0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

পরিচয়-৩১৪

পরিচয়(পর্ব-৩১৪)
(সিজন-১১: আত্মার সাক্ষাৎ)
আবিরের প্রশ্নে সাবিত একটু ঘাবড়ে গেলো । জিজ্ঞেস করলো, “মানে?” আবির বলল, “না কিছু না । এমনি ।” সাবিত জিজ্ঞেস করলো, “তোর কি দাদাইয়ের ওপর সন্দেহ হচ্ছে?” আবির তখন সাবিত ভাই রাগ করবে বলে অন্য কিছু একটা বোঝাতে গেলো, কিন্তু তারপরই সাবিত যে কথাটা তা শোনার জন্য আবির মোটেও প্রস্তুত ছিলো না । বলল, “যদি তোর সেরকমটা মনে হয়, তবে আমি মোটেও অবাক হবো না । অবশ্য শুধু আমি কেনো, আমার ফ্যামিলির কেউই দাদাইকে খুব একটা পছন্দ করে, তা কিন্তু না ।” আবির একবার সাবিতের কথা শুনে ঘাবড়ে গেলো । জিজ্ঞেস করল, “মানে?” সাবিত বলা শুরু করলো ।
“এই বাড়িটা আমার দাদার খালার ছেলের হয়েছিলো যখন আমার খালা মারা যান । ওই খালার বাকি সব ছেলেমেয়েরা ভালো ভালো জায়গায় সেটেল হয়ে গিয়েছিলো । এই বাড়িটাই অবশিষ্ট ছিলো আর এই দাদাইয়ের ভাগ্যে জোটে । দাদাইয়ের ছেলে হয়েছিলো আমার জন্মের পাচ বছর আগে । ব্যাপারটা অদ্ভুত, কারণ মানুষের বিয়ের ১০-১১মাসের মধ্যে বাচ্চা হয়, আর উনার হয়েছিলো নিজেরই ভাতিজার ছেলের জন্মের পাচ বছর আগে! যাই হোক, উনার আমি যখন ছোট তখন মাঝে মাঝে এই এলাকায় আসতাম । উনার ছেলের তখন নয় কি দশ বয়স হবে । আমি উনার ছেলেকে দেখতাম । এরপর আমরা ঢাকায় চলে আসি, আর তারপর ওই গ্রামমুখীও আর হই নি । ফলে উনার ছেলেকে আমি দেখিও নি আর । অদ্ভুতভাবে আমাদের সকল আত্মীয়র সাথে দাদাই সম্পর্কও বিচ্ছিন্ন করে দেয় । কোন খোঁজ খবর নেয় না । আর তারপর ঝিকানার অত্যাচার আসার পর থেকে তো আরও কেউ এই গ্রামে আসতে চাইতো না ।“ আবির একটু থামালো সাবিতকে । বলল, “ঝিকানার অত্যাচার হুট করেই শুরু হয়েছে!” সাবিত বলল, “সেরকমটাই শুনেছি । কে নাকি ঝিকানার কবর খুঁড়ে ঝিকানার আত্মা উন্মুক্ত করেছে । যাই হোক, আজ থেকে প্রায় চব্বিশ বছর আগে আমার বাবা শেষ এসেছিলো এই গ্রামে জমিজমা সংক্রান্ত কি বিষয়ে দাদাইয়ের সাথে কথা বলতে । আমার দাদা তখন মারা গিয়েছিলেন । বাবা এখানে এসে দেখেন, আমার দাদাইয়ের স্ত্রী গর্ভবতী । এতো বেশি বয়সে আবার বাচ্চা ব্যাপারটা দুজনকেই বেশ আপসেট করেছিলো । বাবা উনাদের বুঝিয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমার দাদাইয়ের বউ বাচ্চা প্রসব করার সময় মারা যায় । তারপর থেকে আর দাদাইয়ের সাথে কোন যোগাযোগ হয় নি । কেউ নিতে চাইলেও উনি তেমন আহামরি কথা বলতেন না । মেয়ে হয়েছে শুনেছিলাম, কিন্তু সেই মেয়েকে আজও কেউ দেখে নি ।” সাবিত এই পর্যন্ত বলে থামলো । আবির ভাবতে লাগলো ব্যাপারগুলো । বলল, “আপনার কথাগুলো শুনে অনেকগুলো প্রশ্নের উদয় হচ্ছে । প্রথমত কেন উনার বিয়ের এতো বছর পর ঘরে সন্তান এলো, কেনো উনি নিজের মেয়ের কথা কাউকে জানান নি! কেনো উনি সবার সাথে যোগাযোগ নষ্ট করেছিলেন, আর সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, এতোদিন সম্পর্ক না রাখা দাদাই কেনো ইদানিং আপনাকে এ বাড়িতে আসতে বলেন খুব!!” সাবিত বলল, “তাই তো, এটা তো ভেবে দেখিনি!” আবির বলল, “আপনার দাদাইয়ের কিছু একটা উদ্দেশ্য আছে আমাদের এখানে আনার । হতে পারে খারাপ, হতে পারে ভালো ।” সাবিতের চোখে মুখে দুশ্চিন্তার ছাপ ফুটে উঠলো । বলল, “আমার ভয় হচ্ছে । খারাপ কিছু না ঘটে আবার । সাথে বাচ্চারা আছে!” আবির বলল, “টেনশন কইরো না ভাই । আল্লাহ ভরসা ।”
