0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

পরিচয় ২৯৮


পরিচয়(পর্ব-২৯৮)(সিজন-১০)

বলে আবির চেয়ারে বসলো । তারপর বলা শুরু করলো, “এই লোক তার গোলাম অলোককে দিয়ে সেই রুমে হামলা চালায় । যাকে পাঠিয়েছিলো এই লোকের বন্ধু, তাকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে যায় । সে এখন কোথায় আছে তা আমার জানা নেই । সেই ছেলেটার নাম হতে পারে রিও । কি তাইনা?” শেসটায় সায়েমকে বলল আবির । সায়েম ওপর নিচ মাথা নাড়ল । আবির বলল, “সে নাম শুনেই হয়তো এই সায়েমের মনে রিও রহস্য সাজানোর বুদ্ধি আসে । আরেকটা কথা, গতকাল আপনি একটা অডিও রেকর্ড দিয়েছিলেন ইন্সপেক্টর রাদিব! সেখানে অলোকের স্ত্রী মাধবী জানিয়েছিলো, অলোক মাফিয়া গ্যাঙের লিডার মুকিবের সাথে যুক্ত হয়েছিলো । এই সায়েমই আসলে সেই মুকিব!” সায়েম বলল, “না! আমি মুকিব না!” আবির হালকা বিরক্ত হয়ে বলল, “ফাইজলামির জায়গা পাননা, তাই না? দশ ১২টা পাসপোর্ট বানায় রাখছেন নিজের, গতকাল মনে পুলিশ আপনার রুমের কিছুই সার্চ করে নি!” সায়েম আবার চুপ । আবির বলতে লাগলো । “এই মুকিব বা সায়েম সাহেব, যা বলি না কেন, উনি শুরু থেকেই নানা নাটক চালাতে থাকে । কখনো আমাকে কাগজ দিয়ে, কখনো অলোকের ক্রেডিট কার্ডের মিথ্যে কথা বানিয়ে । উনারা ভেবেছিলেন এতে কিছু একটা ঘটেছে তা যেন আমি বুঝি । এমনকি উনাকে আমার যেন সন্দেহ না হয় সেজন্য উনি আমার সাথে দেখাই করতেন না, মোবাইলেও কথা বলতেন না, একবার শুধু হোটেলের টেলিফোন দিয়েই কথা বলেছিলেন কেবল । উনার থেকে সন্দেহ হয় সেখান থেকেই । কাদের মোল্লা যে দোষী তা আমরা আগেই জেনেছিলাম ক্যামেরা গোপন করে হোটেলের রুমে রেখে । কিন্তু কাদের মোল্লার সাথে এই লোকের যে যোগসুত্র আছে তা প্রথমে বুঝতে পারিনি । বারান্দায় একটা কাগজ পাঠিয়েছিলেন উনি, সে কাগজে কিছু লেখা ছিলো না । আমি যেন লেখা জানতে পারি, সেজন্য উনি কাদের মোল্লার মাধ্যমে আমাকে ম্যাজিক কলমের সম্পর্কে জানায় । কাগজে উনি কাদের মোল্লাকে সন্দেহ করেন জানালেও কাদের মোল্লারই মাধ্যমে ম্যাজিক কলমের হদিস দেয়ার ব্যাপারটা আমার মনে খটকার সৃষ্টি করে । তবে হ্যাঁ, উনাদের আমি কখনো জানাইনি ডায়মন্ডের কথা । কিন্তু উনারা বারবার জানতে চাইতেন কাজ কদ্দুর এগোলো । মুলত উনারা অপরাধী ধরাতে আমাকে ডাকেন নি, ডেকেছেন ডায়মন্ড খুজতে । যে মুহূর্তে আমি বলবো ডায়মন্ড পেয়েছি, সেই মুহূর্তে উনারা ডায়মন্ড নিয়ে চলে যাবেন । আমি না বলায় উনারা আমার শ্যালক অয়নকে কিডন্যাপ করে, আর সেই ডায়মন্ড চায় । আমি এলাকার একজন সম্মানীয় ব্যাক্তি, সুরুজ তালুকদারের সাহায্য নিয়ে ওদের হাত থেকে কৌশলে অয়নকে উদ্ধার করি । কিন্তু তারা তখন ভেবে নেয় আমরা ডায়মন্ড পেয়েই গেছি বোধ হয় । তাই তারা পরবর্তী