0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

পরিচয় ২৮৫


পরিচয়(পর্ব-২৮৫)(সিজন-১০)

বলে আবির গামছা নিয়ে বাথরুমে গেলো ।
আবিরের গোসল শেষে অয়ন গেলো, আর অয়নের গোসল শেষে বের হতে না হতেই অপু এসে পড়লো । হালকা রাগ নিয়ে বলল, “কি কাহিনী কি!” আবির শুয়ে ছিল উঠে বসে জিজ্ঞেস করলো, “কাহিনী! কি কাহিনী!” অপু বলল, “দুজনের বউ আমার কাছে কল দিয়ে স্বামীর নামে বিচার দিচ্ছে!” অয়ন বলে উঠলো, “আমার গার্লফ্রেন্ড ।” অপু বলল, “একই কথা, একদিন তো বউ হবে ।” অয়ন বলল, “আবির ভাই হইতে দিলে তো!” আবির তখন অপুর কাধে হাত রেখে বলল, “শোন দোস্ত! বড় বড় শহরে এসব ছোটো ছোটো কাহিনী হতেই থাকে!”
“সালমান খান আবির হইয়া ডাইলোগ দেস শাহরুখ খানের?” বলল অপু ।
“আচ্ছা, বাদ দে, এবার তোকে ছোটো এই হোটেলের বড় একটা কাহিনী দেখাই!” বলে সেই তালাটা অপুকে দেখাল আবির ।
“কি এটা?” জিজ্ঞেস করলো অপু ।
“সকালের খাওয়া দাওয়া করে এসে দেখি, তালার যেদিকে ছিল, তার ওপর পাশে চলে গেছে ।” বলল আবির ।
“তার মানে?” জিজ্ঞেস করলো অপু ।
“তার মানে, আমরা বাইরে যাবার পর কেউ এসেছিলো এই ঘরে আমরা কি তদন্ত করছি তা দেখতে ।” বলল আবির ।
“হোয়াট! এ তো সাঙ্ঘাতিক কান্ড!” বলল অপু ।
আবির বলল, “সাংঘাতিক তো অবশ্যই, সাথে প্রশ্নসূচকও বটে । কে করতে পারে এটা?” অপু বলল, “দুজনের হাতেই এ ক্ষমতা আছে! হয় এই হোটেলের মালিক, নয়তো ওয়ি রিও ফারনেন্দো!” আবির বলল, “আফসোসের ব্যাপার এই, রিও হিরো নাকি ভিলেন সেটা বোঝাই কষ্টকর ।” অপু তখন বলল, “ভালো কথা! এখানকার ইনস্পেক্টর রাদিব আমাকে জানালেন, উনারা রিওকে খুজেছেন, কিন্তু রিওকে কোথাও পাওয়া যায় নি । আর রিও যেখান থেকে এসেছে…….” অপুর কথার এ পর্যায়ে আসতে না আসতেই আবির বলে উঠলো, “৯২৫ নং অ্যাপার্টমেন্ট, জনস স্ট্রিট, সান ফ্রান্সিস্কো, ইউএস ।” অপু জিজ্ঞেস করলো, “তুই জানলি কি করে?” আবির বলল, “আমি খোঁজ নিয়েছি ।” অপু বলল, “ও । ওইখানে হোটেলের মালিকের এক আত্মীয় আছেন, উনি সেখানে খোঁজ নিয়ে দেখেছেন, রিও সেখানেও ফেরেনি ।” আবির বলল, “হুম । বুঝলাম ।” বলে আবির কিছুক্ষণ ঘরের মধ্যে পায়চারী করলো । হঠাৎ আবিরের মাথায় একটা খেয়াল এলো, “আচ্ছা! আমরা তো একটা ঘটনা ভুলেই গেছি!” অপু জিজ্ঞেস করলো, “কি?” আবির বলল, “এক লোক যে ক্রেডিট কার্ড দরজার নিচে ঢুকিয়ে ফেলেছিলো, সেটা বের করতে হোটেল থেকে চাবি নিয়েছিলো! মনে আছে!” অপু মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লো । বলে উঠলো, “আমার একটু যদি ওই ব্যাপার মনে থাকে!” আবির বলল, ”খোঁজ কর! ওই লোকের বাড়ি কই!” অপু, “হুম!” বলে নিচে চলে গেলো । সেই লোকের খোঁজ পাওয়া গেলো লোকের বাড়ি কক্সবাজারেই । সৈকত নগরী নামক এক এলাকায় লিঙ্ক রোডে অবস্থিত একটা শপিং কমপ্লেক্সের পেছনের । আবির সিদ্ধান্ত নিলো, সেখানে যাবে ওরা ।
