0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

পরিচয় ২৯৬


পরিচয়(পর্ব-২৯৬)(সিজন-১০)

বেশ পরিচিত একটা গন্ধ এটা! আবার ভালো করে ঘ্রাণ নিতে লাগলো আবির । অনেকটা আতরের মতো! হ্যাঁ, এই ঘ্রাণটা আবির আগেও পেয়েছে, এটা তো হোটেলের মালিক আশিকুল হাসান সায়েমের আতরের গন্ধ! আবির কনস্টেবলকে জিজ্ঞেস করলো, “কতক্ষণ আগে ঘটেছে এটা?” কনস্টেবল বলল, “সেটা তো বলা মুশকিল, তবে মনে হয়না খুব বেশিক্ষণ আগে ঘটেছে ।” আবির কোন ক্লু খুজতে লাগলো । তখনই আশেপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা জিনিসগুলো মধ্যে একটা মেঝেতে পড়ে থাকা দেয়াল ঘড়ি দেখলো সে । মেঝেতে পড়ে হালকা ভেঙ্গে গেছে । তবে নষ্ট হয়নি, বালিশ চাপা পড়ে আছে, বালিশ ছুড়ে মারার ফলেই হয়তো ঘড়িটা পড়ে গেছে । আবির বালিশ তুলে দেখলো, ঘড়ির সামনের কাচও ভেঙ্গে গেছে, বালিশ চাপা পড়াই সেকেন্ড, মিনিট আর ঘন্টার কাটা এতক্ষন থেমে ছিল । বালিশ ঘড়ির ওপর থেকে সরাতেই চলতে শুরু করলো । ঘড়িতে সময় রাত ১১টা বেজে ৪৫ মিনিট, আর এখন বাজে বারোটা বেজে তিন মিনিট । মোবাইলটা হাতে নিলো আবির । ইন্সপেক্টর রাদিব যখন কল দিয়ে আশিকুল হাসান সায়েমের জিম্মির ব্যাপারে জানান, তখন সময় ছিলো রাত ১১টা বেজে ৩০ মিনিট । কিন্তু ঘড়ির কাটা বলছে ১১টা বেজে ৪৫ মিনিটেও এই রুমে কাদের মোল্লার সাথে আরও কেউ ছিলো, আর সে হচ্ছে হোটেলেরই মালিক সায়েম । তাহলে জিম্মি রয়েছে কে? আবির মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লো । বলে উঠলো, “আল্লাহ! আমার সন্দেহ তালিকা থেকে উনাকে বাদ দেয়াটাই ছিলো সবচেয়ে বড় ভুল!” এরপর আবির কল করে ইন্সপেক্টর রাদিবকে । কল ধরতেই রাদিব জিজ্ঞেস করলো, “হ্যাঁ! ও কল করেছিলো, ও অপেক্ষা ডায়মন্ডের, আপনি কোথায়?” আবির বলল, “আমি এখানে লাশের সাথে টেনশন করছি ।” রাদিব অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো, “মানে?” আবির বলে, “সবটা খুলে বলছি, তবে তার আগে এটা বলুন, ওই অলোক কি কলে আপনাদের সাথে হোটেলের মালিকের কথা বলিয়েছে?” রাদিব বলল, “নাতো, কেনো?” আবির বলল, “ওই রুমে অলোক একাই বা অন্য কারো সাথে আছে! আর হোটেলের মালিক সায়েম ওই রুমে নেই! উনি একটু আগে এখানে কাউকে হত্যা করেছেন!” রাদিব চমকে উঠলো । বলল, “হোয়াট!” আবির বলল, “হ্যাঁ! আপনি শীঘ্রই পুলিশ ফোর্স নিয়ে ভেতরে ঢুকে অলোককে গ্রেফতার করুন । আর হোটেলের মালিক বোধ হয় আছেন এদিকেই কোথাও!” বলে কল রাখলো আবির । রাদিব তখন সবাইকে বলল, “সবাই প্রস্তুত হও! আমরা ভেতরে যাচ্ছি!”
