পরিচয়-৩১২
পরিচয়(পর্ব-৩১২)
(সিজন-১১: আত্মার সাক্ষাৎ)
(সিজন-১১: আত্মার সাক্ষাৎ)
আবিরের মনে পড়লো, সকালে আবির হারুন ব্যাটারির খোসা পেয়েছিলো । সবাই সেলফি তোলায় মশগুল । আবিরকেও ডাকলো সবাই । তাই আবির আর এদিকে মন না দিয়ে সবাই সাথে ছবি তুললো । নদীর পার দিয়ে হাটলো ওরা, বাদাম খেলো, ঝালমুড়ি খেলো । গান করলো । সবকিছুর মাঝেও আবির যতোটা পারছিলো, নিজের নজর এই হারুন ব্যাটারির দিকেই যাচ্ছিলো । কেন যেন একটু রহস্যের গন্ধ পাচ্ছে । তিনটে ডিঙ্গি নৌকোতে করে ধাপে ধাপে বক্সগুলো পাড়ে আনা হলো প্রত্যেকবার একেকটা নৌকোয় ৩-৪টে করে বক্স আটতো । এভাবে বেশ ক-বার আসার পর শেষ ধাপে একটা দুটো নৌকো একটা করে বক্স নিলো, আরেকটি নৌকো বাকি ৪টে বক্স নিলো । তারপর ট্রলার ফাঁকা । এরপর অবাক করা ব্যাপার হলো, ১টা বাক্স বোঝাই করা নৌকোগুলো তীরে এলেও ৪টে বক্স বোঝাই করা নৌকোটা ওদিকে কোথায় যেনো গেলো । এদিকে এলো না । প্রায় মিনিট দশেকের মধ্যে নৌকোটা দৃষ্টির সীমানার বাইরে চলে গেলো । আবির অবাক হলো ব্যাপারটা দেখে, কিন্তু কিছু করার ছিলো না ওর । এদিকে হই-হুল্লোড় করে সবাই এখন বোরিং হয়ে গেছে । মাইশা বলল, “আহ! আর ভাল্লাগছে না, এক জায়গায় এতক্ষণ থাকতে কি ভাল্লাগে!” রজব মোল্লা বলল, “তাইলে চলো! ওইদিকডায় যাই! একখান সুইমিংপুল আছে ওইহানে!” চয়নিকা বলল, “না না! এখন আর সুইমিংপুল যেয়ে কি করবো! সাথে করে গামছা, বাড়তি জামাকাপড় কিছুই তো আনি নি ।” নিশান বলল, “হ্যাঁ মা! বাসায় যাবো!” অয়ন বলল, “আসলেই! আমিও বাসায় যাবো! । তাছাড়া আপনার মেয়ে মিতু একা আছে বোধ হয় ওর খারাপ লাগছে, আবার ভয়ও পেতে পারে ।” মাইশা অয়নের পাশে যেয়ে ফিসফিসিয়ে বলল, “তোমার এতো টেনশন হইতেছে ক্যান!” অয়ন কিছু বলল না । রজব মোল্লা বলল, “ওরে লিয়া চিন্তা নাই! তয় এতো তাড়াতাড়ি যাইবা? আরেকডু ঘুরবা না?” সাবিত বলল, “না দাদাই । চলেন ।” রজব মোল্লা বলল, “ঠিক আছে, চলেন ।” সবাই ভ্যানের দিকে গেলো । রজব মোল্লা তাড়াতাড়ি গেলো । ভ্যানওয়ালাকে যাবার কথা বলবে বলে । ভ্যানে করে বেশ ভালোমতোই ফিরছিলো, এমন সময় একটা বাজারের মধ্যে হুট করে গেলো একটা টায়ার পামচার হয়ে । সাবিত জিজ্ঞেস করল, “আয় হায়! পামচার হলো নাকি!” ভ্যানওয়ালা বলল, “ও ভাই, পামচার হইছে!” জরিনা বলল, “আল্লাহ! এহন