পরিচয়-৩১৯
পরিচয়(পর্ব-৩১৯)
(সিজন-১১: আত্মার সাক্ষাৎ)
(সিজন-১১: আত্মার সাক্ষাৎ)
“আচ্ছা আপু কোথায়?” আবিরকে জিজ্ঞেস করলো অয়ন । আবির বলল, “তোর আপুর কোন বান্ধবী নাকি পাশেরই কোনো গ্রামে থাকে সেখানে গিয়েছে ।” অয়ন ভ্রু কুঁচকে বলল, “আপু বান্ধবী এই এলাকায়! কোনদিনও তো এরকম শুনিনি!” আবির বলল, “থাকতে পারে হয়তো, আগে হয়তো ঢাকায় ছিলো, এখন বিয়ে করে এখানে এসেছে ।” অয়ন বলল, “ভাই, একটা কথা বলবো?” আবির জিজ্ঞেস করলো, “কি?” অয়ন বলল, “বাসে ওই যে লোক কারিশ্মা দেখাতে এসেছিলো, সে লোকের নাম্বার আপু নিয়েছিলো, আমি দেখেছিলাম ।” আবিরের চেহারায় হালকা ভয় দেখা দিলো, তবে সেটা প্রকাশ করলো না । অয়ন বলল, “আরেকটা কথা, সেদিন খাওয়াদাওয়া শেষে এই বারান্দা দিয়ে রুমের দিকে আসার সময় আমি একটা বৃদ্ধাকে দেখেছিলাম, কেমন অদ্ভুত আচরণ করছে, আর ওই গ্রামের দিকে যাচ্ছে ।” আবির বলল, “যাবি আমার সাথে?” অয়ন জানতে চাইলো, “কোথায়?” আবির বলল, “যেখানে গ্রামবাসীরা থাকে?”
চয়নিকার জ্ঞান ফিরলো পানির ঝাপটায় । চোখ খুলতেই দেখলো, সে একটা বিছানায় শুয়ে আছে । পাশে বোরখা পরিহিত একজন । চয়নিকা জিজ্ঞেস করলো, “আমি এখানে কেনো! আমার মা কি চলে গেছে?” দাড়িয়ে থাকা মানুষটা বলল, “হ্যাঁ, চলে গেছে তো, আত্মারা তো বেশিক্ষন থাকতে পারে না । কেনো, আপনি মায়ের সাথে সব কথা বলেন নি?” চয়নিকা বলল, “আমার সবটা মনে নেই , অল্প সল্প মনে আছে!” মানুষটা বলল, “আপনি শুক্রিয়া আদায় করুন! কারণ অনেকের তো তাও থাকে না!” চয়নিকা কিছুক্ষণ চুপ থেকে মানুষটাকে একটা অদ্ভুত প্রশ্ন করে বসলো । “আচ্ছা কিছু যদি মনে না করেন! একটা প্রশ্ন করি! আপনি কি পুরুষ না মহিলা?” মানুষটা কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলল, “আমরা কাহরামানের শিষ্য, আমরা মানুষ, এর চেয়ে বেশি কিছু আর কেউ জানে না ।” চয়নিকা আর কিছু জিজ্ঞেস করলো না । মানুষটা বলল, “চলুন, কাহরামান আপনার জন্য অপেক্ষা করছেন ।” চয়নিকা উঠে কাহরামানের কাছে গেলো । কাহরামান জিজ্ঞেস করলো, “কেমন লাগলো বেটি?” চয়নিকা জি! ভালো । তবে আফসোস, যদি সবটা মনে থাকতো আমার! কাহরামান বলল, “হাইয়েশ! না! সেটা অসম্ভব! কেউ পারে না সেটা! তুই এতোদিন পেরেছিস, এটাই তো কেউ পারে না!” চয়নিকা “হুম” বলে টাকা বের করলো । কাহরামানের হাতে দিলো । কাহরামান বোরখা পরিহিত একজনকে দিলো সেই টাকা । চয়নিকা দেখলো, একজন চা খাচ্ছে । একটু পর সেও বোধ হয় আত্মাঘরে ঢুকবে । চয়নিকাকে কাহরামান জিজ্ঞেস করলো, “তুই