পরিচয় পর্ব-৩০৮
পরিচয়(পর্ব-৩০৮)
(সিজন-১১: আত্মার সাক্ষাৎ)
(সিজন-১১: আত্মার সাক্ষাৎ)
সবাই অবাক কথা শুনে শুধু সাবিত বাদে । জরিনা হেসে উঠলো । বলল, “আমি গেরামে থাকছি! কতো হুনছি! কোনদিনও দেহি নাই! এইগুলা ভুয়া!” সাবিত বলল, “উহু! এটা ভেবো না! আসলেই এটা হয় । একটু আগেই কারণটা বলতে চাইছিলাম না কারণ বাচ্চা ভয় পাবে । কিন্তু দাদাই যখন বলেই দিলেন, তখন আর কি লাভ লুকিয়ে । হ্যাঁ, এটাই ওই কারণ এই গ্রামে লোকসংখ্যা কমে যাওয়ার ।” আবির বলল, “কিন্তু ওই আত্মার উদ্দেশ্য কি? কেনো করে এগুলো, না আমি যে আত্মায় বিশ্বাস করি তা না, আপনাদের বিশ্বাস থেকেই বলছি আরকি । উদ্দেশ্য ছাড়া তো আত্মা থাকে না ।” রজব বলল, “সেইডা ঠিক । তয় এক লোক আছে, আত্মার লগে সাক্ষাৎ করায়! পাশেরই পুটিয়া গেরামে থাহে । হেয় এই ঝিকানা লগে কথা কইছে, ঝিকানা কইছে, যতদিন দুনিয়া আছে, ততদিন ওউ আছে দুনিয়ায়, ও মাইনষের চোখ তুইলা লিবার চায় । কারণ যতোই ভালো হউক মাইনষে, কানা লোক দেইখলে মন থেইকা কেবা জানি ঘিন্নার জন্ম লেয়!” চয়নিকার মাথায় কথাটা গেথে গেলো । আত্মার সাথে সাক্ষাৎ করাতে পারে! একটু পর খোকন এলো । বলল, “খালু! মিতু আবার শাপলা তুইলবার গেছে! এতো কইরা কইলাম আইতে, কইলো পড়ে আইবো, মাগরিবের আজান দিলে ।” রজব বলল, “আইচ্ছা, মাগরিবের আজান এহনই দিবো।” বলে রজব আবিরদের বলল, “তোমাগো না খাওয়াইয়া বসায়া রাখছি! চলো, তোমাগো খাইতে লিয়া যাই ।” সবাই ডাইনিং রুমে গেলো । হরেক রকম রান্না । ইলিশ মাছ ভাজা, ভাত, ডাল, লাউপাতার দিয়ে চিংড়ির তরকারি, গরুর মাংস, মুরগীর মাংস । খেতে খেতে আবির বলল, “আল্লাহ দিলে মাশাআল্লাহ! রান্না তো সেই স্বাদ! তবে এতো কিছুর কোন দরকার ছিলো না ।” রজব বলল, “আরে না না, কি যে কও! একা থাহি, ট্যাকা পয়সারতো অভাব লাই, অভাব শুধু খরচ কইরবার জায়গার!” চয়নিকা বলল, “এতো কাজ কি খোকন ভাই একা করেছে!” রজব বলল, “ও তো ব্যাক দিনই করে, আইজকা আমার মিতু গেদি কাম করছে ।” খাওয়া দাওয়া শেষ হতে হতে মাগরিবের আজান দিয়ে দিলো । আবির বলল, “এলাকায় মসজিদ আছে না?” রজব বলল, “মসজিদ তো এই এলাকায় না, বহুত দূরে, ভ্যানে কইরা যাইতে হয় । দাড়াও!” তারপর রজব খোকনকে বলল, “যাছি! ভ্যান ডাইকা আন একখান! ক মসজিদ যাইবো ।” আজান দিলে আবির গেলো মসজিদে । সেই সময় সবাইকে রুম দেখিয়ে দিলো খোকন । বাড়ির পেছনের দিকটার রুমগুলো গোছানো হয়েছে । একটা লম্বা বারান্দা, সেই বারান্দা ঘেঁষেই পাশাপাশি ৪টে রুমে ওদের থাকার ব্যাবস্থা করা হল । বারান্দায় দাঁড়িয়ে যতদুর চোখ যায় মাঠ দেখা যায় । যদিও রাতের অন্ধকার খুব একটা বেশি দূর দেখা যায় না । একদম কোনার যে রুমটা, অর্থাৎ যে রুমের অন্য পাশে রয়েছে শাখা নদীর শেষ প্রান্ত, সে রুমে থাকার ব্যাবস্থা করা হলো আবিরের । তার পাশের রুমে চয়নিকা, জরিনা আর নিশানের । তার পাশের রুমটা সাবিত আর অয়নের, তারপরের রুমটা মাইশার । মাইশা একা থাকবে দেখে অয়ন বলেছিলো, “ও কেনো একা থাকবে?” তখন সাবিত বলেছিলো, “সমস্যা নেই, তা হয় মিতুই ওর সাথে থাকলো ।”
