0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

বাংলাকে

বাংলাকে
কমলাপুর রেলওয়ে ষ্টেশন ৷ শিস বাজাতে বাজাতে এগোচ্ছিল রিজভী ৷ আজ সে ট্রেনে করে রাজশাহী যাবে ৷ রেললাইনের পাশে বসার সিটে বসবে তা একটা মানুষ সিটের একপাশে বসে অন্যপাশে তার জিনিসপত্র রেখেছে ৷ তার জিনিসপত্র একটা কাপড়ের পুটলি তে বাঁধা ছিলো ৷ পড়নে জিন্সের প্যান্ট আর হুডি সহ সোয়েটার ৷ হুডি দিয়ে মুখটা ঢাকা ছিলো আর মাথা নিচু করে বসে ছিলো বলে চেহারাটা দেখা যাচ্ছিলো না ৷
রিজভি: Hey bro, আপনার জিনিসপত্র গুলো kindly সরিয়ে নিলে ভালো হতো ৷
লোকটা মুখে কিছু না বলেই তার জিনিসপত্র নামিয়ে রাখলো ৷ রিজভিও বসে পড়লো ৷
রিজভি: O God, কী যে tired feel করছি explain করতে পারবো না ৷
সে বসে নিজের সাথে কথা বলতে বলতে লোকটাকেও শোনাচ্ছিলো ৷ কিন্তু লোকটা ব্যাগ রাখার আগে যে ভঙ্গিতে বসে ছিলো সে ভঙ্গিতেই বসে আছে ৷ হুডির বাইরে চুলও বোঝা যাচ্ছে ৷ হয়তো লোকটা চুল বড় রেখেছে ৷ মহিলা তো হবার কথা না ৷ কারণ মহিলারা তো আর জিন্সের প্যান্ট আর সোয়েটার পড়ে থাকবে না ৷ অচেনা ব্যাক্তির সাড়া না পেয়ে মেজাজটা একটু বিগড়ে গেল রিজভির ৷
রিজভি: Come on, কিছু তো বলুন??
লোকটা কিছুই বললো না ৷
রিজভি: O hello, tensed নাকি mood off ?
লোকটা এবারেও কিছু বললো না ৷
রিজভি: কিছু তো বলেন??
লোকটার তাও কোনো সাড়া নেই ৷ রিজভি এবার রেগে গিয়ে লোকটার হুডি খুলে দিলো ৷ এবারে লোকটা রিজভির দিকে তাকালো ৷ উনি আসলে একজন মেয়ে ৷ চেহারা দেখে বোঝা গেলো উনি বাংলাদেশি নন ৷ রিজভির আচরণে সে ভয়ে পেয়ে আতঙ্কিত চোখে রিজভীর দিকে তাকিয়ে জোরে জোরে মুখ দিয়ে শ্বাস ফেলতে লাগলো ৷ রিজভিও একটু ভয় পেয়ে গেলো ৷
রিজভি : opss, sister, I'm so sorry. Please forgive me.
রিজভি যখনই চলে যাওয়ায় জন্য উঠবে, ঠিক তখনই মেয়েটা কথা বলে তাকে আটকালো ৷
মেয়েটা: না, ঠিক আছে, আপনি বুঝতে পারেন নি ৷ আপনি বসতে পারেন ৷
রিজভি: (পুনরায় বসে) আপনি বাংলাদেশি?
মেয়েটা: না ৷ ইংল্যান্ডের অধিবাসী ৷
রিজভি: তাহলে আপনার মা বাবা বাংলাদেশী ছিলেন?
মেয়েটা: তা-ও না ৷ উনারাও ইংল্যান্ডের অধিবাসী ৷
রিজভি: তাহলে নিশ্চিত আপনার দাদা দাদি বাংলাদেশি ছিলেন ৷
মেয়েটা: আমার বাবা, মা, দাদা, বড় আব্বু সবাই ইংল্যান্ডের অধিবাসী ৷
রিজভি: তাহলে আপনি এত সুন্দর বাংলা কীভাবে বলতে পারেন?
মেয়েটা: শিখেছি ৷
রিজভি: দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে থাকা হয় বুঝি?
মেয়েটা: অনেকটা ওরকমই ৷
রিজভি: ও ৷ তা বাংলা শিখেছেন কার কাছে?
মেয়েটা: একজন অচেনা বন্ধুর কাছ থেকে ৷
রিজভি: অচেনা বন্ধু? কে সে?
