0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

লাভ ডট কম (পর্ব-১১)

লাভ ডট কম (পর্ব-১১)
সোহান কি অস্বাভাবিক কাজ করলো? সোহান ম্যামকে জিজ্ঞেস করলো, “ম্যাম, হয়েছে কি আসলে?” ম্যাম বিরক্ত হয়ে বলল, “ঢং কোরো না সোহান!” সোহান আর কিছু বলল না । ম্যাম সোহানকে বসতে বলল । যাই হোক, ম্যামের মুখের ওপর তো আর কথা বলা যায় না । সোহান ভাবতে লাগলো, এক রাতে হঠাৎ এমন কি হয়ে গেলো? ক্লাস শেষে সোহান সবাইকে কতো করে জিজ্ঞেস করলো কি হয়েছে, কেউই সোহানের সাথে কথা বলল না । যেখানে গ্রুপ ধরে সোহান আড্ডা দেয়, সোহান যখনই ওদের কাছে যায়, ওরা তখনই এক সাথে উঠে অন্য দিকে হাঁটা শুরু করে । সোহান কিছুতেই বুঝতে পারছে না হয়েছে কি । সোহান ঊর্মিকেও খুজল অনেক, কিন্তু পেলো না । অবশেষে হতাশার সাথে নিজের রুমে এলো । রুমের দরজার সামনে দাড়িয়ে সোহান অবাক । ছিটকিনি দেয়া কেন? সাকিব আর ইকবাল কোথায়? সোহান ভাবল হয় ক্যাফেটেরিয়াতে গেছে, আর না হয় নিজেদের গার্লফ্রেন্ডের সাথে দেখা করতে গেছে । সোহান ভেতরে ঢুকল । এবার আরও অবাক সোহান । ভেতরে নেই ইকবাল আর সাকিবের কোন জিনিস । একটু পর এই হলের কেয়ারটেকারের সাথে দেখা সোহানের । রুমের সামনে বারান্দা দিয়েই যাচ্ছিলো । সোহান লোকটাকে আটকে বলল, “মামা, এই রুমে দুটো ছেলে ছিল ইকবাল আর সাকিব নামে, দেখছেন ওদের?” কেয়ারটেকার লোকটাও সোহানের দিকে ঘৃণার দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল, “আপনে যা কইরলেন, হেইয়া দেইখা আমি তো অবাক! সাকিব আর ইকবাল তো হের লাইগাই চইলা গেছে ।” সোহান ভ্রু কুঁচকে বিরক্ত হয়ে বলল, “আমি কি করেছিটা কি আসলে! সবার হয়েছে কি! আমাকে দেখে কেন সবাই এমন করছে?” কেয়ারটেকার লোকটা বলল, “আমি তো ফেসবুক চালাই না, তয় আমারে অন্য একখান পোলা দেখাইল । নাউযুবিল্লাহ, ওইসব দেখাও পাপ ।” বলেই কেয়ারটেকার লোকটা চলে গেলো । সোহান লোকটাকে কিছু বলতে চাইলো, এমন সময় লোকটার একটা কথা সোহানকে আশার আলো দেখায় । ফেসবুক । সকাল থেকে সোহান ফেসবুকে বসে নি । সোহান রুমে যেয়ে মোবাইলটা নিয়ে ডাটা অন করলো । সাথে সাথে মেসেজ আর ফেসবুকের নোটিফিকেশন এসে ভরে গেলো । সোহান শুরুতে মেসেঞ্জারেই ঢুকল । শুরুতে সাকিবের মেসেজ । সোহান ওপেন করলো । সাকিব লিখেছে, “তোরে আমার দোস্ত বলতেও কেমন জানি লাগতেছে । ভালো থাকিস, কিন্তু প্লিজ, আমাদের লগে আর থাকিস না । তোর জন্য সুমি আমারে খারাপ ভাববে, তাই আমি অন্য আসলাম, নিজে পারলে একটা ডাক্তার দেখা ।” এরপর ইউ ক্যান্ট রিপ্লাই টু দিস কনভারসেশন । সোহান ব্যাকে যেয়ে দেখল, এরপর ইকবালের মেসেজ । লিখেছে, “মারামারি করা ব্যাপারটা কিছু বললাম না তোরে, কারণ ওই সময় আমার সেন্স ছিল । কিন্তু গতকাল তুই এটা কি করলি! লজ্জা করে না তোর! সেন্সলেস ছিলাম বলে তুই আমার সাথে এই করলি! রাইসা কতো রাগ করছে জানোস? ভাই আমার পক্ষে সম্ভব না তোর সাথে থাকা, তুই ভাই ডাক্তার দেখা ।” এরপরই ইউ ক্যান্ট