পরিচয়-৩১৬
পরিচয়(পর্ব-৩১৬)
(সিজন-১১: আত্মার সাক্ষাৎ)
(সিজন-১১: আত্মার সাক্ষাৎ)
শুধু বলল, “ঠিক আছে ।”
ব্রীজের পাশে একা একা দাড়িয়ে রইলো অয়ন । চারপাশে একটা জন্তুরও আওয়াজ নেই । পুরোই নিশ্চুপ । পোকামাকড়ের আওয়াজ যদিও শোনা যাচ্ছে । এতো বড় একটা জঙ্গল, হয়তো আহামরি তেমন একটা ঘন না, কিন্তু তাই বলে একটাও কি কুকুর, বিড়াল, শেয়াল কিচ্ছু নেই? তবে কি ঝিকানা তাদের মেরে ফেলে? এ ব্যাপারে তো কিছু জানায় নি রজব মোল্লা? ব্রীজের নিচে ছোটো নালাটার দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো অয়ন । পানি খুব একটা বেশি নেই । পানির নিচের মাটিতে থাকা কিছু বড় বড় পাথরের আগা দেখা যাচ্ছে । রাতের অন্ধকারে সেটা অস্পষ্ট হলেও বোঝার জন্য যথেষ্ট । ব্রীজের ওপাশেও জঙ্গল, তবে রাস্তা ধরে এগোলে অন্য কিছু পাওয়া গেলেও যেতে পারে । অয়ন ভাবল যাবে কিনা । মনের রাগটা এই শান্ত পরিবেশে খানিকটা কমেছে । তবে বাড়িয়েছে ভয় । এখানে এসে কোন ভুল করে ফেললো নাতো? অয়ন নিজেকে সামলে সামনের দিকে যাওয়া শুরু করলো । দেখতে ইচ্ছে হয়েছে ওর, কি আছে ওদিকে ।
“তোমাদের রুমে কি অয়ন এসেছে?” আবিরের রুমে এসে জিজ্ঞেস করলো সাবিত । চয়নিকা রুমে থেকে বেড়িয়ে যেতে নিচ্ছিলো, সে সময় সাবিত আসায় দাঁড়িয়ে গেলো । আবির উঠে দাড়িয়ে বলল, “না তো, কেনো?” রজব মোল্লাও উঠে দাঁড়ালো । সাবিত বলল, “অয়ন রাগ করে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো। ভাবলাম তোমাদের কারও রুমে এসেছে, কিন্তু না! ওকের কথাও খুজে পেলাম না! টয়লেটেও নেই!” রজব মোল্লা কম্পিত কণ্ঠে বলে উঠলো, “ইয়া আল্লাহ! বাইরে চইলা যায় নাই তো আবার?” চয়নিকাও ভয় পেয়ে গেলো । আবিরও ভয় পেলো । তবে আবিরের ভয়টা ঝিকানার জন্য না । কারণ ও জানে এগুলো কিছুই নেই । ওর ভয়, ঝিকানা যা-ই হোক, খারাপ তো, মানুষের ক্ষতি করে, অয়নেরও ক্ষতি করে ফেলে যদি? আবির বলল, “আমি বাইরে যাচ্ছি!” রজব মোল্লা বলল, “না! যাইও না! আমি মিতু আর খোকনরে পাঠাইতেছি!” আবির বলল, “না! আমি একাই যাবো!” বলে আবির একটা টর্চ হাতে বেড়িয়ে পড়লো । বারান্দা দিয়ে হাটতে হাটতে আবির নদীর পাড়ে টর্চের আলো ফেলে দেখে নিলো, এদিকে আছে কিনা । তারপর মাঠে টর্চ ফেললো, দেখতে এদিকে আছে কিনা । যতক্ষণ আগে ঘটেছে ঘটনা ততক্ষণে অয়ন মাঠের দৃষ্টির বাইরের সীমানায় যাওয়া সম্ভব না । নিচে নামলো আবির । এই সামনের টর্চ ফেললো । এদিকেও অয়নের যাবার সম্ভাবনা নেই । কারণ এদিকে সামনের রাস্তায়ই খোকন বসে বসে বিড়ি টানছিলো । এদিকে গেলে খোকন অয়নকে দেখতো । আবির কাছে গেলো খোকনের । জিজ্ঞেস করলো, “আপনি কি বাড়ি থেকে কাউকে বেরোতে দেখেছেন?” খোকন বলল, “অ্যাঁ! কি! কি বাইর হবে?” খোকনকে হালকা মাতাল মাতাল লাগছে । বিড়ি খেলে মানুষ যে এরকম মাতাল হয়, এরকমটা তো আগে দেখে নি আবির! তবে কি খোকন অন্য