পরদিন সকাল হতেই ওরা রওনা হয়ে গেলো । তালা সেটাই লাগিয়ে গেলো আবির । আর এবার ওরা আরেকটা কাজও করলো । ভেতরে একটা মোবাইল ভিডিও রেকর্ডার অন করে আড়ালে এমনভাবে রেখে গেলো, যেন দরজার খুলতেই তাকে দেখা যায়, যে ভেতরে ঢোকে । প্রায় দেড় ঘন্টা লাগলো সৈকতনগরী পৌঁছতে । শপিং কমপ্লেক্সের পাশগলি দিয়ে পেছনে একটা বিল্ডিং-এর দোতলায় বাড়ি সে লোকের । নাম, অলোক । লোকটা নিম্ন মধ্যবিত্তও । ঘরে মাত্র ২টা রুম তার । একটা ডাইনিং আছে অবশ্য কিন্তু তাও খুব-ই ছোটো । এই দু ঘরেই স্থান পেয়েছে অল্প কটি ফার্নিচার । অলোক লোকটা আবির, অয়ন আর অপুকে স্বাগত করে নিলো । ওরা বাইরের রুমে বসলো । অলোকের পাশে দাঁড়িয়ে ছিল অলোকের ৮ বছর বয়সের ছেলে ।
“কিছু মনে করবেন না, আপনার পারিবারিক অবস্থা তো ভালো দেখছি না, আপনি সেই হোটেলে কি করতে গিয়েছিলেন?” জিজ্ঞেস করলো আবির ।
“আমি একটা ছোটো চাকরি করি স্যার! সেই চাকরির কাজে-ই আমাকে সেখানে পাঠানো হয়েছিলো । হোটেলের টাকাও ওরাই দিয়েছে ।” হালকা হেসে বলল লোকটা ।
“এবার আপনার ক্রেডিট কার্ড পড়ে যাবার কাহিনীটা জানতে পারি কি?” জিজ্ঞেস করলো আবির ।
“রুম থেকে বেরোচ্ছিলাম, তখন হাত থেকে পড়ে ক্রেডিট কার্ড দরজার নিচে চলে গেলো ।” বলল অলোক ।
“ভুল! কারণ ক্রেডিট কার্ড বেশ ভারী, সেটা উড়ে যাবারও কথা না । গড়িয়ে পড়া তো দুরের কথা । আর আমিও এখন একই হোটেলে আছি । আমি ট্রাই করে দেখেছি, দরজার নিচে এতোটাও ফাঁকা নেই । ক্রেডিট কার্ড জোড় করে ঢোকাতে হয় । এবার বলুন তো, কেন আপনি ইচ্ছে করে ক্রেডিট কার্ড ঢুকিয়েছিলেন?” অলোক হালকা লজ্জা পেলো । হালকা হাসলো । তারপর ছেলে নামিয়ে বলল, “যাও তো আব্বু! তুমি তোমার আম্মুর কাছে যাও ।” অলোকের ছেলে অন্য রুমে চলে গেলো । তারপর অলোক বলল, “আমি ওই লোক উধাও হওয়ার আগের দিনই ঘুমাইতেছিলাম! তখন ওই পাশের ছেলেটার মানে রিও-র ফোন কল শুনে ঘুম ভেঙ্গে গেলো । তারপর বারান্দায় গিয়ে একটু শুনবার আগ্রহ হল, জানেন-ই তো, নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি মানুষের আকর্ষণ বেশি! ওই লোক বলতেছিলো, ডায়মন্ডটা সাবধানে রাইখা দিলাম! নিয়া যাইস!” অপু আর অয়ন অবাক হয়ে গেলো । বলে উঠলো, “ডায়মন্ড!”

আগামী পর্বেঃ
কাদের মোল্লা তখন জিজ্ঞেস করলো, “বলছি কি, খাতা দেখার কারণটা একটু জানতে পারি?” আবির চশমা চোখে দিয়ে বলল, “আসলে একটা নাম হঠাৎ সন্দেহের তালিকায় এসেছে । দেখছি, সে নামটা এই হোটেলে এসেছিলো কিনা ।” কাদের মোল্লা তখন একটা অদ্ভুত প্রশ্ন করে বসলো । “কিছু যদি মনে না করেন, একটা কথা জিজ্ঞেস করি, আমি আপনার সন্দেহের তালিকায় আছি কি?” আবির কাদের মোল্লার দিকে তাকাল । কাদের মোল্লার চোখে মুখে একটা অজানা ভয়, আবিরের চেহারায় একটা সন্দেহের তীর । গম্ভীর মুখ আবিরের । তারপর একদম গম্ভীরভাবে বলল, “হ্যাঁ!”