0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

পরিচয় ২৭৫


পরিচয়(পর্ব-২৭৫)

 

ইনস্পেক্টর মুরশিদ জিজ্ঞেস করলো, “কেন?” আবির বলল, “বলবো, তবে আগে এটা করুন! ও সাহস করে এলো কেন সেটা জানাটাও দরকার!”

পরক্ষণেই আবির আর ইনস্পেক্টর মুরশিদ এগিয়ে যেতে লাগলো রায়হান, কলিমা আর রফিকের দিকে । নিশানের কাছে কলিমা এগিয়ে এসে জড়িয়ে ধরে চুমু খেয়ে বলল, “যাইক! আলহামদুলিল্লাহ! আল্লাহ তোমারে বাচাইছে!” নিশান বলল, “হ্যাঁ! ঠিক বলেছেন আপু!” আবির রায়হানের কাছে গেলো, সাথে ইনস্পেক্টর মুরশিদও । রায়হানের পাশেই ছিল রফিক । রফিক কি যেন চিন্তা করছিলো আর আশেপাশে ভ্রু কুঁচকে কি যেন দেখছিল । হুট করে এরই মধ্যে হঠাৎ ইনস্পেক্টর মুরশিদ রফিককে ধরে হাতে হাতখরা পড়িয়ে দিলো । রফিক বলে উঠলো, “আরে! কি করতাছেন! আমারে ধরেন ক্যান!” রায়হানও অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো, “আরে! আপনে ওরে অ্যারেস্ট করলেন ক্যান! আবির! তুই কিছু ক!” আবির রায়হানের কথার জবাব না দিয়ে রফিককে বলল, “হুট করে একজন অটো ড্রাইভার বাস ড্রাইভার হয়ে গেলো, আবার হুট করে বাস চালানো ছেড়ে বাজারে ব্যাবসা করা শুরু করলো? কারণটা কি?” রফিক একটু রাগ দেখিয়ে বলল, “ক্যান? হুট কইরা ছাইড়া দেয়া কি দোষের নাকি! এইগুলার মানে কি!” ইনস্পেক্টর মুরশিদ বলল, “আবির, আপনি প্লিজ বলেই দিন কি হয়েছে? কেন আপনি ওকে গ্রেফতার করতে বললেন?” কথা শুনে রায়হান বলল, “আবির! তুই কইছোস ওরে গ্রেফতার করতে!” আবির রায়হানকে জিজ্ঞেস করলো, “আচ্ছা ভাই, তুমি-ই বলো, তুমি কি কোনদিন একে বাস চালাতে দেখেছো?” রায়হান বলল, “না, ক্যান?” আবির বলল, “এই লোকটা বাস চালাত না, এই লোকটাও যে তিনজনকে একটু আগে গ্রেফতার করে পুলিশ নিয়ে গেছে, তাদের মতো একজন ছিল । তবে কাজটা ছিল ভিন্ন । এই রফিক লোকটা বাচ্চা কাচ্চা মাইক্রোতে করে নিয়ে আসতো ।” রফিক বলে উঠলো, “মিছা কথা! এইসবের কোন প্রমাণ তোর কাছে আছে! কুত্তার বাচ্চা! ভালো ভাবছিলাম তোরে!” আবির হালকা হাসলো, “থাঙ্ক ইউ, কিন্তু আফসোস, আমার পরিচয় নেই, আমার মা বাবাকে আমি চিনি না, তাই কুত্তার বাচ্চা বলে আমার মা বাবাকে গালি দেয়ার ব্যাপারটা আমাকে তেমন কষ্ট দিতে পারলো না ।” ইনস্পেক্টর মুরশিদ তখন বলল, “আবির, আপনি যা বলছেন, তা কি প্রমাণ করতে পারবেন?” আবির বলল, “দেখুন আমার মনে হয় যে তিন জনকে আপনি নিয়ে গেলেন প্রথমে, তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেই এর কথা বলে দেবে । আমি ভুল না হলে ওদের কি হাল হয়েছে তা দেখতেই রফিক ভাই এসেছে, নয়তো আমার সাথে আসতে চাইলো না, এখন আসলো, কেন?” রায়হান বলল, “হ! আমিও এইডাই ভাবতেছিলাম!” আবির বলল, “এবার জিজ্ঞেস করতে পারেন আমি কি করে জানলাম, তাইতো? এখানে আসার আগে আমার গাড়ি নষ্ট হয়েছিলো । সেটা ঠিক করাতে যে গ্যারেজে গিয়েছিলাম, তাকে এখানে আসার কারণ বলতেই সে আমাকে বলল তার দোকানেও আগে এই চক্রের একজন গাড়ি সারাতে আসতো । তার নাম রফিক ।” রফিক বলে উঠলো, “দুনিয়াতে কি রফিক নামে শুধু আমিই আছি নাকি! আরও ম্যালা মানুষ আছে! আমারেই ক্যান মনে হইলো তোমার?” আবির বলল, “হুম, সেটা শুরুতে যে তিনজনকে ধরা হয়েছে তাদের জিজ্ঞেস করলেই হবে!” এরপর ইনস্পেক্টর মুরশিদ রফিককে একজন কনস্টেবলের হাতে দিয়ে বলল, “একে গাড়িতে তোলো আর থানায় নিয়ে যাও ।” রফিক অনেক অনুনয় বিনয় করলো তখন “আমারে মাফ কইরা দেন! আমি তো এহন ভালো হইয়া গেছি…………!” কিন্তু তার কথার কোন পাত্তা কেউ দিলো না । ইনস্পেক্টর মুরশিদ তখন আবিরকে বলল, “অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে! আমরা সব বাচ্চাদের নিয়ে যাচ্ছি, ওদের বাসায় পৌঁছে দেবো ।” আবির বলল, “হ্যাঁ কিন্তু ওই আয়রা মেয়েটাকে রাখুন, ওকে আমি নিয়ে যাবো । আসলে ওর বাবাকে আমি কথা দিয়েছি ।” মুরশিদ বলল, “ঠিক আছে!” তারপর বিদায় নিয়ে পুলিশ সেখান থেকে চলে গেলো । আয়রা আর নিশানও বাকি বাচ্চাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে নিলো । সেখানে রইলো শুধু আবির, আয়রা, কলিমা, নিশান, রায়হান । কলিমা বলল, “আবির, এহন বাড়িত চল, এহনি তোমাগো যাইতে দিমু না!” রায়হান বলল, “হ! আরও খুশি হমু রাইতডা যদি এইহানে থাকো!” আবির বলল, “অবশ্যই! এখন তো চিন্তার কোন কারণ নেই, তবে রাত থাকা হবে না । রাতেই বেড়িয়ে পড়ব, আসলে বাসায়ও সবাই চিন্তা করছে তো ।” এরপর সবাই চলে গেলো রায়হানের বাসার দিকে । বাজার থেকে গরুর মাংস, মুরগীর মাংস, পোলাও সব আনল রায়হান, রান্না করে খাওয়ালো কলিমা । আবির একবার জিজ্ঞেস করলো, “ভাই, ভাবিকে দেখছি না যে ।” রায়হান বানিয়ে বানিয়ে বলল, “না, বহুদিন ধইরা ওর বাপের বাড়ি যায় না তো, তাই একটু গেছে আরকি ।” বহুদিন পর খাওয়া দাওয়া করে বেশ ভালো লাগলো নিশান আর আয়রার । আয়রা বলল, “বাহ! গ্রামের বাড়ির মাটির চুলোর রান্না কি যে স্বাদ!” নিশান বলল, “হ্যাঁ! ঠিক বলেছ, আমরা শহরের মানুষ এরকম স্বাদ থেকে বঞ্চিত!”

