পরিচয় ২৯৭
পরিচয়(পর্ব-২৯৭)(সিজন-১০)
মাটিতে লুটিয়ে পড়ে অলোক । সেই সময় সেখানে হাজির হলো আবির । অপুকে বলল, “যাক, প্রোমশনটা তাহলে তোর এবার হয়েই যাবে দেখছি!” অপু বলল, “সবই আল্লাহর রহমত ।” সেদিন খুব রাত হয়ে গিয়েছিলো দেখে আবিরের সাথে বিস্তারিত কোন কথা হল না পুলিশের ।
অলোকের লাশটা হস্তান্তর করা হল জায়েদার কাছে । জায়েদা লাশ দেখে শোকে পাথর । মাধবী তাকে শান্তনা দিয়ে বলল, “আমি এখন আপনাকে বেশি কিছু বলবো না, শুধু এটুকুই বলবো, আপনার পরিবারের ভরণপোষণের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে একটা চাকরি দেয়া হবে ।” জায়েদা হঠাৎ নিজেকে শক্ত করে বলল, “আর আপনি যে কথা দিয়েছিলেন আমার সন্তানের ভবিষ্যতের?” মাধবী জায়েদার কাধে হাত রেখে বলল, “কাল সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করুন, তাহলেই বুঝতে পারবেন ।”
সকালে সংবাদ সম্মেলন । এলাকায় গোলাগুলি আর পুলিশের অবস্থানের কারণ জানতে এসেছে সকল সাংবাদিকরা । টিস্যু বক্স থেকে একটা টিস্যু নিয়ে গ্লিসারিন চোখে লাগিয়ে বের করা পানিটা একটু মুছলো । তারপর মনের যতো কষ্ট, অভিনয় আর আবেগ, সব একসাথে মিশিয়ে বলল, “কি যে বলবো! এখানে একটা মাদক বিরোধী অভিযান চলছিলো । অলোক লোকটা পাশের বাসারই কাজের লোক ছিলো । আমাদের অনেক সাহায্য করেছে । প্রধান আসামীকে ধরার আগে আমার দিকে গুলি ছোড়ার চেষ্টা চালায় । কিন্তু……।” বলে একটু ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাদে অপু । সামনে চেয়ারে বসে পাশের আবিরকে অয়ন বলল, “একটু অভারঅ্যাক্টিং হয়ে যাচ্ছে না?” আবির অয়নকে বলল, “হ্যাঁ, তোর তেমন মনে হলে ওর বউকে বলে দিস!” অয়ন আর কিছু বলল না । অপু ওর বক্তব্য দেয়া শুরু করলো, “কিন্তু এই অলোক লোকটা আমার সামনে চলে আসে । গুলি অলোকের পেট ভেদ করে । এরপর যদিও আরেকটা গুলি ছোড়ে ওই অপরাধী, ভাগ্যক্রমে সেটা আমার কাধের একটু নিচে লাগে । এই লোকটার কাছে আমি চির কৃতজ্ঞ থাকবো ।”
দুপুরে সব পুলিশ স্টেশনে একত্র হল । অপরাধী সায়েম পাশেই একটা জেলে বন্দি । আবির, অপু অয়নও এসেছে । আবিরের কাছ থেকে সবাই জানতে চায় আসলে কি হয়েছে । আবির বলল, “আসলে আমি নিজেও এখনও জানি না কি হয়েছে, তবে আন্দাজ করেছি কিছুটা, সেটা আমি বলতে চাই না, আমি যদি নিশ্চিত থাকতাম, তবে আমি বলতাম ।” এরপর আবির আশিকুল হাসান সায়েমের কাছে গেলো । বলল, “কি ভাই, এবার বলবেন, এতো টাকার ডায়মন্ডের রহস্যটা কি?” আশিকুল হাসান সায়েম ক্ষিপ্ত হয়ে বলল, “বলবো না! কি করবি তুই!” আবির হালকা হেসে বলল, “সে তো আমার কিছুই করা লাগবে না, পুলিশই করবে সব ।” সায়েম এবার চুপ হয়ে গেলো । তারপর বলল, “আমি বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ইউএসএ বসবাসরত একজন নাগরিক । এই জায়গা আমার হলেও এখানে না কোন হোটেল ছিলো, না হোটেল বানানোর প্ল্যান ছিলো । একদিন আমার এক বন্ধু আমাকে বাংলাদেশে কোন কমদামি হোটেল আছে কিনা তা জানাতে বলল এবং পারলে সেখানে তার এক কর্মীর জন্য রুম বুক করতে বলল । আমি ওর কাছে কারণ জানতে চাইলে সে আমাকে জানায় তার বিয়াল্লিশ হাজার কোটি টাকার ডায়মন্ড বাংলাদেশে আসবে । বাংলাদেশের এক গহনার কোম্পানি