0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

পরিচয়-৩১৮

পরিচয়(পর্ব-৩১৮)
(সিজন-১১: আত্মার সাক্ষাৎ)
গাড়িটা ঠিকমতো রেখে নিজের রুমে এসে শুয়ে পড়লো আবির । সেই সময় ওর রুমে এলো অয়ন । পাশে চেয়ারে বসে ডাকলো । “ভাই!” আবিরের চোখ বন্ধ থাকায় অয়ন যে এসেছে তা টের পায় নি । তাই একটু চমকে চোখ খুলে দেখ বলল, “হ্যাঁ বল, কি বলবি ।” অয়ন বলল, “ভাই, আসার দিন বাসে যা হয়েছে, তার জন্য আমি অত্যন্ত দুঃখিত ভাই!” আবির বলল, “ঠিক যা । আমি কিছু মনে করিনি ।” অয়ন কিছুক্ষণ চুপ করে বসে রইলো । তারপর হুট করে আবিরের পা জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলতে লাগলো, “ভাই! সরি ভাই! আমাকে মাফ করে দাও! সরি ভাই! আমি অনেক খারাপ ভাই!” আবির সাথে সাথে উঠে বসে অয়নের হাত ছাড়াতে ছাড়াতে বলল, “আরে কি করছিস কি! ছাড়! ছাড় বলছি!” তারপর অয়নকে বিছানায় বসালো । অয়ন চোখের পানি মুছলো । আবির বলল, “শোন, মানুষ মাত্রই ভুল করে । কিন্তু ভুল করার চেয়ে বুঝতে পারাটাই আসল । তুই যে ভুল বুঝতে পেরেছিস, এটাই অনেক ।” অয়ন বলল, “ভাই! তুমি যদি বলো, আমি মাইশাকে যেয়ে এক্ষুনি বলবো ব্রেকআপ!” আবির হেসে উঠলো । তারপর বলল, “দেখলি তো, মাইশার সামনে ভালো সাজতে গিয়ে আমাকে নিয়ে একটা উল্টাপাল্টা কথা বলেছিস, আর এখন আমার সামনে ভালো সাজতে গিয়ে তুই এখন মাইশাকে নিয়ে উল্টাপাল্টা বলছিস । এটা কি ঠিক?” অয়ন মাথা নিচু করলো । আবির বলল, “ইটস ওকে! লোকে যতোই বলুক, মানুষ অভ্যাসের দাস, মানুষের অভ্যাস কিন্তু পরিবর্তিত হয় । এই যেমন, ছোটো বেলায় আমি ছিলাম অনেক জেদি । যেকোনো কিছুতেই অতিরিক্ত জেদ ছিলো আমার । কিন্তু এখন দেখ, আমি নিজেকে কতটা পাল্টে ফেলেছি! তুইও চাইলে তা করতে পারবি ।” অয়ন ওপর নিচ মাথা নাড়লো ।
এদিকে পুটিয়া গ্রামে সেই দোকানদারের দেখানো সুরঙ্গ ধরে নিচে নামলো চয়নিকা । নিচে যেখানে সিড়ি শেষ, সেখানেই একটা দরজা । নক করলো চয়নিকা । ওপাশ থেকে কেউ জানতে চাইলো, “কে?” চয়নিকা বলল, “আত্মার সাক্ষাৎ পেতে এসেছি!” ওপাশ থেকে লোকটা দরজা খুলে দিলো । একটা ছোটো রুমে অনেকটা সিংহাসনের মতো একটা আসলে বসে ভুঁড়িওয়ালা, টাক, ফর্সা একটা লোক । লোকটা খালি গায়ে একটা গেরুয়া ওড়না গলায় ঝুলিয়ে আর একটা গেরুয়া ধুতি পড়ে বসে আছে । কপালে লাল তিলক । দরজা যে লোক খুলে দিয়েছিলো, সে ছিলো পুরো কালো বোরখায় ঢাকা । ভেতরে আরও কিছু কর্মচারী ছিলো, তারা সকলেই কালো বোরখায় ঢাকা । তারা মেয়ে না ছেলে তা বোঝা মুশকিল । সামনের লোকটাকে দেখে চয়নিকার মনে