মিতু কিন্তু মাগরিবের আজান শেষ হল, নামাজও শেষ, তবুও মিতু ঘরে আসে নি । নামাজ শেষে ভ্যানে করে এসে আবির টাকা দিতে গিয়ে হঠাৎ গা-টা শিউরে উঠলো । দেখলো, ভ্যানওয়ালার এক চোখ নেই । ওঠার সময় আবির সেভাবে খেয়াল করে নি । লোকটাকে আবির টাকা দিয়ে জিজ্ঞেস করলো, “আপনিও কি ঝিকানার আক্রমণের শিকার?” লোকটা বলল, “হ ভাই! ঘরে যান! বেশি কথা কইয়েন না আর! রাইত ম্যালা হইছে!” আবির বাড়ির দিকে এসে দেখলো, বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে রজব মোল্লা । আবির জিজ্ঞেস করলো, “একি, আপনি এখানে দাঁড়িয়ে আছেন যে?” রজব মোল্লা বলল, “আর কইও না বাপ! গেদি এহনও আসে লি । কি যে করি ওরে লিয়ে!” আবির বলল, “সেকি! এ তো চিন্তার ব্যাপার!” রজব মোল্লা মুচকি হেসে বলল, “না না! তা না! আগেও ও এবা কইরছে । তয় কহন যে কি হয়, আল্লাহই জানেন!” সেই সময় এক মেয়ে কাধে একগুচ্ছ শাপলা ফুল নিয়ে হাজির হলো । বলল, “আসি গেছি আব্বা!” গলাটা ওর যেন কেমন অদ্ভুত । আর কথাও কেমন যেন অনেকটা ছেলেদের মতো । কিন্তু চেহারা আবার বেশ সুন্দর । এতো সুন্দর মেয়ের মুখে অদ্ভুত কণ্ঠটা কেনো যেনো মানাচ্ছে না । রজব মোল্লা মেয়ের কাছে যেয়ে বলল, “তুই এতো দেরি করলি ক্যা? কইছিলেন না মেহমান আইবো!” মিতু বলল, “আমারে মাফ কইরা দেন আব্বা! তয় শাপলাগুলান ভাল্লাইগলো, তাই লিয়ে আইলাম!” মেয়েটা এমনভাবে কথা বলে, যেন যার সাথে কথা বলছে তার ওপর কি রাগ । আবিরের সাথে মিতুর পরিচয় করিয়ে দিলো রজব মোল্লা । “এইযে! খবরের কাগজে পইড়ছিলি না! কক্সবাজারের কাহিনী! এইডো সেই আবির!” মেয়েটা আবিরকে দেখে খুব একটা খুশি হল বলে মনে হল না । অবশ্য এটা ওর রাগ দেখিয়ে কথা বলার মতোই হতে পারে । আবির বলল, “হাই মিতু!” মিতু আবিরের কথা জবাব না দিয়ে ভেতরে চলে গেলো । রজব মোল্লা আবিরকে বলল, “কিছু মনে লিও না বাপ! ও এল্লা এবাই ।” আবির বলল, “না না দাদাই, ঠিক আছে ।”
আগামী পর্বেঃ
আবির বলল, “আপনার ছেলে মেয়ে ক জন?” রজব মোল্লা বলল, “আমার পোলা, এক মাইয়া । পোলা থাহে সুইজারল্যান্ড । বউ বাচ্চা লিয়া থাহে! আমার খোজ লেয়ও না, গেরামের কতাওমানি ওর মনে পড়ে না ।” আবির জানতে চাইলো, “আর মেয়ে?” রজব একটা হতাশার শ্বাস ফেলে বলল, “মাইয়া বিয়ার চাইর দিন পর মইরা গেছে, হুন্ডা একসিডেন্ট ।” আবির বলল, “আমি দুঃখিত! আপনার হঠাৎ মন খারাপ করে দিলাম ।” রজব মোল্লা হালকা হেসে বলল, “না না, তা ক্যান । আমি তো এহনও আমার মাইয়ার লগে দেহা করি ।”