আবার এইহানে দাড়ায় থাকা লাগবো!” আবির বলল, “চলেন, আমরা একটা দোকানে বসি ।” আবির, সাবিত, চয়নিকা, নিশান, জরিনা, অয়ন, মাইশা একটা চায়ের দোকানে বসলো । রজব মোল্লা ফোনে কার সাথে জরুরী কথা আছে বলে বাইরেই থেকে গেলো । আর ভ্যানচালক গেলো ভ্যানের পামচার ঠিক করতে । দোকানের দিকে আসার সময় আবিরের পকেট থেকে রুমালটা পড়ে গেলো । সেটা তুলে নিয়ে সেও দোকানের দিকে গেলো ।
দোকানদার মাঝবয়স্ক এক ভদ্রলোক । লোকটা বেশ মিশুক প্রকৃতির । আবিরদের দেখে লোকটা বলল, “আপনেরা কিছু খাইবেন?” আবির সবাইকে জিজ্ঞেস করল, “চা খাবে কেউ?” সবাই রাজি হলো । আবির সাবিতকে জিজ্ঞেস করল, “দাদাই খাবে না? আর ড্রাইভারও আছে!” সাবিত বলল, “আচ্ছা, আমরা আগে খাই, তারপর না হয় উনারা এলে জিজ্ঞেস করে নেবো ।” আবির দোকানদারকে বলল, “ভাই, তাহলে সাত কাপ চা দেন ।” দোকানদার সাত কাপ চা বানাতে লাগলো । তারপর জিজ্ঞেস করলো, “আপনেরা কি ঝিকানা গ্রাম থেইকা আইছেন?” অয়ন জিজ্ঞেস করলো, “আপনি জানলেন কি করে?” দোকানদার হালকা হেসে রজব মোল্লাকে দেখিয়ে বলল, “ওই যে ওই লোকটা, উনারে কে না চেনে, ওই ভুতুরে গেরামে একমাত্র উনিই তো সুস্থ ।” আবির জিজ্ঞেস করলো, “একমাত্র উনিই সুস্থ মানে?”
“সেকি, ওই গ্রামের লোকজনদের এহনও দ্যাহেন নাই?” জানতে চাইলো দোকানদার ।
“না আসলে সেদিকে যাওয়া হয়নি । আর আমরা গতকালই এসেছি তো ।” বলল সাবিত ।
“ও! তাইলে আপনেরা মনে হয় ঝিকানার কতাও জানেন না!” বলল দোকানদার ।
“না না, এই ইতিহাস শোনা হয়ে গেছে ।” বলল মাইশা ।
“ও! তাইলে কই! ওই গ্রামের লোক ওই গ্রামের লোকজন ঝিকানা আসার পর থেইকে কেমন জানি অদ্ভুত হইয়া গেছে । ঝিকানার ভয় তো আছে, তাও সবসময় কি জানি একখান ঘোরের মধ্যি থাকে! কি জানি চায় ওরা । আর গেলে দেইখবেন, বেশিরভাগেরই এক চোখ নাই, ঝিকানা তুলি নিয়ে গেছে । আর কেমন জানি মাতাল মাতাল থাকে ওই গ্রামবাসী ।“ বলল দোকানদার ।
অয়নের হঠাৎ করে মনে পড়লো সকালের সেই বুড়িটার কথা । কিন্তু এখানে আর মুখ খুলল না ।