খাওয়া দাওয়া শেষে বেরোনোর পালা । গাড়ির দিকে যেতে যেতে আবির বলল, “ভাই, কি যে ভালো লাগলো, তোমাদের এখানে এসে! বলে বোঝাতে পারবো না ।” নিশান বলল, “আমি কিন্তু প্রায়ই আসবো এই এলাকায়!” রায়হান বলল, “আরে! এইডা আবার কওয়া লাগে, যহন মন চাবে চইলা আসবা!” আয়রা বলল, “আমারও খুব ভালো লেগেছে এলাকাটা!” কলিমা বলল, “তুমিও চইলা আসবা! তোমরা দুইজনেই আমাগোরেও সন্তান!” গাড়ির কাছে আসতেই দেখা মিলল সেই পাগলের । গাড়ির ভেতরে তাকিয়ে কি যেন দেখছে আর বলছে, “ল!.........মে!.........ল…………মে…………কাট……………কাট…………!”

 

আগামী পর্বেঃ

আবির নিশান আর আয়রাকে নিয়ে ঘরে ঢুকতেই চয়নিকা উঠে দাঁড়িয়ে খুশির সাথে ডেকে উঠলো, “নিশান! আমার বাচ্চা!” বলে দুই হাত বাড়িয়ে দিলো । নিশান যেই মায়ের কাছে এগোতে যাবে মায়ের কোলে ওঠার জন্য, এমন সময় আবির নিশানের হাত ধরে নিশানকে আটকালো । তারপর একরাশ অভিমান নিয়ে আবির চয়নিকার দিকে তাকিয়ে বলল, “একবার বলো সেই কথাটা, যেটা আমাকে সেদিন বলেছিলে, পারবে বলতে