মিতু কিন্তু মাগরিবের আজান শেষ হল, নামাজও শেষ, তবুও মিতু ঘরে আসে নি । নামাজ শেষে ভ্যানে করে এসে আবির টাকা দিতে গিয়ে হঠাৎ গা-টা শিউরে উঠলো । দেখলো, ভ্যানওয়ালার এক চোখ নেই । ওঠার সময় আবির সেভাবে খেয়াল করে নি । লোকটাকে আবির টাকা দিয়ে জিজ্ঞেস করলো, “আপনিও কি ঝিকানার আক্রমণের শিকার?” লোকটা বলল, “হ ভাই! ঘরে যান! বেশি কথা কইয়েন না আর! রাইত ম্যালা হইছে!” আবির বাড়ির দিকে এসে দেখলো, বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে রজব মোল্লা । আবির জিজ্ঞেস করলো, “একি, আপনি এখানে দাঁড়িয়ে আছেন যে?” রজব মোল্লা বলল, “আর কইও না বাপ! গেদি এহনও আসে লি । কি যে করি ওরে লিয়ে!” আবির বলল, “সেকি! এ তো চিন্তার ব্যাপার!” রজব মোল্লা মুচকি হেসে বলল, “না না! তা না! আগেও ও এবা কইরছে । তয় কহন যে কি হয়, আল্লাহই জানেন!” সেই সময় এক মেয়ে কাধে একগুচ্ছ শাপলা ফুল নিয়ে হাজির হলো । বলল, “আসি গেছি আব্বা!” গলাটা ওর যেন কেমন অদ্ভুত । আর কথাও কেমন যেন অনেকটা ছেলেদের মতো । কিন্তু চেহারা আবার বেশ সুন্দর । এতো সুন্দর মেয়ের মুখে অদ্ভুত কণ্ঠটা কেনো যেনো মানাচ্ছে না । রজব মোল্লা মেয়ের কাছে যেয়ে বলল, “তুই এতো দেরি করলি ক্যা? কইছিলেন না মেহমান আইবো!” মিতু বলল, “আমারে মাফ কইরা দেন আব্বা! তয় শাপলাগুলান ভাল্লাইগলো, তাই লিয়ে আইলাম!” মেয়েটা এমনভাবে কথা বলে, যেন যার সাথে কথা বলছে তার ওপর কি রাগ । আবিরের সাথে মিতুর পরিচয় করিয়ে দিলো রজব মোল্লা । “এইযে! খবরের কাগজে পইড়ছিলি না! কক্সবাজারের কাহিনী! এইডো সেই আবির!” মেয়েটা আবিরকে দেখে খুব একটা খুশি হল বলে মনে হল না । অবশ্য এটা ওর রাগ দেখিয়ে কথা বলার মতোই হতে পারে । আবির বলল, “হাই মিতু!” মিতু আবিরের কথা জবাব না দিয়ে ভেতরে চলে গেলো । রজব মোল্লা আবিরকে বলল, “কিছু মনে লিও না বাপ! ও এল্লা এবাই ।” আবির বলল, “না না দাদাই, ঠিক আছে ।”
আগামী পর্বেঃ
আবির বলল, “আপনার ছেলে মেয়ে ক জন?” রজব মোল্লা বলল, “আমার পোলা, এক মাইয়া । পোলা থাহে সুইজারল্যান্ড । বউ বাচ্চা লিয়া থাহে! আমার খোজ লেয়ও না, গেরামের কতাওমানি ওর মনে পড়ে না ।” আবির জানতে চাইলো, “আর মেয়ে?” রজব একটা হতাশার শ্বাস ফেলে বলল, “মাইয়া বিয়ার চাইর দিন পর মইরা গেছে, হুন্ডা একসিডেন্ট ।” আবির বলল, “আমি দুঃখিত! আপনার হঠাৎ মন খারাপ করে দিলাম ।” রজব মোল্লা হালকা হেসে বলল, “না না, তা ক্যান । আমি তো এহনও আমার মাইয়ার লগে দেহা করি ।”