0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

পরিচয়-৩১৭

পরিচয়(পর্ব-৩১৭)
(সিজন-১১: আত্মার সাক্ষাৎ)
তারপর রওনা হলো রজব মোল্লার বাড়ির দিকে ।
বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছে সবাই । অপেক্ষা করছে আবিরের । রজব মোল্লা খোকনকে কোথায় যেনো পাঠিয়ে দিলো । বাকিদের কাছে এসে বলল, “বদমাইশডা নেশা কইরা বইসা আছে, দেহেও নাই পোলাডা বাইর হইয়া গেছে! ওরে নেশা কাটাইতে পাঠাইয়া দিছি ।একটু পর কোত্থেকে যেনো মিতু এলো । জিজ্ঞেস করলো, “কি হইছে? তোমরা বাইরে দাঁড়ায় আছো ক্যান?” রজব মোল্লা রাগ করে বলল, “তুই কই থাকোস! জানোস না আইজকা ঝিকানা বাইর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি!” মিতু বলল, “আমি ছিলাম আমাদের বন্ধুগো লগে । কি হইছে কও আগে!” রজব মোল্লা বলল, “এনাগো লগে যে অয়ন নামে পোলাডা আছিলো, ও রাগ কইরা বাড়ি থাইকা বাইর হইয়া গেছে । এহন যদি ঝিকানা ওর চোখ তুইলা লেয়?” চয়নিকা বলল, “ওইতো আবির আসছে!” চয়নিকার দৃষ্টি অনুযায়ী বাকিরাও জঙ্গলের দিকে তাকালো । আবির কোলে অয়নকে নিয়ে এগিয়ে আসছে । অয়নকে এনে সবার সামনে মাটিতে রাখলো আবির । তারপর বলল, “কেউ পানি নিয়ে এসো!” মাইশা দৌড়ে গ্লাসে করে পানি নিয়ে এলো । আবির সেই পানি অয়নের মুখে ছিটিয়ে দিতেই লাফিয়ে “ঝিকানা! ঝিকানা! মেরো না আমাকে! আমার চোখ তুলে নিয়ো না!” বলে লাফিয়ে উঠলো । তারপর আসেপাশে সবাইকে দেখে নিজেকে সামলে নিয়ে শান্ত হলো অয়ন । আবির বিরক্ত হয়ে জিজ্ঞেস করলো, “কোন দুঃখে গিয়েছিলি বাইরে? দাদাই এতো করে বারণ করা সত্ত্বেও কেনো গিয়েছিলি তুই?” অয়ন কিছু বলল না । সাবিত এগিয়ে এসে হাটু গেড়ে বসে বলল, “আমার ওপর রাগ করে, না? ঠিক আছে সরি!” অয়ন বলল, “না ভাই! ঠিক আছে । আমিই আসলে ভুল ছিলাম ।” মাইশা বলল, “যাক! এটুকু অন্তত বুঝতে পেরেছো । কিন্তু এই বোঝাটা যেনো চিরকাল থাকে সেজন্য আমি রেকর্ড করে রাখলাম তোমার কথাটা!” বলে মোবাইলে করা রেকর্ডটা শোনালো মাইশা । অয়ন ভ্রু কুঁচকে বিরক্তের সহিত বলল, “ও, আমি প্রায় মারা-ই যাচ্ছিলাম, আর তোমরা আমাকে নিয়ে ইয়ার্কি করছো?” সাবিত বলল, “কই তুই তো ঠিকঠাকই আছিস!” জরিনা তখন কিসের যেনো ঘ্রাণ নিতে নিতে বলল, “কিয়ের একখান গন্ধ না?” নিশান বলল, “হ্যাঁ! আমিও পাচ্ছিলাম অনেকক্ষণ ধরে!” মাইশা বলল, “হ্যাঁ! আমিও পাচ্ছি! কিসের গন্ধ এটা!” আবির বলল, “আরে! তোমাদের আদরের অয়ন প্যান্টে মুইতা দিছে!” সাবিত উঠে দুরে সরে গেলো আর বলল, “এহ! এতক্ষণ আমি নাকি এর কাছে ছিলাম!” অয়ন আবিরকে বলল, “ছি ভাই! কি মুখের ভাষা!” চয়নিকা বিরক্ত হয়ে অয়নকে বলল, “তোর অতো দেখা লাগবে না! যা রুমে যেয়ে প্যান্ট চেঞ্জ কর!” অয়ন উঠে রুমে গেলো প্যান্ট চেঞ্জ করতে । আবিরও উঠে দাড়িয়ে বলল, “যাই, আমার প্যান্ট, গেঞ্জি সব চেঞ্জ করা লাগবে!” বাড়ির দিকে যাবার সময় আবির একবার সেদিকে তাকালো যেখানে খোকন বসে ছিলো । খোকনকে না দেখতে পেয়ে জিজ্ঞেস করলো, “উনি আবার কোথায় গেলেন?” রজব মোল্লা বলল, “আর কইও না, ও নেশা কইরা মাতাল হইয়া পইড়া ছিলো! ওরে পাঠাইয়া দিছি গোসল টসল কইরা নেশা কাটাইয়া আসতে!”
