পরিচয়-৩২০
পরিচয়(পর্ব-৩২০)
(সিজন-১১: আত্মার সাক্ষাৎ)
(সিজন-১১: আত্মার সাক্ষাৎ)
বাসায় আসতেই চয়নিকা দেখলো, বাগানে মাইশা, নিশান আর জরিনা । সাবিত আর রজব মোল্লা বারান্দায় বসে কথাবার্তা বলছে । আর খোকন বাগানের গাছগুলোকে পানি দিচ্ছে । চয়নিকা মাইশা আর জরিনার কাছে গেলো । নিশান জিজ্ঞেস করলো, “কোথায় গিয়েছিলে আম্মু?” চয়নিকা বলল, “এই, আমার এক বান্ধবী ছিলো, তার সাথেই দেখা করতে গিয়েছিলাম ।” আশেপাশে আবির আর অয়নকে দেখতে না পেয়ে জিজ্ঞেস করলো, “আবির আর অয়ন কোথায়?” মাইশা বলল, “কি জানি, গাড়ি নিয়ে কোথায় যেনো গেলো ।” চয়নিকা, “ও আচ্ছা ।” বলে নিজের রুমের দিকে গেলো ।
গ্রামের ভেতরে দিয়ে হাটছিলো আবির । অয়নের সাথে কথা বলতে বলতে । অয়ন জিজ্ঞেস করলো, “ভাই, তোমার কি সত্যি মনে হয় এই ঝিকানা অশরীরী কিছু না?” আবির বলল, “অবশ্যই! এর পেছনে তুই আমার মনের কথা না শুনতে চাইলেও আমার কাছে অনেক যুক্তি আছে । প্রথমত ঝিকানার কি লাভ এদের চোখ কেড়ে নিয়ে? সবাইকে কানা বানিয়ে প্রতিশোধ নিতে চায়? কিন্তু গ্রামের সবাই-ই তো কানা হয়ে গেছে । তাহলে এখনও কেনো ঝিকানা আসছে? দ্বিতীয়ত, গতকাল ঝিকানা তোকে হাতের কাছে পেলো, তোর তো দুটো চোখই আছে, তাহলে তোর চোখ কেনো নিলো না?” অয়ন বলল, “তাই তো! এটা তো আগে ভাবি নি! ঝিকানা কেনো আমার চোখ নিলো না!” আবির বলল, “এখানে আরেকটা জিনিস হবার সম্ভাবনা একদম একশ শতাংশ! সেটা হচ্ছে, যে ঝিকানা তোর পরিচিত!” অয়ন চোখ বড় বড় করলো । ঝিকানা ওকে চেনে! অয়ন জিজ্ঞেস করলো, “কি করে!” আবির বলল, “কারণ সে যদি তোকে না চিনতো, তাহলে সে গ্রামবাসী ভেবে চোখ তুলে নিতো । আর যদি এভাবে ভাবি, তাহলে একজনই হতে পারে ঝিকানা ।” অয়ন বলল, “মিতু?” আবির বলল, “একদম! ওর আচরণে আমার সন্দেহ হয়, ও আসলেই ছেলে নাকি মেয়ে সেটা নিয়ে । কিন্তু এখনও কাউকে কিছু বলিস না, আগে প্রমান করতে হবে । আর এই ঘটনা কিন্তু এখানেই সীমাবদ্ধ না, এর শেকড় আরও অনেকদূর পর্যন্ত বিস্তৃত ।” অয়ন ডানে মাথা কাত করলো । মাটিতে একটা ব্যাটারির খোসা দেখতে পেলো আবির । ও চেনে এই ব্যাটারিটা । নামটাও লেখা আছে । হারুন ব্যাটারি । খোসাটা হাতে নিলো । কেমন গুড়ো গুড়ো লেগে আছে এর সাথে । পকেটে নিলো ব্যাটারিটা । অয়ন জিজ্ঞেস করলো, “এই ব্যাটারি দিয়ে কি করবা তুমি?” আবির বলল, “একটা খেলনা গাড়ি কিনেছি সেটা চালাবো ।” অয়ন বলল, “এহ! ইয়ার্কিও করতে পারে না । এটা তো সম্পূর্ণ ব্যাটারিই না! এটা তো ব্যাটারির খোসা!” আবির