0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

পরিচয় ৩০০


পরিচয়(পর্ব-৩০০)(সিজন-১০ এর অন্তিম পর্ব)

তারপর দুজনেই আকাশের দিকে তাকিয়ে ভেসে বেড়ানো মেঘ দেখতে লাগলো । আবির চয়নিকাকে জিজ্ঞেস করলো, “আব্বাকে দেখছি না, কোথায় উনি?” চয়নিকা বলল, “আখি আপুর পেটে ব্যাথা হয়েছিলো হঠাৎ । আমরা সবাই হাসপাতালে দেখা করতে গিয়েছিলাম, তা আব্বা বললেন আরেকটু থাকবেন । তাই আব্বাকে হাসপাতালে রেখে এসেছি । সাবিত ভাই দিয়ে যাবে বলেছেন ।” আবির বলল, “পেটে ব্যাথা! সেকি! আপু ঠিক আছেন তো? আর উনার বাচ্চা?” চয়নিকা বলল, “হুম সব ঠিক আছে । কিন্তু……।” বলে থেমে গেলো চয়নিকা । আবির জিজ্ঞেস করলো, “কিন্তু কি?” চয়নিকা বলল, “কিন্তু ডাক্তার বলেছেন, প্রসবের সময় সমস্যা হতে পারে ।” আবির বলল, “আল্লাহ! সবকিছু যেনো ঠিকঠাকভাবে হয় ।”
এদিকে খাওয়া দাওয়া শেষ করেই অয়ন গেছে মাইশার সাথে দেখা করতে । এতক্ষণে মাইশাকে সরি বলেও ফেলেছে । তারপর কি হয়েছিলো সবটা খুলে বলল মাইশাকে । মাইশা বলল, “তোমারও দোষ আছে! এরকম কথা কেউ বলে?” অয়ন বলল, “আচ্ছা বাবা! সরি তো বলেইছি, নাকি?” মাইশা বলল, “তাও!” অয়ন তখন বলল, “শোন, আমাদের শীঘ্রই বিয়ে করে নেয়া উচিত ।” মাইশা একটু ঘাবড়ে গেলো । বলল, “বিয়ে! এখনই!” অয়ন বলল, “হ্যাঁ! কারণ আবির ভাই আর চুনি আপু মাঝে ঝামেলা হলেও উনারা কোনদিনও একে অপরকে ছেড়ে যেতে পারবেন না । কারণ উনারা বিবাহিত । কিন্তু আমি আর তুমি বিবাহিত না । ভয় হয়, যদি তুমি আমাকে ছেড়ে চলে যাও?” মাইশা অয়নের হাত ধরে বলল, “শান্ত হও অয়ন! আর কটা দিন সবুর করো! তোমার একটা চাকরি হলেই আমরা বিয়ে করে ফেলবো । তাছাড়া তোমার চাকরি না হলে আমাকে বিয়ে দিতে রাজিও হবে না আমার পরিবার ।” অয়ন একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল । কিছু বলল না ।
রাতে ঘুমোতে যাবার আগে আবিরকে কল করলো অপু । “হ্যালো! কি অবস্থা!” অপুকে বলল আবির । অপু বলল, “এইতো বন্ধু! কোনোরকমে বউয়ের রাগ ভাঙ্গালাম ।” পাশেই ঘুমিয়ে ছিলো চয়নিকা । চয়নিকাকে একটু আদর করলো আবির । তারপর বলল, “যাক, আলহামদুলিল্লাহ । কাল আদালতে শুনানি হবে না আশিকুল হাসান সায়েম কেসের?” অপু বলল, “হ্যাঁ! বিকেলে ভাবছি তোর বাসায় যাবো । আরেকটা কথাও বলবো তোদের!” আবির জিজ্ঞেস করলো, “কি?” অপু বলল, “সেটা কালই না হয় বলি? আজকে ঘুমা!” আবির বলল, “আচ্ছা ব্রো, আল্লাহ হাফেজ!” অপুও “আল্লাহ হাফেজ” বলে কল কেটে দিলো ।
