0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

পরিচয় ৩০১


পরিচয়(পর্ব-৩০১)
(সিজন১১)

“সেই কখন থেকে মোবাইলটা বাজছে! ধরার কেউ নেই!” বলতে বলতে ডাইনিং টেবিলের দিকে আসছিলো চয়নিকার বাবা । অয়ন নিজের রুমে কানে হেড ফোন লাগিয়ে গেমস খেলছে । ডাইনিং টেবিলে অয়নেরই মোবাইল । জরিনা গেছে বাজার করতে । ঘরে আর কেউ নেই । মোবাইলের স্ক্রিনে ভাসছে সাবিতের নাম চয়নিকার বাবা এসে অয়নের মোবাইলটা কানে নিয়ে কিছু বলার আগেই ফোনের ওপাশ থেকে অস্থির কণ্ঠে সাবিত বলল, “হ্যালো অয়ন! আঁখির অবস্থা খুব খারাপ! হাসপাতালে এনেছি! তোকে কল করলাম কারণ বাবা শুনলে টেনশন করবেন! তুই আসতে ধীরে বাবাকে বুঝিয়ে সিগমা হাসপাতালে আয়!” শুনে চয়নিকার বাবার হাত থেকে মোবাইল পড়ে ফোন বন্ধ হয়ে গেলো । চয়নিকার বাবা বুকে হাত দিয়ে মাটির ওপর বসে পড়লো । তারপর ধীরে ধীরে জ্ঞান হারালো । জ্ঞান হারাবার আগে “অয়ন!” বলে একটা জোরে আওয়াজ করলো, কিন্তু কানে হেডফোন থাকায় তা অয়নের কানে গেলো না ।
এদিকে চয়নিকা রান্না করছিলো চয়নিকা । নিশান স্কুলে গেছে, আবির অফিসে । কাজের ফাকে গুন গুন করে জ্ঞান গাচ্ছিলো চয়নিকা । এমন সময় ওর কাছে আবিরের কল এলো । ধরে বলল, “হ্যালো!” আবির ফোনের ওপাশে থেকে ড্রাইভিং করতে করতে অস্থিরভাবে বলল, “হ্যালো! তুমি কোথায়?” চয়নিকা বলল, “বাসায় কেনো?” আবির বলল, “তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে সিগমা হাসপাতালে এসো! তোমার আখি আপুর কন্ডিশন খুব খারাপ!” চয়নিকা শুনে ভয় পেয়ে গেলো চয়নিকা । কাপা কাপা কণ্ঠে বলল, “তুমি কোথায়!” আবির বলল, “আমি আসছি, তোমাকে নিয়ে একসাথে যাবো হাসপাতালে ।” চয়নিকা রান্নার চুলা বন্ধ করে যেয়ে একটা ওড়না গায়ে দিয়ে হ্যান্ডপার্সটা হাতে নিয়ে নিচে নামলো । একটু পর আবির এলে গাড়িতে উঠে ওরা রওনা হল ।
এদিকে বাজার করে দরজায় অনেকক্ষণ ধরে নক করলেও দরজা খুলছিলো না কেউ দেখে একটু বিরক্ত হয়ে গেলো জরিনা । বলল, “খালু মনে হয় ঘুমাইয়া গেছে! আর অয়ন ভাইয়া নিশ্চয় কানে কি জানি বড় বড় লাগাইয়া বইসা আছে! কি যে করি এহন!” অনেকক্ষণ দাড়িয়ে থাকার পর জরিনার মাথা একটা বুদ্ধি এলো । বলল, “এক কাম করি! নিচে যাইয়া এই বাসার মেইন সুইচ বন্ধ কইরা দেই! তাইলে ইন্টারনেট চইলা যাইবোগা! আর অয়ন ভাইয়াও আইসা দরজা খুইলা দেবেনে!” এরপর জরিনা নিচে যেয়ে মেইন সুইচ বন্ধ করে দিলো । অয়নের পিসি বন্ধ হয়ে গেলো । হাত দিয়ে জোরে ডেস্কের ওপর আঘাত কতে অয়ন বলল, “আরেকটু হইলে আমি জিততাম! ধ্যাত! কারেন্ট যাওয়ারও সময় পায় না!” এমন সময় আবার কারেন্ট এলো । অয়ন বিরক্তির সাথে বলে উঠলো, “আজব তো! এতো তাড়াতাড়িই যদি আসবে, তাইলে গিয়েছলো কেনো!” বলে অয়ন আবার পিসি অন করলো । আবার গেম খেলা শুরু করতে যাবে, এমন সময় দরজায় নক । অয়ন বলল, “এখন আবার কে আসলো!” তারপর উঠে যেয়ে দরজা খুলতে যাবার আগেই ডাইনিং টেবিলের পাশে বাবাকে পরে থাকতে দেখে শিউরে ওঠে অয়ন । “বাবা! বাবা!” বলে