কিছু বলল না । একটা দোকানে গেলো । দোকানদারকে বলল, “দুটো আইসক্রিম দিনতো ।” দোকানদার আইসক্রিম দিলো দুটো । আবির একটা অয়নের হাতে দিয়ে দোকানদারকে টাকা দিয়ে দোকানদারকে জিজ্ঞেস করলো, “হারুন ব্যাটারি আছে?” কথা শুনে লোকটা যেনো অবাক হয়ে গেলো । যেনো এ ব্যাটারির নাম কি করে আবির জানলো তা শুনে অবাক হলো । দোকানদার কেবল ডানে বামে মাথা নাড়লো । আবির আর অয়ন আইসক্রিম খেতে খেতে গাড়ির দিকে যাওয়া শুরু করলো । অয়ন জিজ্ঞেস করলো, “এই গ্রামে তো একটা দোকান আছে, কিন্তু রজব মোল্লা যে বললেন কোন দোকান নেই?” আবির বলল, “তা বলার একটা কারণ হতে পারে উনি চান নি আমরা গ্রামের এইদিকটায় আসি । কেন চান নি তা জানি না । তবে হ্যাঁ, এই দোকানের চেয়ে অন্য গ্রামের দোকানটা তুলনামূলক কাছেই ।” তারপর আবির আর অয়ন গাড়িতে উঠে চলে এলো রজব মোল্লার বাড়ি ।
বিকেলের দিকের কথা । রজব মোল্লার সাথে দেখা করার জন্য রজব মোল্লার রুমের দিকে গেলো আবির, কিন্তু রজব মোল্লা রুমে নেই । আবিরের অন্যের রুমে তার পার্মিশন ছাড়া ঢোকবার কোন ইচ্ছে নেই, কিন্তু এখন সেই রহস্যের জট খুলতে আবিরের ইচ্ছে হল যেতে । রুমে ঢুকল আবির । এতো বড় একটা রুমে একটা খাট, একটা বুকশেলফ আর একটা চেয়ার ছাড়া কিছুই নেই । এতোদিন এসেছে ওরা, কিন্তু এই প্রথম আবির রজব মোল্লার রুমে এলো । বাইরে থেকেও কখনো দেখা হয় নি, কারণ রজব মোল্লা সর্বদা ঘরের দরজা চাপিয়ে দিয়ে রাখে । বুকসেলফে তেমন একটা সন্দেহজনক কিছু চোখে পড়লো না আবিরের । খাটটা সুন্দর করে গোছানো । খাটের নিচে কিছু থাকলেও থাকতে পারে । কিন্তু এখন খোঁজা ঠিক হবে কি? হুট করে যদি রজব মোল্লা চলে আসে? ব্যাপারটা খারাপ দেখা যাবে । এমন সময় রজব মোল্লা ফোনে কার সাথে কথা বলতে বলতে রুমের দিকে আসছে টের পেলো আবির । রুমে আবিরকে দেখ সন্দেহ করতে পারে দেখে আবির লুকোনোর জায়গা খুজলো । আশেপাশে ফার্নিচার কম হওয়ার একটু মুশকিল হলো আবিরের জন্য লুকোন, খাটটাই আবিরের জন্য সবচেয়ে সেইফ মনে হলো । আবির খাটের নিচে ঢুকে গেলো । একটু পর রজব মোল্লা এলো রুমে । সাথে খোকন । ফোনের কথা শেষ করে “ঠিক আছে রাইখলাম!” বলে খোকনকে বলল, “দরজা আটকাইয়া দে!” খোকন দরজা আটকে দিলো । আবির মোবাইল বের করে সাইলেন্ট করে নিলো, যেনো কল বেজে না ওঠে হুট করে । তারপর অয়নকে মেসেজ দিলো, “আমাকে বাচা অয়ন! আমি রজব মোল্লার রুমে খাটের নিচে লুকিয়ে আছি! তুই কিছু একটা করে রজব মোল্লা আর খোকনকে রুম থেকে বের করে আমাকে বের হতে সাহায্য কর!”
