0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

পরিচয় ২৮৩


পরিচয়(পর্ব-২৮৩)(সিজন-১০)

আবির বসলো । লোকটাকে আবির জিজ্ঞেস করল, “আপনার নামটা জানতে পারি?” লোকটার মুখে সবসময় হাসি লেগেই থাকে । সেই হাসি মাখা মুখে বলল, “আমার নাম একে মোল্লা, বড় করলে আবুল কাদের মোল্লা ।”
“আপনিই তো হোটেলে কেউ এলে তাদের রুম বুক, ঠিকানা ফোন নাম্বার রেখে দেয়া এসব কাজ করেন, তাই না?” জিজ্ঞেস করল আবির ।
“হ্যাঁ, শুরু থেকেই এ কাজ করছি আমি ।”
“রিও-কে কি আপনি দেখেছেন?”
“ওই বিদেশি ছেলেটা যখন এসেছিলো, তখন শুধু আমিই না, এখানে আরও যারা ছিল, মিস্ত্রী, কাজের লোক সবাই দেখছিল । ওই বিদেশি লোক দেখলে যা হয় আর কি ।”
“ও তো নিজের ঠিকানা লিখেছে, তাই না?”
“হ্যাঁ তো! লিখেছিলো তো!”
“সেই খাতাটা আমি একটু দেখতে পারি?”
“অবশ্যই!” বলে কাদের মোল্লা রেজিস্টারের খাতাটা আবিরকে দিলো । আবির খাতা দেখতে দেখতে একটা কাস্টোমার এলো হোটেলে থাকার জন্য । কাদের মোল্লা বলল, “একটু লাগতো যে খাতাটা!” আবির মোবাইল বের করে ছবি তুলে খাতা দিয়ে বলল, “আর লাগবে না এখন, আমি তাহলে আসি, আপনাকে আর ডিস্টার্ব না করি ।” বলে আবির উঠে গেল । লোকটা জবাবে কেবল, “আচ্ছা!” বলল ।
রুমে আসতে আসতে আবির খাতার তোলা ছবিটা দেখতে লাগলো । নাম্বার বাংলাদেশেরই দিয়েছে, তবে স্থায়ী ঠিকানাটা দিয়েছে ইউএসএ-এর সান ফ্রান্সিস্কোর জনস স্ট্রিটের ৯২৫ নাম্বার এপার্টমেন্ট । রুমে ঢুকে দেখলো, অপু রেডি হচ্ছে । ইউনিফর্ম না, সাধারণ পোশাকই পড়ছে, তবে রিভালবারটাও সাথে নিচ্ছে । আবির জিজ্ঞেস করল, “কিরে, কোথাও যাচ্ছিস?” অপু বলল, “হ্যাঁ, এখানকার থানায় একটু দেখা করে আসি ।” আবির জিজ্ঞেস করলো, “আমি কি এখন যেতে পারি?” অপু বলল, “মনে হয় এখন তোকে লাগবে, লাগলে আমি কল করে জানাবো । আর তাছাড়া অয়নও ঘরে একা!” বিছানায় শুয়ে শুয়ে মোবাইল চালাতে থাকা অয়ন বলল, “আমি ভয় পাই না! আমি একা থাকতে পারি!” আবির বলল, “গতকাল কে জানি ভয় পেয়ে প্যান্ট ছাড়াই রুমে আমার সামনে চলে এলো?” অয়ন হালকা বিরক্ত হয়ে বলল, “ভাই! তুমি আবার শুরু করলা!” আবির আর অপু হাসলো । অয়ন বিরক্ত হয়ে কানে ইয়ারফোন লাগিয়ে নিলো । আবির অপুকে বলল, “খাওয়া দাওয়া করেই বের হ, নাকি?” অপু বলল, “না সমস্যা নেই, ওখানে কোথাও খেয়ে নেবোনে । তোরা খাওয়া দাওয়া করে নিস ।” বলে বেরিয়ে গেলো ইন্সপেক্টর অপু । তারপর আবির অয়নের পাশে যেয়ে বসলো । কানের ইয়ারফোনটা খুলে দিল । অয়ন আবার বিরক্ত হয়ে বলল, “কি সমস্যা! একটু শান্তিতে থাকতে দিবা না নাকি!” আবির