0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

বাঁশঝাড়

ভুতদ্ভুত(পর্ব-৪)
বাঁশ ঝাড়
সেবার আমি ভার্সিটি থেকে বাড়ি ফিরছিলাম । কিছু ঝামেলার কারণে আমার ফিরতে মাঝরাত হয়ে গিয়েছিলো । এতো রাতে বাসস্ট্যান্ড থেকে বাসায় ফেরার মতো কোনো যানবাহন খুঁজে পাওয়া যায় না । তাই পায়ে হেঁটেই রওনা হলাম । বলে রাখা ভালো, আমাদের বাড়ির দিকে যাবার পথে মাঝে একটা ১৫ মিনিটের লম্বা রাস্তা পাওয়া যায়, যেটার দুধারে শুধুই বাঁশঝাড় । কথিত আছে, সেই পথ ধরে এতো রাতে কেউ যাওয়া আসা করে না । যাই হোক, আমি ভেবেছিলাম, কুসংস্কার । এগুলো কিছু হয় না । কিন্তু আমি ভাবতেও পারিনি, আমি এরপর থেকে সেই পথ ধরে দিনের বেলায়ও একা হাটার সাহস হারাবো ।
হাঁটতে হাঁটতে তবু খুঁজলাম কিছু যদি পাওয়া যায় বাসায় ফেরার মতোন কিন্তু পেলাম না । অবশেষে সেই বাঁশঝাড়ের পথটা এলো । নির্জন, সুনসান । চারিপাশে আর কোন আওয়াজ নেই ঝিঝি পোকার আওয়াজ ছাড়া । মাথা ওপর চাঁদ ছাড়া আর কোন আলো আসেপাসে নেই । ফ্ল্যাশ লাইটের আলো জালাবার ইচ্ছা থাকলেও পারলাম না । কারণ মোবাইলের চার্জ নেই । আমার প্রচুর একা একা লাগা শুরু হলো । মনে হলো সাথে যদি কেউ থাকতো, তাহলে ভালোই হতো । এমন সময় কে যেনো বলে উঠলো, “আরে ভাই! ভালো আছেন?” আমি পাশে তাকিয়ে দেখলাম, একজন মানুষ । আবছা অন্ধকারে যদিও তার চেহারা ঠিকমতো বুঝতে পারলাম না, কিন্তু ভালো লাগলো লোকটার সঙ্গ পেয়ে । লোকটাকে জিজ্ঞেস করলাম, “এইতো ভাই, আলহামদুলিল্লাহ ভালো । আপনি?” লোকটা বলল, “এইতো ভাই ভালো ।” এরপর লোকটার সাথে নানা কথাবার্তা হলো । বেশিরভাগই উনি আমার কাছ থেকেই শুনলেন । কিন্তু উনি আমার কথার যে জবাব গুলো দিলেন, সেগুলো অস্পষ্ট । যেমন উনার পরিবারে কে আছে জিজ্ঞেস করলে বলেন, “আছে যারা থাকে ।” কিংবা যদি জিজ্ঞেস করি আপনার বাড়ি কই, লোকটা বলে “এইতো আশেপাশেই ।” এক পর্যায়ে লোকটা একটা গল্প বলা শুরু করে । গল্পটা এমন, যে ওই লোক একজনকে ভালোবাসতো কিন্তু সে এই লোকটাকে ভালোবাসতো না, ভালোবাসার অভিনয় করতো । এক সময় সেই মেয়েটা আরেকজনের সাথে চলে যায় আর এই লোকটা হঠাৎ ভেঙ্গে পড়ে । এই গল্প শেষে উনি আমার রাস্তার পাশে দুটো ক্রস আকারের বাশে দিকে তাকাতে বললেন । তাকিয়ে দেখলাম, একটা কবর । এই কবর আগেও দেখেছি কিন্তু জানতাম না কার । লোকটা বললেন, “ওটা আমার কবর, মেয়েটাকে না পেয়ে উনি রেল লাইনে গলা দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন ।” আমি হতবাক! একবার ভাবলাম উনি ইয়ার্কি করছেন কিন্তু পড়ে তাকিয়ে দেখি, উনার পা মাটিতে নেই, উনি ভাসছেন । গলা থেকে উনার মাথা আলাদা হয়ে গেলো । তারপর উনি উড়তে উড়তে কবরে ঢুকে গেলেন । আমি আর নিজেকে স্থির রাখতে পারিনি, জ্ঞান হারিয়ে পড়ে গিয়েছিলাম ।
জ্ঞান ফিরলে আমি নিজেকে বাসায় আবিষ্কার করি । আমাদের মসজিদের ইমাম আমাকে দেখে বাসায় দিয়ে যায় । আমি কারও সাথে শেয়ার করি না বিষয়টা, সবাই আমাকে পাগল ভাবতে পারে । কিন্তু এরপর থেকে দিনের বেলায়ও আমি একা ওই বাঁশঝাড়ের পথটায় যাই নি আর ওই কবরটা দেখলে আজও আমার গা শিউরে ওঠে ।