চয়নিকা জিজ্ঞেস করল, “আচ্ছা, ওই ঝিকানাকে কেউ কি দেখেছে?” লোকটা বলল, “দেখেছে না আবার! দেখেছে তো! পুরা গ্রামবাসী দেখেছে!” আবির বলল, “সেকি, এটা তো শুনিনি!” দোকানদার সবাইকে চা দিতে দিতে বলল, “আপনেরা পুটিয়া গেরামের কারিশ্মা দেহানো লোকের কতা শোনেন নাই?” জরিনা বলল, “হ! হুনছি তো! হেয় নাকি আত্মা হাজির করে, কি হাইস্যকর!” বলে হেসে উঠলো জরিনা । দোকানদার বলল, “হাইসেন হাইসেন না! সত্যিই হেরা আত্মা হাজির করায়! এক ঝড়ের রাইতে হেরা ওই গ্রামবাসীর সামনে ১৩ডা হ্যারিকেনের আলোয় ওই ঝিকানার আত্মারে হাজির করাইছে!” মাইশা জিজ্ঞেস করলো, “কেমন দেখতে সেই আত্মা?” লোকটা চোখ মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গেলো । কন্ঠেও কেমন ভয় প্রকাশ পেলো । বলল, “আমি তো দেহি নাই! তয় যা শুনছি তাতেই ভয় পাইছি! তয় আমার চেয়ে আপনাদের ভ্যানওয়ালা ভালো কইতে পারে! হের তো এক চোখ নাই, আমি বাজি ধইরা কইতে পারি! ঝিকানা তুলছে এক চোখ!” আবির ওপর নিচে মাথা নেড়ে বলল, “হ্যাঁ, ঠিক বলেছেন । আমাকে উনি গতকাল বলেছিলেন ।” একটু পর ভ্যানওয়ালা দোকানে আসতেই সবাই তার দিকে তাকিয়ে রইলো ।
আগামী পর্বেঃ
একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে এক চোখ নেই এবং কোটর দিয়ে রক্ত পড়ছে । পুরো শরীর কালো । এবং এক হাতে কাটাচামচ । লোকটা ভয়ে ভ্যান থেকে পড়ে গেলো । মনে মনে যতো দোয়া আছে পড়তে লাগলো । কিন্তু ঝিকানা তবু গেলো না । লোকটা মাটির ওপর পড়ে গেলো । চোখ বন্ধ করে রইলো । বাতার তখন আরও জোরে বইতে শুরু করলো । একটু পর বাতাস একটু কমলো । ভ্যানওয়ালা ভাবলো ঝিকানা চলে গেছে । এই ভেবে যেই না চোখ খুললো, অমনি ঝিকানা ভ্যানওয়ালার এক চোখে কাটাচামচ ঢুকিয়ে চোখ উপড়ে ফেললো । গগনবিদারী চিৎকার দিয়ে উঠলো ভ্যানওয়ালা ।
দোকানদার মাঝবয়স্ক এক ভদ্রলোক । লোকটা বেশ মিশুক প্রকৃতির । আবিরদের দেখে লোকটা বলল, “আপনেরা কিছু খাইবেন?” আবির সবাইকে জিজ্ঞেস করল, “চা খাবে কেউ?” সবাই রাজি হলো । আবির সাবিতকে জিজ্ঞেস করল, “দাদাই খাবে না? আর ড্রাইভারও আছে!” সাবিত বলল, “আচ্ছা, আমরা আগে খাই, তারপর না হয় উনারা এলে জিজ্ঞেস করে নেবো ।” আবির দোকানদারকে বলল, “ভাই, তাহলে সাত কাপ চা দেন ।” দোকানদার সাত কাপ চা বানাতে লাগলো । তারপর জিজ্ঞেস করলো, “আপনেরা কি ঝিকানা গ্রাম থেইকা আইছেন?” অয়ন জিজ্ঞেস করলো, “আপনি জানলেন কি করে?” দোকানদার হালকা হেসে রজব মোল্লাকে দেখিয়ে বলল, “ওই যে ওই লোকটা, উনারে কে না চেনে, ওই ভুতুরে গেরামে একমাত্র উনিই তো সুস্থ ।” আবির জিজ্ঞেস করলো, “একমাত্র উনিই সুস্থ মানে?”
