0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

পরিচয় পর্ব-২৬৭


পরিচয়(পর্ব-২৬৭)

মেয়েটা জিজ্ঞেস করলো, “কে নিশান? কি চাও তুমি?” নিশান বলল, “আমিও তোমার মতই একজন, তোমাকে যেমন তুলে এনেছে, আমাকেও তেমন তুলে এনেছে ।” মেয়েটা বলল, “তুলে এনেছে! ও হ্যাঁ! মনে পড়েছে, আমি স্কুলে ছিলাম, বাড়ি ফিরবো না বলে রাগ করে স্কুল বাসে না উঠে হারিয়ে যাবার চেষ্টা করছিলাম । তখন এক নির্জন মাঠে আমি পৌঁছে যাই, আর একটা লোক কোত্থেকে এসে আমার মুখে রুমাল চেপে ধরে, তারপর আর কিছু মনে নেই আমার ।” নিশান বলল, “ওরা যে তোমাকে অজ্ঞান করেছিল । আমাকেও ওরা একটা নির্জন গলি থেকে ধরে এনেছে ।” মেয়েটা খুব সম্ভবত ওর পরিবারের ওপর অভিমান করে বলল, “ভালো হয়েছে । খুব ভালো হয়েছে । আমার ফালতু পরিবারের থেকে এভাবে হারিয়ে যাওয়াই ভালো । তাতে আমি মরলেও আমার আক্ষেপ নেই ।” নিশান জিজ্ঞেস করলো, “কেন? তোমার বাবা তো সেলিব্রেটি, অনেক জনপ্রিয় অভিনেতা ।” মেয়েটা বলল, “হ্যাঁ সেটাই, অভিনেতার অভিনয় দেখেই তো সবাই ভাবে কত সুখী মানুষ । কিন্তু সে অভিনেতার পার্সোনাল লাইফ আর অভিনয়ের জগত যে এক না, তা কেউ বোঝে না ।” নিশান জিজ্ঞেস করলো, “কেন? কি হয়েছে?” মেয়েটা হালকা বিরক্তির সাথে বলল, “তোমাকে কেন বলবো? তুমি কি আমার পরিবারের কেউ? এখন পর্যন্ত তোমার নাম কণ্ঠ ছাড়া আর কিছুই আমি জানি না, চেহারাও আমি দেখিনি তোমার ।” নিশান জানতে চাইল, “ঠিক আছে, সমস্যা নেই । কিন্তু নামটাও কি বলা যাবে না?”
“এই হেডলাইনটা একবার পড় ।” পকেট থেকে কাগজের পাতার ছেড়া অংশটা বের করে দেখিয়ে বলল আবির । অপু সেটা বিড়বিড় করে পড়লো, “বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিষ্ণুপুর হতে ভারতের নাথ মন্দিরের পেছন পর্যন্ত গোপন সুড়ঙ্গ বন্ধ করে দেয়া হল বিজিবি ও বি এস এফ এর সহায়তায় ।” তারপর আবিরের দিকে তাকিয়ে বলল, “কিন্তু এতে কি প্রমান হয়?” আবির বলল, “তোকে মারুফ ভাইয়ের কথা বলেছিলাম না, গ্যাংস্টার মারুফ, উনার সাথে যা কথা হয়েছিলো তা বলেছিলাম না?” অপু বলল, “হ্যাঁ! মনে পড়েছে! বিষ্ণুনাথ!” আবির বলল, “একদম তাই! হতে পারে সেই সুড়ঙ্গ আবার ব্যাবহার করা হচ্ছে পাচারের কাজে!” অপু বলল, “বুঝলাম, কিন্তু সেটা কি আসলেই হতে পারে?” আবির বলল, “জানি না । তবে সম্ভাবনা আছে ।” অপু বলল, “আমি এখন গেলে উপরমহল থেকে আবার কথা শুনতে হতে পারে । কারণ এমনিতে ঢাকার অবস্থা ভালো না । তার ওপর মোহন শেখের মেয়েকে খুজে দেয়ার দায়িত্ব । এখন সম্ভাবনার ওপর ভিত্তি করে কিছু করা আমার মনে হয় উচিত হবে না ।” আবির বলল, “আমি যাবো । একাই যাবো । সম্ভাবনা যদি সত্যি হয় আপনাকে জানাবো ।” অপু একটু ভয় পেয়ে বলল, “সেকি! তুই একাই যাবি?” আবির বলল, “হ্যাঁ, অবশ্যই । আমার ছেলের জীবন হুমকির মুখে । এর জন্য আমায় যা করতে হয় আমি করবো ।” অপু বলল, “আমি কিছু পুলিশ তোর সাথে দেবো?” আবির বলল, “না, সমস্যা নেই । আমি একা যেতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবো, তুই গেলে সেটা আলাদা ব্যাপার ছিল ।” অপু জিজ্ঞেস করলো, “রওনা হবি কখন?” আবির বলল, “আজই ।” অপু অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো, “কি বলছিস! আজই!” আবির বলল, “হ্যাঁ, আজই । আর তাছাড়া ওখানে রায়হান ভাই, কলিমা আপু উনারা থাকেনই । সমস্যা হবে না আমার ।” অপু বলল, “ঠিক আছে, তাহলে আপনি বাসায় যান, গুছিয়ে নিন । চলুন, আমিও আপনাকে আপনার বাসায় নিয়ে যেয়ে তারপর বাসস্ট্যান্ডে ড্রপ করে দিয়ে আসি ।” আবির বলল, “সমস্যা নেই, আমাকে বাসায় ড্রপ করে দিয়ে আস্লেই চলবে । ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আমি ড্রাইভিং করেই যাবো ।” অপু বলল, “ঠিক আছে চলুন ।”
“আয়রা । আনিশা তাবাসসুম আয়রা আমার নাম ।” নিশানের নাম জানাতে চাওয়ার জবাবে বলল মোহন শেখ এর মেয়েটা, যার নাম আনিশা তাবাসসুম আয়রা । নিশান আয়রাকে বলল, “থাঙ্ক ইউ । নামটা বলার জন্য । তবে তুমি যে কারণে এখানে আসাতে খুশি হয়েছো, আমিও বোধ হয় প্রায় একই কারণে এখানে আসাতে খুশি হয়েছি ।” আয়রা জানতে চাইলো, “কেন?” নিশান বলল, “তোমাকে কেন বলবো, তোমার চেহারা যদিও দেখেছি আমি, কিন্তু তোমাকে তো আমি চিনি না ।” আয়রা হালকা হেসে বলল, “আমার কথা আমাকেই ফিরিয়ে দিলে?” নিশান বলল, “হয়তো । কিন্তু এখন আমি তোমায় বলবো না কেন আমি খুশি ।” আয়রা জিজ্ঞেস করলো, “আমি আমার খুশি হবার কারণটা বললে বলবে?” নিশান বলল, “না, তুমি যদি আমার খুশি হবার কারণ জানার জন্য বলতে চাও, তাহলে না আমি তোমাকে আমার খুশি হবার কারণ বলবো, না আমি তোমার কথা শুনবো ।” আয়রা জানতে চাইলো, “তাহলে?” নিশান বলল, “যখন তোমার মনে হবে আমি তোমার খুশি হবার কারণ জানার যোগ্য, তখন আমি শুনবো এবং তোমাকেও বলবো ।” নিশানের কথা শুনে একগাল হেসে উঠলো আয়রা ।

আগামী পর্বেঃ
চয়নিকা বলল, “কি! মাথা ঠিক আছে তোমার? কোন সন্ত্রাসী কি বলল আর তুমি সেই কথার ওপর ভিত্তি করে চলে যাচ্ছো ব্রাহ্মণবাড়িয়া?” আবির বলল, “দ্যাখো, ওয়ি লোকটাকে আমি চিনি, তাই কে সত্য বলতে পারে আর কে মিথ্যে তা আমি ভালো করেই জানি ।” চয়নিকা রেগে গিয়ে বলল, “হ্যাঁ তাইতো । সম্পর্কও মানুষ চেনে । নিজের ছেলে আর পরের ছেলে কখনও কেউ এক করতে পারে না ।”