কিছু খাচ্ছিলো? যাক সেসব, এখন অয়নের কথা ভাবতে হবে । আবির বলল, “দেখুন! আমার শ্যালক বাসা থেকে বেড়িয়ে গেছে! বলুন ও কোথায়!” খোকন হেসে উঠলো । তারপর বলল, “জিন্দেগিত কত্তো কিছু দেখুম! মুই তো এক আস্তা পাগল!” একদম মাতালের মতো করছে খোকন । আবিরের খোকনের প্রতি রাগ ধরলো প্রচুর, কিন্তু কিছু করতে পারলো না । আবির আবারও বোঝানোর চেষ্টা করলো, “দেখুন! ঝিকানার ভয় আছে কিন্তু আজ! আজকে আমাবস্যা!” খোকন এবার বলল, “ও! ঝিকানা! এল্লা আগেই আগের তো দেখলাম! ডাকলাম! হুনলো না!” আবির বুঝলো, এটা অয়ন । নেশার ঘোরে খোকন ঝিকানা ভেবেছে । আর যদি ঝিকানা হতো, তাহলে সে খোকনের ক্ষতি তা না করে যেতো না । আবির জিজ্ঞেস করলো, “কোথায় ঝিকানা?” খোকন জঙ্গলের দিকে ইশারা করে দেখিয়ে বলল, “ওইদিক গেলো দেইখলাম!”
পথ ধরে আসতেই যেখানে জঙ্গল শেষ, সেখানে একটা গ্রাম দেখলো অয়ন । গ্রাম দেখে মনে হচ্ছে এটা যেনো জনমানবহীন । কোথাও একটা মানুষও নেই! ঘরবাড়ি ভেতর থেকে আটকানো, জানালাগুলো পর্যন্তও বন্ধ করা । এটাও হতে পারে, সবাই ঝিকানার ভয়ে এরকম নিজেদের গুটিয়ে রেখেছে । অয়ন সামনের দিকে এগোতে লাগলো । গ্রামের কোথাও কোনোপ্রকার আলো নেই । পুরো গ্রাম জুড়ে ঘুটঘুটে অন্ধকার । এমন সময় অয়ন একটা অদ্ভুত আওয়াজ পেলো । কোন মেয়ে মানুষ যদি কাকের মতো কা কা করে, এরকম আওয়াজ । আওয়াজটা আসছে ঠিক অয়নের পেছন থেকে । অয়ন ঘামছে । গ্রামের এই রাতের ঠাণ্ডা পরিবেশেও অয়ন ঘামছে । হ্রিদস্পন্দন বৃদ্ধি পেয়েছে । ঝিকানা নয় তো! সাহস করে ধীরে ধীরে পেছনের দিকে তাকাতেই অয়নের চোখ কপালে ওঠার মতো অবস্থা । এ যে ঝিকানা! আরও ভয়ংকর ব্যাপার তার এক হাত কাথ থেকে কাটা, সেই কাটা হাত অন্য হাত দিয়ে ধরে আছে, আর কাটা হাতের আঙ্গুল দিয়ে ধরা কাটা চামচ! অয়ন বিকট চিৎকার দিয়ে উঠলো । আবির সে চিৎকারের আওয়াজ শুনতে পেলো । জঙ্গলের কাছাকাছিই চলে এসেছিলো সে । চিৎকারের আওয়াজ চিনতে ওর ভুল হল না । এটা অয়ন । জঙ্গলের পথ ধরে দৌড়তে লাগলো আবির । ডাকতে লাগলো, “অয়ন! অয়ন! কই তুই অয়ন! অয়ন!” আবির সেই পথটায় চলে এলো । ডানদিকে মাঠ । মাঠে অয়ন যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম । আবির ডানের পথ ধরলো । ব্রীজ পেলো সে । ব্রীজের দুপাশে টর্চ মেরে দেখলো, যদি নিচে পড়ে থাকে! কিন্তু কিছু না দেখে সামনে এগোল । গ্রাম নজরে এলো ওর আর সেই সাথে সে অয়নকেও দেখতে পেলো । মাটিতে শুয়ে আছে । আবির আগে চোখটা দেখলো । চোখ ঠিক আছে ওর । কিন্তু প্যান্ট ভিজে গেছে । ভয়ে হয়তো প্রস্রাব করে দিয়েছে । আসেপাশের ঘরগুলো থেকে কান্নার আওয়াজ আসছে । একজন তো আহাজারি করছে এই বলে, “আইজকাও কারো চোখ তুই নিয়া গেলোগা গো! ও আল্লাহ গো!” আবির অয়নকে কোলে তুললো । তারপর রওনা হলো রজব মোল্লার বাড়ির দিকে ।
আগামী পর্বেঃ