রিপ্লাই টু দিস কনভারসেশন । সোহান দেখল, ভার্সিটির পরিচিত আরও অনেকে মেসেজ দিয়ে সোহানকে ব্লক করে দিয়ছে । কেউ লিখেছে, “ছি ভাই! তোর কাছে এটা এক্সপেক্ট করি নাই ।” কেউ লিখেছে, “ভাই তুই মরার পর বুঝবি কি হয়!” কেউ লিখেছে, “তোর লগে আর কথা নাই ।” আরও অনেকে অনেক কিছু লিখেছে আর তার নিচে ইউ ক্যান্ট রিপ্লাই টু দিস কনভারসেশন । সোহান কপালে হাত দিলো । মানে কি এসবের? সোহান এবার ফেসবুকে ঢুকল । আলিয়া ম্যাম একটা পোস্ট আপলোড করেছে । সোহান ঢুকল সে পোস্টে । দুটো ছবি । একটা সোহান ইকবালের সাথে সেদিন মেঝেতে ইকবালের দুপাশে পা দিয়ে হাঁটু গেড়ে বসে ইকবালকে মারছিল, সেদিনকার । কিন্তু ছবিটা এমনভাবে তোলা হয়েছে, দেখে মনে হয় দুজনে রোমান্স করছে । পাশের ছবিটা আরও ভয়ানক । পুকুরপাড়ে সোহান ইকবালের মুখে মুখ লাগিয়ে যে শ্বাস দেয়ার চেষ্টা করছিলো সেটা । এমন ভাবে তোলা, মনে হচ্ছে সোহান ইকবালকে কিস করছে । সোহান ক্যাপশন পড়লো । আলিয়া ম্যাম লিখেছে, “আমার বলার ভাষা নেই । ছবিগুলো ভার্সিটির এর সিনিয়র স্টুডেন্টের কাছে আমি পেয়েছি । আমার মতে এসব ছেলেদের ভার্সিটি থেকে বের করে দেয়া উচিৎ, তা না হলে এদের জন্য ভার্সিটির মান সম্মান সব নষ্ট হয়ে যাবে । সবার জানার জন্য বলি, ইকবালের কিন্তু কোন দোষ নেই । প্রথম ছবিটায় ইকবাল বুঝতে পারে নি সোহান ওর সাথে রোমান্স করার চেষ্টা করছিলো । ও ভেবেছিলো সোহান্নন হয়তো শুধুই মারামারি করছে । দ্বিতীয় ছবিটা দেখলেই বোঝা যায় সোহানের আসল রূপটা । ইকবাল সেন্সলেস ছিল, সেই সুযোগে সোহান ওর সাথে যা করলো, আর নাই বা বললাম । এসব বলাও পাপ । আমি সবাইকে সাবধান করে দিচ্ছি আর ভার্সিটির অন্যান্যদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি । এই ছেলের টিসি চাই!” সোহানের পুরো শরীর কাঁপতে লাগলো । কে করলো এটা! না জেনে না বুঝে এরকম বিরাট একটা বাজে মিথ্যে কে ছড়ালো!” সোহান কমেন্ট বক্সে গেলো । সবাই সোহানকে উল্টোপাল্টা কথা বলেছে । বেশিরভাগই বলছে, “আমরা তো আগে থেকেই জানতাম । তা না হলে এতদিন কেউ সিঙ্গেল থাকে?” আরেকটা কমেন্টও সোহানের নজর কাড়ল । ভার্সিটির গেইটের দারোয়ানের । সে লিখেছে, “গতকাল এই ছেলে আমাকেও বাজে অঙ্গভঙ্গি ঈশারা করেছে । তখন বুঝিনি, এখন বুঝলাম, ছেলেটার সমস্যা আছে !” সোহান মোবাইলের নেট অফ করে সামনের দিকে তাকাল । চেহারায় ওর শঙ্কার ছাপ । মিথ্যে অপবাদের শঙ্কা ।

আগামী পর্বেঃ
- “দ্যাখো ঊর্মি, আমি কিন্তু একবারও তোমাকে বলিনি আমি তোমাকে ভালোবাসি ।” বলল সোহান ।
- “আমার জীবনে এলে কেন? কিছু বোঝো না! কখন ভালোবাসা হয়! তুমি কি এটা বোঝো নি আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি!”
সোহান কিছু বলল না ।
ঊর্মি কিছুটা রাগ দমন করে বলল, “অবশ্য আমি কাকে কি বলছি! তোমার তো এসব বোঝার কথাও না । তুমি তো গে! সিঙ্গেল! রাবিশ! বুলশিট! জানোয়ারের বাচ্চা!”
- “ঊর্মি!” বলে চেঁচিয়ে ঊর্মির গালে এবার চড় বসাল সোহান ।