কি আর যে দুজনের সাথে দেখ করতে চেয়েছিলি তাদের সাথে দেখ করবি?” চয়নিকা বলল, “হ্যাঁ! অবশ্যই! কাল আর পরশু তাদের সাথে দেখা করবো ।” কাহরামান বলল, “ঠিক আছে! আসিস! আরেকটা কথা! আমরা কোথায় আছি, কিভাবে তুই আত্মার দেখা পেয়েছিস, এসব কাউকে বলিস না! এতে আত্মা শান্তি পাবে না! সেই সাথে জীবনে আর কোনদিন কোন আত্মার দেখা পাবার ইচ্ছে জাগলেও তা পূরণ হবে না!” চয়নিকা ডানে মাথা কাত করে বলল, “ঠিক আছে!” তারপর সেই সিঁড়ি দিয়ে উঠে এলো চয়নিকা । নক করলো । সেই দোকানদার পাল্লা তুলে চয়নিকাকে বেড়িয়ে আসতে সাহায্য । দোকান থেকে আসার সময় আরেকটা লোক এলো দোকানে । দোকানদারকে বলল, “মুতলুওল!” চয়নিকা বুঝলো, এও যাচ্ছে আত্মার সাক্ষাৎ পেতে ।
গাড়ি নিয়ে অয়নের সাথে জঙ্গল পেড়িয়ে যে পথ পেয়েছিলো অয়ন, সেই পথটারই যে মাথা মাঠে, সেখান দিয়ে আবির আর অয়ন গেলো গ্রামবাসীরা যেখানে থাকে, সেখানে । গ্রামে নামতেই অল্পসল্প গ্রামবাসী দেখলো আবির আর অয়ন । প্রথমবারের মতো গাড়ি দেখে হয়তো চমকে গেছে এলাকাবাসী । তাই সবাই তাকিয়ে আছে আবিরের গাড়ির দিকে । আবিরের বুকটা ছ্যাত করে উঠলো এই দেখে, উপস্থিত গ্রামবাসীর একজনেরও একটা করে চোখ নেই! সেই সাথে আরও অদ্ভুত ব্যাপার, প্রত্যেকে কেমন মাতাল মাতাল হয়ে আছে । এমনকি ছোটো একটা শিশুরও চোখ নেই । সেও মাতাল হয়ে মাটিতে গড়াগড়ি করছে । সেও কি নেশা করে? এও কি সম্ভব? একজনকে কাছে ডাকলো আবির । মাঝবয়স্ক এক লোক । তারও এক চোখ নেই । জিজ্ঞেস করলো, “আপনারা কি ঝিকানার আক্রমণের স্বীকার?” লোকটা ওপর নিচে মাথা নাড়লো । আবির আবার জিজ্ঞেস করলো, “আপনারা কি মুসলমান?” লোকটা আবারও ওপর নিচ মাথা নাড়লো । আবির বলল, “তাহলে এসব আজগুবি কথায় বিশ্বাস করেন কেনো?” লোকটা এবার আবিরের দিকে তাকিয়ে হালকা রাগ নিয়ে বলল, “আফনেরা শহর থেইকা আইছেন ভাই, শহরের গাড়ি ঘোড়া, লাইট ফাইটের মইধ্যে থাহেন আফনেরা! একবার ঝিকানা সামনে আইলে তারপর বুইঝেন! আসলেই সত্যি নাকি গুজব! এইগুলান আফনেগো পাপের জন্য আল্লাহ গজব দিছে! পাপ করের আপনেরা! গজব পড়ে আমাগো ওপর ।” আবির বলল, “আপনি কি তাই মনে করেন? যারা পাপ করে, আল্লাহ তাদের শাস্তি না দিয়ে যারা করে না তাদের শাস্তি দেন?” লোকটা কিছু না বলে সামনে থেকে চলে গেলো । অয়ন একটু অবাক হয়েছে । কারণ ও ঝিকানাকে দেখেছে, এটা জানা সত্ত্বেও আবির ঝিকানাকে অবিশ্বাস করছে । জিজ্ঞেস করলো, “ভাই! তোমার এখনও এটার প্রতি বিশ্বাস হয় না?” আবির বলল, “না, কারণ এগুলো কিছুই নেই পৃথিবীতে । জীন আছে, তবে এটা জীন বলে আমার অন্তত মনে হয় না ।”