মেয়েটা: ওসব অনেক কাহিনী ৷ শোনবার সময় নেই ৷
রিজভি: ট্রেনটা প্রায় ১ ঘন্টা লেট করবে বোধ হয় খবরটা আপনি জানেন না ৷
মেয়েটা ছেলেটার দিকে তাকিয়ে দেখলো, ছেলেটার কাহিনী শোনার আগ্রহ আছে ৷ তারপর আবার সেই মাথা নিচু করে নিজের গল্প বলা শুরু করলো ৷
Writer মেয়েটার নাম, কার্লজিপ অ্যানায়া ৷ সে ইংল্যান্ডের অধিবাসী ৷ তারা ক্যামব্রিজ শহরে থাকে ৷ সেখানে তাদের নিজস্ব একটি বাংলো রয়েছে ৷ বাবা কার্লজিপ স্যমুয়েল একটা বিখ্যাত জুতার কোম্পানির মালিক ৷ মা রেমল্ড স্যনস্রিক অ্যপেলো একজন ডাক্তার ৷ অ্যানায়া কেমব্রিজ ভার্সিটি যায়, আবার ফিরে এসে তার Boyfriend রাতুলের সাথে ভিডিও কলে কথা বলে সময় কাটায় ৷ কারণ দিনের বেশিরভাগ সময় তাকে একা থাকতে হয় ৷ রাতুল বাংলাদেশি ৷ সেও কেমব্রিজ ভার্সিটিতে পড়তে ক্যামব্রিজে গেছে ৷ সে একটা হোটেলে থাকে ৷ ভার্সিটি পড়াকালীন বন্ধুত্ব হয় তাদের দুজনের ৷ অ্যানায়া রাতুলকে সুন্দর করে স্পষ্টভাবে বাংলায় কথা বলে Surprised করতে চাইতো ৷ বন্ধুত্বের মাঝে তাদের দুজনের মধ্যে অন্যরকম ভালোলাগা শুরু ৷
একবার ঈদের ছুটিতে অ্যানায়া রাতুলের সাথে বাংলাদেশে আসার ইচ্ছা পোষণ করে ৷ পাসপোর্ট ভিসা বানিয়ে রাতুলের সাথে সেও বাংলাদেশ আসে ৷ রাতুলের মা রাইসা ৷ একজন গৃহিণী ৷ রাতুলের বাবা আশিক চাকরি সূত্রে জাপান থাকেন ৷ প্রতি ঈদেই বাড়ি ঘুরতে আসেন কিন্তু এই ঈদে ব্যস্ততার কারণে আসতে পারবেন না ৷ যাহোক ঈদের আগের দিনের কথা ৷ রাতুল তখন বাসায় ছিলো না ৷ অ্যানায়া রান্নাঘরে রাইসার কাছে গেলো ৷
অ্যানায়া: (ইংরেজিতে) আন্টি কি করেন?
রাইসা: (ইংরেজিতে) রান্না করছি মা ৷ কাল ঈদ না ৷ বাড়িতে কত মেহমান আসবে ৷
অ্যানায়া: একটা সাহায্য করবেন?
রাইসা:(চমকে গিয়ে) ও মা, তুমি এত চমৎকার বাংলা বলতে পারো?
অ্যানায়া:(না বুঝতে পেরে) চম……চমৎ… …
রাইসা: oh. It means excellent.
অ্যানায়া:(ইংরেজিতে) বাংলাটা বলবেন আরেকবার?
রাইসা: চমৎকার৷
অ্যানায়া: Ooo. চমৎকার means excellent.
রাইসা: (ইংরেজিতে) হ্যাঁ মা ৷
অ্যানায়া: আন্টি, আমি আপনার কাছে বাংলা language learn... I mean.
রাইসা: শিখতে চাও?
অ্যানায়া: জী৷
রাইসা: তুমি তো ভালোই বাংলা পারো ৷ আর কি শিখবে?