এগিয়ে যায়। চোখে মুখে পানি ছেটায়, তবু কিছু হয় না । একটু পর ওর খেয়াল হল দরজায় কেউ নক করছে । এগিয়ে গিয়ে দরজা খুলল । অয়ন কান্নাভরা চোখ আর অস্থিরভাব দেখে জরিনা জিজ্ঞেস করলো, “কি হইছে ভাইয়া?” অয়ন কিছু না বলে বাবার কাছে গেলো । অয়নের বাবাকে পড়ে থাকতে দেখে দরজায় কাছে বাজারের ব্যাগ রেখে দিয়ে কাছে দৌড়ে এলো । বলল, “পানি দেন চোখে মুখে!” অয়ন কাঁদতে কাঁদতে বলল, “দিয়েছি! কিন্তু কিছুই হয় নি!” জরিনা বলল, “দারান! আমি চুনি আপারে কল দেই!“
এদিকে চয়নিকা আর আবির হাসপাতালে পৌঁছে গেছে । মাথায় হাত দিয়ে বসে অপারেশন থিয়েটারের সামনে বসে আছে সাবিত । চয়নিকা আর আবির আসতেই সাবিত উঠে দাঁড়ালো । আবির জিজ্ঞেস করলো, “কি অবস্থা এখন?” সাবিত কাঁদতে কাঁদতে বলল, “বাচ্চা আর মা দুজনেরই অবস্থা নাকি খারাপ!” আবিরকে সাবিতকে একটু শান্ত করতে সাবিতকে জড়িয়ে ধরল । তারপর পিথে হাত বুলিয়ে শান্তনা দিলো । চয়নিকাও কেদে উঠলো । আবির সাবিতকে চেয়ারে বসালো । তারপর বলল, “শান্ত হও ভাই! আল্লাহ ভরসা! কিন্তু কি করে হল এটা?” সাবিত বলল, “আখি ফোনে ওর মায়ের সাথে কথা বলছিলো, এমন সময় পেটে প্রচুর ব্যাথা শুরু হয় ।” আবির বলল, “আল্লাহ! তার মানে আম্মাও তো জানেন! টেনশন করবেন উনি খুব!” সাবিত বলল, “হ্যাঁ, কিন্তু কি আর করবো । আম্মা একটু আগে কল দিয়ে সব জানলেন । আর বললেন কম সময়ের মধ্যে যেই ফ্লাইট পাবেন, সেই ফ্লাইটেই রওনা হবেন ।” আবির তখন চয়নিকাকে বলল, “অয়নকে জানিয়েছো?” চয়নিকা কাঁদতে কাঁদতে ডানে বামে মাথা নাড়লো । কিছু বলল না । সাবিত বলল, “আমি জানিয়েছি । কিন্তু পুরোটা শুনেছে কিনা! কল কেটে গেলো । চার্জ ছিলো না বোধ হয় ।” এমন সময় চয়নিকার মোবাইলে একটা কল এলো । জরিনার কল । চয়নিকা কল ধরলো । “হ্যালো!” বলতেই ফোনের ওপাশে অস্থির জরিনার কণ্ঠ, “হ্যালো আফা! খালু হঠাৎ কইরা মেঝেতে পইড়া গেছে! জ্ঞান ফিরতাছে না কিছুতেই!” চয়নিকা আরও ভেঙ্গে পড়ল । বলে উঠলো, “কি!” জরিনা বলল, “হ আফা! আপনে তাড়াতাড়ি আসেন!” আবির উঠে দাঁড়ালো । চয়নিকা পড়ে যায় যায় অবস্থা । আবির উঠে দাড়িয়ে চয়নিকাকে সাবিতের পাশে বসালো । তারপর জিজ্ঞেস করলো, “কি হয়েছে?” চয়নিকা আবিরকে খুলে বলল সবটা । আবির বলল, “আল্লাহ! আজকে এসব কি হচ্ছে! আমি আব্বাকে নিয়ে আসছি হাসপাতালে!” বলে আবির রওনা হলো । তখনও ওরা বুঝতে পারে নি, সামনে আরও কি হতে চলেছে ।

আগামী পর্বেঃ
একটু পর ডাক্তার এলেন । আবির কাছে যেয়ে জিজ্ঞেস করলো, “ডাক্তার! বাবার কি অবস্থা এখন?” ডাক্তার হালকা রাগ নিয়েই বলল, “এতো দেরি করেছেন কেনো আপনারা! দেখে মনে হচ্ছে প্রায় ১ ঘণ্টা আগে হার্ট অ্যাটাক করেছেন! আপনাদের বাসা থেকে এখানে আসতে তো ১৫মিনিটের বেশি লাগে না!” চয়নিকা জিজ্ঞেস করলো, “বাবা সুস্থ হবে তো ডাক্তার?” ডাক্তার মাথা নিচু করলো । আবির জিজ্ঞেস করলো, “কি হলো, কিছু বলুন!” ডাক্তার বলল, “উনি পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন ।”