এদিকে চয়নিকা বাসা থেকে সবার চোখের আড়াল হয়ে বের হয়ে এলো বাগানে । তারপর মোবাইলে কল করলো সেই বাসে কারিশ্মা দেখানো লোকটাকে । মোবাইলে নেটওয়ার্ক সহজে পাওয়া যায় না । বাগানে এলে হালকা পাওয়া যায় । কল করার একটু পর কল ধরে এক লোক কর্কশ কণ্ঠে বলল, “মুতলুওল! মুতলুওল!” চয়নিকা অবাক হয়ে গেলো । এ আবার কি ভাষায় কথা বলে! লোকটা বলল, “ভয় পাস না! এটা টার্কিশ ভাষা! এর অর্থ, খুশী থেকো!” চয়নিকা বলল, “ও আচ্ছা! আপনিই কি সেদিন বাসে কারিশ্মা দেখিয়েছিলেন?”
“হাইয়েশ! না! সে আমার দাস ছিলো, কোল্যাহ!” বলল ফোনের ওপাশে থাকা লোকটা ।
“ও, তাহলে আপনি কে?” জিজ্ঞেস করলো চয়নিকা ।
“আমি কাহরামান! কোলেমিন পাত্রোনু, আমার দাসের বস! যাকে তুই দেখেছিস!” বলল ফোনের ওপাশের লোকটা যার নাম কাহরামান ।
“ও, আপনি কি আত্মার সাথে মানুষের সাক্ষাৎ করাতে পারেন?” জানতে চাইলো চয়নিকা ।
“এলবেত্তে! অবশ্যই! বলুন, কার সাথে দেখাকরতে চান!” জিজ্ঞেস করলো কাহরামান!
“আমার বাবা, মা আর আমার বোনের সাথে ।”
“হাইয়েশ! বু মুমকুন দিইল! এটা সম্ভব না! রুহ মানে আত্মা, একটার বেশি আসে না এখানে! সেটা করতে যে শক্তি প্রয়োজন, তা দিয়ে এই দুনিয়া ধ্বংস করা সম্ভব!” বলল কাহরামান ।
“তাহলে?” জানতে চাইলো চয়নিকা ।
“আপনার কাছে দুটো পথ খোলা আছে, এক, আপনি যেকোন একজনের সাথে দেখা করুন, নইলে, এক দিন পর পর এসে একেকজনের সাথে দেখা করুন!” বলল কাহরামান ।
“ঠিক আছে! আমি কাল থেকেই আসবো! পর পর তিনদিনই আসবো!” বলল চয়নিকা ।
“তামামমুহ! ঠিক আছে!” বলল কাহরামান ।
“আরেকটা কথা, খরচ কত পড়বে?”
“গার্গিলিক ইয়োক! কোনো চিন্তা নেই! আগে রুহ দেখা! পড়ে টাকা! একেকটা আত্মার সাক্ষাতের জন্য লাগবে দেড়হাজার তিন টাকা!” বলল কাহরামান ।
“ঠিক আছে! আর কিছু করা লাগবে কি?”
“হ্যাঁ! এখানে আসার তিন ছয় ঘন্টা ছেষট্টি মিনিট আগে যার সাথে দেখা করবেন, তার নাম আর ছবি পাঠিয়ে দেবেন! এই নাম্বারেই হোয়াটস অ্যাপ-এর মাধ্যমে! আপনার শুপহিয়েহ বা সন্দেহ হতে পারে, এগুলো কেনো, রুহ আনার উপায় তো সবাই জানে না! তাই সন্দেহ করে । মরার পর কারো নাম থাকে নাম, না থাকে দেহ, সব তখন আত্মা, ছবি আর নাম দেখে তারা আসে দেখা দিতে!” বলল কাহরামান ।
“ঠিক আছে, আমি ছবি পাঠিয়ে দিচ্ছি এখনি ।” বলল চয়নিকা ।
“হোশ্চাকাল! বিদায়!” বল ফোন কেটে দিলো কাহরামান । চয়নিকাও খুব খুশী আর উত্তেজিত হয়ে উঠলো ।

আগামী পর্বেঃ
“শোনো, কাল আমি এক জায়গায় যাবো!” আবিরের রুমে এসে বলল চয়নিকা । আবির জানতে চাইলো, “কোথায়?” চয়নিকা বলল, “পাশেরই এক গ্রামে আমার এক বান্ধবী থাকে । ওরই কাছে যাবো ।” আবিরের পাশেই রজব মোল্লা থাকায় আবির বলতে পারলো না, এখানে একটা বিপদের মাঝে আছে ওরা । শুধু বলল, “ঠিক আছে ।”