এদিকে আবির তখন উঠলো হোটেলের সিড়ি বেয়ে । ওদের রুমের দিকে গেলো । যা আন্দাজ করেছিলো ঠিক তাই । ওদের রুমের দরজার তালা খোলা, তবে ভেতরে থেকে আটকানো হয়তো যেনো পুলিশ সন্দেহ না করে । আবির একদম শিওর ভেতরে আছে হোটেলের মালিক সায়েম । খুঁজে বেড়াচ্ছেন তার সাধের ডায়মন্ড । আবির সেখানে যেয়ে আস্তে করে বাইরে থেকে ছিটকিনি লাগিয়ে দিলো । ছিটকিনি লাগানোর সময় হালকা আওয়াজ হলে ভেতর থেকে টের পেয়ে গেলো সায়েম । “এই দরজা খোল! এই কোন হারামজাদা আটকালি আমাকে! এই!” একটু পর নিচ থেকে সকল পুলিশ নিয়ে উপরে এলো আবির । ফিসফিসিয়ে তাদের বলল, “সায়েম ভেতরে আছে! সে বোধ হয় এতক্ষণে ভেতরের ছিটকিনি খুলে ফেলেছে, বাহিরেরটা খুলতেই দরজা খুলে যাবে, আর তখনই তাকে আপনারা গ্রেফতার করবেন ।” যে কথা, সেই কাজ । দরজা খুলতেই দরজা খুলে গেলো, আর ভেতরে দারিয়ে হোটেলের মালিক, আশিকুল হাসান সায়েম । পুলিশ হ্যান্ডস আপ! বলতেই সে দু হাত ওপরে তুলল । আবির হাসিমুখে বলল, “ইউ আর আন্ডার অ্যারেস্ট!”
এদিকে পুলিশ বাহিনী নিয়ে সবাই গেলো সায়েমের রুমের সামনে । ভেতরে অলোক । অলোকও বোধ হয় এতক্ষণে টের পেয়ে গেছে পুলিশ আসছে, তাই সবাইকে কল করে ইন্সপেক্টর রাদিবকে হুমকি দিচ্ছে । একটু পর দরজা ভাঙা হলো । তার দিকে সব পুলিশ গুলি তাক করে দাঁড়িয়ে আছে । সামনে থাকা আরেকজন ইন্সপেক্টর বললেন, “হ্যান্ডস আপ!” কিন্তু অলোক ভয় না পেয়ে গুলি তাক করে বলল, “আমি কিন্তু গুলি চালিয়ে খুন করে ফেলবো!” ইন্সপেক্টর আবার বললেন, “হ্যান্ডস আপ!” অলোক এবারও ভয় না পেয়ে এবার সত্যিই গুলি ছুড়লো । একজন পুলিশের হাতের বাহুতে গুলি লেগে রক্ত পড়া শুরু হল । ইন্সপেক্টর তখন বলল, “এবার আমরা সত্যি গুলি ছুড়বো কিন্তু!” অলোক তাও ভয় পাচ্ছে না, জোশ দেখিয়ে বলে যাচ্ছে, “তোদের পুলিশরে আমি চিনি! আমারে তোরা মারবি না, কারণ আমারে মারলে আসল কাহিনীই তো জানতে পারবি না! উলটো তোরাই ভয় পা! তোদের গুলি কইরা মাইরা ফেলবো!” সে সময় পুলিশদের ভিড় ঠেলে ভেতরে গুলি নিয়ে হাজির হল ইন্সপেক্টর অপু । হাসতে হাসতে বলল, “তোকে মারলে আমাদের কিচ্ছু হবে না, কারণ তোড় বন্ধু সায়েম ধরা পড়ে গেছে!” কথা শুনে এবার অলোকের মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গেছে । কিন্তু সে তবু ভয় না পেয়ে গুলি ছুড়লো অপুর দিকে । গুলিটা লাগলো অপুর কাঁধের একটু নিচে । অপুও ঠিক একই সময় গুলি করে অলোকের দিকে, আর সেটা যেয়ে লাগে অলোকের হৃদপিণ্ডে । মাটিতে লুটিয়ে পড়ে অলোক ।

আগামী পর্বেঃ
আবির আশিকুল হাসান সায়েমের কাছে গেলো । বলল, “কি ভাই, এবার বলবেন, এতো টাকার ডায়মন্ডের রহস্যটা কি?” আশিকুল হাসান সায়েম ক্ষিপ্ত হয়ে বলল, “বলবো না! কি করবি তুই!”