হলো, চেহারাটা কেমন যেনো চেনা চেনা! লোকটা বলল, “মুতলুওল! মুতলুওল! খুশী থাকো! খুশী থাকো!” চয়নিকা বুঝতে পারলো, এই সেই কাহরামান! চয়নিকা জিজ্ঞেস করলো, “কি নামে সম্বোধন করবো আপনাকে?” কাহরামান এতোক্ষণ চোখ বন্ধ করে ছিলো । চোখ খুলে চয়নিকার দিকে তাকিয়ে লোকটা বলল, “তুই তো দেখি বয়সে ছোট, তুই আমাকে বাবা বলেই ডাকিস!” চয়নিকা বলল, “ঠিক আছে বাবা! আমি আমার মায়ের ছবি পাঠিয়েছিলাম! নামও পাঠিয়েছিলাম মায়ের । সারা দিয়েছি কি আমার মায়ের আত্মা!” কাহরামান বলল, “কেনো দেবে না! দিয়েছে!” কাহরামান তখন কাকে যেনো ইশারা করতেই সেই লোক এক কাপ গরম চা নিয়ে এলো । সেটা চয়নিকাকে দিয়ে বলল, “এই পানীয় খা! এতে এমন এক উপাদান আছে, যা তোকে আত্মা শক্তি থেকে নিজেকে কিছুটা হলেও সামনে নিতে সাহায্য করবে!” চয়নিকা জিজ্ঞেস করলো, “কিছুটা হলেও মানে?” কাহরামান বলল, “তুই নিজেকে একটুও সামলাতে পারবি না ভেতরে! আত্মার সামনে মানুষ প্রায় মৃতের মতো হয়ে যায় । সেখানে এটা তোকে খানিকটা সেন্স থাকতে সাহায্য করবে! পুরো সেন্স নিয়ে কেউ যেতে পারে না!” চয়নিকা চা-টা ধীরে ধীরে পান করলো । কুসুম কুসুম গরম । মিষ্টি তেমন একটা নেই । সেটা খাওয়ার পর কাহরামান আরেকজনকে ইশারা করে বলল, “ওকে আত্মা ঘরে নিয়ে যা!” আরেকজন বোরখা পড়া লোক এসে চয়নিকাকে নিয়ে গেলো সেই রুমেরই একটা দরজার সামনে । তারপর চয়নিকাকে বলল, “আপনি ভেতরে যেয়ে একটা চেয়ার আছে, সেখানে বসুন, আত্মা চলে আসবে, আমি ভেতরে যেতে পারবো না, কারণ আপনি যেটা খেয়েছেন আমি সেটা খাইনি, ফলে আমার মৃত্যু হতে পারে ।” লোকটা যে কথা বলল, “বুঝতেই পারলো সে মেয়ে না ছেলে! যেন দুটো কণ্ঠের মিশ্রণ ।” যাই হোক, চয়নিকা ভেতরে যেতেই দরজা আটকে দেয়া হলো । চারপাশে মাটির দেয়ার । মাটির নিচেই এটা । ওপরটা কিছু দিয়ে ঠেস দেয়া হয়েছে, যেনো মাটি পড়ে না যায় । কিন্তু এখানে আত্মা আসবে কি করে । চেয়ারে বসলো চয়নিকা । শরীরটা কেমন দুর্বল লাগছে । পড়ে যাবে পড়ে যাবে ভাব । চয়নিকার এবার আরও খারাপ লাগা শুরু হলো । তবে কি আত্মা আসছে? চয়নিকা চেয়ার থেকে পড়ে গেলো । নিজেকে হুঁশহীন লাগতে শুরু হলো! এমন সময় চয়নিকার পেছন থেকে কে যেনো হাজির হলো । চয়নিকা তাকিয়ে দেখলো ওর মা!

আগামী পর্বেঃ
গ্রামে নামতেই অল্পসল্প গ্রামবাসী দেখলো আবির আর অয়ন । প্রথমবারের মতো গাড়ি দেখে হয়তো চমকে গেছে এলাকাবাসী । তাই সবাই তাকিয়ে আছে আবিরের গাড়ির দিকে । আবিরের বুকটা ছ্যাত করে উঠলো এই দেখে, উপস্থিত গ্রামবাসীর একজনেরও একটা করে চোখ নেই!