সেই ডায়মন্ড কিনবে কিন্তু বেশ দামি মালামাল হওয়ায় ওরা এমনভাবে কাজটা করতে চায়, যেন কেউ জানতে না পারে । কারণ আমার ওই বন্ধুর শত্রুর অভাব ছিলো না ।” আবির বলল, “আর আপনি বন্ধু হয়েও সেই বন্ধুর শত্রু হয়ে গেলেন!” কথা শুনে লজ্জা পেয়ে গেলো সায়েম । আবির বলল, “ঠিক যা আন্দাজ করেছিলাম সেরকম না হলেও কাছাকাছি গিয়েছি । বাকিটা না হয় আমিই বলি, কারণ বাকিটা আমি নিশ্চিত ।” বলে আবির সায়েমের সামনে থেকে সরে এলো । তারপর সবাইকে বলল, “সায়েম সাহাবের কথা শুনে খুব লোভ হয় । ভাবেন সেই ডায়মন্ড আত্মসাৎ করলে মন্দ হয় না! তাই তিনি নিজের খুলে ফেলেন একটা হোটেল উনার বাপের পড়ে থাকা একটা জমিতে । কোনোরকমে বানানো এই হোটেল । আবার হোটেলের লোগো সমেত কোটও বানিয়েছেন উনি! যাই হোক, অনেক টাকা খরচ করেছেন উনি ।” আবির তখন সায়েম সাহেবকে জিজ্ঞেস করলো, “আচ্ছা, একটু জানতে পারি, কত টাকা খরচ হয়েছিলো?” সায়েম বলল, “প্রায় নব্বই লাখ ।” আবির বলল, “হুম! স্বাভাবিক । তবে টাকাও বাচিয়ে চলেছেন ভালোই, এজন্যই তো নতুন হোটেলের মান তেমন ভালোও না, রঙ উঠে গেছে, দেয়াল খসে পড়ছে । যাই হোক আপনার এতো কষ্ট করে বানানো নব্বই লাশ টাকার মুভি ফ্লপ হয়ে গেলো ।” বলে আবির চেয়ারে বসলো ।
আগামী পর্বেঃ
রিওর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় হোটেলের পেছনের সেই জায়গাটার মাটির নিচ থেকে, যেখানে যাওয়ার একমাত্র রাস্তা এই হোটেলের ভেতর দিয়েই । পচে গলে লাশ দুর্গন্ধ হয়ে গেছে । সেই লাশ পাঠিয়ে দেয়া হয় রিও পরিবারের কাছে । অলোকের আর কাদের মোল্লার লাশও কবর দেয়া হয় ।
মাটিতে লুটিয়ে পড়ে অলোক । সেই সময় সেখানে হাজির হলো আবির । অপুকে বলল, “যাক, প্রোমশনটা তাহলে তোর এবার হয়েই যাবে দেখছি!” অপু বলল, “সবই আল্লাহর রহমত ।” সেদিন খুব রাত হয়ে গিয়েছিলো দেখে আবিরের সাথে বিস্তারিত কোন কথা হল না পুলিশের ।
অলোকের লাশটা হস্তান্তর করা হল জায়েদার কাছে । জায়েদা লাশ দেখে শোকে পাথর । মাধবী তাকে শান্তনা দিয়ে বলল, “আমি এখন আপনাকে বেশি কিছু বলবো না, শুধু এটুকুই বলবো, আপনার পরিবারের ভরণপোষণের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে একটা চাকরি দেয়া হবে ।” জায়েদা হঠাৎ নিজেকে শক্ত করে বলল, “আর আপনি যে কথা দিয়েছিলেন আমার সন্তানের ভবিষ্যতের?” মাধবী জায়েদার কাধে হাত রেখে বলল, “কাল সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করুন, তাহলেই বুঝতে পারবেন ।”
সকালে সংবাদ সম্মেলন । এলাকায় গোলাগুলি আর পুলিশের অবস্থানের কারণ জানতে এসেছে সকল সাংবাদিকরা । টিস্যু বক্স থেকে একটা টিস্যু নিয়ে গ্লিসারিন চোখে লাগিয়ে বের করা পানিটা একটু মুছলো । তারপর মনের যতো কষ্ট, অভিনয় আর আবেগ, সব একসাথে মিশিয়ে বলল, “কি যে বলবো! এখানে একটা মাদক বিরোধী অভিযান চলছিলো । অলোক লোকটা পাশের বাসারই কাজের লোক ছিলো । আমাদের অনেক সাহায্য করেছে । প্রধান আসামীকে ধরার আগে আমার দিকে গুলি ছোড়ার চেষ্টা চালায় । কিন্তু……।” বলে একটু ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাদে অপু । সামনে চেয়ারে বসে পাশের আবিরকে অয়ন বলল, “একটু অভারঅ্যাক্টিং হয়ে যাচ্ছে না?” আবির অয়নকে বলল, “হ্যাঁ, তোর তেমন মনে হলে ওর বউকে বলে দিস!” অয়ন আর কিছু বলল না । অপু ওর বক্তব্য দেয়া শুরু করলো, “কিন্তু এই অলোক লোকটা আমার সামনে চলে আসে । গুলি অলোকের পেট ভেদ করে । এরপর যদিও আরেকটা গুলি ছোড়ে ওই অপরাধী, ভাগ্যক্রমে সেটা আমার কাধের একটু নিচে লাগে । এই লোকটার কাছে আমি চির কৃতজ্ঞ থাকবো ।”
