পরিচয়-২৮২
পরিচয়(পর্ব-২৮২)
আবির বলল, “নে বাবা, নালিশ জানালে জানাস, এবার চল, রাতের খাওয়াটা খেতে যাই ।”
রাতের খাবারটা সেরে ঘরে রুমে ফিরেই টয়লেটে গেলো অয়ন । কাজ সেরে যখন ফ্ল্যাশট্যাংক ছাড়ল তখন সে অবাক! কি ব্যাপার! ট্যাংকের মধ্য থেকে একটু আগে যে আওয়াজটা আসছিলো সেটা এখন নেই! এবারও পাত্তা দিল না সে । হয়তো কিছু আটকে ছিল, পানির চাপে পাইপ বেয়ে চলে গেছে ।
ভোর যখন ৪টা, তখন আবিরের ঘুম ভাঙল । আজানও দেয় নি এখনও । আবির বিছানা থেকে উঠলো । অয়ন আর অপু ঘুমোচ্ছে । তাই লাইট না জ্বালিয়ে মোবাইলের ফ্ল্যাশ লাইট জালালো । বারান্দায় গেলো সে । চারিদিকে যতদুর দেখা যায়, অন্ধকার । অনেক দূরে কোন সু-উচ্চ পাচতারা হোটেলের লোগো সমেত লাইট দেখা যাচ্ছে কেবল । বারান্দায় বালি জমেছে অয়নের প্যান্ট থেকে পড়া বালির মাধ্যমে । একটু হাটতেই বারান্দার অন্য প্রান্তে আরেকটা কাগজ পেলো আবির । এই কাগজের ওপর আবার কিছুটা বালিও আছে । আবির মনে মনে বলল, “গতকাল ওরা বাইরে যাবার সময় বারান্দায় তো কোন কাগজ দেখিনি! আর গতকাল কেবল ফাঁকা কাগজটাই ঢিল মেরে গেছে ওই লোকটা । এই কাগজটা আমি গতকাল দুপুরে আসার পর থেকে অয়ন বারান্দায় প্যান্ট চেঞ্জ করতে আসার আগের এই সময়টুকুতে দেয়া । নাহলে এই কাগজের ওপর বালি থাকতো না! গতকাল অন্ধকারে আমি হয়তো খেয়াল করিনি ।” বলে কাগজটা হাতে নিলো আবির । খুলে দেখল, এটা ফাঁকা নয়, এতে কিছু লেখা আছে । “আমি আপনাকে বিশ্বাস করি! আমি জানি আপনি সব ঠিক ঠাক করতে পারবেন! আপনার ওপর আমার পূর্ণ আস্থা রয়েছে! আর কিসের কথা বলছি, সেটাও আপনি বুঝতে পারবেন সময়ের সাথে সাথে । কারণ আপনি অনেক বুদ্ধিমান মানুষ ।” কথাগুলো বুঝলেও কথাগুলোর মানে বুঝলো না আবির । তবু কাগজটা সেই ফাঁকা কাগজের সাথে রেখে দিল । কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতেই ফজরের আজান শুনতে পেলো আবির । নামাজটা পড়ে নেয়াই যায় ।
সকাল ১০টার দিকে অয়নের যখন ঘুম ভাঙল, তখন অয়ন দেখল, ওর পাশে আবির নেই । মেঝেতে ইনস্পেক্টর অপু পুশ আর দিচ্ছে । অয়ন জিজ্ঞেস করলো, “আবির ভাই কই?” ইনস্পেক্টর অপু বলল, “কি জানি, কার সাথে যেন দেখা করতে গেছে ।”
“ও ।” বলল অয়ন । মোবাইলের নেট অন করলো । চয়নিকাকে অনলাইনে দেখে কল করলো । কল ধরতেই চয়নিকা বলল, “কিরে? কেমন মজা করছিস?”