অয়ন জিজ্ঞেস করলো, “টাই পাইছো তোমার?” সাবিত বলল, “হুম, পাইছি, কোন এক প্যান্টের পকেটে ঢুকে ছিলো । তখন জানতে চাচ্ছিলি না টাই দিয়ে কি করবো? কোট প্যান্ট টাই পড়ে একটু ফটোশুট করবো!” অয়ন ইয়ার্কি করে বলল, “ও! নতুন কোন মেয়ে পটানোর ধান্দা নাকি?” কথাটা শুনে মন খারাপ হয়ে গেলো সাবিতের । আঁখির কথা মনে পড়ে গেলো ।
“তোমাদের রুমে কি অয়ন এসেছে?” আবিরের রুমে এসে জিজ্ঞেস করলো সাবিত । চয়নিকা রুমে থেকে বেড়িয়ে যেতে নিচ্ছিলো, সে সময় সাবিত আসায় দাঁড়িয়ে গেলো । আবির উঠে দাড়িয়ে বলল, “না তো, কেনো?” রজব মোল্লাও উঠে দাঁড়ালো । সাবিত বলল, “অয়ন রাগ করে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো। ভাবলাম তোমাদের কারও রুমে এসেছে, কিন্তু না! ওকের কথাও খুজে পেলাম না! টয়লেটেও নেই!” রজব মোল্লা কম্পিত কণ্ঠে বলে উঠলো, “ইয়া আল্লাহ! বাইরে চইলা যায় নাই তো আবার?” চয়নিকাও ভয় পেয়ে গেলো । আবিরও ভয় পেলো । তবে আবিরের ভয়টা ঝিকানার জন্য না । কারণ ও জানে এগুলো কিছুই নেই । ওর ভয়, ঝিকানা যা-ই হোক, খারাপ তো, মানুষের ক্ষতি করে, অয়নেরও ক্ষতি করে ফেলে যদি? আবির বলল, “আমি বাইরে যাচ্ছি!” রজব মোল্লা বলল, “না! যাইও না! আমি মিতু আর খোকনরে পাঠাইতেছি!” আবির বলল, “না! আমি একাই যাবো!” বলে আবির একটা টর্চ হাতে বেড়িয়ে পড়লো । বারান্দা দিয়ে হাটতে হাটতে আবির নদীর পাড়ে টর্চের আলো ফেলে দেখে নিলো, এদিকে আছে কিনা । তারপর মাঠে টর্চ ফেললো, দেখতে এদিকে আছে কিনা । যতক্ষণ আগে ঘটেছে ঘটনা ততক্ষণে অয়ন মাঠের দৃষ্টির বাইরের সীমানায় যাওয়া সম্ভব না । নিচে নামলো আবির । এই সামনের টর্চ ফেললো । এদিকেও অয়নের যাবার সম্ভাবনা নেই । কারণ এদিকে সামনের রাস্তায়ই খোকন বসে বসে বিড়ি টানছিলো । এদিকে গেলে খোকন অয়নকে দেখতো । আবির কাছে গেলো খোকনের । জিজ্ঞেস করলো, “আপনি কি বাড়ি থেকে কাউকে বেরোতে দেখেছেন?” খোকন বলল, “অ্যাঁ! কি! কি বাইর হবে?” খোকনকে হালকা মাতাল মাতাল লাগছে । বিড়ি খেলে মানুষ যে এরকম মাতাল হয়, এরকমটা তো আগে দেখে নি আবির! তবে কি খোকন অন্য কিছু খাচ্ছিলো? যাক সেসব, এখন অয়নের কথা ভাবতে হবে । আবির বলল, “দেখুন! আমার শ্যালক বাসা থেকে বেড়িয়ে গেছে! বলুন ও কোথায়!” খোকন হেসে উঠলো । তারপর বলল, “জিন্দেগিত কত্তো কিছু দেখুম! মুই তো এক আস্তা পাগল!” একদম মাতালের মতো করছে খোকন । আবিরের খোকনের প্রতি রাগ ধরলো প্রচুর, কিন্তু কিছু করতে পারলো না । আবির আবারও বোঝানোর চেষ্টা করলো, “দেখুন! ঝিকানার ভয় আছে কিন্তু আজ! আজকে আমাবস্যা!” খোকন এবার বলল, “ও! ঝিকানা! এল্লা আগেই আগের তো দেখলাম! ডাকলাম! হুনলো না!” আবির বুঝলো, এটা অয়ন । নেশার ঘোরে খোকন ঝিকানা ভেবেছে । আর যদি ঝিকানা হতো, তাহলে সে খোকনের ক্ষতি তা না করে যেতো না । আবির জিজ্ঞেস করলো, “কোথায় ঝিকানা?” খোকন জঙ্গলের দিকে ইশারা করে দেখিয়ে বলল, “ওইদিক গেলো দেইখলাম!”