রুমে এসে ড্রেস পাল্টে শুয়ে আছে অয়ন । সে সময় সাবিত এলো । অয়ন জিজ্ঞেস করলো, “টাই পাইছো তোমার?” সাবিত বলল, “হুম, পাইছি, কোন এক প্যান্টের পকেটে ঢুকে ছিলো । ইস্তিরিটা নষ্ট হয়ে গেছে । এমন একটা অজপাড়া গ্রাম যে এখানে থেকে দোকানে যেতেও ভ্যানে করে যেতে হয়!” অয়ন আর কিছু বলল না । সাবিত বলল, “তখন জানতে চাচ্ছিলি না টাই দিয়ে কি করবো? কোট প্যান্ট টাই পড়ে একটু ফটোশুট করবো!” অয়ন ইয়ার্কি করে বলল, “ও! নতুন কোন মেয়ে পটানোর ধান্দা নাকি?” কথাটা শুনে মন খারাপ হয়ে গেলো সাবিতের । আঁখির কথা মনে পড়ে গেলো । অয়ন সাবিতের চেহারা দেখে তা বুঝতে পেরে বলল, “সরি ভাই! আমি সেভাবে বলতে চাই নি!” সাবিত কিছু বলল না । শুয়ে পড়লো ।
পরদিন সকালের কথা । হর্নের আওয়াজে ঘুম ভাংলো মাইশার । এই গ্রামে গাড়ি কোত্থেকে আসবে? রুম থেকে বেড়লো । দেখলো, বারান্দার সামনে মাঠে বাকিরা । শুধু অয়ন আর চয়নিকা নেই । বুঝলো, অয়ন এখনও ঘুম থেকে ওঠে নি । গাড়িটা আবিরের । নিচে গেলো মাইশা । জরিনাকে জিজ্ঞেস করলো, “একি আপু, গাড়ি এলো কোত্থেকে?” জরিনা বলল, “আবির ভাইয়া আনাইছে! উনার একখান কর্মীর সাহায্যে ।” মাইশা আরও জিজ্ঞেস করলো, “চয়নিকা আপুকে দেখছি না যে?” জরিনা বলল, “আপা কই জানি গেলো! বান্ধবী না কার লগে দেখা করতে!”
এদিকে চয়নিকা একটা লোকাল বাসে চড়ে চলে এলো পুটিয়া গ্রামে । বাসস্ট্যান্ড থেকে হেটে হেটে গেলো সেই ঠিকানায় যা সে হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারে পেয়েছে । সেখানে বলা ছিলো, বাসস্ট্যান্ডের পাশেই একটা ঢালু রাস্তা নিচে নেমে গেছে, সেখান দিয়ে নিচে নেমে একটা দোকান পাওয়া যাবে, রাস্তা থেকে যে দোকানটার পেছন সাইড দেখা যায় । সেখানে যেয়ে দোকানদারকে বলতে হবে “মুতলুওল” চয়নিকা নামলো । সামনে একটা যে জিনিসটা দেখে চয়নিকা একটা বাড়ি ভেবেছিলো, সেটা যে একটা দোকান তা পেছন থেকে বোঝা মুশকিল । দোকানে বসে এক কালো বড় মোচওয়ালা আর দাড়িবিহীন লোক । গ্রামের সাদামাটা মুদির দোকান । সামনে সব চকলেটের কৌটো, ললিপপ ইত্যাদি সাজানো, উপরে ঝুলছে চিপসের প্যাকেট, শ্যাম্পুর প্যাকেট, ইত্যাদি । চয়নিকা কাছে যেতেই লোকটা জিজ্ঞেস করলো, “আফার লাইগবো কি?” চয়নিকা বলল, “মুতলুওল!” সাথে সাথে দোকানদার চোখ বড় বড় করলো । চয়নিকাকে বলল, “ভিতরে আসেন ।” চয়নিকা ভেতরে গেলো । দোকানের মাটি কাচা । সেই কাচা মাটির একটা অংশ থেকে গুড়ো করা মাটি সড়িয়ে একটা ঢাকনা সরালো লোকটা । ভেতরে একটা সিড়ি মাটির নিচে গেছে । দোকানদার বলল, “ভেতরে চইলা যান । ফেরার সময় নক কইরবেন, যদি খুইলতে দেরি হয়! বুঝবেন দোকানে অন্য লোকজন আছে, অপেক্ষা কইরবেন এইহানে!” চয়নিকার হালকা ভয় লাগলো । তবু সাহস করে সে ঢুকে গেলো মাটির নিচে ।

আগামী পর্বেঃ
কাহরামান আরেকজনকে ইশারা করে বলল, “ওকে আত্মা ঘরে নিয়ে যা!” চয়নিকা ভেতরে যেতেই দরজা আটকে দেয়া হলো । চেয়ারে বসলো চয়নিকা । শরীরটা কেমন দুর্বল লাগছে । পড়ে যাবে পড়ে যাবে ভাব । চয়নিকার এবার আরও খারাপ লাগা শুরু হলো । তবে কি আত্মা আসছে? চয়নিকা চেয়ার থেকে পড়ে গেলো । নিজেকে হুঁশহীন লাগতে শুরু হলো! এমন সময় চয়নিকার পেছন থেকে কে যেনো হাজির হলো । চয়নিকা তাকিয়ে দেখলো ওর মা!