“কেমন আর মজা, যেমন মজা করে, তেমন ।” বলল অয়ন ।
“ও, ঘুরতে যাস নি কোথাও?” জিজ্ঞেস করলো চয়নিকা ।
“হ্যাঁ, কিন্তু কেবল আমি আর অপু ভাই । আবির ভাই গতকাল সারা দুপুর ঘুমিয়েছে ।”
“ও! ওখানে যেয়েও ওর ঘুমাতে হবে! এতো ঘুম যে কোত্থেকে আসে ওর! ইনস্পেক্টর অপু ভাইও! ঘুম পাগলা একজনকে নিয়েছে কাজের জন্য!” হালকা রেগে বলল অপু । অপু পুশ আর শেষ করে সিট আপের জন্য রেডি হতে হতে ইয়ার্কি করে বলল, “ভাবি! আপনি নাই তো তাই! আপনি থাকলে তো আপনাকে দেখেই আবিরের ঘুম চলে যেতো!” চয়নিকা লজ্জা পেয়ে বলল, “হায়রে! কি যে বলেন না!”
“নিশান রাগ করে নি তো?” জিজ্ঞেস করলো অয়ন ।
“কিসের জন্য?”
“এই যে, কক্সবাজারে আসা!”
“আরে না রে পাগল! ও তো আরও মজায় আছি । প্রতিদিন বিরিয়ানি খাচ্ছে । আর কি বলছে শুনবি?”
“কি?”
“বলছে, বাপরে আর বাড়ি আসতে দেবে না! তাইলে সারাজীবন বিরিয়ানি খেতে পারবে!”
“হেহে! পাইছি! এই কথা আবির ভাইরে তো শিওর বলা লাগবে!” বলল অয়ন ।
“আরে না! বলিস না! অবশ্য তোরে না কইরা লাভ নাই, তুই শিওর বলবি । প্যাঁচ লাগানোই তো তোর কাজ! পেচগিবাজ!” বলল চয়নিকা ।
“খেতাব যখন পেয়েই গেলাম, বলা তো তখন লাগেই!”
“হইছে! থাম । কিসের গন্ধ আসতেছে! আল্লাহ! আম্র চুলায় বিরিয়ানি দেয়া! তোর সাথে কথা বলতে বলতে পুড়ে গেলো! রাখ!” বলে কল কেটে দিল চয়নিকা । অয়ন বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে অপুর দিকে তাকিয়ে বলল, “দেখেছেন! যাই হয়, সব আমার দোষ-ই হয়!” অপু হাফিয়ে গিয়ে মেঝেতে শুয়ে ছিল । জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিতে নিতেই বলল, “হ্যাঁ! আসলেই! তকে আমারশা ছাড়া কেউ বোঝে না ।”
“আমারশা মানে?” জিজ্ঞেস করলো অয়ন ।
“আমার মানে মাই, শা, মাইশা” বলে হেসে উঠলো অপু ।
“আপনিও আরেকজন! হুহ!” বলে ফ্রেশ হতে চলে গেলো ।
এদিকে আবির এসেছে হোটেলের রেজিস্টার রুমে । সেখানে যে লোক বসে আছে, সে আবিরকে দেখেই বলল, “আরে আরে স্যার! আছেন কেমন?” লোকটার বয়স ৪০ মতো হবে । চুল দাঁড়িতে পাকা হওয়ার ভাব ধরেছে । মোটামুটি চিকন, কিন্তু লোকটার এক চোখ নেই । “ভালো, আপনি কেমন আছেন?” বলল আবির । “ভালো ভালো! বসেন!” বলে একটা চেয়ার টেনে আবিরকে বসতে বলল । আবির বসলো ।
আগামী পর্বেঃ
রুমে ঢুকে দেখলো, অপু রেডি হচ্ছে । ইউনিফর্ম না, সাধারণ পোশাকই পড়ছে, তবে রিভালবারটাও সাথে নিচ্ছে । আবির জিজ্ঞেস করল, “কিরে, কোথাও যাচ্ছিস?” অপু বলল, “হ্যাঁ, এখানকার থানায় একটু দেখা করে আসি ।” আবির জিজ্ঞেস করলো, “আমি কি এখন যেতে পারি?” অপু বলল, “মনে হয় এখন তোকে লাগবে, লাগলে আমি কল করে জানাবো । আর তাছাড়া অয়নও ঘরে একা!”