বলল, “চল, ঘুরে আসি!” অয়ন বলল, “তুমি যাও! আমার ইচ্ছা নাই!” আবির অয়নকে খেপিয়ে বলল, “হুম, তাই তো! মাইশা বললে ঠিকই যেতি!” অয়ন বলল, “তুমি মনে হয় আপু কিছু বললে করো না? আপুকে বলে দিয়েছি তুমি খালি ঘুমাচ্ছো এখানে এসে!” আবির গলা খাখরে ভ্রু-কুঁচকে হাল্কা তোতলাতে তোতলাতে বলল, “তু…তুই আবার ও…ওকে বলতে গেছিস ক…কেন?” অয়ন বলল, “হেহে, এইটুকুতেই ভয় পেয়ে গেলা!” আবির বলল, “আরে ধুর! আমি কেন ভয় পাবো! আমি ইনভেস্টিগেট করে কতো অপরাধী ধরে তাদের নিয়ে ডকুমেন্টারি বানালাম! আর তোর বোন কি এমন জিনিস! ওকে আমি ভয় পাই নাকি, উল্টে ওই আমাকে ভয় পায়!” এমন সময় আবিরের চোখ গেলো অয়নের মোবাইলের দিকে । ও রেকর্ড করছে কথাগুলো! আবির বলে উঠলো, “এই তুই কি করছিস রে!” অয়ন আবিরের থেকে দূরে সরে গেলো । তারপর কি যেন করে বলল, “ডান! তোমার কথাগুলো আপুকে হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিলাম ।” আবির বলল, “ওরে বদমাইশ! তুই তো খুব প্যাঁচ বাঁধাস!” অয়ন হেসে বলল, “হাহা! এটা আমার সাথে সেদিন ইয়ার্কি করার ফল!” আবির বলল, “দাড়া! তোর মাইশার দ্বারা তোকে একদিন মার খাওয়াতে হবে!” অয়ন হেসে বলল, “হেহ! মাইশার সাহস আছে নাকি! ওরে আমি তুলে আছার মারতে পারবো । আর আমি কোন দুঃখে ওকে ভয় পাবো? ও আমাকে ভয় পাবে! আমার সব কথা ওকে শুনতে হবে!” অয়নের কথা শেস হতেই আবির পেছনের পকেট থেকে মোবাইল বের করে কি যেন করে বলল, “কথাগুলো তোর মাইশাকে হোয়াটস অ্যাপে পাঠানো ডান!” অয়ন কিছুক্ষণ হ্যাঁ করে আবিরের দিকে তাকিয়ে রইল । তারপর বলল, “এইডা তুমি কি করলা!”
“জি স্যার, আমরা পুরো কক্সবাজারে খুজে দেখেছি, কিন্তু রিও ফারনেন্দো নামে কাউকেই পাইনি ।” পুলিশ স্টেশনে অপুকে বলল ইন্সপেক্টর রাদিব । অপু জিজ্ঞেস করলো, “ও কি হোটেলে কোন ফোন নাম্বার দিয়ে যায় নি?” রাদিব বলল, “দিয়েছেন স্যার, তবে সেটা বাংলাদেশী । সেটায় কল যায় নি । ঠিকানা পেয়েছি, হোটেলের মালিক আশিকুল হাসান সায়েমের এক আত্মীয় একই এলাকায় থাকেন, তার মাধ্যমে আমরা খোঁজ পেয়েছি, রিও বাড়ি ফেরেনি ।” অপু বলল, “ও কি পাসপোর্ট, ভিসা কিছুই রেখে যায় নি?” রাদিব বলল, “না, হয় যারা ওকে ধরে নিয়ে গেছে তারা এগুলোও নিয়ে গেছে ।“ অপু শুধু বলল, “হুম ।”

আগামী পর্বেঃ
রুমের কাছাকাছি আসার পর অয়ন যখনই তালা খুলতে যাবে, এমন সময় আবির অয়নকে বলল, “থাম!” অয়ন থেমে গেলো । তালাতে হাত-ও লাগায় নি অয়ন । আবির তখন তালাটা ভালো করে দেখে অয়নকে জিজ্ঞেস করলো, “কিছু ঘাপলা দেখতে পাচ্ছিস?” অয়ন জিজ্ঞেস করলো, “কিসের ঘাপলা?”