পথ ধরে আসতেই যেখানে জঙ্গল শেষ, সেখানে একটা গ্রাম দেখলো অয়ন । গ্রাম দেখে মনে হচ্ছে এটা যেনো জনমানবহীন । কোথাও একটা মানুষও নেই! ঘরবাড়ি ভেতর থেকে আটকানো, জানালাগুলো পর্যন্তও বন্ধ করা । এটাও হতে পারে, সবাই ঝিকানার ভয়ে এরকম নিজেদের গুটিয়ে রেখেছে । অয়ন সামনের দিকে এগোতে লাগলো । গ্রামের কোথাও কোনোপ্রকার আলো নেই । পুরো গ্রাম জুড়ে ঘুটঘুটে অন্ধকার । এমন সময় অয়ন একটা অদ্ভুত আওয়াজ পেলো । কোন মেয়ে মানুষ যদি কাকের মতো কা কা করে, এরকম আওয়াজ । আওয়াজটা আসছে ঠিক অয়নের পেছন থেকে । অয়ন ঘামছে । গ্রামের এই রাতের ঠাণ্ডা পরিবেশেও অয়ন ঘামছে । হ্রিদস্পন্দন বৃদ্ধি পেয়েছে । ঝিকানা নয় তো! সাহস করে ধীরে ধীরে পেছনের দিকে তাকাতেই অয়নের চোখ কপালে ওঠার মতো অবস্থা । এ যে ঝিকানা! আরও ভয়ংকর ব্যাপার তার এক হাত কাথ থেকে কাটা, সেই কাটা হাত অন্য হাত দিয়ে ধরে আছে, আর কাটা হাতের আঙ্গুল দিয়ে ধরা কাটা চামচ! অয়ন বিকট চিৎকার দিয়ে উঠলো । আবির সে চিৎকারের আওয়াজ শুনতে পেলো । জঙ্গলের কাছাকাছিই চলে এসেছিলো সে । চিৎকারের আওয়াজ চিনতে ওর ভুল হল না । এটা অয়ন । জঙ্গলের পথ ধরে দৌড়তে লাগলো আবির । ডাকতে লাগলো, “অয়ন! অয়ন! কই তুই অয়ন! অয়ন!” আবির সেই পথটায় চলে এলো । ডানদিকে মাঠ । মাঠে অয়ন যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম । আবির ডানের পথ ধরলো । ব্রীজ পেলো সে । ব্রীজের দুপাশে টর্চ মেরে দেখলো, যদি নিচে পড়ে থাকে! কিন্তু কিছু না দেখে সামনে এগোল । গ্রাম নজরে এলো ওর আর সেই সাথে সে অয়নকেও দেখতে পেলো । মাটিতে শুয়ে আছে । আবির আগে চোখটা দেখলো । চোখ ঠিক আছে ওর । কিন্তু প্যান্ট ভিজে গেছে । ভয়ে হয়তো প্রস্রাব করে দিয়েছে । আসেপাশের ঘরগুলো থেকে কান্নার আওয়াজ আসছে । একজন তো আহাজারি করছে এই বলে, “আইজকাও কারো চোখ তুই নিয়া গেলোগা গো! ও আল্লাহ গো!” আবির অয়নকে কোলে তুললো । তারপর রওনা হলো রজব মোল্লার বাড়ির দিকে ।
আগামী পর্বেঃ
অয়ন জিজ্ঞেস করলো, “টাই পাইছো তোমার?” সাবিত বলল, “হুম, পাইছি, কোন এক প্যান্টের পকেটে ঢুকে ছিলো । তখন জানতে চাচ্ছিলি না টাই দিয়ে কি করবো? কোট প্যান্ট টাই পড়ে একটু ফটোশুট করবো!” অয়ন ইয়ার্কি করে বলল, “ও! নতুন কোন মেয়ে পটানোর ধান্দা নাকি?” কথাটা শুনে মন খারাপ হয়ে গেলো সাবিতের । আঁখির কথা মনে পড়ে গেলো ।