0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

পরিচয় পর্ব-২৮১


পরিচয়(পর্ব-২৮১)

অয়ন একটা বড় দেখে শামুকে মাইশার নাম লেখালো ।
আসবার সময় মাছের বাজারটাও দেখে এলো ওরা । বড় বড় কাঁকড়া চিংড়িসহ আরও হরেক রকম অচেনা সামুদ্রিক মাছ নজরে এলো ওদের । রাত ৮টার দিকে হোটেলে ফিরে ওরা দরজায় নক করলো । বেড়িয়ে যাবার সময় আবির দরজা ভেতরে থেকে লাগিয়ে দিয়েছিলো, অচেনা জায়গা, কখন কি হয়, বলা যায় না । কিছুক্ষণ নক করার পর আবির দরজা খুলল । দেখেই বোঝা যাচ্ছে, নক করবার আওয়াজে ঘুম থেকে উঠেছে । অয়ন আর অপু ভেতরে ঢুকতে ঢুকতে অয়ন জিজ্ঞেস করলো, “কি ব্যাপার ভাই! এতক্ষণ ধরে ঘুমালা!” আবির বলল, “হ্যাঁ রে শালাবাবু! জব্বর একটা ঘুম দিলাম! এমন মনে হচ্ছে যেন এখানে ঘুমাতেই এসেছি ।” অপু একটা ট্রাউজার আর গামছা নিয়ে বাথরুমে যেতে যেতে বলল, “প্যান্টে বালি লেগে গেছে! চেঞ্জ করে আসি! অয়ন, আমার পর তুমিও চেঞ্জ করে নিয়ো ।” অয়ন বিছানায় পা তুলে শুতে গেলে আবির চেঁচিয়ে উঠলো, “এই! তুই কিন্তু একা শুচ্ছিস না এই খাটে! আমিও শুচ্ছি! বালি নিয়ে উঠলি কেন! অপু তোকে বলল চেঞ্জ করে নিতে!”
“অপু ভাইয়ের দেরি হবে আসতে । উনি বোধ হয় গোসল করবে ।” বলল অয়ন ।
“তুই বারান্দায় যেয়ে চেঞ্জ কর যা!” বলল আবির ।
“আমার কি লাজ লজ্জা নাই! বারান্দায় যেয়ে প্যান্ট চেঞ্জ করবো!” বলল অয়ন ।
“আরে! বারান্দা অন্ধকার! আশেপাশে উচু দালানও নেই যে তোর সম্পত্তি সব দেখে ফেলবে ।” বলল আবির ।
“ভাই! দাড়াও! আপুকে বলতে হবে তুমি আমাকে এ কথা বলেছো!” বলে অয়ন প্যান্ট নিয়ে বারান্দায় গেলো । আবির সত্যিই বলেছে । বারান্দায় আসলেই অন্ধকার । আশেপাশে উচু দালান ও নেই । আর একথা সবারই জানা অন্ধকার থেকে আলোর দিকে তাকাল যেমন সবকিছু একদম স্পষ্ট দেখা যায়, তেমনি আলো থেকে অন্ধকারের দিকে তাকালে কিছুই দেখা যায় না । বালি মাখা প্যান্টটা খুলল অয়ন । একটু ঝাঁকি দিলো । বারান্দায় একটা দড়ি আছে কাপড় ঝোলানোর জন্য । সেখানে প্যান্টটা রাখলো । তারপর যেই প্যান্টও পড়বে, সেটা হাতে নিলো । সেটা এখন উলটো করা । সেটা সোজা করতে যাবে, এমন সময় সামনে থাকা একটা আমগাছ নড়ে উঠলো । ভয়ে গাছের যে ডালটা নড়েছে সেদিকে তাকাল অয়ন । সাদা কিছু একটা হাতে নিয়ে একটা মানুষ না! মানুষটা হঠাৎ সেই সাদা জিনিসটা অয়নের দিকে ছুঁড়ে মারল! অয়ন ভয়ে দরজা খুলে “ভুত! ভুত!” বলে চিৎকার করে রুমে ঢুকে গেলো । আবির ওর চিৎকার শুনে বারান্দায় যেয়ে দেখল আম গাছ থেকে এক লোক অন্ধকারের সাথে মিশে গেলো । নিচে একটা কাগজ । এই সাদা কাগজটাই ছুড়ে মেরেছিলো লোকটা । আবির কাগজটা নিয়ে ভেতরে গেলো । অয়নের পুরো শরীর কাপছে এখনও । জিজ্ঞেস করলো, “ভু…ভুত গেছে!” আবির হালকা রাগ করে বলল, “আগে প্যান্ট পড়! শালা!” অয়ন এবার লজ্জা পেল । তাড়াতাড়ি প্যান্ট পড়ে নিলো । আবির ততক্ষণে কাগজটা খুলল । ফাকা কাগজ । মাঝ রাতে এভাবে কেউ ফাকা কাগজ কে দিতে