অ্যনায়া: না আন্টি, I want to learn it perfectly . আমি ভালোভাবে বাংলায় কথা বলতে চাই ৷
রাইসা: (ইংরেজিতে) আমি তো রান্নায় ব্যস্ত থাকি দেখই ৷ আর বাংলা শিখে কি করবে তুমি, বাংলায় কোনো স্মার্টনেস নেই ৷ এর চেয়ে ইংরেজীই তো অনেক ভালো ভাষা ৷
হঠাৎ পিছে তাকিয়ে রাইসা দেখলেন ভাত পুড়তে শুরু করেছে ৷
রাইসা: (ইংরেজিতে) এমা, দেখ, তোমার সাথে কথা বলতে বলতে ভাতটা পুড়তে শুরু করেছে ৷ আচ্ছা মা, আমি ব্যস্ত তো, তুমি না হয় একটু ছাদ থেকে ঘুরে এসো, রাতুল বাড়ি ফিরলে ওর সাথে ঘুরতে যেও ৷
বলেই কাজে লেগে গেলেন রাইসা ৷
অ্যনায়ার মনটা খারাপ হয়ে গেল ৷ আন্টি তার মাতৃভাষা কে এভাবে অবমূল্যায়ন করলো? অ্যানায়ার কাছে কথাটা মোটেও ভালো লাগেনি ৷ সে ছাদে উঠে গেল ৷ তার কেমন একা একা লাগছে ৷ ছাদ থেকে নিচে তাকিয়ে দেখলো, রাতুলের বয়সী একটা ছেলে নিচে বসে আছে ৷ সেও একা ৷ দেখে মনে হচ্ছে দরিদ্র পরিবারের ছেলে ৷ অ্যানায়া ভাবলো, ছেলেটার সাথে যেয়ে কথা বলবে ৷ নিচে নেমে গেল ছেলেটার কাছে ৷ কাছে যেয়ে একটা হাসি দিয়ে হাত বাড়িয়ে বলল,"Hi!"
ছেলেটা চমকে গেল ৷
ছেলেটা বলল,"আপনে কেডা?"
আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলায় অ্যানায়া বুঝে উঠতে পারলো না ৷ ছেলেটাও এরকম উড়ে এসে জুড়ে বসা অজানা মানুষকে কি বলবে বুঝে উঠতে পারলো না ৷ তখন মেয়েটা ফোনের গুগল ট্রান্সলেটর ওপেন করে আরো একবার হাত বাড়িয়ে বলল "Hi"
ছেলেটা আবার বলল"কেডা আপনে?"
আর গুগল ট্রান্সলেটর মনে করলো "ভেড়া আপনি"
ট্রান্সলেশন টা শুনে অ্যানায়ার মেজাজ টা গেল বিগড়ে ৷ চলে যেতে নেবে, তখনই লোকটা বলল, "আরে আপা, ভেড়া কই নাই ৷ কইসি…… মানে বলেছি Who are you? অ্যানায়া পেছন ফিরে ছেলেটার দিকে তাকালো ৷
অ্যানায়া: (ইংরেজিতে) বাহ, তুমি ইংরেজী বলতে পারো?
ছেলেটা:(ইংরেজিতে) অনেকটাই পারি ৷ আপনি কে?
অ্যানায়া: আমি অ্যনায়া ৷ আমিও অনেকটা বাংলা পারি but তুমি first এ যে কথাটা বললে, সেটা বুঝেছিলাম না৷
ছেলেটা: আঞ্চলিক ভাষায় কইসি……মানে বলেছিলাম তো, তাই বুঝতে পারেন নাই ৷
অ্যানায়া: নাম কি?
ছেলেটা: আসলাম ৷
অ্যানায়া: চলো একটা deal করি ৷
আসলাম: ঢিল মারবেন, না না, আমি ভালো ছেলে, ঢিল মারি না ৷
অ্যানায়া: opss, that's not ঢিল ৷ আমি deal বলেছি, মানে চুক্তি ৷
আসলাম: কীসের চুক্তি?
অ্যনায়া: আমি আর তুমি daily বাংলায় and English এ Conversation মানে কথাবার্তা বলবো ৷ এতে both of us বাংলায় আর English এ expert হয়ে যাবো ৷
আসলাম: সত্যি শিখাইবেন?
অ্যানায়া: সত্যি সত্যি সত্যি ৷ চলো, আজ গল্প শুরু করি ৷
ওরা অনেক্ষণ কথা বলল ৷ ঈদের দিন দেখা না হলেও তার পরদিন থেকে আবার তাদের কথা বলা শুরু হয় ৷ রাতুল সকালে বাসায় থাকে না ৷ ক্লাবে থাকে ৷ যার জন্য পুরো সকালটা আসলামের সাথে কথা বলার সুযোগ পায় ৷ এভাবে ৯ দিন কেটে যায় ৷ দুজনেই একে অপরের ভাষা ভালো ভাবে আয়ত্ত করতে শিখে ফেলে ৷ একদিন রাতুলের মা ছাদে কাপড় নাড়তে গিয়ে দুজনকে গল্প করতে দেখে ৷ তারপর রাতুলের মা রাতুল কে সব বলে দেয় ৷
ক্যামব্রিজ ফেরার মাত্র তিন দিন বাকি ৷ এতদিন অনেক ভালোভাবে বাংলা শিখে যায় অ্যানায়া৷ আসলামও অনেক ভালোভাবে ইংরেজী শিখে যায় ৷ সেদিনও দুজন একসাথে কথা বলছিল ৷ রাতুল সেদিন ইচ্ছে করে ক্লাবে যায়নি কারণ সে অ্যানায়ার নতুন সঙ্গী কে দেখতে চায় ৷ অথচ সে অ্যানায়াকে বলেছে সে ক্লাবে যাচ্ছে ৷
কথা বলার মাঝে হঠাৎ হাজির হয় রাতুল ৷ রাতুলকে দেখে অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে যায় অ্যানায়া ও আসলাম ৷
অ্যানায়া: (ইংরেজীতে) তুমি? ক্লাবে যাও নি?