আবির বলল, “নে বাবা, নালিশ জানালে জানাস, এবার চল, রাতের খাওয়াটা খেতে যাই ।”
রাতের খাবারটা সেরে ঘরে রুমে ফিরেই টয়লেটে গেলো অয়ন । কাজ সেরে যখন ফ্ল্যাশট্যাংক ছাড়ল তখন সে অবাক! কি ব্যাপার! ট্যাংকের মধ্য থেকে একটু আগে যে আওয়াজটা আসছিলো সেটা এখন নেই! এবারও পাত্তা দিল না সে । হয়তো কিছু আটকে ছিল, পানির চাপে পাইপ বেয়ে চলে গেছে ।
ভোর যখন ৪টা, তখন আবিরের ঘুম ভাঙল । আজানও দেয় নি এখনও । আবির বিছানা থেকে উঠলো । অয়ন আর অপু ঘুমোচ্ছে । তাই লাইট না জ্বালিয়ে মোবাইলের ফ্ল্যাশ লাইট জালালো । বারান্দায় গেলো সে । চারিদিকে যতদুর দেখা যায়, অন্ধকার । অনেক দূরে কোন সু-উচ্চ পাচতারা হোটেলের লোগো সমেত লাইট দেখা যাচ্ছে কেবল । বারান্দায় বালি জমেছে অয়নের প্যান্ট থেকে পড়া বালির মাধ্যমে । একটু হাটতেই বারান্দার অন্য প্রান্তে আরেকটা কাগজ পেলো আবির । এই কাগজের ওপর আবার কিছুটা বালিও আছে । আবির মনে মনে বলল, “গতকাল ওরা বাইরে যাবার সময় বারান্দায় তো কোন কাগজ দেখিনি! আর গতকাল কেবল ফাঁকা কাগজটাই ঢিল মেরে গেছে ওই লোকটা । এই কাগজটা আমি গতকাল দুপুরে আসার পর থেকে অয়ন বারান্দায় প্যান্ট চেঞ্জ করতে আসার আগের এই সময়টুকুতে দেয়া । নাহলে এই কাগজের ওপর বালি থাকতো না! গতকাল অন্ধকারে আমি হয়তো খেয়াল করিনি ।” বলে কাগজটা হাতে নিলো আবির । খুলে দেখল, এটা ফাঁকা নয়, এতে কিছু লেখা আছে । “আমি আপনাকে বিশ্বাস করি! আমি জানি আপনি সব ঠিক ঠাক করতে পারবেন! আপনার ওপর আমার পূর্ণ আস্থা রয়েছে! আর কিসের কথা বলছি, সেটাও আপনি বুঝতে পারবেন সময়ের সাথে সাথে । কারণ আপনি অনেক বুদ্ধিমান মানুষ ।” কথাগুলো বুঝলেও কথাগুলোর মানে বুঝলো না আবির । তবু কাগজটা সেই ফাঁকা কাগজের সাথে রেখে দিল । কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতেই ফজরের আজান শুনতে পেলো আবির । নামাজটা পড়ে নেয়াই যায় ।
সকাল ১০টার দিকে অয়নের যখন ঘুম ভাঙল, তখন অয়ন দেখল, ওর পাশে আবির নেই । মেঝেতে ইনস্পেক্টর অপু পুশ আর দিচ্ছে । অয়ন জিজ্ঞেস করলো, “আবির ভাই কই?” ইনস্পেক্টর অপু বলল, “কি জানি, কার সাথে যেন দেখা করতে গেছে ।”
“ও ।” বলল অয়ন । মোবাইলের নেট অন করলো । চয়নিকাকে অনলাইনে দেখে কল করলো । কল ধরতেই চয়নিকা বলল, “কিরে? কেমন মজা করছিস?”