পরদিন বিকেলের কথা । সবাই একসাথে বসলো বারান্দায় । আজ একজন বেশি । তিনি সাবিত ভাই । আবিরকে সাবিত বলল, "আবির! তোমার কথা আমাকে জিজ্ঞেস করতে করতে আমার অফিসের লোকজন পাগল হয় গেলো!" অপু বলল, "তা হবে না! আবির যে এখন সেলিব্রেটি!" আবির অপুকে জিজ্ঞেস করলো, "তুই গতকাল বললি কি যেন বলবি?" অপু বলল, “ও হ্যাঁ! আমার প্রোমোশন হইছে!” আবির আর অয়ন বেশ খুশি হল । আবির বলল, “যাক! আলহামদুলিল্লাহ! তা মিষ্টি কই?” অপু বলল, “আজ শুনানির জন্য আনতে পারিনি, পরের দিন নিশ্চয়ই খালি হাতে আসবো না । তিন্নিকে সাথে করে আর মিষ্টি হাতে নিয়ে আসবো ।” চয়নিকা চা নাস্তা দিয়ে গেলো । ট্রে থেকে টিটেবিলে সব রাখতে রাখতে বলল, “সেটাই তো, ভাবিকে তো কনদিনও নিয়ে এলেন না বাসায়!” অপু বলল, “নিয়ে আসবো ইনশাআল্লাহ ভাবি!” আবির জিজ্ঞেস করলো, “শুনানিতে কি হল?” অপু বলল, “ফাসির রায় দেয়া হয়েছে, তবে যতদিননা পর্যন্ত এই লোকের সাথে যুক্ত অন্যান্য লোকজনদের খুজে পাওয়া যাচ্ছে, ততদিন একে জেলে কঠোর নজরদারিতে রাখা হবে । এর মাধ্যমেই বাকিদের খুজে পাওয়া সহজ হয়ে যাবে ।” অয়ন আবিরকে জিজ্ঞেস করলো, “ভাই, একটা প্রশ্ন । তুমি যদি সত্যি ওই আশিকুল হাসান সায়েমকে সন্দেহ করে থাকো, তাহলে তোমার তদন্তের সব কথা সেদিন কেন তুমি উনাকে বলেছিলে?” আবির বলল, “হ্যাঁ, সেদিন আমি উনাকে কিছু বলেছি, তবে আমার তদন্ত ব্যাপারে কিছু না ।” অপু জিজ্ঞেস করলো, “তাহলে?” আবির বলল সেদিকে কথা ।
টেলিফোন কানে আবিরের, পাশে বসে কাদের মোল্লা, টেলিফোনের ওপাশে আশিকুল হাসান সায়েম । আবিরের তদন্তের ব্যাপারে সে জানতে চেয়েছিলো । আবির বলল, “আর বলবেন না! বারান্দায় এক টুকরো কাপড় পেয়েছি, মনে হয় সেই রুমে রিও নামের যে ছেলেটা ছিল, তার সাথে অন্য কারো লড়াই হয়েছিলো । বিছানার নিচের তোষকটা ভেজা দেখেছি । মনে হচ্ছে রিও ছেলেটার বিছানায় মুতে দেয়ার অভ্যাসও ছিলো ।” সায়েম বলল, “ব্যাস ব্যাস! অনেক বলেছেন! আর বলতে হবে না!” একটু থেকে সায়েম জিজ্ঞেস করলো, “মূল্যবান কিছু পান নি?” আবির বলল, “আপনার কেন মনে হচ্ছে আমার কিছু মূল্যবান পাওয়ার কথা?” সায়েম বলল, “না! এমনি! জিজ্ঞেস করলাম ।” আবির বলল, “মূল্যবান একটা জিনিস পেয়েছি ।” সায়েম জিজ্ঞেস করলো, “কি?” আবির বলল, “একটা ব্র্যান্ডের জাঙ্গিয়া!”
আবিরের কথা শুনে হেসে দিল উপস্থিত সবাই । অপু বলল, “ভাইরে ভাই! তোর মুখের ভাষা ঠিক করার জন্য আমার একটা আইন তৈরি করা লাগবে মনে হয়!” সাবিত বলল, “বেচারা সায়েম সাহেবের সে সময় চেহারা কি হয়েছিলো, তা ভেবেই হাঁসি পাচ্ছে ।” আবির একটু হাসলো, তারপর আবার কেমন ওর মনটা খারাপ হয়ে গেলো । অপু জিজ্ঞেস করলো, “কিরে, কি হয়েছে?” আবির বলল, “যতো যাই হোক, রিও ছেলেটার পচা লাশটা দেখে এখনও আমার কষ্ট লাগে ।” বলে আবির বাইরে আকাশের দিকে তাকাল । বাকিদেরও মনটা খারাপ হয়ে গেলো । আকাশে শরতের সাদা মেঘ উড়ে বেড়াচ্ছে ।