“সেকি, ওই গ্রামের লোকজনদের এহনও দ্যাহেন নাই?” জানতে চাইলো দোকানদার ।
“না আসলে সেদিকে যাওয়া হয়নি । আর আমরা গতকালই এসেছি তো ।” বলল সাবিত ।
“ও! তাইলে আপনেরা মনে হয় ঝিকানার কতাও জানেন না!” বলল দোকানদার ।
“না না, এই ইতিহাস শোনা হয়ে গেছে ।” বলল মাইশা ।
“ও! তাইলে কই! ওই গ্রামের লোক ওই গ্রামের লোকজন ঝিকানা আসার পর থেইকে কেমন জানি অদ্ভুত হইয়া গেছে । ঝিকানার ভয় তো আছে, তাও সবসময় কি জানি একখান ঘোরের মধ্যি থাকে! কি জানি চায় ওরা । আর গেলে দেইখবেন, বেশিরভাগেরই এক চোখ নাই, ঝিকানা তুলি নিয়ে গেছে । আর কেমন জানি মাতাল মাতাল থাকে ওই গ্রামবাসী ।“ বলল দোকানদার ।
অয়নের হঠাৎ করে মনে পড়লো সকালের সেই বুড়িটার কথা । কিন্তু এখানে আর মুখ খুলল না ।
চয়নিকা জিজ্ঞেস করল, “আচ্ছা, ওই ঝিকানাকে কেউ কি দেখেছে?” লোকটা বলল, “দেখেছে না আবার! দেখেছে তো! পুরা গ্রামবাসী দেখেছে!” আবির বলল, “সেকি, এটা তো শুনিনি!” দোকানদার সবাইকে চা দিতে দিতে বলল, “আপনেরা পুটিয়া গেরামের কারিশ্মা দেহানো লোকের কতা শোনেন নাই?” জরিনা বলল, “হ! হুনছি তো! হেয় নাকি আত্মা হাজির করে, কি হাইস্যকর!” বলে হেসে উঠলো জরিনা । দোকানদার বলল, “হাইসেন হাইসেন না! সত্যিই হেরা আত্মা হাজির করায়! এক ঝড়ের রাইতে হেরা ওই গ্রামবাসীর সামনে ১৩ডা হ্যারিকেনের আলোয় ওই ঝিকানার আত্মারে হাজির করাইছে!” মাইশা জিজ্ঞেস করলো, “কেমন দেখতে সেই আত্মা?” লোকটা চোখ মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গেলো । কন্ঠেও কেমন ভয় প্রকাশ পেলো । বলল, “আমি তো দেহি নাই! তয় যা শুনছি তাতেই ভয় পাইছি! তয় আমার চেয়ে আপনাদের ভ্যানওয়ালা ভালো কইতে পারে! হের তো এক চোখ নাই, আমি বাজি ধইরা কইতে পারি! ঝিকানা তুলছে এক চোখ!” আবির ওপর নিচে মাথা নেড়ে বলল, “হ্যাঁ, ঠিক বলেছেন । আমাকে উনি গতকাল বলেছিলেন ।” একটু পর ভ্যানওয়ালা দোকানে আসতেই সবাই তার দিকে তাকিয়ে রইলো ।
আগামী পর্বেঃ
একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে এক চোখ নেই এবং কোটর দিয়ে রক্ত পড়ছে । পুরো শরীর কালো । এবং এক হাতে কাটাচামচ । লোকটা ভয়ে ভ্যান থেকে পড়ে গেলো । মনে মনে যতো দোয়া আছে পড়তে লাগলো । কিন্তু ঝিকানা তবু গেলো না । লোকটা মাটির ওপর পড়ে গেলো । চোখ বন্ধ করে রইলো । বাতার তখন আরও জোরে বইতে শুরু করলো । একটু পর বাতাস একটু কমলো । ভ্যানওয়ালা ভাবলো ঝিকানা চলে গেছে । এই ভেবে যেই না চোখ খুললো, অমনি ঝিকানা ভ্যানওয়ালার এক চোখে কাটাচামচ ঢুকিয়ে চোখ উপড়ে ফেললো । গগনবিদারী চিৎকার দিয়ে উঠলো ভ্যানওয়ালা ।