“কেমন আর মজা, যেমন মজা করে, তেমন ।” বলল অয়ন ।
“ও, ঘুরতে যাস নি কোথাও?” জিজ্ঞেস করলো চয়নিকা ।
“হ্যাঁ, কিন্তু কেবল আমি আর অপু ভাই । আবির ভাই গতকাল সারা দুপুর ঘুমিয়েছে ।”
“ও! ওখানে যেয়েও ওর ঘুমাতে হবে! এতো ঘুম যে কোত্থেকে আসে ওর! ইনস্পেক্টর অপু ভাইও! ঘুম পাগলা একজনকে নিয়েছে কাজের জন্য!” হালকা রেগে বলল অপু । অপু পুশ আর শেষ করে সিট আপের জন্য রেডি হতে হতে ইয়ার্কি করে বলল, “ভাবি! আপনি নাই তো তাই! আপনি থাকলে তো আপনাকে দেখেই আবিরের ঘুম চলে যেতো!” চয়নিকা লজ্জা পেয়ে বলল, “হায়রে! কি যে বলেন না!”
“নিশান রাগ করে নি তো?” জিজ্ঞেস করলো অয়ন ।
“কিসের জন্য?”
“এই যে, কক্সবাজারে আসা!”
“আরে না রে পাগল! ও তো আরও মজায় আছি । প্রতিদিন বিরিয়ানি খাচ্ছে । আর কি বলছে শুনবি?”
“কি?”
“বলছে, বাপরে আর বাড়ি আসতে দেবে না! তাইলে সারাজীবন বিরিয়ানি খেতে পারবে!”
“হেহে! পাইছি! এই কথা আবির ভাইরে তো শিওর বলা লাগবে!” বলল অয়ন ।
“আরে না! বলিস না! অবশ্য তোরে না কইরা লাভ নাই, তুই শিওর বলবি । প্যাঁচ লাগানোই তো তোর কাজ! পেচগিবাজ!” বলল চয়নিকা ।
“খেতাব যখন পেয়েই গেলাম, বলা তো তখন লাগেই!”
“হইছে! থাম । কিসের গন্ধ আসতেছে! আল্লাহ! আম্র চুলায় বিরিয়ানি দেয়া! তোর সাথে কথা বলতে বলতে পুড়ে গেলো! রাখ!” বলে কল কেটে দিল চয়নিকা । অয়ন বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে অপুর দিকে তাকিয়ে বলল, “দেখেছেন! যাই হয়, সব আমার দোষ-ই হয়!” অপু হাফিয়ে গিয়ে মেঝেতে শুয়ে ছিল । জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিতে নিতেই বলল, “হ্যাঁ! আসলেই! তকে আমারশা ছাড়া কেউ বোঝে না ।”
“আমারশা মানে?” জিজ্ঞেস করলো অয়ন ।
“আমার মানে মাই, শা, মাইশা” বলে হেসে উঠলো অপু ।
“আপনিও আরেকজন! হুহ!” বলে ফ্রেশ হতে চলে গেলো ।
এদিকে আবির এসেছে হোটেলের রেজিস্টার রুমে । সেখানে যে লোক বসে আছে, সে আবিরকে দেখেই বলল, “আরে আরে স্যার! আছেন কেমন?” লোকটার বয়স ৪০ মতো হবে । চুল দাঁড়িতে পাকা হওয়ার ভাব ধরেছে । মোটামুটি চিকন, কিন্তু লোকটার এক চোখ নেই । “ভালো, আপনি কেমন আছেন?” বলল আবির । “ভালো ভালো! বসেন!” বলে একটা চেয়ার টেনে আবিরকে বসতে বলল । আবির বসলো ।
আগামী পর্বেঃ
রুমে ঢুকে দেখলো, অপু রেডি হচ্ছে । ইউনিফর্ম না, সাধারণ পোশাকই পড়ছে, তবে রিভালবারটাও সাথে নিচ্ছে । আবির জিজ্ঞেস করল, “কিরে, কোথাও যাচ্ছিস?” অপু বলল, “হ্যাঁ, এখানকার থানায় একটু দেখা করে আসি ।” আবির জিজ্ঞেস করলো, “আমি কি এখন যেতে পারি?” অপু বলল, “মনে হয় এখন তোকে লাগবে, লাগলে আমি কল করে জানাবো । আর তাছাড়া অয়নও ঘরে একা!”