আগামী পর্বেঃ
নিশান বলল, “আচ্ছা, আত্মার সাক্ষাতের কথা বলছিলো রজব আঙ্কেল, এটা কি আসলেই সম্ভব?” জরিনা বলল, “না না! এইগুলা সব ভুয়া কথা ।” নিশান বলল, “যদি সত্যি হয়?” এমন সময় রজব মোল্লা এলো সেখানে । বলল, “ক্যান সত্যি হবে না? এইগুলা আসলেই সত্যি!” জরিনা তখন নিশানকে বলল, “চলো, ঘরে যাই ।” নিশান ঘরে গেলো জরিনা যেতে গিয়ে আবার পেছন ফিরে এসে রজব মোল্লাকে বলল, “দাদাই, পোলাডারে এইগুলা কইয়েন না, বড়ো হইতাছে ও!” রজব মোল্লা হঠাৎ তখন একটা অশ্রাব্য শব্দ ব্যাবহার করে বলল, “তোর এতো কথা কওয়া লাগবো না!”
গ্রামের ভেতরে দিয়ে হাটছিলো আবির । অয়নের সাথে কথা বলতে বলতে । অয়ন জিজ্ঞেস করলো, “ভাই, তোমার কি সত্যি মনে হয় এই ঝিকানা অশরীরী কিছু না?” আবির বলল, “অবশ্যই! এর পেছনে তুই আমার মনের কথা না শুনতে চাইলেও আমার কাছে অনেক যুক্তি আছে । প্রথমত ঝিকানার কি লাভ এদের চোখ কেড়ে নিয়ে? সবাইকে কানা বানিয়ে প্রতিশোধ নিতে চায়? কিন্তু গ্রামের সবাই-ই তো কানা হয়ে গেছে । তাহলে এখনও কেনো ঝিকানা আসছে? দ্বিতীয়ত, গতকাল ঝিকানা তোকে হাতের কাছে পেলো, তোর তো দুটো চোখই আছে, তাহলে তোর চোখ কেনো নিলো না?” অয়ন বলল, “তাই তো! এটা তো আগে ভাবি নি! ঝিকানা কেনো আমার চোখ নিলো না!” আবির বলল, “এখানে আরেকটা জিনিস হবার সম্ভাবনা একদম একশ শতাংশ! সেটা হচ্ছে, যে ঝিকানা তোর পরিচিত!” অয়ন চোখ বড় বড় করলো । ঝিকানা ওকে চেনে! অয়ন জিজ্ঞেস করলো, “কি করে!” আবির বলল, “কারণ সে যদি তোকে না চিনতো, তাহলে সে গ্রামবাসী ভেবে চোখ তুলে নিতো । আর যদি এভাবে ভাবি, তাহলে একজনই হতে পারে ঝিকানা ।” অয়ন বলল, “মিতু?” আবির বলল, “একদম! ওর আচরণে আমার সন্দেহ হয়, ও আসলেই ছেলে নাকি মেয়ে সেটা নিয়ে । কিন্তু এখনও কাউকে কিছু বলিস না, আগে প্রমান করতে হবে । আর এই ঘটনা কিন্তু এখানেই সীমাবদ্ধ না, এর শেকড় আরও অনেকদূর পর্যন্ত বিস্তৃত ।” অয়ন ডানে মাথা কাত করলো । মাটিতে একটা ব্যাটারির খোসা দেখতে পেলো আবির । ও চেনে এই ব্যাটারিটা । নামটাও লেখা আছে । হারুন ব্যাটারি । খোসাটা হাতে নিলো । কেমন গুড়ো গুড়ো লেগে আছে এর সাথে । পকেটে নিলো ব্যাটারিটা । অয়ন জিজ্ঞেস করলো, “এই ব্যাটারি দিয়ে কি করবা তুমি?” আবির বলল, “একটা খেলনা গাড়ি কিনেছি সেটা চালাবো ।” অয়ন বলল, “এহ! ইয়ার্কিও করতে পারে না । এটা তো সম্পূর্ণ ব্যাটারিই না! এটা তো ব্যাটারির খোসা!” আবির কিছু বলল না । একটা দোকানে গেলো । দোকানদারকে বলল, “দুটো আইসক্রিম দিনতো ।” দোকানদার আইসক্রিম দিলো দুটো । আবির একটা অয়নের হাতে দিয়ে দোকানদারকে টাকা দিয়ে দোকানদারকে জিজ্ঞেস করলো, “হারুন ব্যাটারি আছে?” কথা শুনে লোকটা যেনো অবাক হয়ে গেলো । যেনো এ ব্যাটারির নাম কি করে আবির জানলো তা শুনে