দুপুরে সব পুলিশ স্টেশনে একত্র হল । অপরাধী সায়েম পাশেই একটা জেলে বন্দি । আবির, অপু অয়নও এসেছে । আবিরের কাছ থেকে সবাই জানতে চায় আসলে কি হয়েছে । আবির বলল, “আসলে আমি নিজেও এখনও জানি না কি হয়েছে, তবে আন্দাজ করেছি কিছুটা, সেটা আমি বলতে চাই না, আমি যদি নিশ্চিত থাকতাম, তবে আমি বলতাম ।” এরপর আবির আশিকুল হাসান সায়েমের কাছে গেলো । বলল, “কি ভাই, এবার বলবেন, এতো টাকার ডায়মন্ডের রহস্যটা কি?” আশিকুল হাসান সায়েম ক্ষিপ্ত হয়ে বলল, “বলবো না! কি করবি তুই!” আবির হালকা হেসে বলল, “সে তো আমার কিছুই করা লাগবে না, পুলিশই করবে সব ।” সায়েম এবার চুপ হয়ে গেলো । তারপর বলল, “আমি বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ইউএসএ বসবাসরত একজন নাগরিক । এই জায়গা আমার হলেও এখানে না কোন হোটেল ছিলো, না হোটেল বানানোর প্ল্যান ছিলো । একদিন আমার এক বন্ধু আমাকে বাংলাদেশে কোন কমদামি হোটেল আছে কিনা তা জানাতে বলল এবং পারলে সেখানে তার এক কর্মীর জন্য রুম বুক করতে বলল । আমি ওর কাছে কারণ জানতে চাইলে সে আমাকে জানায় তার বিয়াল্লিশ হাজার কোটি টাকার ডায়মন্ড বাংলাদেশে আসবে । বাংলাদেশের এক গহনার কোম্পানি সেই ডায়মন্ড কিনবে কিন্তু বেশ দামি মালামাল হওয়ায় ওরা এমনভাবে কাজটা করতে চায়, যেন কেউ জানতে না পারে । কারণ আমার ওই বন্ধুর শত্রুর অভাব ছিলো না ।” আবির বলল, “আর আপনি বন্ধু হয়েও সেই বন্ধুর শত্রু হয়ে গেলেন!” কথা শুনে লজ্জা পেয়ে গেলো সায়েম । আবির বলল, “ঠিক যা আন্দাজ করেছিলাম সেরকম না হলেও কাছাকাছি গিয়েছি । বাকিটা না হয় আমিই বলি, কারণ বাকিটা আমি নিশ্চিত ।” বলে আবির সায়েমের সামনে থেকে সরে এলো । তারপর সবাইকে বলল, “সায়েম সাহাবের কথা শুনে খুব লোভ হয় । ভাবেন সেই ডায়মন্ড আত্মসাৎ করলে মন্দ হয় না! তাই তিনি নিজের খুলে ফেলেন একটা হোটেল উনার বাপের পড়ে থাকা একটা জমিতে । কোনোরকমে বানানো এই হোটেল । আবার হোটেলের লোগো সমেত কোটও বানিয়েছেন উনি! যাই হোক, অনেক টাকা খরচ করেছেন উনি ।” আবির তখন সায়েম সাহেবকে জিজ্ঞেস করলো, “আচ্ছা, একটু জানতে পারি, কত টাকা খরচ হয়েছিলো?” সায়েম বলল, “প্রায় নব্বই লাখ ।” আবির বলল, “হুম! স্বাভাবিক । তবে টাকাও বাচিয়ে চলেছেন ভালোই, এজন্যই তো নতুন হোটেলের মান তেমন ভালোও না, রঙ উঠে গেছে, দেয়াল খসে পড়ছে । যাই হোক আপনার এতো কষ্ট করে বানানো নব্বই লাশ টাকার মুভি ফ্লপ হয়ে গেলো ।” বলে আবির চেয়ারে বসলো ।
আগামী পর্বেঃ
রিওর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় হোটেলের পেছনের সেই জায়গাটার মাটির নিচ থেকে, যেখানে যাওয়ার একমাত্র রাস্তা এই হোটেলের ভেতর দিয়েই । পচে গলে লাশ দুর্গন্ধ হয়ে গেছে । সেই লাশ পাঠিয়ে দেয়া হয় রিও পরিবারের কাছে । অলোকের আর কাদের মোল্লার লাশও কবর দেয়া হয় ।