নাটক সাজায় । এদিকে অলোক সায়েম সাহেবকে জিম্মি করে রাখার মিথ্যে নাটক করে ডায়মন্ড চায়, ওদিকে সায়েম কাদের মোল্লাকে খুন করে । খুন করার কারণ তিনটে হতে পারে, এক, উনি কাদের মোল্লাকে কথা দিয়েছিলেন পুলিশ ধরলেও তাকে বাঁচাবেন, সেটা পড়ে আর করতে চান নি সায়েম, দুই কাদের মোল্লা আর সইতে না পেরে সব স্বীকার করতে চেয়েছিলো, তিন উনি কাদের মোল্লাকে মেরে দেখাতে চাইছিলেন যারা ডায়মন্ড চায় তারা কত ভয়ানক! সহজেই খুন করে ফেলতে পারে । তাকেও খুন করতে পারে এই ভয়ে আমরা ডায়মন্ড যেনো তাদের দিয়ে দেই । যদিও উনি রুমে এসেও ডায়মন্ড খুজেছেন । যাই হোক, উনার শত্রু হয়ে দাড়ায় উনার হাতের আতরের গন্ধ । যেটা কাদের মোল্লার গলায়ও লেগে গিয়েছিলো । তারপর উনিও ধরা পড়ে যান, অলোকও মারা যায় । এই হলো পুরো ঘটনা । এবার আপনারাই বিচার করুন, কি করবেন ।” ইন্সপেক্টর রাদিব তখন জিজ্ঞেস করলো, “ডায়মন্ড তাহলে কোথায়?” আবির বলল, “আমার মনে হয় উনার বন্ধু একটু অতিরিক্তই সচেতন । রিও-কে এই হোটেলে পাঠিয়ে উনি উনার শত্রুদের মনোযোগ এইদিকে দিয়ে দিয়েছেন । আর আসল ডায়মন্ড কার্গো ডায়মন্ডে করে পৌঁছে গেছে জুয়েলারি কোম্পানির কাছে । মাঝখান দিয়ে বেচারা সায়েম সাহেব বৃথা চেষ্টা চালালেন ।“ পরবর্তীতে সেই সায়েম সাহেবের বন্ধুর কাছে কল করে জানা যায়, আসলেই এটা সত্য, কিন্তু তিনি রিওকে নিয়ে খুব চিন্তিত । তিনি সায়েমকে কল করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু সায়েম কল ধরে নি । কারণ একটাই । সায়েমের কাছে সৎ জবাবটা তৈরি ছিলো না । পরবর্তীতে রিওর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় হোটেলের পেছনের সেই জায়গাটার মাটির নিচ থেকে, যেখানে যাওয়ার একমাত্র রাস্তা এই হোটেলের ভেতর দিয়েই । পচে গলে লাশ দুর্গন্ধ হয়ে গেছে । সেই লাশ পাঠিয়ে দেয়া হয় রিও পরিবারের কাছে । অলোকের আর কাদের মোল্লার লাশও কবর দেয়া হয় ।
কক্সবাজারে থাকার দিন ফুরিয়ে এসেছে । এবার বাড়ি ফেরার পালা । ব্যাগ পত্র সব গুছিয়ে নেয়া শেষ । ওরা আরও পরে যেতো হয়তো, কিন্তু অবৈধ এই হোটেলটা আজই ভেঙ্গে ফেলবে বলে জানিয়েছে । আরও বেশিদিন থাকার ইচ্ছাটা অয়নের ছিলো । আবির বলেছিলো চাইলে ওরা সুরুজ তালুকদারের বাসায় বা অন্য কোন হোটেলে থাকতে পারে, কিন্তু অয়ন বলে, “না থাক, বাসায়ই যাই! কতদিন সবাইকে দেখি না?” অপু ইয়ার্কি করে বলল, “সবাইকে, নাকি মাইশাকে হুম?”

আগামী পর্বেঃ
পেছন থেকে চয়নিকাকে জড়িয়ে ধরলো আবির । চয়নিকা আবিরের ওপর হালকা রেগেই ছিলো, তাই বিরক্ত হয়ে “আহ! ছাড়ো!” বলে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করলো । কিন্তু আবির চয়নিকাকে শক্ত করে জাপটে ধরে বলল, “উহু! আগে বলতে হবে আমাকে ক্ষমা করেছো, তারপর!”