0 %

Thanks a lot for being with us!
We are re-constructing our website!
Sorry for this temporary inconvenience
We are coming to you with a fresh look and design from 1 January 2022!
Till then! Stay connected!

পরিচয় পর্ব-২৫৪

 



পরিচয়(পর্ব-২৫৪)(সিজন-৯)

 

প্রেসার কুকারে আরেকটা সিটি পড়তেই চুলা থেকে প্রেসার কুকারটা নামিয়ে নিলো চয়নিকা । আবির গেছে চয়বির কোম্পানির খোঁজ নিতে । হানিমুনে যাবার পর বহুদিন খোঁজ নেয়া হয় নি । নিশান গেছে অয়ন মামার কাছে খেলতে । তাই বাসায় একা চয়নিকা । রান্নাঘরের একটা তাকে মোবাইলে একটা ভিডিও চালিয়ে রেখে রান্না করছে সে । প্রেসার কুকার খুলে দেখে নিলো সিদ্ধ হয়েছে কি না । এমন সময় মোবাইলে একটা কল এলো এলো চয়নিকার । দেখল, আখি আপু কল দিয়েছে । ফোন ধরেই বলল, “হ্যালো আপু! কেমন আছো?” ফোনের ওপাশ থেকে আখি বলল, “এইতো আছি, আলহামদুলিল্লাহ, তোর কি খবর?”

“আছি, মোটামুটি । গরুর মাংস রান্না করছিলাম, তাই দেখি এখনও সিদ্ধ হয় নি ।”

কাজ করতে করতে কথা বলছিল চয়নিকা । প্রেসার কুকারটা আবার চুলায় তুলে দিয়ে আবার কথা বলা শুরু করলো । “তোমার কি অবস্থা? ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলে?” আঁখি বলল, “হ্যাঁ, গিয়েছিলাম । বলেছে…” আঁখিকে শেষ করতে না  দিয়েই চয়নিকা বলল, “বেড রেস্টে থাকতে তাইতো?” আঁখি হেসে দিল । বলল, “হ্যাঁ ।” “আর তুমি এখন কাজ করছো? তাইনা?” আঁখি বলল, “একেবারে কাজ না করলে তো আলসে হয়ে যাবো, তাই না?” কিছু তো করতেই হবে ।” চয়নিকা রাগ করে বলল, “কেন? সাবিত ভাই তো তোমাকে দেখার জন্য কাজের লোক রেখেছেই, সে কি করছে?” আঁখি বলল, “আরে বাবা, সেও করছে, আমিও করছি । টেনশন করিস না তো ।”

“টেনশন করিস না তো বললেই হয়? কি যে করোনা তুমি!”

“আচ্ছা বাদ দে, শোন একটু পড়ে কথা বলছি, রান্না করছি তো!”

“বাহ! যার কথা বললাম, তাই করার বললাম, তাই করার জন্য তুমি ফোন কাটছো!” আবার হালকা রেগে বলল চয়নিকা ।

“ওরে না রে, রান্না তো কাজের মেয়েটাই করছে, আমি পাশে দাড়িয়ে আছি শুধু । আচ্ছা, রাখি তাহলে, আল্লাহ হাফেজ ।”

“ঠিক আছে, আল্লাহ হাফেজ ।” বলে ফোন কেটে দিল আঁখি । চুলায় আবার একটা সিটি বেজে উঠলো ।

