোহানকে পছন্দ করে । কিন্তু সোহানের তো এসব প্রেমে জড়াবার ইচ্ছেই নেই । যদিও মেয়েটা নিজে থেকে কোনদিন বলে নি, ইকবাল একবার এসে বলেছিল । এই মেয়ে নাকি সোহানের জন্য ইকবালের গার্লফ্রেন্ড রাইসার সাথে ভাব জমিয়েছে । শুধু তাই নয়, আজকাল নাকি সাকিবের গার্লফ্রেন্ড সুমির সাথেও ঘুর ঘুর করে । সোহান জবাব দিলো, “হ্যাঁ ভালো । তুমি কেমন আছো?” সোহানের পাল্টা প্রশ্নে মেয়েটা যেন বেশ খুশি হয়ে উঠলো । বলল, “হ্যাঁ! অনেক ভালো! মানে তোমাকে কি করে বোঝাই, যতোটা ভালো থাকা যায় যেন তার চেয়েও ভালো!” সোহান কিছু বলল না, তবু খারাপ ভাবতে পারে ভেবে হালকা হাসল । ইচ্ছে করে খারাপ হতে, যেন মেয়েটা ওর কাছে না ঘেঁষে সেরকম কিছু করতে, কিন্তু ছেলের সাহিত্যিক মন তা করতে দেয় না । যতোই হোক, এভাবে একটা নির্দোষ রমণীকে তো কষ্ট দেয়া যায় না । মেয়েটা প্রশ্ন করলো, “আচ্ছা তোমার গার্লফ্রেন্ড নেই?” সোহান কিন্তু এই প্রশ্নের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত ছিল । এ পর্যন্ত মেয়েটার সাথে যতবার দেখা হয়েছে, ততবারই মেয়েটা এই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করেছেই । ততোবারই সোহান একই জবাব দিয়েছে । আজও ব্যাতিক্রম না । সোহান জবাব দিলো, “আমার এসব প্রেমের প্রতি আগ্রহ নেই ।” মেয়েটা বলল, “ধুরু! তুমি শুধু একই জবাব দাও ।” সোহানের ইচ্ছে করলো বলতে তুমি শুধু একই প্রশ্ন করো, কিন্তু করলো না । ওই যে, শুধু শুধু নির্দোষ রমণীকে কষ্ট দেয়া ঠিক হবে না । আচ্ছা, আসলেই কি মেয়েটা নির্দোষ? নাকি? বাহ! এ নিয়ে কিছু একটা লেখা যেতে পারে! সোহান চেহারায় একটা আনন্দের ভাব ফুটে উঠলো । এমন সময় মেয়েটা জিজ্ঞেস করলো, “আচ্ছা, তোমার কি মেয়েদের দেখে অন্যরকম ফিল হয় না! মানে শরীরে একটা আলাদা আলাদা ভাব আসে না!” সোহান হালকা বিরক্তির সাথেই বলল, “না ।” প্রায় ক্লাসরুমের সামনে এসে পড়েছে, এমন সময় মেয়েটা সোহানকে বলল, “আমার দিকে একটু তাকাও!” সোহান মেয়েটার দিকে তাকালো । মেয়েটা নিজের চুলে হাত দিয়ে ঠোঁট দুটো চুমু খাওয়ার মতো করে ধীর গতিতে চোখের পাপড়ি খুলে আর বন্ধ করে সোহানকে দেখালো । এবার সোহানের বিরক্ত লাগতে শুরু করলো । এ কাজ মেয়েটা আজই প্রথম করছে । মেয়েটা তখন বলল, “এবার বলো, আমায় দেখে কি ফিল হল!” সোহান হাসিমুখে জবাব দিলো, “বমি পাচ্ছে!” বলেই সোহান ভেতরে চলে গেলো । মেয়েটা সোহানের পিছু পিছু ক্লাসরুমে ঢুকতে ঢুকতে যা তা বলতে লাগলো । সোহান যেয়ে নিজের সিটে বসলো । মেয়েটা এখন কিছুটা থেমেছে । সোহানের পাশেই ছিল হিমেল নামে ওর একটা বন্ধু । সোহানকে বলল, “কিরে? ওর সাথে আবার কি হল?” সোহান শুধু বলল, বুঝিস না! মেয়েদের যা আকাম করার তাই ।” হিমেল বলল, “কি ছ্যাকা দিছে না দিছিস?” সোহান ভ্রু কুঁচকে হিমেলের দিকে তাকাল । হিমেলের পেছনেই বলে নিলয় । নিলয় হাসতে হাসতে বলল, “আরে, সোহান তো প্রেমেই পড়বে না, তাহলে ও ছ্যাকা খাবে ক্যামনে?” বলেই হিমেল আর নিলয় হেসে উঠলো । সোহান চোখ ফিরিয়ে সামনের দিকে তাকাল । হিমেল সোহানকে শুনিয়ে নিলয়কে বলল, “আরে আর বলিস না, সিঙ্গেল তো, কষ্ট পাবে বেচারা ।” সোহান ওদের কথায় আর কান দিলো না ।
কিছুক্ষণ পরেই ক্লাস শুরু হল । প্রথম ক্লাস আলিয়া ম্যাডামের । ক্লাসে এসে ম্যাম নাম ডাকছিলেন । “রাফি” আওয়াজ এলো, “ইয়েস ম্যাম ।” “মাইশা” আওয়াজ এলো “ইয়েস ম্যাম ।” “সোহান” সোহান বলল, “প্রেজেন্ট ম্যাম ।” “ঊর্মি” কোন আওয়াজ এলো না । সিরিয়াল অনুযায়ী মেয়েটা সোহানের পেছনেই হবার কথা । সোহান পেছনে তাকিয়ে দেখল, পেছনের সিটটা ফাঁকা । ম্যাম আবারো নামটা ডাকল, “ঊর্মি কি আছে?” ম্যাম সোহানের পেছনের সিটটার দিকে তাকাল । তারপর বলল, “এই ঊর্মি মেয়েটা গতদিনও আসে নি । কে এ?” এমন সময় ক্লাস রুমের দরজা থেকে আওয়াজ এলো, “প্রেজেন্ট ম্যাম!” ক্লাসের অনেকেই দরজার দিকে তাকাল । সোহানও তাকাল । সাদা সালোয়ার কামিজ আর ওড়না মাথায় ব্যাগ নিয়ে দাড়িয়ে একটা মেয়ে । চেহারা ফর্সা, সোহানের চেয়ে খানিকটা ছোট হবে চুলগুলো কোমর পর্যন্ত নেমে গেছে । অপরূপ একটা চাহনি । এতোটা দুর থেকেও যেন সোহান টের পাচ্ছে । কি সুন্দর ঘ্রাণ মেয়েটার মাঝে! আচ্ছা এটাও কি সোহান এতদুর থেকে টের পাচ্ছে! নাকি মেয়েটাকে দেখে জেসির কথার মতো সোহানের মাঝে অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছে সোহানের যার দরুন এসব কল্পনা করছে সোহান! তবে কি সোহান মেয়েটার প্রেমে পড়ে গেলো?