আগামী পর্বেঃ
রজব মোল্লার সাথে দেখা করার জন্য রজব মোল্লার রুমের দিকে গেলো আবির, কিন্তু রজব মোল্লা রুমে নেই । রুমে ঢুকল আবির । এতো বড় একটা রুমে একটা খাট, একটা বুকশেলফ আর একটা চেয়ার ছাড়া কিছুই নেই । এমন সময় রজব মোল্লা ফোনে কার সাথে কথা বলতে বলতে রুমের দিকে আসছে টের পেলো আবির । রুমে আবিরকে দেখ সন্দেহ করতে পারে দেখে আবির খাটের নিচে ঢুকে গেলো । একটু পর রজব মোল্লা এলো রুমে ।
চয়নিকার জ্ঞান ফিরলো পানির ঝাপটায় । চোখ খুলতেই দেখলো, সে একটা বিছানায় শুয়ে আছে । পাশে বোরখা পরিহিত একজন । চয়নিকা জিজ্ঞেস করলো, “আমি এখানে কেনো! আমার মা কি চলে গেছে?” দাড়িয়ে থাকা মানুষটা বলল, “হ্যাঁ, চলে গেছে তো, আত্মারা তো বেশিক্ষন থাকতে পারে না । কেনো, আপনি মায়ের সাথে সব কথা বলেন নি?” চয়নিকা বলল, “আমার সবটা মনে নেই , অল্প সল্প মনে আছে!” মানুষটা বলল, “আপনি শুক্রিয়া আদায় করুন! কারণ অনেকের তো তাও থাকে না!” চয়নিকা কিছুক্ষণ চুপ থেকে মানুষটাকে একটা অদ্ভুত প্রশ্ন করে বসলো । “আচ্ছা কিছু যদি মনে না করেন! একটা প্রশ্ন করি! আপনি কি পুরুষ না মহিলা?” মানুষটা কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলল, “আমরা কাহরামানের শিষ্য, আমরা মানুষ, এর চেয়ে বেশি কিছু আর কেউ জানে না ।” চয়নিকা আর কিছু জিজ্ঞেস করলো না । মানুষটা বলল, “চলুন, কাহরামান আপনার জন্য অপেক্ষা করছেন ।” চয়নিকা উঠে কাহরামানের কাছে গেলো । কাহরামান জিজ্ঞেস করলো, “কেমন লাগলো বেটি?” চয়নিকা জি! ভালো । তবে আফসোস, যদি সবটা মনে থাকতো আমার! কাহরামান বলল, “হাইয়েশ! না! সেটা অসম্ভব! কেউ পারে না সেটা! তুই এতোদিন পেরেছিস, এটাই তো কেউ পারে না!” চয়নিকা “হুম” বলে টাকা বের করলো । কাহরামানের হাতে দিলো । কাহরামান বোরখা পরিহিত একজনকে দিলো সেই টাকা । চয়নিকা দেখলো, একজন চা খাচ্ছে । একটু পর সেও বোধ হয় আত্মাঘরে ঢুকবে । চয়নিকাকে কাহরামান জিজ্ঞেস করলো, “তুই কি আর যে দুজনের সাথে দেখ করতে চেয়েছিলি তাদের সাথে দেখ করবি?” চয়নিকা বলল, “হ্যাঁ! অবশ্যই! কাল আর পরশু তাদের সাথে দেখা করবো ।” কাহরামান বলল, “ঠিক আছে! আসিস! আরেকটা কথা! আমরা কোথায় আছি, কিভাবে তুই আত্মার দেখা পেয়েছিস, এসব কাউকে বলিস না! এতে আত্মা শান্তি পাবে না! সেই সাথে জীবনে আর কোনদিন কোন আত্মার দেখা পাবার ইচ্ছে জাগলেও তা পূরণ হবে না!” চয়নিকা ডানে মাথা কাত করে বলল, “ঠিক আছে!” তারপর সেই সিঁড়ি দিয়ে উঠে এলো চয়নিকা । নক করলো । সেই দোকানদার পাল্লা তুলে চয়নিকাকে বেড়িয়ে আসতে সাহায্য । দোকান থেকে আসার সময় আরেকটা লোক এলো দোকানে । দোকানদারকে বলল, “মুতলুওল!” চয়নিকা বুঝলো, এও যাচ্ছে আত্মার সাক্ষাৎ পেতে ।