অবাক হলো । দোকানদার কেবল ডানে বামে মাথা নাড়লো । আবির আর অয়ন আইসক্রিম খেতে খেতে গাড়ির দিকে যাওয়া শুরু করলো । অয়ন জিজ্ঞেস করলো, “এই গ্রামে তো একটা দোকান আছে, কিন্তু রজব মোল্লা যে বললেন কোন দোকান নেই?” আবির বলল, “তা বলার একটা কারণ হতে পারে উনি চান নি আমরা গ্রামের এইদিকটায় আসি । কেন চান নি তা জানি না । তবে হ্যাঁ, এই দোকানের চেয়ে অন্য গ্রামের দোকানটা তুলনামূলক কাছেই ।” তারপর আবির আর অয়ন গাড়িতে উঠে চলে এলো রজব মোল্লার বাড়ি ।
বিকেলের দিকের কথা । রজব মোল্লার সাথে দেখা করার জন্য রজব মোল্লার রুমের দিকে গেলো আবির, কিন্তু রজব মোল্লা রুমে নেই । আবিরের অন্যের রুমে তার পার্মিশন ছাড়া ঢোকবার কোন ইচ্ছে নেই, কিন্তু এখন সেই রহস্যের জট খুলতে আবিরের ইচ্ছে হল যেতে । রুমে ঢুকল আবির । এতো বড় একটা রুমে একটা খাট, একটা বুকশেলফ আর একটা চেয়ার ছাড়া কিছুই নেই । এতোদিন এসেছে ওরা, কিন্তু এই প্রথম আবির রজব মোল্লার রুমে এলো । বাইরে থেকেও কখনো দেখা হয় নি, কারণ রজব মোল্লা সর্বদা ঘরের দরজা চাপিয়ে দিয়ে রাখে । বুকসেলফে তেমন একটা সন্দেহজনক কিছু চোখে পড়লো না আবিরের । খাটটা সুন্দর করে গোছানো । খাটের নিচে কিছু থাকলেও থাকতে পারে । কিন্তু এখন খোঁজা ঠিক হবে কি? হুট করে যদি রজব মোল্লা চলে আসে? ব্যাপারটা খারাপ দেখা যাবে । এমন সময় রজব মোল্লা ফোনে কার সাথে কথা বলতে বলতে রুমের দিকে আসছে টের পেলো আবির । রুমে আবিরকে দেখ সন্দেহ করতে পারে দেখে আবির লুকোনোর জায়গা খুজলো । আশেপাশে ফার্নিচার কম হওয়ার একটু মুশকিল হলো আবিরের জন্য লুকোন, খাটটাই আবিরের জন্য সবচেয়ে সেইফ মনে হলো । আবির খাটের নিচে ঢুকে গেলো । একটু পর রজব মোল্লা এলো রুমে । সাথে খোকন । ফোনের কথা শেষ করে “ঠিক আছে রাইখলাম!” বলে খোকনকে বলল, “দরজা আটকাইয়া দে!” খোকন দরজা আটকে দিলো । আবির মোবাইল বের করে সাইলেন্ট করে নিলো, যেনো কল বেজে না ওঠে হুট করে । তারপর অয়নকে মেসেজ দিলো, “আমাকে বাচা অয়ন! আমি রজব মোল্লার রুমে খাটের নিচে লুকিয়ে আছি! তুই কিছু একটা করে রজব মোল্লা আর খোকনকে রুম থেকে বের করে আমাকে বের হতে সাহায্য কর!”
আগামী পর্বেঃ
নিশান বলল, “আচ্ছা, আত্মার সাক্ষাতের কথা বলছিলো রজব আঙ্কেল, এটা কি আসলেই সম্ভব?” জরিনা বলল, “না না! এইগুলা সব ভুয়া কথা ।” নিশান বলল, “যদি সত্যি হয়?” এমন সময় রজব মোল্লা এলো সেখানে । বলল, “ক্যান সত্যি হবে না? এইগুলা আসলেই সত্যি!” জরিনা তখন নিশানকে বলল, “চলো, ঘরে যাই ।” নিশান ঘরে গেলো জরিনা যেতে গিয়ে আবার পেছন ফিরে এসে রজব মোল্লাকে বলল, “দাদাই, পোলাডারে এইগুলা কইয়েন না, বড়ো হইতাছে ও!” রজব মোল্লা হঠাৎ তখন একটা অশ্রাব্য শব্দ ব্যাবহার করে বলল, “তোর এতো কথা কওয়া লাগবো না!”