“আরে ওটা ধরিস না! ধুর!” অয়নের ভার্সিটির একটা প্রোজেক্ট ধরতে যাচ্ছিল দেখে নিশানকে বারণ করলো অয়ন । অয়ন শুয়ে শুয়ে মোবাইল চালাচ্ছিলো । নিশান বলল, “আহা! আমি তো বাচ্চা না, আর তাছাড়া এটা আমি জাস্ট টাচ করবো, নাথিং এলস, সো এতো রেগে যাওয়ার কি আছে!” অয়ন বিরক্ত হয়ে বলল, “তোর চেহারা দেখলেই না রাগ ওঠে!” নিশান হেসে দিলো । তারপর বলল, “অকারণে রাগে যারা, তাদের কি বলে ডু ইউ নো?” অয়ন ভ্রু কুচকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো, “ কি?” নিশান বলল, “পাগল!” বলে রুম থেকে দৌড়ে বেরিয়ে গেলো । অয়ন “তোকে আজকে!!!!!” বলে মারতে যাচ্ছিলো, কিন্তু হাতের নাগাল পেলো না । তারপর নিশানকে শুনিয়ে জোরে বলল, “তোকে হাতের কাছে পেলে সেইরকম মারবো!” পড়ে আবার নিজেই নিজেকে সন্দেহের দৃষ্টিতে বলতে লাগলো, “কিন্তু, অকারণে পাগল হাসে, রাগে আবার কবে থেকে?” নিশান অন্য রুম থেকে বলে উঠলো, “এটা আমার অনুসন্ধানে এসেছে! তুমি পাগল আর তুমি অকারণে হাসো, ইকুয়ালস টু পাগলেরা অকারণে হাসে!” বলে আবার হেসে উঠলো নিশান । অয়ন আবার রেগে যেয়ে বলল, “দাঁড়া, এবার আমার রুমে কি করে আসিস তুই দেখি ।” বলে দরজা লাগিয়ে দিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লো । একটু পর নিশান এসে দরজা ধাক্কাতে লাগলো । অয়ন বলল, “খুলবো না দরজা! চলে যা!” নিশান বলল, “তুমি যতক্ষন দরজা খুলবে না, আমি এখানেই দাড়িয়ে থাকবো!” অয়ন বলল, “থাক দাড়িয়ে! দেখি, কতক্ষন থাকতে পারিস!” বলে কানে ইয়ারফোন গুজে গান চালিয়ে মোবাইল চালাতে লাগলো অয়ন । নিশান বলল, “আচ্ছা সরি! আমি আর ডিস্টার্ব করবো না! প্রমিস! প্লিজ ওপেন দ্যা ডোর!” ভেতরে অয়নের কানে কিছু যায় নি, ফলে অয়নের কোনো সাড়াও পেলো না নিশান । নিশানের মন খারাপ হয়ে গেলো । এদিকে নিশানের কানে এলো নানার ঘর থেকে মোবাইল বাজার আওয়াজ আসছে । অয়ন নানার রুমে গেলো । দেখল, নানা ঘুমাচ্ছে । মোবাইলটা হাতে নিয়ে দেখল, নানি কল করেছে । অয়ন ফোন ধরার আগেই ফোনটা কেটে গেলো । আবার কল দিলে আর কল ধরল না নানি । হয়তো নেট অফ করে দিয়েছে অনেকবার না পাওয়ার পর । নানা তো এমনিতেই কম শোনে, তার ওপর এখন ঘুমাচ্ছে । নিশানের মাথায় একটা বুদ্ধি এলো । নানার মোবাইল দিয়ে কল করলো অয়নকে । অয়ন ফোন ধরে বলল, “হ্যাঁ আব্বু, বল ।” নিশান বলল, “আব্বু না, আমি, তোমার ভাগ্নে!” অয়ন, “বিরক্তিকর!” কথাটা বিরক্তির সাথে বলে মোবাইল অফ করে দিল । তারপর নিজেকে বলতে লাগলো, “কি করি এখন! হ্যাঁ, গোসলটা সেরে নেই । যে ঠাণ্ডা পড়ছে! গোসলও করতে ইচ্ছা করে না ।” বলে বিছানা থেকে উঠে গেলো । এদিকে নিশান ফোনটা আবার আগের জায়গায় রেখে রুম থেকে বেড়িয়ে এলো ।

“গতকাল ঢাকার কারওয়ান বাজার এলাকায় ৫বছরের এক শিশু নিখোঁজ, এ নিয়ে গত দু’মাসে মোট ১৯টি অপহরণের ঘটনা ঘটলো কেবল ঢাকাতেই, কি কারণে এবং কীভাবে এসব হচ্ছে তা এখনও খতিয়ে দেখছে পুলিশ, বাচ্চাদের একা বাইরে যেতে এ মুহূর্তে বারণ করেছেন বিশেষজ্ঞরা ।” খবরে এ নিউজটা শুন্তনে শুনতে চুলা থেকে প্রেসার কুকারটা নামাল চয়নিকা । রান্নার ভিডিও দেখতে দেখতে পড়ে খবরে চলে এসেছে । তরকারিটা চেখে দেখল, হ্যাঁ, লবণ হয়েছে । পরক্ষনেই টেনশনে পড়লো । নিশানও তো একা গেছে ও বাড়িতে । ভালো আছে তো?

 

আগামী পর্বেঃ

নিশানের মনে হচ্ছে কেউ যেন ওকে পাত্তাই দিচ্ছে না । এমন সময় ওর মাথায় একটা দুষ্টু বুদ্ধির উদয় হল । মনে মনে নিজেকে বলল, “আমার কথা কেউ ভাবছে না । এখন যদি আমি হারিয়ে যাই তখন সবাই আমার কথা ভাববে । হ্যাঁ! আমি এখন অনেক দূর চলে যাবো, সপ্তাহ দুই পর আবার ফিরে আসবো । তখন দেখি, এরা আমায় পাত্তা না দিয়ে কীভাবে থাকে ।”