আগামী পর্বেঃ
সোহান খেয়াল করলো মেয়েটা হাত বাড়িয়ে বসে আছে । কি করবে এখন সোহান! এ পর্যন্ত কোন অচেনা মেয়েকে স্পর্শ করে নি সোহান । কিন্তু সোহানের হাত কেমন যেন মেয়েটার হাত ধরতে চাচ্ছে । সোহান মেয়েটার সাথে হ্যান্ডশেক করলো । কি সুন্দর একটা অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছে সোহানের । সত্যি অন্যরকম । পুরো শরীরটা কেমন যেন মেয়েটার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ছে । হঠাৎ সোহান চমকে পেছন ফিরে তাকাল ম্যামের ডাকে । এর আগে দুবার ডেকেছে সোহান টের পায় নি । শেষটায় ম্যাম ধমকের স্বরে ডাকায় সোহান পেছন ফিরে তাকাল । ম্যাম বলল, “সমস্যা কি তোমার? পেছনে কথা বলছো কেন?”
কিছুক্ষণ পরেই ক্লাস শুরু হল । প্রথম ক্লাস আলিয়া ম্যাডামের । ক্লাসে এসে ম্যাম নাম ডাকছিলেন । “রাফি” আওয়াজ এলো, “ইয়েস ম্যাম ।” “মাইশা” আওয়াজ এলো “ইয়েস ম্যাম ।” “সোহান” সোহান বলল, “প্রেজেন্ট ম্যাম ।” “ঊর্মি” কোন আওয়াজ এলো না । সিরিয়াল অনুযায়ী মেয়েটা সোহানের পেছনেই হবার কথা । সোহান পেছনে তাকিয়ে দেখল, পেছনের সিটটা ফাঁকা । ম্যাম আবারো নামটা ডাকল, “ঊর্মি কি আছে?” ম্যাম সোহানের পেছনের সিটটার দিকে তাকাল । তারপর বলল, “এই ঊর্মি মেয়েটা গতদিনও আসে নি । কে এ?” এমন সময় ক্লাস রুমের দরজা থেকে আওয়াজ এলো, “প্রেজেন্ট ম্যাম!” ক্লাসের অনেকেই দরজার দিকে তাকাল । সোহানও তাকাল । সাদা সালোয়ার কামিজ আর ওড়না মাথায় ব্যাগ নিয়ে দাড়িয়ে একটা মেয়ে । চেহারা ফর্সা, সোহানের চেয়ে খানিকটা ছোট হবে চুলগুলো কোমর পর্যন্ত নেমে গেছে । অপরূপ একটা চাহনি । এতোটা দুর থেকেও যেন সোহান টের পাচ্ছে । কি সুন্দর ঘ্রাণ মেয়েটার মাঝে! আচ্ছা এটাও কি সোহান এতদুর থেকে টের পাচ্ছে! নাকি মেয়েটাকে দেখে জেসির কথার মতো সোহানের মাঝে অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছে সোহানের যার দরুন এসব কল্পনা করছে সোহান! তবে কি সোহান মেয়েটার প্রেমে পড়ে গেলো?
আগামী পর্বেঃ
সোহান খেয়াল করলো মেয়েটা হাত বাড়িয়ে বসে আছে । কি করবে এখন সোহান! এ পর্যন্ত কোন অচেনা মেয়েকে স্পর্শ করে নি সোহান । কিন্তু সোহানের হাত কেমন যেন মেয়েটার হাত ধরতে চাচ্ছে । সোহান মেয়েটার সাথে হ্যান্ডশেক করলো । কি সুন্দর একটা অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছে সোহানের । সত্যি অন্যরকম । পুরো শরীরটা কেমন যেন মেয়েটার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ছে । হঠাৎ সোহান চমকে পেছন ফিরে তাকাল ম্যামের ডাকে । এর আগে দুবার ডেকেছে সোহান টের পায় নি । শেষটায় ম্যাম ধমকের স্বরে ডাকায় সোহান পেছন ফিরে তাকাল । ম্যাম বলল, “সমস্যা কি তোমার? পেছনে কথা বলছো কেন?”