রাতুল: (ইংরেজীতে) না ৷
অ্যানায়া: (ইংরেজীতে) তুমি যে বললে ক্লাবে গেছ?
রাতুল:(ইংরেজীতে) মিথ্যে বলেছি ৷
আসলাম তখন অ্যানায়াকে কানে কানে বলল,
আসলাম : আপু এটাই সুযোগ ৷ বাংলায় কথা বলে ভাইয়াকে সারপ্রাইজড করুন ৷
অ্যানায়া: এখনই?
আসলাম : হ্যা, এখনই ৷
অ্যানায়া: কী বলে শুরু করবো?
আসলাম: আমি বলছি ৷
আসলাম তখন অ্যানায়াকে কানে কানে বলল ৷ ওরা ফিসফিসিয়ে কথা বলায় রাতুল কিছুই শোনেনি ৷
রাতুল: এই, তোমরা ফিস ফিস করে কী বলছো?
অ্যানায়া কিছু না বলে রাতুলের কাছে এলো ৷
অ্যানায়া: ও রাতুল, তুই একটা হারামজাদা ৷
পেছন থেকে হাসতে লাগলো আসলাম ৷
রাতুল: ছি! এসব কী বলছো?
অ্যানায়া: কেন, এটার মানে কী? (আসলামকে) মানে কী রে?
রাতুল: এসব বস্তির ছেলেদের কাছে এসব শিখছো তুমি? এটা একটা বাংলা গালি ৷
অ্যানায়া:(ইয়ার্কি করে আসলামকে ) ওরে বদমাইশ তুই আমাকে এই শিখালি ৷
আসলাম: মজা করলাম আপু ৷ এবার আপনি মন খুলে কথা বলুন ৷
অ্যানায়া: (রাতুল কে) যা হোক ৷ আমি তোমাকে বাংলায় কথা বলে সারপ্রাইজড করতে চেয়েছিলাম ৷ তাই আসলামের কাছে শিখলাম ৷
রাতুল: তাই বলে এসব বস্তির ছেলের কাছ থেকে শেখা লাগবে?
অ্যানায়া : আরে, তুমি বারবার ওকে বস্তির ছেলে বলছো কেন? কখনো এদের কথা ভেবেছো? কখনও এদের উপকার করেছো?
রাতুল কিছু বলল না ৷ কেবল আসলামের হাত ধরে বলল "চল আমার সাথে"
অ্যানায়া:(ইংরেজীতে) তুমি আসলাম কে কোথায় নিয়ে যাচ্ছ?
রাতুল: (ইংরেজীতে)বেচারার জামা কাপড় পুড়োনো হয়ে গেছে ৷ ও কে নিয়ে শপিংয়ে যাই ৷
অ্যানায়া: (ইংরেজীতে)আমিও যাই? ওকে তো ইংরেজী শেখাতে হবে ৷
রাতুল: (ইংরেজীতে) শেখাবে, তবে এখন না ৷ বাসায় যাও ৷ মা তোমার জন্য অপেক্ষা করছেন ৷
রাতুল চলে গেলো ৷ অ্যানায়ার মনটা কেমন যেন করছিলো ৷ তাই সে বাসায় না যেয়ে রাতুলের পিছু নিতে লাগলো ৷ রাতুল হঠাৎ আসলামকে নিয়ে ঢুকে পড়লো নির্জন গলিতে ৷ হঠাৎ রাতুল আসলামের গলা ধরে ওর পিঠ দেয়ালের সাথে আটকালো ৷ অ্যানায়া গলির মুখ থেকে সব দেখছিলো ৷
আসলাম: কী করছেন ভাইয়া?
রাতুল: তুই ইংরেজী শিখবি?
আসলাম: অনেকটাই শিখসি ৷ আর একটু শিখলেই হয়ে যাবে ৷
রাতুল: তোকে আমি ভালো টিউটর দেবো ৷ কিন্তু তুই অ্যানায়ার কাছে যাবি না ৷
আসলাম: ক্যান ভাইয়া? অ্যানায়া আপুর কাছে শিখলে কী হয়?