গাড়ি নিয়ে অয়নের সাথে জঙ্গল পেড়িয়ে যে পথ পেয়েছিলো অয়ন, সেই পথটারই যে মাথা মাঠে, সেখান দিয়ে আবির আর অয়ন গেলো গ্রামবাসীরা যেখানে থাকে, সেখানে । গ্রামে নামতেই অল্পসল্প গ্রামবাসী দেখলো আবির আর অয়ন । প্রথমবারের মতো গাড়ি দেখে হয়তো চমকে গেছে এলাকাবাসী । তাই সবাই তাকিয়ে আছে আবিরের গাড়ির দিকে । আবিরের বুকটা ছ্যাত করে উঠলো এই দেখে, উপস্থিত গ্রামবাসীর একজনেরও একটা করে চোখ নেই! সেই সাথে আরও অদ্ভুত ব্যাপার, প্রত্যেকে কেমন মাতাল মাতাল হয়ে আছে । এমনকি ছোটো একটা শিশুরও চোখ নেই । সেও মাতাল হয়ে মাটিতে গড়াগড়ি করছে । সেও কি নেশা করে? এও কি সম্ভব? একজনকে কাছে ডাকলো আবির । মাঝবয়স্ক এক লোক । তারও এক চোখ নেই । জিজ্ঞেস করলো, “আপনারা কি ঝিকানার আক্রমণের স্বীকার?” লোকটা ওপর নিচে মাথা নাড়লো । আবির আবার জিজ্ঞেস করলো, “আপনারা কি মুসলমান?” লোকটা আবারও ওপর নিচ মাথা নাড়লো । আবির বলল, “তাহলে এসব আজগুবি কথায় বিশ্বাস করেন কেনো?” লোকটা এবার আবিরের দিকে তাকিয়ে হালকা রাগ নিয়ে বলল, “আফনেরা শহর থেইকা আইছেন ভাই, শহরের গাড়ি ঘোড়া, লাইট ফাইটের মইধ্যে থাহেন আফনেরা! একবার ঝিকানা সামনে আইলে তারপর বুইঝেন! আসলেই সত্যি নাকি গুজব! এইগুলান আফনেগো পাপের জন্য আল্লাহ গজব দিছে! পাপ করের আপনেরা! গজব পড়ে আমাগো ওপর ।” আবির বলল, “আপনি কি তাই মনে করেন? যারা পাপ করে, আল্লাহ তাদের শাস্তি না দিয়ে যারা করে না তাদের শাস্তি দেন?” লোকটা কিছু না বলে সামনে থেকে চলে গেলো । অয়ন একটু অবাক হয়েছে । কারণ ও ঝিকানাকে দেখেছে, এটা জানা সত্ত্বেও আবির ঝিকানাকে অবিশ্বাস করছে । জিজ্ঞেস করলো, “ভাই! তোমার এখনও এটার প্রতি বিশ্বাস হয় না?” আবির বলল, “না, কারণ এগুলো কিছুই নেই পৃথিবীতে । জীন আছে, তবে এটা জীন বলে আমার অন্তত মনে হয় না ।”
আগামী পর্বেঃ
রজব মোল্লার সাথে দেখা করার জন্য রজব মোল্লার রুমের দিকে গেলো আবির, কিন্তু রজব মোল্লা রুমে নেই । রুমে ঢুকল আবির । এতো বড় একটা রুমে একটা খাট, একটা বুকশেলফ আর একটা চেয়ার ছাড়া কিছুই নেই । এমন সময় রজব মোল্লা ফোনে কার সাথে কথা বলতে বলতে রুমের দিকে আসছে টের পেলো আবির । রুমে আবিরকে দেখ সন্দেহ করতে পারে দেখে আবির খাটের নিচে ঢুকে গেলো । একটু পর রজব মোল্লা এলো রুমে ।