যাবে! এরই মধ্যে গোসল সেরে বেরিয়ে এলো অপু । জিজ্ঞেস করলো, “কি হয়েছে? চিৎকার শুনলাম অয়নের!” আবির বলল, “কি আর হবে, বারান্দায় কেউ ফাকা কাগজ ছুঁড়ে পালিয়েছে, আর আমার শালাবাবু সেটা দেখে প্যান্ট না পড়া অবস্থায় আমার সামনে হাজির হয়েছে ।” কথা শুনে হেসে উঠলো অপু । বলল, “হায়রে অয়ন! তোর মান সম্মান আর থাকলো!” অয়ন রাগ করে বিছানায় কাথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে বলল, “আমার আসাটাই ভুল হয়েছে!” অপু তখন আবিরকে জিজ্ঞেস করলো, “কাগজে কি লেখা?” আবির বলল, “কিছুই তো নেই! ফাকা!” অপু ইয়ার্কি করে বলল, “আমার মনে হয় অয়নকে চেঞ্জ করতে দেখে কেউ ইয়ার্কি করেছে ।” বলে সিঙ্গেল খাটে যেয়ে বসলো । আবির কান পেতে শুনতে পেলো, অয়ন কাথার নিচে কাঁদছে , আবির অয়নের পাশে বসে কাথা সরাতে চাইলো, কিন্তু অয়ন রাগ করে বলে উঠলো, “সরো! আমার সাথে কথা বলবা না!” আবির অয়নের মন ভালো করার জন্য অপুর দিকে তাকিয়ে বলল, “ইয়ো অপু!” অপুও বুঝে ইয়ার্কির সাথে বলল, “হ্যাঁ ইয়ো আবির!”
“এই ৮ বছরের ধেরে খোকাকে নিয়ে কি করা যায় বলতো!” বলল আবির । কান পেতে শুনলো, কথা শুনে খিল খিল করে হাসছে অয়ন যদিও তা সে যথাসম্ভব আটকে রাখার চেষ্টা করছে ।
অপু বলল, “বিয়ে দিয়ে দে, বউয়ের শাসনে যদি একটু কান্না থামায়!” আবির বলল, “নিশান হলে মানলাম বুঝলি, কিন্তু এ তো দেখি আরও খোকা!” অপু তখন বলল, “আসলেই রে, খোকার আবার খুকিও আছে! মাইশা! জানিস, খুকির জন্য শামুকে নামও লেখিয়েছে! আমার তো মনে হয় সে মনে মনে তখন বলছিলো, আমার মনে তুমি মাইশা! নাম লেখাবো শামুক ঘইশা!” আবারও খিল খিল করে হেসে উঠলো অয়ন । আবির বলল, “হয়েছে! আর হাসি ঠেকানো লাগবে না! বের হ তুই! ভার্সিটি পড়ে! আর মনে হচ্ছে যেন পিচ্চি আছে!” অয়ন কাথা থেকে বের হয়ে আবিরের দিকে তাকিয়ে বলল, “ভাই! আমার কি লজ্জা লেগেছে জানো!” আবির বলল, “আমারও লজ্জা লেগেছে!” অয়ন জিজ্ঞেস করলো, “কেন?” আবির বলল, “প্রথমত একটা ছবি তুলতে পারি নাই! আর দ্বিতীয়ত আমি আসলে কিছুই দেখি নাই!” বলে হোহো করে হেসে উঠলো আবির । অয়ন আবার রাগ করে বলল, “ও! আর এতক্ষণ আমাকে হুদাই খেপাচ্ছিলা!” অপুও হাসল আবিরের সাথে তাল মিলিয়ে । অয়ন বলল, “দাঁড়াও! দুজনেরই বউয়ের কাছে নালিশ পৌঁছে যাবে!” বলে আবার অয়ন কাথার নিচে শুয়ে পড়লো । আবির বলল, “নে বাবা, নালিশ জানালে জানাস, এবার চল, রাতের খাওয়াটা খেতে যাই ।”

আগামী পর্বেঃ
ভোর যখন ৪টা, তখন আবিরের ঘুম ভাঙল । আজানও দেয় নি এখনও । আবির বিছানা থেকে উঠলো । অয়ন আর অপু ঘুমোচ্ছে । তাই লাইট না জ্বালিয়ে মোবাইলের ফ্ল্যাশ লাইট জালালো । বারান্দায় গেলো সে । চারিদিকে যতদুর দেখা যায়, অন্ধকার । অনেক দূরে কোন সু-উচ্চ পাচতারা হোটেলের লোগো সমেত লাইট দেখা যাচ্ছে কেবল । বারান্দায় বালি জমেছে অয়নের প্যান্ট থেকে পড়া বালির মাধ্যমে । একটু হাটতেই বারান্দার অন্য প্রান্তে আরেকটা কাগজ পেলো আবির ।