রাতুল: চুপ ৷ খালি মেয়েদের কাছ থেকে শেখা? কয়েকদিন পরে তো বিয়েও করে ফেলবি ৷
আসলাম: ছি ভাইয়া, এইসব কী বলতেসেন আপনি?
রাতুল: শোন, অ্যানায়ার টাকা পয়সা আমি চাই ৷ ওকে আমি বিয়ে করবো শুধু এই কারণেই ৷ তুই মাঝখানে বাঁধা হয়ে আসিস না ৷
আসলাম: ছি! আপনে এত খারাপ? আমি এখনই অ্যানায়া আপুরে বলবো সব ৷
আসলাম চলে আসতে চায় কিন্তু রাতুল বাঁধা দেয় ৷ এক পর্যায়ে রাতুল তার পকেট থেকে ছুরি বের করে ঢুকিয়ে দেয় আসলামের হৃদপিন্ড বরাবর ৷ আসলামের নিথর দেহ লুটিয়ে পড়লো মাটির ওপর ৷ অ্যানায়া নিজেকে সামলাতে না পেরে কেঁদেই ফেললো ৷ গলি এবং এর আশপাশ টা এতটাই নির্জন, অ্যানায়া যে কারো কাছে সাহায্য চাবে তারও সুযোগ নেই ৷
হঠাৎ থেমে যায় অ্যানায়া ৷ তাকিয়ে দেখলো রিজভিও একদৃষ্টিতে মাটির দিকে তাকিয়ে আছে ৷ হঠাৎ রিজভি অ্যানায়ার দিকে তাকালো ৷
রিজভি : থামলেন কেন?
অ্যানায়া: তারপর আমি বাসায় এসে দেখি আন্টিও আমার লাগেজ আটকে রেখেছে ৷ ভাগ্য ভালো ছিলো পাসপোর্ট ভিসা আর টিকিট আমার সোয়েটারের পকেটে ছিলো ৷ সেগুলো আর কিছু জামাকাপড় এই কাপড়ে বেধেঁ নিয়ে এসেছি ৷
ঠিক ওই সময় ট্রেন এলো ৷
রিজভি: ট্রেন এসেছে ৷ চলুন ৷
অ্যানায়া: আমি তো বিমানে যাবো ৷
রিজভি: তাহলে আপনি এখানে কেন বসে আছেন?
অ্যানায়া: যাতে ওরা আমাকে খুজে না পায় ৷ খুজলে ওরা এয়ারপোর্টে খুজবে ৷
রিজভি: আপনি আপনার মাতৃভাষা ইংরেজিকে ভালোবাসেন না?
অ্যানায়া: বাসি তো ৷ অনেক ভালোবাসি ৷
রিজভি: তাহলে বাংলা শিখলেন কেন?
অ্যানায়া: ওই যে বললাম শয়তান রাতুলটাকে ভালোবেসে ৷ বাংলাতো শিখলাম ৷ তার সাথে আরও চিনলাম কিছু মানুষকে যারা অন্য মানুষ আর নিজের মাতৃভাষাকে মূল্যায়ন করে না ৷
রিজভি : আচ্ছা আমিও তো বাংলার মাঝে অনেক ইংরেজী বলি ৷ তবে আমিও কি ভাষায় অবমূল্যায়ন করি?
অ্যানায়া: দেখুন, ইংরেজী আন্তর্জাতিক ভাষা ৷ এ ভাষায় কথা বলতে বলতে অন্য মানুষরা এমন ভাবে অভ্যস্থ হয়ে গেছে, ওই word গুলো ইংরেজীতে না বলে নিজের ভাষায় বললে অদ্ভুত লাগে ৷ তাই আপনি বলতেই পারেন এতে অস্বাভাবিকতার কিছু নেই ৷ তবে আপনি আপনার মাতৃভাষার অবমূল্যায়ন করবেন না এবং যারা ইংরেজী বলতে পারে না, তাদের নিয়ে ইয়ার্কি করবেন না ৷
রিজভি আর কিছু বললো না ৷
অ্যানায়া: আপনার ট্রেন ছেড়ে দেবে তো ৷
রিজভি: ও হ্যা আসি ৷ সাবধানে থাকবেন ৷
অ্যানায়া কিছু বলল না ৷ রিজভি ব্যাগ নিয়ে চার কদম এগোতেই অ্যানায়া বলে উঠলো অ্যানায়া: ইংল্যান্ড ফিরে ও কে খুব মিস করবো ৷
রিজভি পেছন ফিরে জানতে চাইলো
রিজভি: কাকে?
অ্যানায়া: বাংলাকে…………
(সমাপ্ত)